193 দাওয়াতি কাজ করা ফরজ
৪১-হামীম-আস-সাজদাহ 33
وَ مَنْ اَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّنْ دَعَاۤ اِلَى اللّٰهِ وَ عَمِلَ صَالِحًا وَّ قَالَ اِنَّنِیْ مِنَ الْمُسْلِمِیْنَ
لَا تَسْتَوِی الْحَسَنَةُ وَ لَا السَّیِّئَةُ ؕ اِدْفَعْ بِالَّتِیْ هِیَ اَحْسَنُ فَاِذَا الَّذِیْ بَیْنَكَ وَ بَیْنَهٗ عَدَاوَةٌ كَاَنَّهٗ وَلِیٌّ حَمِیْمٌ
উপরোল্লেখিত আয়াতে তিনটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহর পথে ডাকা, নেক আমল করা, নিজেকে মুসলমান বলে পরিচয় দেওয়া
১ মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বানকারীরাই সফলকাম। ৩-আলে-ইমরান 104
وَ لْتَكُنْ مِّنْكُمْ اُمَّةٌ یَّدْعُوْنَ اِلَى الْخَیْرِ وَ یَاْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَ یَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ ؕ وَ اُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ
* দাওয়াতি কাজ করার জন্যই তোমাদের কর্মক্ষেত্রে আনা হয়েছে আলে-ইমরান, আয়াত: ১১০
كُنْتُمْ خَیْرَ اُمَّةٍ اُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَاْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَ تَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَ تُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ
সৎ কাজের আদেশ করা সহজ অসৎ কাজের নিষেধ করা কঠিন। কিন্তু এ কথাগুলো আল্লাহর কাছেও অতি উত্তম
* অসৎ কাজে বাধা না দেওয়ার পরিনীতি
* এক সম্প্রদায়ের মত; যারা একটি দ্বিতলবিশিষ্ট পানি-জাহাজে লটারি
* এ কাজ করতে যেয়ে কেউ জেল খেটেছে আর কেউ ফাঁসিতে চলেছে
* ফাঁসির আগ মূহুর্তে সায়্যিদ কুতুব (রাহিমাহুল্লাহ) কে কালিমা পড়ানোর জন্য জেলের ইমামকে পাঠানো হলো। জেলের ইমাম এসে সায়্যিদ কুতুবকে কালিমা পড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলেন।
______________________________________________________
৪১-হামীম-আস-সাজদাহ
(41:33)
وَ مَنْ اَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّنْ دَعَاۤ اِلَى اللّٰهِ وَ عَمِلَ صَالِحًا وَّ قَالَ اِنَّنِیْ مِنَ الْمُسْلِمِیْنَ
শব্দার্থ: وَمَنْ = এবং কার, أَحْسَنُ = উত্তম, قَوْلًا = কথা (হতেপারে) , مِمَّنْ = তারচেয়েযে, دَعَا = ডাকে, إِلَى = দিকে, اللَّهِ = আল্লাহর, وَعَمِلَ = ওকাজকরে, صَالِحًا = সৎ, وَقَالَ = এবং বলে, إِنَّنِي = নিশ্চয়ই আমি , مِنَ = অন্তর্ভুক্ত, الْمُسْلِمِينَ = আত্মসমর্পণকারীদের (অর্থাৎমুসলমানদের) ,
অনুবাদ: সেই ব্যক্তির কথার চেয়ে আর কার কথা উত্তম হবে যে আল্লাহর দিকে ডাকলো, সৎ কাজ করলো এবং ঘোষণা করলো আমি মুসলমান।
(41:34)
وَ لَا تَسْتَوِی الْحَسَنَةُ وَ لَا السَّیِّئَةُ ؕ اِدْفَعْ بِالَّتِیْ هِیَ اَحْسَنُ فَاِذَا الَّذِیْ بَیْنَكَ وَ بَیْنَهٗ عَدَاوَةٌ كَاَنَّهٗ وَلِیٌّ حَمِیْمٌ
শব্দার্থ: وَلَا = এবং না , تَسْتَوِي = সমানহয়, الْحَسَنَةُ = ভালো, وَلَا = আর না, السَّيِّئَةُ = মন্দ, ادْفَعْ = প্রতিহতকরো, بِالَّتِي = সেই (জ্ঞান) দ্বারা, هِيَ = যা, أَحْسَنُ = উত্তম, فَإِذَا = ফলে (দেখবে) তখন , الَّذِي = যে, بَيْنَكَ = তোমারমাঝে, وَبَيْنَهُ = ওতারমাঝে, عَدَاوَةٌ = শত্রুতা (আছে) , كَأَنَّهُ = সেযেন (হয়েযাবে) , وَلِيٌّ = বন্ধু, حَمِيمٌ = অন্তরঙ্গ,
অনুবাদ: হে নবী, সৎ কাজ ও অসৎ কাজ সমান নয়। তুমি অসৎ কাজকে সেই নেকী দ্বারা নিবৃত্ত করো যা সবচেয়ে ভাল। তাহলে দেখবে যার সাথে তোমার শত্রুতা ছিল সে অন্তরঙ্গ বন্ধু হয়ে গিয়েছে।
* দাওয়াতি কাজ করার জন্যই তোমাদের কর্মক্ষেত্রে আনা হয়েছে আলে-ইমরান, আয়াত: ১১০
كُنْتُمْ خَیْرَ اُمَّةٍ اُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَاْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَ تَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَ تُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ ؕ وَ لَوْ اٰمَنَ اَهْلُ الْكِتٰبِ لَكَانَ خَیْرًا لَّهُمْ ؕ مِنْهُمُ الْمُؤْمِنُوْنَ وَ اَكْثَرُهُمُ الْفٰسِقُوْنَ
এখন তোমরাই দুনিয়ায় সর্বোত্তম দল। তোমাদের কর্মক্ষেত্রে আনা হয়েছে মানুষের হিদায়াত ও সংস্কার সাধনের জন্য। তোমরা নেকীর হুকুম দিয়ে থাকো, দুষ্কৃতি থেকে বিরত রাখো এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনো। এই আহলি কিতাবরা ঈমান আনলে তাদের জন্যই ভালো হতো। যদিও তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক ঈমানদার পাওয়া যায়; কিন্তু তাদের অধিকাংশই নাফরমান।
১ মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বানকারীরাই সফলকাম। ৩-আলে-ইমরান 104
وَ لْتَكُنْ مِّنْكُمْ اُمَّةٌ یَّدْعُوْنَ اِلَى الْخَیْرِ وَ یَاْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَ یَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ ؕ وَ اُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ
শব্দার্থ: وَلْتَكُنْ = এবং অবশ্যই থাকবে, مِنْكُمْ = তোমাদের মধ্যে, أُمَّةٌ = (এমন) একদল, يَدْعُونَ = (যারা) ডাকবে, إِلَى = দিকে, الْخَيْرِ = কল্যাণের, وَيَأْمُرُونَ = ও তারা নির্দেশ দিবে, بِالْمَعْرُوفِ = ভাল (কাজের) , وَيَنْهَوْنَ = এবং তারা নিষেধ করবে, عَنِ = হতে, الْمُنْكَرِ = মন্দ (কাজ) , وَأُولَٰئِكَ = এবং ঐসবলোক, هُمُ = তারা ই, الْمُفْلِحُونَ = সফলকাম,
অনুবাদ: তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক অবশ্যই থাকতে হবে, যারা নেকী ও সৎকর্মশীলতার দিকে আহবান জানাবে, ভালো কাজের নির্দেশ দেবে ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখবে। যারা এ দায়িত্ব পালন করবে তারাই সফলকাম হবে।
* এ কাজ করতে যেয়ে কেউ জেল খেটেছে আর কেউ ফাঁসিতে চলেছে
ফাঁসির আগ মূহুর্তে সায়্যিদ কুতুব (রাহিমাহুল্লাহ) কে কালিমা পড়ানোর জন্য জেলের ইমামকে পাঠানো হলো। জেলের ইমাম এসে সায়্যিদ কুতুবকে কালিমা পড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলেন।
-তাকে দেখে সায়্যিদ কুতুব জিজ্ঞেস করলেন, "আপনি কী জন্য এখানে এসেছেন?"
-ইমাম বললেন, "আমি আপনাকে কালিমা পড়াতে এসেছি। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে আসামীকে কালিমা পড়ানো আমার দায়িত্ব।"
-সায়্যিদ কুতুব বললেন, "এই দায়িত্ব আপনাকে কে দিয়েছে?"
-ইমাম বললেন, "সরকার দিয়েছে।"
-সায়্যিদ কুতুব বললেন, "এর বিনিময়ে কি আপনি বেতন পান?"
-ইমাম বললেন, "হ্যাঁ আমি সরকার থেকে বেতন-ভাতা পাই।"
-তখন সায়্যিদ কুতুব রহ.বললেন, "কি আশ্চর্য! যেই কালিমা পড়ানোর কারণে আপনি বেতন-ভাতা পান, সেই কালিমার ব্যাখ্যা মুসলিম উম্মাহকে জানানোর অপরাধেই আমাকে ফাঁসি দেয়া হচ্ছে!
তোমার কালেমা তোমার রুটি যোগায়,
আর আমার কালেমা আমাকে ফাঁসিতে ঝুলায়!"
-------- (সংগৃহীত)
* অসৎ কাজে বাধা না দেওয়ার পরিনীতি
* عَنِ النُّعمَانِ بنِ بَشِيرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ مَثَلُ القَائِمِ في حُدُودِ اللهِ وَالوَاقعِ فِيهَا، كَمَثَلِ قَومٍ اسْتَهَمُوا عَلَى سَفِينَةٍ فَصَارَ بَعْضُهُمْ أعْلاها وَبَعْضُهُمْ أَسْفَلَهَا، وَكَانَ الَّذِينَ في أَسْفَلِهَا إِذَا اسْتَقَوا مِنَ المَاءِ مَرُّوا عَلَى مَنْ فَوْقهُمْ فَقَالُوا: لَوْ أنَّا خَرَقْنَا في نَصِيبِنَا خَرْقاً وَلَمْ نُؤذِ مَنْ فَوقَنَا، فَإِنْ تَرَكُوهُمْ وَمَا أرَادُوا هَلَكُوا جَمِيعاً، وَإنْ أخَذُوا عَلَى أيدِيهِمْ نَجَوا وَنَجَوْا جَمِيعاً رواه البخاري
নু’মান ইবনে বাশীর (রাঃ)
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আল্লাহর নির্ধারিত সীমায় অবস্থানকারী (সৎকাজে আদেশ ও অসৎকাজে বাধাদানকারী) এবং ঐ সীমা লংঘনকারী (উক্ত কাজে তোষামোদকারীর) উপমা হল এক সম্প্রদায়ের মত; যারা একটি দ্বিতলবিশিষ্ট পানি-জাহাজে লটারি করে কিছু লোক উপর তলায় এবং কিছু লোক নিচের তলায় স্থান নিল। (নিচের তলা সাধারণতঃ পানির ভিতরে ডুবে থাকে। তাই পানির প্রয়োজন হলে নিচের তলার লোকদেরকে উপর তলায় যেতে হয় এবং সেখান হতে সমুদ্র বা নদীর পানি তুলে আনতে হয়।) সুতরাং পানির প্রয়োজনে নিচের তলার লোকেরা উপর তলায় যেতে লাগল। (উপর তলার লোকদের উপর পানি পড়লে তারা তাদের উপর ভাগে আসা অপছন্দ করল। তারা বলেই দিল, ‘তোমরা নিচে থেকে আমাদেরকে কষ্ট দিতে এসো না।’) নিচের তলার লোকেরা বলল, ‘আমরা যদি আমাদের ভাগে (নিচের তলায় কোন স্থানে) ছিদ্র করে দিই, তাহলে (দিব্যি আমরা পানি ব্যবহার করতে পারব) আর উপর তলার লোকদেরকে কষ্টও দেব না। (এই পরিকল্পনার পর তারা যখন ছিদ্র করতে শুরু করল) তখন যদি উপর তলার লোকেরা তাদেরকে নিজ ইচ্ছার উপর ছেড়ে দেয় (এবং সে কাজে বাধা না দেয়), তাহলে সকলেই (পানিতে ডুবে) ধ্বংস হয়ে যায়। (উপর তলার লোকেরা সে অন্যায় না করলেও রেহাই পেয়ে যাবে না।) পক্ষান্তরে উপর তলার লোকেরা যদি তাদের হাত ধরে (জাহাজে ছিদ্র করতে) বাধা দেয়, তাহলে তারা নিজেরাও বেঁচে যায় এবং সকলকেই বাঁচিয়ে নেয়।” (বুখারী ২৪৯৩, ২৬৮৬, তিরমিযী ২১৭৩)
রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৫৯৭
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
• বনী ঈসরাইলের যুগে আল্লাহর এক গোলাম ছিল।
সিয়ামুনাহারে. কেয়ামুলাইল।
দিনভর রোযা রাখতেন রাত জেগে জেগে তিনি তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতেন।
এবার আল্লাহ তা`য়ালা একদিন বললেন ও ফেরেশতারা যাও অমুক এলাকাটাকে গজব দিয়া উল্টিয়ে দাও ফেরেশতা চলে আসলো বন্দেগি অবস্থায় দেখল আল্লাহর ওলী এবাদত খানায় ভিতরে বন্দেগী করতেছেন ফেরেশতারা তাঁব আমলনামা খুঁজল খুঁজে দেখে ৮০ বছরের জীবনের ভিতরে ফরয ওয়াজিব দুরের কথা ৮০ বছরের হায়াতের ভিতরে মুস্তহাবের কোনো খেলাফ নাই।
কি সাংগাতীক বুজুর্গ এবার ফেরেশতারা আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করল হায় আল্লাহ তা`য়ালা অমুক এলাকা গজব দিয়ে উল্টিয়ে দেওয়ার জন্য আপনি বললেন "রাব্বুল আলামীন " ওই এলাকার ভিতরে একজন বুজুর্গ দিনভর রোযা রাখেন রাত জেগে জেগে তিনি নামাজ পড়েন ৮০বছরের আমলনামার ভিতরে কোনো মুস্তাহাবের খেলাফ নাই এই এই লোকটা আছে এই এলাকা কি আমরা উল্টিয়ে দিব গজব দিয়ে? আল্লাহ বললেন ফেরেশতা গজব দিয়ে আগে ওই নাফরমানের চেহারা পরিবর্তন করে দাও আর গোঁটা এলাকা গজব দিয়ে ওর মাথার উপর চাপিয়ে দাও।
হায় আল্লাহ তা`য়ালা কারণ বোঝলাম না
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জানিয়ে দিলেন শুনো সমাজের ভিতরে অনাচার অবিচার পাপাচার দুরাচার চলে সাভ্বাবিক।
আর এমতাবস্থায় ওই বুজুর্গ মসজিদের ভিতরে তাসবিহ করে যিকির করে হাল্কা করে নামাজ পড়ে নিজে নিজে আমল করে সমাজের অন্যায়ের প্রতিবাদ করেনি ভাল কাজের আদেশ করেনি এমন বুজুর্গ আমি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন চাইনা।
সমাজটা যতক্ষণ ভাল না হবে ভাল করার জন্য চেস্টা না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁর বুজুর্গি আমার কাছে গ্রহণ হবেনা।
আমি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এই বুজুর্গর উপরে অসন্তুষ্ট হয়ে গিয়েছি এলাকা গজব দিয়া তাঁর মাথার উপর রেখে দাও।
প্রিয় পাঠক শুধু নিজে ভাল থাকলে হবেনা সমাজটাকে ও ভাল রাখতে হবে।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে ভাল কাজের আদেশ ও অন্যায় কাজের নিষেধ করার তৌফীক দান করুন আমিন।
No comments