Header Ads

Header ADS

191 মুসলমান ফার্স্ট ক্লাসের প্যাসেঞ্জার। কাজ করে থার্ড ক্লাসের

 191 মুসলমান ফার্স্ট ক্লাসের প্যাসেঞ্জার। কাজ করে থার্ড ক্লাসের 

* ঈমানের কারণে মুসলমান চিরকাল জাহান্নামে থাকবে না 

* #মুসলমান ফার্স্ট ক্লাসের প্যাসেঞ্জার আর ফাস্ট ক্লাসের প্যাসেঞ্জার কম হয় থার্ড ক্লাসের লোক বেশি হয় সেজন্য বেহেশতী রূপ কম হবে আর জাহান্নামি লোক বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক এবং বাস্তবতা । আল্লাহ জান্নাত বানাইলেন আত্তা জাহান্নাম বানালেন সাতটা আদম সন্তান 999 জন জাহান্নামে যাবে আর একজন বেহেশতে যাবে

* ঈমান না থাকার কারণে কাফেররা চিরকাল জাহান্নামে থাকবে যতক্ষণ না সূচের ছিদ্রপথে ওর প্রবেশ করে। সূরা আরাফ ৪০ ( ওয়াজ ও খুতবা ১/১২৬

لَا تُفَتَّحُ لَهُمْ اَبْوَابُ السَّمَآءِ وَ لَا یَدْخُلُوْنَ الْجَنَّةَ حَتّٰى یَلِجَ الْجَمَلُ فِیْ سَمِّ الْخِیَاطِ ؕ وَ كَذٰلِكَ نَجْزِی الْمُجْرِمِیْنَ

* #অমুসলিমরা ভাল কাজ করেও আল্লাহর ক্রোধের শিকার কেন। তার উদাহরণ হল ঐ সুইপার যে দেশের আইন মানে দেশ মানে আরেকজন বড় ডাক্তার জনকল্যাণমূলক কাজ করে কিন্তু দেশ মানে না সরকার তাদের দুজনের ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত নিবে। 

* মোমেন বান্দা আর গুনাগার হলেও আল্লাহর কাছে তার সম্মান অনেক উচ্ছে শুধু ঈমান থাকার কারণে 

* #বনী ইসরাঈলের ওই দেহ প্রসারনী মহিলা কুকুরকে পানি পান করে আল্লাহ থেকে ক্ষমা পেল।( ওয়াজ ও খুতবা ১/১২৭

* #নেককারকে জান্নাতে দিবেন এটা তার দয়া আবার বদ কাটতে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন এটাও তার দয়া। তার উপমা ঐ ধোপার কাপড় পরিষ্কার করার সাথে তুলনা করা চলে।ওয়াজ ও খুতবা ১/১২৮


________________________________________________________


অমুসলিম সবাই দোযখের অগ্নিতে নিক্ষিপ্ত হবে


আর অমুসলিম, সে, যে-ধর্মেরই হোক তাদেরকে জাহান্নামের অগ্নিতে নিক্ষেপ করবেন বলে আল্লাহ্ পাক ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি একথাও ঘোষণা করেছেন যেঃ


৭ আল-আরাফ, আয়াত: ৪০


اِنَّ الَّذِیْنَ كَذَّبُوْا بِاٰیٰتِنَا وَ اسْتَكْبَرُوْا عَنْهَا لَا تُفَتَّحُ لَهُمْ اَبْوَابُ السَّمَآءِ وَ لَا یَدْخُلُوْنَ الْجَنَّةَ حَتّٰى یَلِجَ الْجَمَلُ فِیْ سَمِّ الْخِیَاطِ ؕ وَ كَذٰلِكَ نَجْزِی الْمُجْرِمِیْنَ


নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে এবং এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে, তাদের জন্য কখনো আকাশের দরজা খুলবে না। তাদের জান্নাতে প্রবেশ এমনই অসম্ভব ব্যাপার যেমন সূঁচের ছিদ্রে উট প্রবেশ করানো। অপরাধীরা আমার কাছে এভাবেই বদলা পেয়ে থাকে।


إِنَّ = নিশ্চয়ই


الَّذِينَ = যারা


كَذَّبُوا = মিথ্যা মনেকরে


بِآيَاتِنَا = সম্পর্কে আমাদের নিদর্শনাবলী


وَاسْتَكْبَرُوا = ও অহংকার করে


عَنْهَا = থেকেতা


لَا = না


تُفَتَّحُ = খোলা হবে 


لَهُمْ = জন্যে তাদের 


أَبْوَابُ = দরজাগুলো


السَّمَاءِ = আকাশের


وَلَا = আর না


يَدْخُلُونَ = তারা প্রবেশ করবে


الْجَنَّةَ = জান্নাতে


حَتَّىٰ = যেপর্যন্তনা


يَلِجَ = প্রবেশ করবে


الْجَمَلُ = উট


فِي = মধ্যে


سَمِّ = ছিদ্রের


الْخِيَاطِ = সূঁচের (অর্থাৎতাদের জান্নাতে প্রবেশ অসম্ভব) 


وَكَذَٰلِكَ = এবং এভাবে


نَجْزِي = প্রতিফল দিই আমরা  


الْمُجْرِمِينَ = অপরাধীদেরকে


- সূরা ৭ আরাফ, ৪০ আয়াত


অর্থাৎ যারা কোরআনকে অস্বীকার করবে এবং মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ করবে না তাদের (ভাল) কাজগুলি কবুল করার জন্যে আকাশের দরজা খোলা হবে না। জান্নাতে প্রবেশ করা তাদের জন্যে এরূপ অসম্ভব যেরূপ সূচের ছিদ্রপথে একটি উট প্রবেশ করা অসম্ভব।


মুসলমানেরা জান্নাতে যাবে


সুতরাং এটা প্রমাণ হয়ে গেল যে মুসলমানেরাই শুধু জান্নাতে যাবে। অবশ্য যে-সকল মুসলমান ঈমান থাকা সত্ত্বেও অন্যান্য ছোট-বড় গুনাহ্ করেছে তারা সেই গুনাহ্ অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমান শাস্তি ভোগ করার জন্যে দোযখে নিক্ষিপ্ত হবে। শাস্তি ভোগ করার পরে ঈমানের কারণে একদিন দোযখ থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে জান্নাতে পাঠানো হবে। কিন্তু অমুসলিমদেরকে অনন্ত কাল দোযখের কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে, মৃত্যু হবে না এবং কোনদিন জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।


ডাক্তার ও সুইপার


অমুসলিমরা এত ভাল ভাল কাজ করেও কেন আল্লাহ্ পাকের এত ক্রোধের শিকার হলো এবং কেন জান্নাতে যেতে পারবে না, আর কেনই বা তাদেরকে অনন্ত কাল দোযখের এত কঠিন আযাব ভোগ করতে হবে? এ কথাটি বুঝতে হলে উপকারী এবং অনোপকারী দুই ব্যক্তির একটি বিষয় জানতে হবে।


ওয়াজ ও খোতবা ১২৭


মনে করুন একটি লোক সে সব চেয়ে নিম্ন পর্যায়ের একটি সুইপারের চাকরী করে। প্রতিদিন অফিস-কক্ষ ঝাড় দেয় এবং মাসে মাসে বেতন নেয়। সে মানুষের কোন উপকার করে না। তার কোন গুণও নাই। তবে একটি মাত্র গুণ আছে। সে বাংলাদেশটাকে স্বীকার করে এবং এই দেশের সে অনুগত।


আরেকজন লোক আছে। তিনি চিকিৎসা শাস্ত্রের একজন জাতীয় অধ্যাপক। তিনি সারা দেশের মানুষকে চিকিৎসা-সেবা দ্বারা উপকার করে থাকেন। রাত দুইটার সময় নিদ্রা হারাম করে দিয়ে মানুষকে বাঁচাবার জন্যে তার কাছে ছুটে যান। সারা দেশে অসংখ্য হাসপাতাল খুলেছেন মানুষের সেবার জন্যে। মানুষের প্রতি সুন্দর আচরণ করেন এবং দান-খয়রাতও করেন। মোটকথা তার কোন দোষ নাই। তবে শুধু একটি দোষ আছে। আর সেটা হলো তিনি বাংলাদেশটাকে স্বীকার করেন না এবং এদেশের তিনি অনুগত


নন।


এখন সরকার এই দুই ব্যক্তির ব্যপারে কী সিদ্ধান্ত নিবে? সিদ্ধান্ত এই নিবে যে এই বিদ্রোহী জাতীয় অধ্যাপক ডাক্তারকে সঙ্গে সঙ্গে ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দাও। তোর মত উপকারী ডাক্তারের আমার দরকার নাই, তুই দেশের কলঙ্ক, এই কলঙ্ক দূর হয়ে যাক, দেশের মাটি পবিত্র হোক ইত্যাদি। আর সুইপারটিকে বলবে, তোর চাকুরী বহাল আছে। তুই মাসে মাসে বেতন পাবি। আমার অনুগত হয়ে আমাকে মেনে নিয়েছিস তাতে আমি খুশী।


মুসলমান আর অমুসলিমের ব্যপারটিও আল্লাহ্ পাকের কাছে ঠিক সেই রকম।


পাপাচারিণী মহিলার ঘটনা


ঈমানের যে মুসলমান হয়েছে সে অন্যদিক থেকে যতই খারাপ হোক, তার মর্যাদা আল্লাহ্ পাকের কাছে অনেক উচ্চে। তিনি এরশাদ করেনঃ


وَكَانَ بِالْمُؤْمِنِينَ رَحِيمًا


"তিনি মু'মিনদের প্রতি পরম দয়ালু"-সূরা ৩৩ আহযাব, ৪৩ আয়াতাংশ


তাই কোন কোন ক্ষেত্রে তিনি মুসলমানের সব গুনাহ মাফ করে দিয়ে দোযখ থেকে নাজাত দিয়ে দেন। যেমন হাদীস শরীফে একটি ঘটনা আছে।


আমাদের রসূলুল্লাহর যামানার আগের ঘটনা। বনী ইসরাঈলের কোন নবীর উম্মত ছিল একটি মহিলা। সে কলেমা পাঠ করা মুসলমান ছিল। কিন্তু সে ছিল দেহ পসারিনী। সমাজের লোক এই বেশ্যাকে ঘৃণার চোখে দেখতো। একদিন সে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। রাস্তার ধারে একটি কুকুরের বাচ্চা পিপাসায় কাতর হয়ে পড়েছিল। আর একটু হলে মারা যাবে। মরোন্মুখ এই কুকুরটিকে দেখে মহিলার দয়া হলো। সে কুকুরের বাচ্চাটিকে বাঁচানোর জন্যে পানির খোঁজ করতে লাগলো। দেখলো দূরে একটি কুয়া। সে কুয়ার কাছে গেল। কিন্তু দড়ি ও বালতি পাওয়া গেল না। অগত্যা সে তার গায়ের ওড়নাটি লম্বা- লম্বি ছিঁড়ে কয়েকটি টুকরা করলো। একটির সাথে আরেকটি টুকরা গিরা দিয়ে লম্বা দড়ি বানালো। তারপর তার পায়ে ছিল চামড়ার মোজা। পা থেকে মোজা খুলে সেই ওড়নার দড়ির সাথে বাঁধলো। মোজাটি কুয়ার পানিতে পৌছে গেল। সে পানি তুলে নিয়ে গিয়ে


ওয়াজ ও খোতবা ১২৮


কুকুরের বাচ্চাটিকে খাওয়ালো। বাচ্চাটি পানি খেয়ে ধীরে ধীরে সতেজ হয়ে উঠলো। তারপর দৌড়িয়ে পালালো। তখন মহিলাটি তার রাস্তা ধরে গন্তব্যের দিকে চলতে লাগলো।


এই মহিলার প্রতি আল্লাহ্ পাকের দয়া হলো। তাঁর সৃষ্টির একটি তুচ্ছ প্রাণীকে দয়া দেখানোর কারণে মহিলার জীবনের সব গুনাহ্ মাফ করে দিলেন। তাকে দোযখ থেকে নাজাত দিয়ে দিলেন। মহিলার এই ভাল কাজটি কবুল হয়েছে শুধু আল্লাহর উপর ঈমান থাকার কারণে। কিন্তু অমুসলিমদের সেই সুযোগ নাই। আল্লাহ্ পাক এরশাদ করেন :


إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ


"নিশ্চয় আল্লাহ্ তাঁর সাথে শরীক করাকে ক্ষমা করেন না, এছাড়া সবকিছু যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন।" সূরা ৪ নিসা, ১১৬ আয়াত


ইসলাম ব্যতীত সকল ধর্মই শিরকের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। কেউ তিন, কেউ দুই, আবার কেউ অসংখ্য দেবতার উপাসনা করে। সুতরাং সবাই আল্লাহর সাথে শরীক করেছে। এদেরকে মৃত্যুর পরে ক্ষমা করা হবে না।


আল্লাহ্ পাক অসীম দয়াবান। তাই তিনি ন্যায় বিচার করেন। তিনি ঘোষণা করেছেন:


قَالَ عَذَابِي أُصِيبُ بِهِ مَنْ أَشَاءُ وَرَحْمَتِي وَسِعَتْ كُلَّ شَيْ :-


"আল্লাহ্ বললেন, 'আমার আযাব যাকে ইচ্ছা দিয়ে থাকি আর আমার দয়া প্রতিটি জিনিষে পরিব্যপ্ত।" -সূরা ৭ আ'রাফ, ১৫৬ আয়াত


অর্থাৎ তাঁর দয়া প্রতিটি জিনিষের মধ্যে রয়েছে। পাপীকে দোযখে দিবেন সেটাও তাঁর দয়া। আবার নেককারকে বেহেস্তে দিবেন সেটাও তাঁর দয়া। এখন, পাপীকে দোযখের আগুনে নিক্ষেপ করা এটা দয়া হয় কিভাবে? একথা বুঝতে হলে ধোপার কাপড় কাঁচার কারণ বুঝতে হবে।


ধোপার উদাহরণ


আপনার গায়ের কাপড় ময়লা হলে আপনি সেটা আগুনে দিয়ে সোডার পানিতে সিদ্ধ করেন। তারপর ঘাটে নিয়ে শানের উপর আছড়াতে থাকেন। কাপড় আপনার শত্রু নয়। শুধু তার উপর আপনার দয়া হয়েছে তাই তাকে মেরে পিটিয়ে সুন্দর বানাতে চান। তারপর তাকে প্রখর রোদের তাপে ফেলে রাখেন। অধিক সুন্দর করার জন্যে তাকে বৈদ্যুতিক ইস্ত্রী দ্বারা ঘসে রগড়িয়ে স্বচ্ছ, সুন্দর ও পরিপাটি করে তোলেন।


মানুষও ময়লা হয়ে যায়। হাদীস শরীফে আছেঃ মানুষ যখন একটি গুনাহ্ করে তখন তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে। তৌবা করে ফেললে সেই কালো দাগটি মুছে যায়। আর যদি তৌবা না করে তবে তার আরেকটি গুনাহ্ করার আগ্রহ জাগে। এইভাবে গুনাহ্ করতে করতে সে সম্পূর্ণ ভাবে ময়লাযুক্ত হয়ে পড়ে। তখন তাকে পরিষ্কার করার জন্যে দোযখের আগুনে নিক্ষেপ করা জরুরী হয়ে পড়ে। এটাও আল্লাহ্ পাকের দয়া যে তিনি মানুষের ময়লা দূর করার ব্যবস্থা করেছেন। ময়লা দূর হওয়ার পর তিনি আবার তাকে স্বচ্ছ ও পবিত্র করে বেহেশতে পাঠিয়ে দেন।


ওয়াজ ও খোতবা ১২৯


বেহেশ্ত একটি পবিত্র স্থান। এখানে পবিত্র লোকেরাই আশ্রয় পাবে। আর কাফের বা অমুসলিমকে কখনও দোযখ থেকে উঠানো হবে না। কারণ তাদের ময়লা কখনও পরিষ্কার হবে না। যেমন কয়লা ধুলে ময়লা যায় না, তেমনি অমুসলিমরা আল্লাহকে অমান্য করার কারণে এত ময়লাযুক্ত হয়ে পড়েছে যে তাদের ময়লা দোযখে পুড়ে অনন্ত কালেও দূর হবে না।


তাদের ধর্ম-কর্ম বৃথা


বিশ্বের মানুষের দিকে তাকালে দেখা যায় তাদের সব আছে, কিন্তু مُحَمَّدٌ رَّسُولُ اللهِ মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ্' নাই। এই একটি সত্যকে না মানার কারণে তাদের সব ধর্ম-কর্ম বৃথা হয়ে গেছে। এখন তারা সংখ্যায় যতই অধিক হোক, আল্লাহ্ তাদের উপর সন্তুষ্ট নন। কারণ আল্লাহ্ তা'আলা সংখ্যাধিক্য দেখেন না। তিনি দেখেন হকু। হজ্বের উপর যদি একটি লোক থাকে আর সারা বিশ্বের কোটি কোটি লোকই হক্ক থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়, তবে আল্লাহ্ তা'আলা সেই একটি হকু-পন্থী লোকের পক্ষেই থাকেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এমনও দূর্দিন গেছে যখন সারা পৃথিবীতে দুই-এক জন ছাড়া কোন হক-পন্থী লোক ছিল না। কিন্তু তাতে আল্লাহ্ পাকের কোন ক্ষতি নাই। তিনি সাতটি দোযখ শুধু এইজন্যেই বানিয়েছেন যেন বাতিল-পন্থীদেরকে সেখানে ঠেসে ঠেসে ভরতে পারেন। যখন সকল পাপীকে দোযখে নিক্ষেপ করা শেষ হয়ে যাবে তখনও দোযখ ভরবে না। যেমন, আল্লাহ্ পাক এরশাদ করেন:


يَوْمَ نَقُولُ لِجَهَنَّمَ هَلِ امْتَلَاتِ وَتَقُوْلُ هَلْ مِنْ مَزِيدٍ


"সেই দিন আমি জাহান্নামকে জিজ্ঞাসা করবো, 'তুমি কি পূর্ণ হয়ে গেছো?' জাহান্নাম বলবে, 'আরও আছে কি?' সূরা ৫০ কাফ, ৩০ আয়াত


সুতরাং বাতেলপন্থী সংখ্যায় অধিক হলে আল্লাহর কোন ক্ষতি নাই। ক্ষতি মানুষের। কারণ মানুষের প্রতি মানুষের মায়া ও মহব্বত রয়েছে। সেই মহব্বতের আকর্ষণেই হকপন্থীগণ বাতেলের অনুসারীকে হকের দিকে আহ্বান করে থাকে। যেন দোযখের অগ্নি থেকে বেঁচে যায়। যার যেরকম ক্ষমতা আছে সে সেভাবেই মানুষকে বাঁচাবার চেষ্টা করছে। এমনকি অশিক্ষিতরাও বসে নাই। কারণ সত্য ও সঠিক কথা যদি অশিক্ষিতের মুখ দিয়েও বাহির হয় তবু সেটা প্রভাব বিস্তার করে। কারণ সে-কথার মধ্যে 'নূর' থাকে। এই রকম এক অশিক্ষিত জমিদারের ঘটনা আছে।


অশিক্ষিত জমিদারের ঘটনা


এদেশে তখন ছিল বৃটিশের শাসন। মুর্শিদাবাদ জেলায় এক জমিদার ছিল। সে ছিল বিত্তবান, কিন্তু লেখা-পড়া কিছুই জানতো না। এমন কি দস্তখতও করতে জানতো না। শুধু একটি সীল বানিয়ে নিয়েছিল, দস্তখতের জায়গায় সীলের ছাপ মেরে দিত। এভাবেই তার চলতো। একদিন সে সফরের উদ্দেশ্যে মোষের গাড়ীতে করে তার গ্রাম থেকে রেল স্টেশনের দিকে যাত্রা করলো। পথে এক পাদ্রী তার খৃষ্টান ধর্মটি সত্য হওয়ার যুক্তি দিয়ে বক্তৃতা শুরু করে দিয়েছিল। পাদরী বলতে লাগলো, "পৃথিবীর পাঁচ শ' কোটি মানুষের। মধ্যে খৃষ্টান জন-সংখ্যাই বেশী। সুতরাং এরাই আল্লাহর কাছে পছন্দনীয়। এত মানুষকে ওয়াজ ও খোতবা-৯/ক


ওয়াজ ও খোতবা ১৩০


আল্লাহ দোযখে দিবেন না। দোযখে যদি দেন তবে ঐ মুসলমানদেরকেই দিবেন। কারণ ওরা মাত্র এক শ' কোটি।" এই কথা জমিদার লোকটি শুনতে পেলো। সে ছিল অশিক্ষিত, কিন্তু ছিল মুসলমান। তার মুসলমানিত্বেই বলুন, আর ব্যক্তিত্বেই বলুন, এই কথা শুনে আঘাত লাগলো। সে পাদরীর কাছে গিয়ে বললো, "আমার সঙ্গে মোষের গাড়ীতে রেল স্টেশনে চল। সেখানে আমি তোমার কথার জওয়াব দিব।" উভয়ে স্টেশনে এসে প্লাটফরমে দাঁড়ালো। এমন সময় একটি রেলগাড়ী এসে থামলো। গাড়ীর একটি বগীর দিকে আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে পাদ্রীকে জমিদার জিজ্ঞাসা করলো, "বলুন তো এটা কোন্ ক্লাস?" পাদরী বললো, "এটা থার্ড ক্লাস।" আরেকটিকে দেখিয়ে জিজ্ঞসা করলো, "এটা কোন্ ক্লাস?" পাদরী বললো, "এটাও থার্ড ক্লাস।" এভাবে সব কয়টি থার্ড ক্লাস দেখার পর এক কোণায় একটি সাজানো গোছানো আরামের কম্পার্টমেন্ট দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করলো, "এটা কোন ক্লাস?" পাদরী বললো, "এটা ফার্স্ট ক্লাস।" জমিদার জিজ্ঞাসা করলো, "ফার্স্ট ক্লাসে লোক বেশী, না থার্ড ক্লাসে?" পাদরী বললো, থার্ড ক্লাসে লোক বেশী, আর ফার্স্ট ক্লাসে লোক কম।" জমিদার বললো, "এই হলো আপনার কথার জওয়াব। আমরা মুসলমানেরা লোক কম। আমরা হলাম ফার্স্ট ক্লাসের জাত। আর হলেন থার্ড ক্লাসের ঠাঁসা-ঠাঁসি করে ভরা যাত্রী। যেমন দোযখে ঠেসে ঠেসে মানুষকে ভরা হবে। আপনারা সেই জাত।" থানবীঃ মুসলমানের হাসি ১ম খণ্ড, ১১২ পৃষ্ঠা


আর জান্নাতীকে এত জায়গা দেওয়া হবে যে একজন নিম্ন স্তরের জান্নাতীও পৃথিবীর দশ গুণ জায়গা পাবে। কম সংখ্যক লোকই জান্নাতে যাবে। কারণ মূল্যবান জিনিষ কমই থাকে। আল্লাহ পাক এরশাদ করেন:


وَلَقَدْ ذَرَأْنَا لِجَهَنَّمَ كَثِيرًا مِنَ الْجِنِّ وَالْإِنْسِ لَهُمْ قُلُوبٌ لَّا يَفْقَهُونَ بِهَا وَلَهُمْ أَعْيُنٌ لَا يُبْصِرُونَ


بِهَا وَلَهُمْ أَذَانٌ لَّا يَسْمَعُوْنَ بِهَا أُولَئِكَ كَالا نْعَامِ بَلْ هُمْ أَضَلُّ أُولَئِكَ هُمُ الْغَافِلُونَ


"আমি তো অনেক জিন্ন ও মানুষকে জাহান্নামের জন্যে সৃষ্টি করেছি, তাদের হৃদয় আছে কিন্তু তার দ্বারা তারা উপলব্ধি করে না, তাদের চোখ আছে তার দ্বারা দেখে না এবং তাদের কান আছে তার দ্বারা শোনে না। এরা পশুর মত। বরং এরা অধিক বিভ্রান্ত। এরাই গাফেল।"


- সূরা ৭ আ'রাফ, ১৭৯ আয়াত


অর্থাৎ যেন মানুষের জন্যেই জাহান্নাম সৃষ্টি করা হয়েছে। অবশ্য জাহান্নাম থেকে বেঁচে যাওয়ার পথও আল্লাহ্ পাক বলে দিয়েছেন। কিন্তু সে-পথ থেকে মানুষ গাফেল। পৃথিবীতে যত বার আল্লাহ্ পাক মানুষকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাতে নবী পাঠিয়েছেন, কম লোকই তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়েছে। অবশেষে নবীগণের আগমন ধারা শেষ করতে এক নবী পাঠালেন। তিনি আখেরী নবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সারা বিশ্বের মানুষের জন্যে তিনি নবী। তাঁর পরে কেয়ামত পর্যন্ত আর কোন নবী আসবে না। যেহেতু সত্য থেকে মানুষ গাফেল থাকে, তাই তারা নবীকে মানতে চায় না কিন্তু নবীর সাথে সাথে আল্লাহপাক তার নবী হওয়ার প্রমাণ ও দিয়ে পাঠান মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম যে আল্লাহপাকের নবী তার অনেক প্রমাণ রয়েছে কয়েকটি প্রমাণ পেশ করছি।


* প্রতি হাজারে ৯৯৯ জন জাহান্নামি, এই হাদিসের অর্থ কী?

‎عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ حَدَّثَنَا أَبُوْ صَالِحٍ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَا آدَمُ يَقُوْلُ لَبَّيْكَ رَبَّنَا وَسَعْدَيْكَ فَيُنَادَى بِصَوْتٍ إِنَّ اللهَ يَأْمُرُكَ أَنْ تُخْرِجَ مِنْ ذُرِّيَّتِكَ بَعْثًا إِلَى النَّارِ قَالَ يَا رَبِّ وَمَا بَعْثُ النَّارِ قَالَ مِنْ كُلِّ أَلْفٍ أُرَاهُ قَالَ تِسْعَ مِائَةٍ وَتِسْعَةً وَتِسْعِيْنَ فَحِيْنَئِذٍ تَضَعُ الْحَامِلُ حَمْلَهَا وَيَشِيْبُ الْوَلِيْدُ {وَتَرَى النَّاسَ سُكَارَى وَمَا هُمْ بِسُكَارَى وَلَكِنَّ عَذَابَ اللهِ شَدِيْدٌ}فَشَقَّ ذَلِكَ عَلَى النَّاسِ حَتَّى تَغَيَّرَتْ وُجُوْهُهُمْ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنْ يَأْجُوْجَ وَمَأْجُوْجَ تِسْعَ مِائَةٍ وَتِسْعَةً وَتِسْعِيْنَ وَمِنْكُمْ وَاحِدٌ ثُمَّ أَنْتُمْ فِي النَّاسِ كَالشَّعْرَةِ السَّوْدَاءِ فِيْ جَنْبِ الثَّوْرِ الْأَبْيَضِ أَوْ كَالشَّعْرَةِ الْبَيْضَاءِ فِيْ جَنْبِ الثَّوْرِ الْأَسْوَدِ وَإِنِّيْ لَأَرْجُوْ أَنْ تَكُوْنُوْا رُبُعَ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَكَبَّرْنَا ثُمَّ قَالَ ثُلُثَ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَكَبَّرْنَا ثُمَّ قَالَ شَطْرَ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَكَبَّرْنَا قَالَ أَبُوْ أُسَامَةَ عَنِ الْأَعْمَشِ {وَتَرَى النَّاسَ سُكَارٰى وَمَا هُمْ بِسُكَارٰى} وَقَالَ مِنْ كُلِّ أَلْفٍ تِسْعَ مِائَةٍ وَتِسْعَةً وَتِسْعِيْنَ وَقَالَ جَرِيْرٌ وَعِيْسَى بْنُ يُوْنُسَ وَأَبُوْ مُعَاوِيَةَ سَكْرَى وَمَا هُمْ بِسَكْرَى


আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


  তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ্ তা‘আলা বলবেন, হে আদম! তিনি বলবেন, হে রব! আমার সৌভাগ্য, আমি হাজির। তারপর তাকে উচ্চৈঃস্বরে ডেকে বলা হবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা‘আলা তোমাকে নির্দেশ দিতেছেন যে, তোমার বংশধর থেকে একদলকে বের করে জাহান্নামের দিকে নিয়ে আস। আদাম (‘আ.) বলবে, হে রব! জাহান্নামী দলের পরিমাণ কী? বলবে, প্রতি হাজার থেকে আমার ধারণা যে, বললেন, নয়শত নিরানব্বই, এ সময় গর্ভবতী মহিলা গর্ভপাত করবে, শিশুরা বৃদ্ধ হয়ে যাবে এবং তুমি মানুষকে দেখবে মাতাল; অথচ তারা নেশাগ্রস্ত নয়। বস্তুত আল্লাহ্‌র শাস্তি কঠিন। [পরে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ আয়াতটি পাঠ করলেন] ঃ এ কথা লোকদের কাছে ভয়ানক মনে হল, এমনকি তাদের চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, প্রতি হাজারে নয়শত নিরানব্বই জন তো ইয়াজুজ-মাজূজ থেকে নেয়া হবে এবং তোমাদের মধ্য থেকে একজন। আবার মানুষদের মধ্যে তোমাদের তুলনা হবে যেমন সাদা গরুর পার্শ্ব মধ্যে যেন একটি কালো পশম অথবা কালো গরুর পার্শ্বে যেন একটি সাদা পশম। আমি অবশ্য আশা রাখি যে, জান্নাতবাসীদের মধ্যে তোমরাই হবে এক-চতুর্থাংশ। (রাবী বলেন) আমরা সবাই খুশীতে বলে উঠলাম, ‘আল্লাহু আকবার’। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা হবে জান্নাতবাসীদের এক তৃতীয়াংশ। আমরা বলে উঠলাম, ‘আল্লাহু আকবার’। তারপর তিনি বললেন, তোমরা হবে জান্নাতবাসীদের অর্ধেক। আমরা বলে উঠলাম, ‘আল্লাহু আকবার’।

আ’মাশ থেকে উসামার বর্ণনায় এসেছে تَرَى النَّاسَ سُكَارَى وَمَا هُمْ بِسُكَارَى এবং তিনি বলেন, প্রতি হাজারে নয়শত নিরানব্বই জন।

জারীর, ঈসা, ইবনু ইউসুফ ও আবূ মু‘আবিয়াহ্র বর্ণনায় سُكَرَى এবং وَمَا هُمْ بِسُكَارَى রয়েছে। [৩৩৪৮] (আ.প্র. ৪৩৮০, ই.ফা. ৪৩৮২)  


ফুটনোট: [১] পবিত্র বাক্য দ্বারা ‘কালিমাহ তাওহীদ’ অথবা ‘কুরআন’কে বোঝানো হয়েছে।


সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৪৭৪১

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

সোর্স: আল হাদিস অ্যাপ, irdfoundation․com


হাদীস দুটো থেকে শিক্ষা, মাসায়েল ও জ্ঞাতব্য:


এক. দেখা গেল এক হাদীসে শতকরা নিরানব্বই জন জাহান্নামী হবে বলা হয়েছে। আবার অন্য হাদীসটিতে এক হাজারে নয়শত নিরানব্বই জনের কথা বলা হয়েছে। আসলে কোনটি সঠিক।


এর উত্তর হলো দুটোই সঠিক। যেখানে একশ জনে নিরানব্বই জনের কথা বলা হয়েছে সেখানে উম্মতে মুহাম্মাদী উদ্দেশ্য হবে। অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনের পরে যে সকল মানুষ জন্ম গ্রহণ করেছে তাদের একশজনের একজন জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে। আর যেখানে এক হাজারে নয়শত নিরানব্বই জনের কথা বলা হয়েছে সেখানে পৃথিবীর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যত মানুষ জন্ম নিয়েছে তাদের হাজারে একজন মুক্তি পাবে।

No comments

Powered by Blogger.