* গুনাহের সাগরে ডুবে আছি আমরা। একদিন গুনাহ মুক্ত কেটেছে বলা মুশকিল। হাত পায় চোখ কান অন্তরের মাধ্যমে গুনাহ হচ্ছে।
* লোক চক্ষুর অন্তরালে গুনাহ করছি। মানুষকে ফাঁকি দেওয়া যায় আল্লাহকে ফাঁকি দেওয়া যায় না। আল্লাহ সবকিছুর রেকর্ড করছেন। দুই কাদে সম্মানিত ফেরেশতাগণ। অপরদিকে এই অঙ্গগুলো একদিন সাক্ষী দিবে।
اَلْیَوْمَ نَخْتِمُ عَلٰۤى اَفْوَاهِهِمْ وَ تُكَلِّمُنَاۤ اَیْدِیْهِمْ وَ تَشْهَدُ اَرْجُلُهُمْ بِمَا كَانُوْا یَكْسِبُوْنَ
সূরা বনী ইসরাইলে বলা হয়েছে ৩৬
اِنَّ السَّمْعَ وَ الْبَصَرَ وَ الْفُؤَادَ كُلُّ اُولٰٓئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُوْلًا
#গুনাহ ইবাদতের স্বাধ থেকে বঞ্চিত রাখে। তখন নামায ইবাদত কুরআন তেলাওয়াত করতে ভালো লাগে না
#হযরত রাবেয়া বছরি ইবাদতের স্বাদ পেয়েছিল
* এই প্রচন্ড গরমে দুনিয়ার কোন কাজই বসে থাকি নি। পারিবারিক সামাজিক। শুধু নামাজে অজুহাত
* জাহান্নামের আগুন এর চেয়ে বেশি গরম ৯ আত-তওবা, আয়াত: ৮১
قُلْ نَارُ جَهَنَّمَ اَشَدُّ حَرًّا١ؕ لَوْ كَانُوْا یَفْقَهُوْنَ
* রাতদিন আল্লাহর সৃষ্টি সূরা ফোরকান
وَ هُوَ الَّذِیْ جَعَلَ الَّیْلَ وَ النَّهَارَ خِلْفَةً لِّمَنْ اَرَادَ اَنْ یَّذَّكَّرَ اَوْ اَرَادَ شُكُوْرًا
*। ঠান্ডা এবং গরম আল্লাহ পাকের সৃষ্টি। জাহান্নাম আপন প্রতিপালকের নিকট অভিযোগ করে বলেছিল
* এস্তেজকার নামাজ হচ্ছে বৃষ্টি হয় না কেন। বান্দার কাজ দোয়া করা।
* হযরত মুসা (আ.) এর আমলে দীর্ঘদিন যাবত বৃষ্টি বন্ধ ছিলো।
* আমাদের পাপের কারণেই আমাদের উপর যতো বিপদ মুসিবত
_____________________________________________________________
ইসতিসকা শব্দের অর্থ পানি প্রার্থনা করা বা বৃষ্টির জন্য দোয়া করা। যখন অনাবৃষ্টির কারণে দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে; নদী-খাল-জলাশয় শুকিয়ে যায়; মাঠে ফসলের ক্ষতি হয়; গাছপালা, উদ্ভিদ ও তৃণলতা জীর্ণ হয়ে যায়, জীবজন্তু ও পশুপাখির কষ্টের সীমা থাকে না; এমন বিপর্যয় থেকে রেহাই পেতে তখন আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতে হয়। অতীত গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে আকুতিভরে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা জানানোকে ইসতিসকা বলা হয়। এই নামাজকে ইসতিসকার নামাজ বলে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা সবর ও সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য কামনা করো। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৩)
সময় ও স্থান: সূর্যোদয়ের পর ২৩ মিনিটের মতো সময় অতিবাহিত হলে ইসতিসকার নামাজ পড়া যায়। উন্মুক্ত প্রান্তরে আদায় করা সুন্নত। প্রয়োজনে মসজিদেও পড়া যায়।
পদ্ধতি: অজু-গোসল করে পুরুষেরা, শিশুরা ও বৃদ্ধরা গরিবানা পোশাকে হেঁটে অবনত মাথায় খোলা মাঠে একত্র হবেন। সম্ভব হলে গৃহপালিত পশুও সঙ্গে নিতে পারেন। ময়দানে যাওয়ার আগে কিছু দানখয়রাত করবেন। দায়দেনা ও ঋণ পরিশোধ করবেন। সবাই খাঁটি অন্তরে তওবা করবেন।
ইমাম-মুসল্লি সবাই জামাকাপড় উল্টিয়ে পরিধান করবেন। আজান ও ইকামত ছাড়া, ইমাম বা পরহেজগার মুরব্বির ইমামতিতে নামাজ আদায় করবেন। প্রথম রাকাতে তাকবিরে তাহরিমার পর সাতবার তাকবির দিতে হবে; আর দ্বিতীয় রাকাতের রুকুর আগে পাঁচবার তাকবির দিতে হবে। প্রত্যেক তকবিরের সময় হাত ওঠাবে এবং তাকবিরগুলোর মাঝখানে সামান্য বিরতি নিয়ে আল্লাহর প্রশংসা এবং রাসুল (সা.)-এর ওপর দরুদ শরিফ পড়তে হবে।
অনেকের মতে, এই তাকবিরগুলোর প্রয়োজন নেই। কিরাত উচ্চ স্বরে পড়তে হবে। নামাজের পরে ইমাম সমভূমিতে দাঁড়িয়ে পরপর দুটি খুতবা দেবেন। খুতবায় বেশি বেশি ইস্তিগফার ও কোরআনের তওবা-ইস্তিগফার ও মাগফিরাতের আয়াত তিলাওয়াত করা বাঞ্ছনীয়।
খুতবার পর ইমাম কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে দুই হাত উল্টো করে সর্বোচ্চ ওপরে উত্তোলন করে বৃষ্টির জন্য কান্নাভরে করুণ স্বরে দোয়া করবেন। দোয়ায় কোরআন করিম ও হাদিস শরিফে বর্ণিত মাছনুন দোয়াগুলো বেশি পড়া উত্তম। মোনাজাতে ইসতিসকার খাছ দোয়াগুলো পড়া মুস্তাহাব। (সূত্র: আল হিদায়া, ই. ফা. বা.; আল ফিকহ আলা মাজাহিবিল আরবাআহ, হিছনুল মুসলিম)
ইসতিসকার দোয়া: আল্লাহুম্মাছকিনা গায়ছান মুগিছান মারিয়ান মারি ‘আন, নাফিআন, গায়রা দার্র, ‘আজিলান গায়রা আজিল। আল্লাহুম্মা আগিছনা, আল্লাহুম্মা আগিছনা, আল্লাহুম্মা আগিছনা। আল্লাহুম্মাছকি ইবাদাকা ওয়া বাহায়িমাকা ওয়ানশুর রহমাতাকা ওয়া আহয়ি বালাদাকাল মায়্যত। আমিন! বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন! অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনি দয়াপরবশ হয়ে অতিশিগগির আমাদের রহমতের বৃষ্টি দান করুন, যা আমাদের উপকারে আসে এবং যা আমাদের ক্ষতির কারণ না হয়। অতিদ্রুত; বিলম্বে নয়। হে আল্লাহ! বৃষ্টি দিন, হে আল্লাহ! বৃষ্টি দিন, হে আল্লাহ! বৃষ্টি দিন। হে আল্লাহ! আপনার বান্দাদের পানি দিন, পশু-প্রাণীগুলোকে পানি দিন, আপনার রহমত প্রসারিত করুন, মৃত ভূমিকে সজীব করে দিন। হে সকল দয়াময়ের শ্রেষ্ঠ দয়ালু, আপনি আমাদের দোয়া কবুল করুন।’ (আবু দাউদ)
* জাহান্নামের আগুন এর চেয়ে বেশি গরম ৯ আত-তওবা, আয়াত: ৮১
قُلْ نَارُ جَهَنَّمَ اَشَدُّ حَرًّا١ؕ لَوْ كَانُوْا یَفْقَهُوْنَ
তাদেরকে বলে দাও, জাহান্নামের আগুন এর চেয়েও বেশী গরম, হায়! যদি তাদের সেই চেতনা থাকতো!
২৫ আল-ফুরকান, আয়াত: ৬২
وَ هُوَ الَّذِیْ جَعَلَ الَّیْلَ وَ النَّهَارَ خِلْفَةً لِّمَنْ اَرَادَ اَنْ یَّذَّكَّرَ اَوْ اَرَادَ شُكُوْرًا
তিনিই রাত ও দিনকে পরস্পরের স্থলাভিষিক্ত করেছেন এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে শিক্ষা গ্রহণ করতে অথবা কৃতজ্ঞ হতে চায়।
* হযরত মুসা (আ.) এর আমলে দীর্ঘদিন যাবত বৃষ্টি বন্ধ ছিলো। তাঁর উম্মতরা তাঁর কাছে এসে বললো "হে নবী, আল্লাহর কাছে বৃষ্টির জন্য দোয়া করেন, এই বৃষ্টিহীন গরম আর সহ্য হয় না"।
হযরত মুসা (আ.) সবাইকে নিয়ে বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করতে শুরু করলেন।
দোয়া করার সাথে সাথে রোদের তীব্রতা আরো বেড়ে গেলো।
হযরত মুসা (আ.) অবাক হলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন-
আল্লাহ, বৃষ্টির জন্য দোয়া করলাম, তুমি রোদের তেজ বাড়াইয়া দিলা।
আল্লাহর পক্ষ থেকে জবাব আসলো-
- এই জমায়েতে এমন এক ব্যক্তি আছে, যে চল্লিশ বছর যাবত আমার নাফরমানী, আমার বিরোধীতা করছে, একটি দিনের জন্যও আমার বাধ্য হয়নি। তাঁর কারনেই বৃষ্টি আসা বন্ধ আছে।
হযরত মুসা (আ.) জমায়েতের দিকে তাকিয়ে, সেই অচেনা, অজানা লোকটিকে বের হয়ে যেতে বললেন।
সেই লোকটি ভাবলো, এখন যদি বের হয়ে যাই, তবে সবার সামনে পাপী হিসেবে লজ্জা পাবো। আর যদি থাকি, তবে বৃষ্টি আসা বন্ধ থাকবে।
নিজের ইজ্জত বাঁচানোর স্বার্থে সে আল্লাহর কাছে দোয়া করলো "আল্লাহ, চল্লিশ বছর আমার পাপ গোপন রেখেছেন, আজকে সবার সামনে বেইজ্জতি করবেন না। ক্ষমা চাচ্ছি"।
একদিকে দোয়া শেষ হলো, অন্যদিকে আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি শুরু হলো।
হযরত মুসা (আ.) আবারো অবাক হয়ে জিজ্জাসা করলেন-
আল্লাহ, কেউ তো জমায়েত থেকে বের হলো না, তবে বৃষ্টি দিয়ে দিলা যে?
আল্লাহ জবাব দিলেন-
- যার কারণে বৃষ্টি আসা বন্ধ ছিলো, তাঁর কারনেই বৃষ্টি শুরু হলো। আমি তাঁকে ক্ষমা করে দিয়েছি।
চল্লিশ বছরের পাপ, দশ সেকেন্ডে ক্ষমা...
হযরত মুসা (আ.) জিজ্জাসা করলেন-
- লোকটির নাম পরিচয় তো কিছুই জানালেন না।
আল্লাহ বললেন-
- যখন পাপে ডুবে ছিলো, তখনই জানাই নাই, এখন তওবা করেছে, এখন জানাবো? পাপীদের পাপ আমি যথাসম্ভব গোপন রাখি, এটা আমার সাথে আমার বান্দার নিজস্ব ব্যাপার।
অথচ আমরা নিজেরা পাপী হয়েও প্রতিদিন, প্রতিমুহূর্তে কারো না কারো নামে বদনাম / গীবত করতেই থাকি।
আল্লাহ আমাদের সকলের ছোট-বড় সকল পাপ মাফ করে দিন!
আমিন।
এই ঘটনাটি শায়েখ হানিউল হাজ্জ সংকলিত ‘আলফু কিসসাতুন কিসসাতুন মিন কাসাসিস সালিহীনা ওয়াস সালিহাত’ গ্রন্থের ৪১০ নম্বর পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে। এছাড়া শায়েখ ইবনে কুদামা আলমাকদিসী রচিত ‘আততাওয়াবীন’ গ্রন্থের ৫৫ নম্বর পৃষ্ঠায়ও একই ঘটনা বর্ণিত হয়েছে।
وَفِي رَوَايَةٍ لِلْبُخَارِىِّ عَنْ اَبِىْ سَعِيْدٍ بِالظُّهْرِ فَإِنَّ شِدَّةَ الْحَرِّ مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ وَاشْتَكَتْ النَّارُ إِلى رَبِّهَا فَقَالَتْ يَا رَبِّ أَكَلَ بَعْضِي بَعْضًا فَأَذِنَ لَهَا بِنَفَسَيْنِ نَفَسٍ فِي الشِّتَاءِ وَنَفَسٍ فِي الصَّيْفِ فَهُوَ أَشَدُّ مَا تَجِدُونَ مِنَ الْحَرِّ وَأَشَدُّ مَا تَجِدُونَ مِنَ الزَّمْهَرِيرِ . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ - وَفِىْ رَوَايَةٍ لِّلْبُخَارِىِّ فَاَشَدَّ مَا تَجِدُوْنَ مِنَ الْحَرِّ فَمِنْ سَمُوْمِهَا وَاَشَدُّ مَا تَجِدُوْنَ مِنَ الْبَرْدِ فَمِنْ زَمْهَرِيْرِهَا
আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বুখারীর অন্য এক বর্ণনায় আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, যুহরের সলাত ঠান্ডা সময়ে আদায় করবে। (অর্থাৎ আবূ হুরায়রাহর বর্ণনায় (আরবী) শব্দ ব্যবহার হয়েছে আর আবূ সা‘ঈদের বর্ণনায় (আরবী) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে) কারন গরমের প্রকোপ জাহান্নামের ভাপ। জাহান্নাম আপন প্রতিপালকের নিকট অভিযোগ করে বলেছিল, হে আমার আল্লাহ! (গরমের তীব্রতায়) আমার একাংশ অন্য অংশকে খেয়ে ফেলেছে। তখন আল্লাহ তাকে অনুমতি দিলেন দু’টি নিঃশ্বাস ফেলার। এক নিঃশ্বাস শীতকালে, আর এক নিঃশ্বাস গরমকালে। এজন্যই তোমরা গরমকালে তাপের তীব্রতা বেশী পাও। আর শীতকালে শীতের প্রচন্ডতা বেশী। [১]
বুখারীর আর এক বর্ণনায় আছে, তোমরা গরমের যে প্রচন্ডতা অনুভব কর তা জাহান্নামের গরম নিঃশ্বাাসের কারনেই। আর শীতের তীব্রতা যা পাও তা জাহান্নামের ঠান্ডা নিঃশ্বাসের কারনেই।
ফুটনোট: [১] সহীহ : বুখারী ৫৩৭-৫৩৮, মুসলিম ৬১৫, তিরমিযী ২৫৯২, ইবনু মাজাহ্ ৪৩১৯, আহমাদ ৭২৪৭, দারেমী ২৮৮৭, সহীহ ইবনু হিব্বান ৭৪৬৬।
মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস নং ৫৯১
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
সোর্স: আল হাদিস অ্যাপ, irdfoundation․com
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
No comments