190 সৃষ্টির সেরা তথা উৎকৃষ্ট মানুষ কে?
190 সৃষ্টির সেরা তথা উৎকৃষ্ট মানুষ কে?
* সবাই জান্নাতে যেতে চায় জান্নাতে যেতে হলে উৎকৃষ্ট মানুষ হতে হবে। আর তা হতে হলে ঈমান আর আমল লাগবে। আল-বাইয়েনাহ,৭
اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ١ۙ اُولٰٓئِكَ هُمْ خَیْرُ الْبَرِیَّةِؕ
প্রথমত: নেক আমলের বিনিময়ে আল্লাহ দুনিয়ায় পবিত্র জীবন দান করবেন এবং বিপদ থেকে মুক্তি দিবেন।
১১৬ আন-নহল,৯৭
مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِّنْ ذَكَرٍ اَوْ اُنْثٰى وَ هُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْیِیَنَّهٗ حَیٰوةً طَیِّبَةً١ۚ وَ لَنَجْزِیَنَّهُمْ اَجْرَهُمْ بِاَحْسَنِ مَا كَانُوْا یَعْمَلُوْنَ
* #দ্বিতীয়ত: নেক কাজের ওসিলা দিয়ে দুনিয়ায় নাজাত পাওয়া যায়,পরকালে ও নাজাত পাবে নেকের ওসিলায়। আমাদের পৃর্বের জমানায় তিন ব্যক্তি সফরে বের হয়ে তারা রাত কাটাবার জন্য একটি গুহায় আশ্রয় নেয় সহীহ বুখারী -2272
* ঈমান এবং নেক আমল একমাত্র ভরসা ইহজগৎ এবং পরজগতে
* সেদিন একজন একজন করে আসবে হিসাব দিতে কোন দল নাই মিছিল নাই। ঈমান আর নেক আমল হবে একমাত্র ভরসা
* ঈমান নাই নেক আমল নাই পয়গম্বর পিতাকে জান্নাতে নিতে ব্যর্থ।কিয়ামতে ইব্রাহিম (আ:) এর পিতার সাক্ষাত ঘঠবে
* নবীজি মেয়েকে বলেছেন হে ফাতেমা তুমি নিজেকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করো
____________________________________________
* ঈমান নাই নেক আমল নাই পয়গম্বর পিতাকে জান্নাতে নিতে ব্যর্থ।কিয়ামতে ইব্রাহিম (আ:) এর পিতার সাক্ষাত ঘঠবে
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَخِي عَبْدُ الْحَمِيدِ، عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " يَلْقَى إِبْرَاهِيمُ أَبَاهُ آزَرَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَعَلَى وَجْهِ آزَرَ قَتَرَةٌ وَغَبَرَةٌ، فَيَقُولُ لَهُ إِبْرَاهِيمُ أَلَمْ أَقُلْ لَكَ لاَ تَعْصِنِي فَيَقُولُ أَبُوهُ فَالْيَوْمَ لاَ أَعْصِيكَ. فَيَقُولُ إِبْرَاهِيمُ يَا رَبِّ، إِنَّكَ وَعَدْتَنِي أَنْ لاَ تُخْزِيَنِي يَوْمَ يُبْعَثُونَ، فَأَىُّ خِزْىٍ أَخْزَى مِنْ أَبِي الأَبْعَدِ فَيَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى إِنِّي حَرَّمْتُ الْجَنَّةَ عَلَى الْكَافِرِينَ، ثُمَّ يُقَالُ يَا إِبْرَاهِيمُ مَا تَحْتَ رِجْلَيْكَ فَيَنْظُرُ فَإِذَا هُوَ بِذِيخٍ مُلْتَطِخٍ، فَيُؤْخَذُ بِقَوَائِمِهِ فَيُلْقَى فِي النَّارِ ".
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ: নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কেয়ামতের দিন ইবরাহীম (‘আঃ) তার পিতা আযরের দেখা পাবেন। আযরের মুখমন্ডলে কালি এবং ধূলাবালি থাকবে। তখন ইবরাহীম (‘আঃ) তাকে বলবেন, আমি পৃথিবীতে আপনাকে বলিনি যে, আমার অবাধ্যতা করবেন না? তখন তাঁর পিতা বলবে, আজ আর তোমার অবাধ্যতা করব না। অতঃপর ইবরাহীম (‘আঃ) আবেদন করবেন, হে আমার রব! আপনি আমার সঙ্গে ওয়াদা করেছিলেন যে, হাশরের দিন আপনি আমাকে লজ্জিত করবেন না। আমার পিতা রহম হতে বঞ্চিত হবার চেয়ে বেশী অপমান আমার জন্য আর কী হতে পারে? তখন আল্লাহ বলবেন, আমি কাফিরের জন্য জান্নাত হারাম করে দিয়েছি। পুনরায় বলা হবে, হে ইবরাহীম! তোমার পদতলে কী? তখন তিনি নিচের দিকে তাকাবেন। হঠাৎ দেখতে পাবেন তাঁর পিতার জায়গায় সর্বাঙ্গে রক্তমাখা একটি জানোয়ার পড়ে রয়েছে। এর চার পা বেঁধে জাহান্নামে ছুঁড়ে ফেলা হবে। [১]
ফুটনোটঃ
[১] আল্লাহ্ তা’আলা ইবরাহীম (‘আঃ)-এর কাফির পিতার চেহারার পরিবর্তন ঘটিয়ে ইবরাহীম (‘আঃ)-কে অপমান থেকে বাঁচাবেন।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৩৫০
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
* নেক কাজের ওসিলা দিয়ে দুনিয়ায় নাজাত পাওয়া যায়,পরকালে ও নাজাত পাবে নেকের ওসিলায়। আমাদের পৃর্বের জমানায় তিন ব্যক্তি সফরে বের হয়ে তারা রাত কাটাবার জন্য একটি গুহায় আশ্রয় নেয় সহীহ বুখারী -2272
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، حَدَّثَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " انْطَلَقَ ثَلاَثَةُ رَهْطٍ مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكُمْ حَتَّى أَوَوُا الْمَبِيتَ إِلَى غَارٍ فَدَخَلُوهُ، فَانْحَدَرَتْ صَخْرَةٌ مِنَ الْجَبَلِ فَسَدَّتْ عَلَيْهِمُ الْغَارَ فَقَالُوا إِنَّهُ لاَ يُنْجِيكُمْ مِنْ هَذِهِ الصَّخْرَةِ إِلاَّ أَنْ تَدْعُوا اللَّهَ بِصَالِحِ أَعْمَالِكُمْ. فَقَالَ رَجُلٌ مِنْهُمُ اللَّهُمَّ كَانَ لِي أَبَوَانِ شَيْخَانِ كَبِيرَانِ، وَكُنْتُ لاَ أَغْبِقُ قَبْلَهُمَا أَهْلاً وَلاَ مَالاً، فَنَأَى بِي فِي طَلَبِ شَىْءٍ يَوْمًا، فَلَمْ أُرِحْ عَلَيْهِمَا حَتَّى نَامَا، فَحَلَبْتُ لَهُمَا غَبُوقَهُمَا فَوَجَدْتُهُمَا نَائِمَيْنِ وَكَرِهْتُ أَنْ أَغْبِقَ قَبْلَهُمَا أَهْلاً أَوْ مَالاً، فَلَبِثْتُ وَالْقَدَحُ عَلَى يَدَىَّ أَنْتَظِرُ اسْتِيقَاظَهُمَا حَتَّى بَرَقَ الْفَجْرُ، فَاسْتَيْقَظَا فَشَرِبَا غَبُوقَهُمَا، اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتُ فَعَلْتُ ذَلِكَ ابْتِغَاءَ وَجْهِكَ فَفَرِّجْ عَنَّا مَا نَحْنُ فِيهِ مِنْ هَذِهِ الصَّخْرَةِ، فَانْفَرَجَتْ شَيْئًا لاَ يَسْتَطِيعُونَ الْخُرُوجَ ". قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " وَقَالَ الآخَرُ اللَّهُمَّ كَانَتْ لِي بِنْتُ عَمٍّ كَانَتْ أَحَبَّ النَّاسِ إِلَىَّ، فَأَرَدْتُهَا عَنْ نَفْسِهَا، فَامْتَنَعَتْ مِنِّي حَتَّى أَلَمَّتْ بِهَا سَنَةٌ مِنَ السِّنِينَ، فَجَاءَتْنِي فَأَعْطَيْتُهَا عِشْرِينَ وَمِائَةَ دِينَارٍ عَلَى أَنْ تُخَلِّيَ بَيْنِي وَبَيْنَ نَفْسِهَا، فَفَعَلَتْ حَتَّى إِذَا قَدَرْتُ عَلَيْهَا قَالَتْ لاَ أُحِلُّ لَكَ أَنْ تَفُضَّ الْخَاتَمَ إِلاَّ بِحَقِّهِ. فَتَحَرَّجْتُ مِنَ الْوُقُوعِ عَلَيْهَا، فَانْصَرَفْتُ عَنْهَا وَهْىَ أَحَبُّ النَّاسِ إِلَىَّ وَتَرَكْتُ الذَّهَبَ الَّذِي أَعْطَيْتُهَا، اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتُ فَعَلْتُ ذَلِكَ ابْتِغَاءَ وَجْهِكَ فَافْرُجْ عَنَّا مَا نَحْنُ فِيهِ. فَانْفَرَجَتِ الصَّخْرَةُ، غَيْرَ أَنَّهُمْ لاَ يَسْتَطِيعُونَ الْخُرُوجَ مِنْهَا. قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ الثَّالِثُ اللَّهُمَّ إِنِّي اسْتَأْجَرْتُ أُجَرَاءَ فَأَعْطَيْتُهُمْ أَجْرَهُمْ، غَيْرَ رَجُلٍ وَاحِدٍ تَرَكَ الَّذِي لَهُ وَذَهَبَ فَثَمَّرْتُ أَجْرَهُ حَتَّى كَثُرَتْ مِنْهُ الأَمْوَالُ، فَجَاءَنِي بَعْدَ حِينٍ فَقَالَ يَا عَبْدَ اللَّهِ أَدِّ إِلَىَّ أَجْرِي. فَقُلْتُ لَهُ كُلُّ مَا تَرَى مِنْ أَجْرِكَ مِنَ الإِبِلِ وَالْبَقَرِ وَالْغَنَمِ وَالرَّقِيقِ. فَقَالَ يَا عَبْدَ اللَّهِ لاَ تَسْتَهْزِئْ بِي. فَقُلْتُ إِنِّي لاَ أَسْتَهْزِئُ بِكَ. فَأَخَذَهُ كُلَّهُ فَاسْتَاقَهُ فَلَمْ يَتْرُكْ مِنْهُ شَيْئًا، اللَّهُمَّ فَإِنْ كُنْتُ فَعَلْتُ ذَلِكَ ابْتِغَاءَ وَجْهِكَ فَافْرُجْ عَنَّا مَا نَحْنُ فِيهِ. فَانْفَرَجَتِ الصَّخْرَةُ فَخَرَجُوا يَمْشُونَ ".
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২২৭২
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
সোর্স: আল হাদিস অ্যাপ, irdfoundation․com
‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, তোমাদের পূর্ববর্তীদের মধ্যে তিন ব্যক্তি সফরে বের হয়ে তারা রাত কাটাবার জন্য একটি গুহায় আশ্রয় নেয়। হঠাৎ পাহাড় হতে এক খণ্ড পাথর পড়ে গুহায় মুখ বন্ধ হয়ে যায়। তখন তারা নিজেদের মধ্যে বলতে লাগল তোমাদের সৎকার্যাবলীর ওসীলা নিয়ে আল্লাহ্র কাছে দু’আ করা ছাড়া আর কোন কিছুই এ পাথর হতে তোমাদেরকে মুক্ত করতে পারে না। তখন তাদের মধ্যে একজন বলতে লাগল, হে আল্লাহ্! আমার পিতা-মাতা খুব বৃদ্ধ ছিলেন। আমি কখনো তাদের আগে আমার পরিবার পরিজনকে কিংবা দাস-দাসীকে দুধ পান করাতাম না। একদিন কোন একটি জিনিসের তালাশে আমাকে অনেক দূরে চলে যেতে হয়; কাজেই আমি তাঁদের ঘুমিয়ে পড়ার পূর্বে ফিরতে পারলাম না। আমি তাঁদের জন্য দুধ দোহায়ে নিয়ে এলাম। কিন্তু তাঁদেরকে ঘুমন্ত পেলাম। তাদের আগে আমার পরিবার-পরিজন ও দাস-দাসীকে দুধ পান করতে দেয়াটাও আমি পছন্দ করিনি। তাই আমি তাঁদের জেগে উঠার অপেক্ষায় পেয়ালাটি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম। এভাবে ভোরের আলো ফুটে উঠল। তারপর তাঁরা জাগলেন এবং দুধ পান করলেন। হে আল্লাহ্! যদি আমি তোমার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে এ কাজ করে থাকি, তবে এ পাথরের কারনে আমরা যে বিপদে পড়েছি, তা আমাদের হতে দূর করে দাও। ফলে পাথর সামান্য সরে গেল, কিন্তু তাতে তারা বের হতে পারল না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তারপর দ্বিতীয় ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহ্! আমার এক চাচতো বোন ছিল। সে আমার খুব প্রিয় ছিল। আমি তার সঙ্গে সঙ্গত হতে চাইলাম। কিন্তু সে বাধা দিল। তারপর এক বছর ভীষণ দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে সে আমার কাছে (সাহায্যের জন্য) এল। আমি তাকে একশ’ বিশ দীনার এ শর্তে দিলাম যে, সে আমার সাথে একান্তে মিলিত হবে, তাতে সে রাযী হল। আমি যখন সম্পূর্ণ সুযোগ লাভ করলাম, তখন সে বলল, আমি তোমাকে অবৈধভাবে মোহর ভাঙার অনুমতি দিতে পারি না। ফলে সে আমার সর্বাধিক প্রিয় হওয়া সত্ত্বেও আমি তার সাথে সঙ্গত হওয়া পাপ মনে করে তার কাছ হতে ফিরে আসলাম এবং তাকে যে স্বর্ণমুদ্রা দিয়েছিলাম, তাও ছেড়ে দিলাম। হে আল্লাহ্! আমি যদি এ কাজ তোমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য করে থাকি, তবে আমরা যে বিপদে পড়ে আছি তা দূর কর। তখন সেই পাথরটি (আরও একটু) সরে পড়ল। কিন্তু তাতে তারা বের হতে পারছিল না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তারপর তৃতীয় ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহ্! আমি কয়েকজন মজদুর নিয়োগ করেছিলাম এবং তাদেরকে তাদের মজুরীও দিয়েছিলাম, কিন্তু একজন লোক তার প্রাপ্য না নিয়ে চলে গেল। আমি তার মজুরীর টাকা খাটিয়ে তা বাড়াতে লাগলাম। তাতে প্রচুর ধন-সম্পদ অর্জিত হল। কিন্তু কিছুকাল পর সে আমার নিকট এসে বলল, হে আল্লাহ্র বান্দা! আমাকে আমার মজুরী দিয়ে দাও। আমি তাকে বললাম, এসব উট, গরু, ছাগল ও গোলাম যা তুমি দেখতে পাচ্ছ, তা সবই তোমার মজুরী। সে বলল, হে আল্লাহ্র বান্দা! তুমি আমার সাথে বিদ্রুপ করো না। তখন আমি বললাম, আমি তোমার সাথে মোটেই বিদ্রুপ করছি না। তখন সে সবই গ্রহণ করল এবং নিয়ে চলে গেল। তা হতে একটাও ছেড়ে গেল না। হে আল্লাহ্! আমি যদি তোমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য এ কাজ করে থাকি, তবে আমরা যে বিপদে পড়েছি, তা দূর কর। তখন সে পাথরটি সম্পূর্ণ সরে পড়ল। তারপর তারা বেরিয়ে এসে পথ চলতে লাগল।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২২৭২
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
সোর্স: আল হাদিস অ্যাপ, irdfoundation․com
وعن أبي عبد الرحمن عبد الله بن عمر بن الخطاب، رضي الله عنهما قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: " انطلق ثلاثة نفر ممن كان قبلكم حتى آواهم المبيت إلى غار فدخلوه، فانحدرت صخرة من الجبل فسدت عليهم الغار، فقالوا: إنه لا ينجيكم من هذه الصخرة إلا أن تدعوا الله بصالح أعمالكم. قال رجل منهم: اللهم كان لي أبوان شيخان كبيران، وكنت لا أغبق قبلهما أهلاً ولا مالاً. فنأى بى طلب الشجر يوماً فلم أرح عليهما حتى ناما فحلبت لهما غبوقهما فوجدتهما نائمين فكرهت أن أوقظهما وأن أغبق قبلهما أهلاً أو مالاً، فلبثت- والقدح على يدى- أنتظر استيقاظهما حتى برق الفجر والصبية يتضاغون عند قدمى- فاستيقظا فشربا غبوقهما. اللهم إن كنت فعلت ذلك ابتغاء وجهك ففرج عنا ما نحن فيه من هذه الصخرة، فانفرجت شيئاً لا يستطيعون الخروج منه. قال الآخر: اللهم إنه كانت لي ابنة عم كانت أحب الناس إلىّ " وفى رواية: "كنت أحبها كأشد ما يحب الرجال النساء، فأردتها على نفسها فامتنعت منى حتى ألمّت بها سنة من السنين فجاءتنى فأعطيتها عشرين ومائة دينار على أن تخلى بينى وبين نفسها ففعلت، حتى إذا قدرت عليها" وفى رواية: "فلما قعدت بين رجليها، قالت: اتق الله ولا تفض الخاتم إلا بحقه، فانصرفت عنها وهى أحب الناس إلى وتركت الذهب الذى أعطيتها، اللهم إن كنت فعلت ذلك ابتغاء وجهك فافرج عنا ما نحن فيه، فانفرجت الصخرة غير أنهم لا يستطيعون الخروج منها. وقال الثالث: اللهم استأجرت أجراء وأعطيتهم أجرهم غير رجل واحد ترك الذى له وذهب، فثمرت أجره حتى كثرت منه الأموال، فجاءنى بعد حين فقال: يا عبد الله أدّ إلى أجرى، فقلت: كل ما ترى من أجرك: من الإبل والبقر والغنم والرقيق. فقال: يا عبد الله لا تستهزئ بى! فقلت: لا أستهزئ بك، فأخذه كله فاستاقه فلم يترك منه شيئاً، اللهم إن كنتُ فعلت ذلك ابتغاء وجهك فافرج عنا ما نحن فيه، فانفرجت الصخرة فخرجوا يمشون" (متفق عليه).
আবূ আব্দুর রহমান আব্দুল্লাহ ইবনু উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, তোমাদের পূর্বে (বানী ইসরাঈলের যুগে) তিন ব্যক্তি একদা সফরে বের হল। চলতে চলতে রাত এসে গেল। সুতরাং তারা রাত কাটানোর জন্য একটি পর্বত-গুহায় প্রবেশ করল। অল্পক্ষণ পরেই একটা বড় পাথর উপর থেকে গড়িয়ে নীচে এসে গুহার মুখ বন্ধ করে দিল। এ দেখে তারা বলল যে, ‘এহেন বিপদ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে এই যে, তোমরা তোমাদের নেক আমলসমূহকে অসীলা বানিয়ে আল্লাহর কাছে দো‘আ কর।’ সুতরাং তারা সব সব আমলের অসীলায় (আল্লাহর কাছে) দো‘আ করতে লাগল।
তাদের মধ্যে একজন বলল, ‘‘হে আল্লাহ! তুমি জান যে, আমার অত্যন্ত বৃদ্ধ পিতা-মাতা ছিল এবং (এও জান যে,) আমি সন্ধ্যা বেলায় সবার আগে তাদেরকে দুধ পান করাতাম। তাদের পূর্বে স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে ও কৃতদাস-দাসী কাউকে পান করাতাম না। একদিন আমি গাছের খোঁজে দূরে চলে গেলাম এবং বাড়ী ফিরে দেখতে পেলাম যে পিতা-মাতা ঘুমিয়ে গেছে। আমি সন্ধ্যার দুধ দহন করে তাদের কাছে উপস্থিত হয়ে দেখলাম, তারা ঘুমিয়ে আছে। আমি তাদেরকে জাগানো পছন্দ করলাম না এবং এও পছন্দ করলাম না যে, তাদের পূর্বে সন্তান-সন্ততি এবং কৃতদাস-দাসীকে দুধ পান করাই। তাই আমি দুধের বাটি নিয়ে তাদের ঘুম থেকে জাগার অপেক্ষায় তাদের শিয়রে দাঁড়িয়ে থাকলাম। অথচ শিশুরা ক্ষুধার তাড়নায় আমার পায়ের কাছে চেঁচামেচি করছিল। এভাবে ফজর উদয় হয়ে গেল এবং তারা জেগে উঠল। তারপর তারা নৈশদুধ পান করল। হে আল্লাহ! আমি যদি এ কাজ তোমার সন্তুষ্টি বিধানের জন্য করে থাকি, তাহলে পাথরের কারণে আমরা যে গুহায় বন্দী হয়ে আছি এ থেকে তুমি আমাদেরকে উদ্ধার কর।’’
এই দো‘আর ফলস্বরূপ পাথর একটু সরে গেল। কিন্তু তাতে তারা বের হতে সক্ষম ছিল না।
দ্বিতীয়-জন দো‘আ করল, ‘‘হে আল্লাহ! আমার একটি চাচাতো বোন ছিল। সে আমার নিকট সকল মানুষের চেয়ে প্রিয়তমা ছিল। (অন্য বর্ণনা অনুযায়ী) আমি তাকে এত বেশী ভালবাসতাম, যত বেশী ভালবাসা পুরুষরা নারীদেরকে বাসতে পারে। একবার আমি তার সঙ্গে যৌন মিলন করার ইচ্ছা করলাম। কিন্তু সে অস্বীকার করল। পরিশেষে সে যখন এক দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ল, তখন সে আমার কাছে এল। আমি তাকে এই শর্তে ১২০ দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) দিলাম, যেন সে আমার সঙ্গে যৌন-মিলন করে। সুতরাং সে (অভাবের তাড়নায়) রাজী হয়ে গেল। অতঃপর যখন আমি তাকে আয়ত্তে পেলাম। (অন্য বর্ণনা অনুযায়ী) যখন আমি তার দু’পায়ের মাঝে বসলাম, তখন সে বলল, তুমি আল্লাহকে ভয় কর এবং অবৈধভাবে (বিনা বিবাহে) আমার পবিত্রতা নষ্ট করো না। সুতরাং আমি তার কাছ থেকে দূরে সরে গেলাম; যদিও সে আমার একান্ত প্রিয়তমা ছিল এবং যে স্বর্ণমুদ্রা আমি তাকে দিয়েছিলাম তাও পরিত্যাগ করলাম। হে আল্লাহ! যদি আমি এ কাজ তোমার সন্তুষ্টির জন্য করে থাকি, তাহলে তুমি আমাদের উপর পতিত মুসীবতকে দূরীভূত কর।’’
সুতরাং পাথর আরো কিছুটা সরে গেল। কিন্তু তাতে তারা বের হতে সক্ষম ছিল না।
তৃতীয়জন দো‘আ করল, ‘‘হে আল্লাহ! আমি কিছু লোককে মজুর রেখেছিলাম। (কাজ সুসম্পন্ন হলে) আমি তাদের সকলকে মজুরী দিয়ে দিলাম। কিন্তু তাদের মধ্যে একজন মজুরী না নিয়ে চলে গেল। আমি তার মজুরীর টাকা ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করলাম। (কিছুদিন পর) তা থেকে প্রচুর অর্থ জমে গেল। কিছুকাল পর একদিন সে এসে বলল, ‘হে আল্লাহর বান্দা! তুমি আমার মজুরী দিয়ে দাও।’ আমি বললাম, ‘এসব উঁট, গাভী, ছাগল এবং গোলাম (বাঁদি) যা তুমি দেখছ তা সবই তোমার মজুরীর ফল।’ সে বলল, ‘হে আল্লাহর বান্দা! তুমি আমার সঙ্গে উপহাস করবে না।’ আমি বললাম, ‘আমি তোমার সঙ্গে উপহাস করিনি (সত্য ঘটনাই বর্ণনা করছি)।’ সুতরাং আমার কথা শুনে সে তার সমস্ত মাল নিয়ে চলে গেল এবং কিছুই ছেড়ে গেল না। হে আল্লাহ! যদি আমি এ কাজ একমাত্র তোমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য করে থাকি, তাহলে যে বিপদে আমরা পড়েছি তা তুমি দূরীভূত কর।’’ এর ফলে পাথর সম্পূর্ণ সরে গেল এবং সকলেই (গুহা থেকে) বের হয়ে চলতে লাগল।[১]
ফুটনোট: [১] সহীহুল বুখারী ২২১৫, ২২৭২, ২৩৩৩, ৩৪৬৫, ৫৯৭৪, মুসলিম ২৭৪৩, আবূ দাউদ ৩৩৮৭, আহমাদ ৫৯৩৭
রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৩
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
সোর্স: আল হাদিস অ্যাপ, irdfoundation․com
وَعَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ : لَمَّا نَزَلَت هَذِهِ الآيَةُ : ﴿ وَأَنذِرۡ عَشِيرَتَكَ ٱلۡأَقۡرَبِينَ ٢١٤ ﴾ [الشعراء: ٢١٤] دَعَا رَسُولُ الله صلى الله عليه وسلم قُرَيْشاً، فَاجْتَمَعُوا فَعَمَّ وَخَصَّ، وَقالَ: «يَا بَنِي عَبْدِ شَمْسٍ، يا بَنِي كَعْبِ بْنِ لُؤَيٍّ، أنقِذُوا أنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ، يَا بَنِي مُرَّةَ بنِ كَعْبٍ، أنْقِذُوا أنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ، يَا بَنِي عَبْدِ مَنَاف، أنْقِذُوا أنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ، يَا بَنِي هَاشِم، أَنقِذُوا أَنفُسَكُم مِنَ النَّار، يَا بَني عَبدِ الْمُطَّلِب، أَنقِذُوا أَنفُسَكُم مِنَ النَّار، يَا فَاطِمَةُ، أنْقِذِي نَفْسَكِ مِنَ النَّارِ . فَإنِّي لاَ أمْلِكُ لَكُمْ مِنَ اللهِ شَيئاً، غَيْرَ أنَّ لَكُمْ رَحِماً سَأبُلُّهَا بِبِلالِهَا». رواه مسلم
১৮/৩৩৪। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ’আনহু কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হল যার অর্থ হল, ’’তুমি তোমার নিকট আত্মীয়বর্গকে সতর্ক কর।’’ (সূরা শুআরা ২১৪ আয়াত) তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরায়েশ (সম্প্রদায়)কে আহ্বান করলেন। সুতরাং তারা একত্রিত হল। অতঃপর তিনি সাধারণ ও বিশেষভাবে (সম্বোধন করে) বললেন, ’’হে বানী আব্দে শাম্স! হে বানী কা’ব ইবনুলুআই! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও। হে বানী মুর্রাহ ইবনু কা’ব! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও। হে বানী আব্দে মানাফ! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও। হে বানী হাশেম! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও। হে বানী আব্দিল মুত্তালিব! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও।
হে ফাতেমা! তুমি নিজেকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও। কারণ, আমি আল্লাহর নিকট তোমাদের (উপকার-অপকার) কিছুরই মালিক নই। তবে তোমাদের সাথে (আমার) যে আত্মীয়তা রয়েছে তা আমি (দুনিয়াতে) অবশ্যই আর্দ্র রাখব। (আখেরাতে আমার আনুগত্য ছাড়া আত্মীয়তা কোনো কাজে আসবে না।)’’ (মুসলিম) [1]
* উক্ত হাদীসে আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করাকে আগুনের সাথে উপমা দেওয়া হয়েছে, যা পানি দিয়ে নিভাতে হয়। তাই আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখাকে তা আর্দ্র বা ভিজে রাখা বলা হয়েছে।
بَابُ بِرِّ الْوَالِدَيْنِ وَصِلَةِ الأَرْحَامِ - (40)
وَعَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ : لَمَّا نَزَلَت هَذِهِ الآيَةُ : ﴿ وَأَنذِرۡ عَشِيرَتَكَ ٱلۡأَقۡرَبِينَ ٢١٤ ﴾ [الشعراء: ٢١٤] دَعَا رَسُولُ الله صلى الله عليه وسلم قُرَيْشاً، فَاجْتَمَعُوا فَعَمَّ وَخَصَّ، وَقالَ: «يَا بَنِي عَبْدِ شَمْسٍ، يا بَنِي كَعْبِ بْنِ لُؤَيٍّ، أنقِذُوا أنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ، يَا بَنِي مُرَّةَ بنِ كَعْبٍ، أنْقِذُوا أنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ، يَا بَنِي عَبْدِ مَنَاف، أنْقِذُوا أنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ، يَا بَنِي هَاشِم، أَنقِذُوا أَنفُسَكُم مِنَ النَّار، يَا بَني عَبدِ الْمُطَّلِب، أَنقِذُوا أَنفُسَكُم مِنَ النَّار، يَا فَاطِمَةُ، أنْقِذِي نَفْسَكِ مِنَ النَّارِ . فَإنِّي لاَ أمْلِكُ لَكُمْ مِنَ اللهِ شَيئاً، غَيْرَ أنَّ لَكُمْ رَحِماً سَأبُلُّهَا بِبِلالِهَا». رواه مسلم
وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال لما نزلت هذه الاية وانذر عشيرتك الاقربين 214 الشعراء 214 دعا رسول الله صلى الله عليه وسلم قريشا فاجتمعوا فعم وخص وقال يا بني عبد شمس يا بني كعب بن لوي انقذوا انفسكم من النار يا بني مرة بن كعب انقذوا انفسكم من النار يا بني عبد مناف انقذوا انفسكم من النار يا بني هاشم انقذوا انفسكم من النار يا بني عبد المطلب انقذوا انفسكم من النار يا فاطمة انقذي نفسك من النار فاني لا املك لكم من الله شيىا غير ان لكم رحما سابلها ببلالها رواه مسلم
[1] সহীহুল বুখারী ২৭৫৩, ৩৫২৭, ৪৭৭১, মুসলিম ২০৪, ২০৬, তিরমিযী ৩০৯৪, নাসায়ী ৩৬৪৪, ৩৬৪৬, ৩৬৪৭, আহমাদ ৮১৯৭, ৮৩৯৫, ৮৫০৯, ৮৯২৬, ৯৫০১, দারেমী ২৭৩২
No comments