187 আল্লাহপাক এবং আমাদের দৃষ্টিতে প্রকৃত সম্মানিত ব্যক্তি কে
187 আল্লাহপাক এবং আমাদের দৃষ্টিতে প্রকৃত সম্মানিত ব্যক্তি কে
* আজকে আমি যে বিষয়ের উপর কথা বলতে যাচ্ছি সেটি হচ্ছে আল্লাহপাক এবং আমাদের দৃষ্টিতে প্রকৃত সম্মানিত ব্যক্তি কে
* দুনিয়ার মানুষের কাছে সম্মানিত হলেই সফলতা নয় আল্লাহর কাছে যদি সম্মানিত না হয়
* এমপি মন্ত্রী ম্যাজিস্ট্রেট কোটি টাকার মালিক বা বড় নেতা হলে হয়তো মানুষের কাছে সম্মানিত হওয়া যায় কিন্তু আল্লাহর কাছে সম্মানিত হতে হলে কিছু গুণাবলী অর্জন করতে হবে
1#তাক্বওয়া। প্রশ্ন আল্লাহ পাক কেন তাকওয়ার কথা বলেছেন
* আমার মৃত্যুর পর আসমান জমিন কাঁদবে এটাই হচ্ছে সফলতার জীবন। মুমিন ব্যক্তি হচ্ছে সম্মানিত ব্যক্তি। মুমিন হতে হলে তাকওয়া লাগবে। সফলকাম মুমিনের দশটি গুণাবলী আল্লাহ সূরা মুমিনের মধ্যে বলেছেন
* মোল্লা,পীর, ভুঁইয়া বংশের লোক,আরব সম্প্রদায়ের লোকজন হলেই সম্মানিত নয়, একমাত্র আল্লাহর কাছে সম্মানিত কারা, আল্লাহ নিজেই পরিচয় দিচ্ছেন ৪৯: আল-হুজুরাত: ১৩
یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ اِنَّا خَلَقْنٰكُمْ مِّنْ ذَكَرٍ وَّ اُنْثٰى وَ جَعَلْنٰكُمْ شُعُوْبًا وَّ قَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوْا١ؕ اِنَّ اَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللّٰهِ اَتْقٰىكُمْ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلِیْمٌ خَبِیْرٌ
* তাকওয়া বান লোকদের পক্ষে মালে ভেজাল দেওয়া সম্ভব নয়
* মা মেয়েকে দুধে পানি মেশাতে বললেন মেয়ে কি বলল সেখানে
* তাকওয়ায় ভাগ্য পরিবর্তন করে,* তাকওয়ায় ভাগ্য পরিবর্তন করে, দুধে পানি মেশাননি, এই তাকওয়া ও সততার কারণে গরিব মেয়েটির ভাগ্য খুলে গেল:-
ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর রা:। বিশাল সাম্রাজ্যের সম্রাট তিনি। মহান বীর।সাহসী পুরুষ। তাকে ভয় পায় না এমন বীর আরবে কেউ নেই। অথচ এই মানুষের মনটা ছিল কোমল, নরম।বিশাল মনের দরদি মানুষ তিনি। খলিফা হলে কী হবে, তার ভাবনার।যেন শেষ নেই। তিনি সারাক্ষণ জনগণের কথা ভাবেন। প্রজারা কে কষ্টে আছে, কেউ কি না খেয়ে আছেÑ এমন ভাবনায় তার মন সব সময় ছটফট করে। তিনি জানতে চান তার জনগণের দুঃখ-দুর্দশার কথা। খলিফার মনে তাই স্বস্তি নেই। তিনি প্রায়ই রাতের আঁধারে মদিনার রাস্তায় বেড়িয়ে পড়েন। কখনো একা, কখনো ভৃত্য আসলামকে নিয়ে না রাতের মনোরম আকাশ,নয়নাভিরাম চাঁদ-তারকা দেখার জন্য নয়; ঘুরে বেড়ান প্রজাদের অবস্থা দেখার জন্য, জানার জন্য।একদিন গভীর রাত। মদিনা শহরের মানুষ ঘুমিয়ে পড়েছে। কোথাও সাড়া শব্দ নেই। এমনি এক রাতে মহামতি উমর রা: মদিনার রাস্তায় ঘুরছিলেন জনগণের অবস্থা দেখার জন্য।হাঁটতে হাঁটতে তিনি অনেক দূর এগিয়ে এলেন। চার দিকে নীরব লোকালয়। কেউ জেগে নেই। এক সময় খলিফা খুব কান্ত হয়ে পড়লেন।তাই তিনি এক ঘরের দেয়ালে হেলান দিয়ে খানিকটা বিশ্রাম নেয়ার চেষ্টা করলেন। হঠাৎ তার কানে কিছু মহিলার কথা বলার শব্দ ভেসে এলো। তারা কী জানি বলাবলি করছিল। গভীর রাত অথচ মহিলারা জেগে আছে। কোনো আপদ-বিপদ হয়নি তো? খলিফার মন বিচলিত হয়ে উঠল। তাই খলিফা কান খাড়া করলেন। তিনি মহিলাদের কথা বোঝার চেষ্টা করলেন। একজন মহিলা বলছিল, ‘উঠো আমার মেয়ে। জলদি উঠো। দুধের মধ্যে খানিকটা পানি মেশাও। তাড়াতাড়ি করো।’ এ কথার পর খানিকটা বিরতি। সাড়াশব্দ নেই। উমর রা: উদগ্রীব হয়ে আছেন মেয়ের কথা শোনার জন্য। একটু পরেই মেয়েটি বলে উঠল, ‘মা,তুমি এটা কী বলছ? তুমি কি আমাদের খলিফার নির্দেশ জানো না? আমাদের খলিফা আদেশ জারি করেছেন,দুধে পানি মেশানো যাবে না।’ একথা শোনার পর মা আবারো বলল।‘তোমার খলিফার কথা শোনার দরকার নেই। যাও দুধে পানি মেশাও। তোমার খলিফা তো আর এখানে নেই। তুমি দুধে পানি মেশালে তিনি কী করে জানবেন?মিছেমিছি তুমি এসব কথা ভেবে সময় নষ্ট করো না।যা বলছি তা করো গিয়ে।’মেয়েটি বলল, ‘ও মা, মাগো! তুমি একী কথা বলছো! আমরা সামনা সামনি খলিফার কথা মান্য করব আর একাকী করব না, এটা হয় না।কেননা উমর আমাদের কাজ না দেখলেও তার স্রষ্টা তো দেখছেন। তার চোখকে ফাঁকি দেবে কিভাবে? মা ও মেয়ে উভয়ের কথা খলিফা উমর রা: মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন। এবারে মেয়েটির কথা শুনে উমর রা: অবাক হলেন। তার খোদাভীতি ও সততায় খলিফা মোহিত হলেন। আর মহান আল্লাহর কাছে তার জন্য মনভরে দোয়া করলেন। সেদিন খলিফার সাথে ছিলেন তার গোলাম আসলাম। রাত গভীর হয়ে এলো। খলিফা আজ আর দেরি করলেন না। তিনি ফিরে চললেন আপন ঠিকানায়। তবে রওনা দেয়ার সময় উমর রা: আসলামকে বললেন, ‘এ বাড়ির ঠিকানা তুমি জেনে রেখো।’ এ কথা বলার পর খলিফা সেই স্থান ত্যাগ করলেন। নীরব শহর মদিনার পথে যখন হাঁটছেন তখন খলিফার মনে বারবার নাড়া দিচ্ছিল মেয়েটির সেই সুন্দর কথাগুলো। পরদিন সকালে উমর রা: ভৃত্য আসলামকে ডেকে মহিলার বাড়িতে পাঠালেন। আর বলে দিলেন মা ও মেয়ের খোঁজ নিতে। আসলাম আর দেরি করলেন না। তিনি দ্রুত ছুটে গেলেন ওই বাড়িতে। তাদের খোঁজখবর নিলেন। তিনি জানতে পারলেন ওই বাড়িতে মা ও মেয়ে দু’জনই থাকেন। মেয়েটির বাবা নেই। আরো জানা গেল মেয়েটি বিবাহিত নয়। আসলাম ফিরে এসে সব কিছু খলিফাকে খুলে বললেন। আসলামের কথা শুনে খলিফার মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। তিনি খুশি হলেন।এক অজানা তৃপ্তির আলোয় খলিফার মন যেন ভরে উঠল। হজরত উমর রা:-এর তিন ছেলে। এরা হলেন আবদুল্লাহ, আবদুর রহমান ও আসিম।আবদুল্লাহ ও আবদুর রহমান বিয়ে করেছেন আসিমের এখনো বিয়ে হয়নি। উমর রা: ভাবলেন মেয়েটির সাথে আসিমের বিয়ে দেবেন। খলিফা মেয়েটির সুন্দর চরিত্র ও সততার কথা পুত্র আসিমকে খুলে বললেন। আর তাকে বিয়ে করার প্রস্তাবও ছেলেকে জানালেন। আসিম বাবার কথায় রাজি হয়ে গেলেন।ষ অবশেষে মেয়েটি হজরত উমর রা: এর ঘরে এলো পুত্র আসিমের বউ হয়ে। সততার কারণে গরিব মেয়েটির ভাগ্য বদলে গেল।
No comments