Header Ads

Header ADS

 84/  180 হিংসা এবং সচ্ছরিত্রা একত্রিত নয়




* আল্লাহ্‌র বান্দার অন্তরে ঈমান ও হিংসা একত্রিত হবে না। ঈমান বিহীন নেক আমল আর হিংসাযুক্ত নেক আমল এক কথা। সুনানে আন-নাসায়ী,৩১০৯




عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ: وَلَا يَجْتَمِعَانِ فِي قَلْبِ عَبْدٍ الْإِيمَانُ وَالْحَسَدُ




* হিংসা ছেরে ক্ষমা ও ভালবাসতে শিখি,হিংসা ভালবাসা এক নয়,হিংসা এমন এক বদ আখলাক যা নেক গুলোকে খেয়ে ফেলে, সুনানে আবু দাউদ,৪৯০৩




عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ قَالَ‏"‏ إِيَّاكُمْ وَالْحَسَدَ فَإِنَّ الْحَسَدَ يَأْكُلُ الْحَسَنَاتِ كَمَا تَأْكُلُ النَّارُ الْحَطَبَ‏.‏ أَوْ قَالَ‏"‏ الْعُشْبَ




* রাসূল (সা:) এর দ্বীন প্রচারে মুক্কার র কাফেরগন হিংসায় চরম বিরোধীতায় লেগে গেল, চারটি প্রস্তাব- রাষ্ট ক্ষমতা,কত টাকা চাও,সুন্দরী নারী চাও, এক বছর আমাদের প্রতিমার ইবাদত করো, পরের বছর তোমার মাবুদের ইবাদত করবো, রাসূল (সা:) প্রতি সূরা কাফিরুন নাযিল হলে তা জানিয়ে দেন




* দ্বিতীয়ত্ব হিংসুকের অনিষ্টতা থেকে বাচার জন্য আল্লাহ সূরা ফালাক নাযিল করেন-




 قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ-مِن شَرِّ مَا خَلَقَ - وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ وَمِن شَرِّ النَّفّٰثٰتِ فِى الْعُقَدِ - وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ




* আমি পুরুষ যাদুকর বা মহিলা যাদুকরদের অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য প্রভাতের রবের আশ্রয় চাচ্ছি। নবীজির দাওয়াতী ইসলামের প্রসার দেখে হিংসায় নবীজিকে মেরে ফেলতে যাদু করালো




* যাদু করলো আল্লাহর নবীকে মারার জন্য। মদীনার ইয়াহূদী গোত্র বনু যুরাইকের মিত্র লাবীদ বিন আসাম নামক জনৈক মুনাফিক তার মেয়েকে দিয়ে রাসূল (সাঃ)-এর মাথার ছিন্নচুল ও চিরুনীর ছিন্ন দাঁত চুরি করে তাতে জাদু করে এবং মন্ত্র পাঠ করে চুলে ১১টি গিরা দেয়, বনু যুরাইকের খেজুর বাগানে যারওয়ান কূয়ার তলদেশে পাথরের নীচে চাপা দেয়া খেজুরের কাঁদির শুকনো খোসার মধ্যে ঐ জাদু করা চুল ও চিরুনীর দাঁত রয়েছে। আল্লাহ রাসুল অসু্স্থ হয়ে গেলেন। এমন অসু্স বলেন যে হযরত আয়শা রা: বলেন।---অতপর রাসূল (সাঃ) আল্লাহর হুকুমে সূরাদ্বয় পড়ে ফুঁ দিয়ে গিরাগুলো খুলে ফেলেন এবং তিনি সুস্থ হয়ে যান। সহিহ বুখারী:৫৭৬৫




عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ سُحِرَ حَتَّى كَانَ يَرَى أَنَّهُ يَأْتِي النِّسَاءَ وَلاَ يَأْتِيهِنَّ‏.‏ قَالَ سُفْيَانُ وَهَذَا أَشَدُّ مَا يَكُونُ مِنَ السِّحْرِ إِذَا كَانَ كَذَا‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ يَا عَائِشَةُ أَعَلِمْتِ أَنَّ اللَّهَ قَدْ أَفْتَانِي فِيمَا اسْتَفْتَيْتُهُ فِيهِ، أَتَانِي رَجُلاَنِ فَقَعَدَ أَحَدُهُمَا عِنْدَ رَأْسِي، وَالآخَرُ عِنْدَ رِجْلَىَّ، فَقَالَ الَّذِي عِنْدَ رَأْسِي لِلآخَرِ مَا بَالُ الرَّجُلِ قَالَ مَطْبُوبٌ‏.‏ قَالَ وَمَنْ طَبَّهُ قَالَ لَبِيدُ بْنُ أَعْصَمَ، رَجُلٌ مِنْ بَنِي زُرَيْقٍ حَلِيفٌ لِيَهُودَ، كَانَ مُنَافِقًا‏.‏ قَالَ وَفِيمَ قَالَ فِي مُشْطٍ وَمُشَاقَةٍ‏.‏ قَالَ وَأَيْنَ قَالَ فِي جُفِّ طَلْعَةٍ ذَكَرٍ، تَحْتَ رَعُوفَةٍ، فِي بِئْرِ ذَرْوَانَ ‏"‏‏.‏ قَالَتْ : فَأَتَى النَّبِيُّ ﷺ الْبِئْرَ حَتَّى اسْتَخْرَجَهُ فَقَالَ ‏"‏ هَذِهِ الْبِئْرُ الَّتِي أُرِيتُهَا، وَكَأَنَّ مَاءَهَا نُقَاعَةُ الْحِنَّاءِ، وَكَأَنَّ نَخْلَهَا رُءُوسُ الشَّيَاطِينِ ‏"‏‏.‏ قَالَ فَاسْتُخْرِجَ، قَالَتْ فَقُلْتُ أَفَلاَ أَىْ تَنَشَّرْتَ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ أَمَا وَاللَّهِ فَقَدْ شَفَانِي، وَأَكْرَهُ أَنْ أُثِيرَ عَلَى أَحَدٍ مِنَ النَّاسِ شَرًّا




অর্থ- আয়িশাহ রা: থেকে বর্ণিত: রাসূল সা: এর উপর একবার যাদু করা হয়। এমন অবস্থা হয় যে, তাঁর মনে হতো তিনি বিবিগণের কাছে এসেছেন, অথচ তিনি আদৌ তাঁদের কাছে আসেননি। সুফ্‌ইয়ান বলেনঃ এ অবস্থা যাদুর চরম প্রতিক্রিয়া। বর্ণনাকারী বলেন, একদিন রাসূল সা: ঘুম থেকে জেগে উঠেন এবং বলেনঃ হে আয়িশাহ! তুমি জেনে নাও যে, আমি আল্লাহ্‌র কাছে যে বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম তিনি আমাকে তা বলে দিয়েছেন। (স্বপ্নে দেখি) আমার নিকট দু'জন লোক এলেন। তাদের একজন আমার মাথার কাছে এবং অপরজন আমার পায়ের নিকট বসলেন। আমার কাছের লোকটি অন্যজনকে জিজ্ঞেস করলেনঃ এ লোকটির কী অবস্থা? দ্বিতীয় লোকটি বললেনঃ একে যাদু করা হয়েছে। প্রথমজন বলেনঃ কে যাদু করেছে? দ্বিতীয় জন বলেন, লাবীদ ইবনু আ’সাম। এ ইয়াহূদীদের মিত্র যুরায়ক্ব গোত্রের একজন, সে ছিল মুনাফিক। প্রথম ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেনঃ কিসের মধ্যে যাদু করা হয়েছে? দ্বিতীয় ব্যক্তি উত্তর দিলেনঃ চিরুনী ও চিরুনী করার সময় উঠে যাওয়া চুলের মধ্যে। প্রথম ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেনঃ সেগুলো কোথায়? উত্তরে দ্বিতীয়জন বললেনঃ পুং খেজুর গাছের জুবের মধ্যে রেখে ‘যারওয়ান’ কূপের ভিতর পাথরের নীচে রাখা আছে। রাসূল সা: উক্ত কূপের নিকট এসে সেগুলো বের করেন এবং বলেনঃ এইটিই সেই কূপ, যা আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। এর পানি মেহদী মিশ্রিত পানির তলানীর মত, আর এ কূপের (পার্শ্ববর্তী) খেজুর গাছের মাথাগুলো (দেখতে) শয়তানের মাথার ন্যায়। বর্ণনাকারী বলেনঃ সেগুলো তিনি সেখান থেকে বের করেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলামঃ আপনি কি একথা প্রকাশ করে দিবেন না? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্‌র কসম, তিনি আমাকে আরোগ্য দান করেছেন; আর আমি মানুষকে এমন বিষয়ে প্ররোচিত করতে পছন্দ করি না, যাতে অকল্যাণ রয়েছে। নবীজি নিজের শত্রুর দোষ গোপন রাখলেন। চুল তুলে আনলে উক্ত সূরা নাযিল হয়




* হিংসুক থেকে বেঁচে থাকার জন্য সূরা ইখলাস, ফালাক,ও নাসের আমল,সকালে ও সন্ধ্যায় তিনবার করে এ সূরাহ গুলো পড়বে,সকল বিপদাপদের মুকাবিলার জন্য যথেষ্ট হবে।-(তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও নাসায়ী)




মিশকাতুল মাসাবিহ,২১৬৩




وَعَنْ عَبْدِ اللّٰهِ بْنِ خُبِيْبٍ قَالَ: خَرَجْنَا فِىْ لَيْلَةِ مَطَرٍ وَظُلْمَةٍ شَدِيدَةٍ نَطْلُبُ رَسُوْلَ اللّٰهِ ﷺ فَأَدْرَكْنَاهُ فَقَالَ: قُلْ. قُلْتُ مَا أَقُولُ؟ قَالَ: قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ : وَالْمُعَوِّذَتَيْنِ حِينَ تُصْبِحُ وَحِينَ تُمْسِىْ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ تَكْفِيكَ مِنْ كُلِّ شَىْءٍ. رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِىُّ




অর্থ ‘আবদুল্লাহ ইবনু খুবায়ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমরা একবার ঝড়-বৃষ্টি ও ঘনঘোর অন্ধকারময় রাতে রাসূল সা: এর খোঁজে বের হলাম এবং তাঁকে খুঁজে পেলাম। (তিনি আমাদেরকে দেখে) তখন বললেন, পড়ো! আমি বললাম, কি পড়বো (হে আল্লাহর রসূল!)? তিনি (সা:) বললেন, সকালে ও সন্ধ্যায় তিনবার করে কুল হুওয়াল্ল-হু আহাদ, ক্বুল আ‘ঊযু বিরাব্বিল ফালাক ও ক্বুল আ‘ঊযু বিরাব্বিন্‌না-স পড়বে। এ সূরাহগুলো সকল বিপদাপদের মুকাবিলায় তোমার জন্য যথেষ্ট হবে।




* প্রতি রাতে শোয়ার জন্য তাঁর বিছানায় এসে দুই হাত একত্র করে। উক্ত দোয়া পড়ে (হাতে) ফুঁক দিতেন।সুনানে আবু দাউদ,৫০৫৬




عَنْ عَائِشَةَ، رضى الله عنها أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ كَانَ إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ كُلَّ لَيْلَةٍ جَمَعَ كَفَّيْهِ ثُمَّ نَفَثَ فِيهِمَا وَقَرَأَ فِيهِمَا ‏:‏ قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ ‏:‏ وَ ‏: قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ ‏:‏ وَ ‏:‏ قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ ‏: ثُمَّ يَمْسَحُ بِهِمَا مَا اسْتَطَاعَ مِنْ جَسَدِهِ يَبْدَأُ بِهِمَا عَلَى رَأْسِهِ وَوَجْهِهِ وَمَا أَقْبَلَ مِنْ جَسَدِهِ يَفْعَلُ ذَلِكَ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ ‏




অর্থ- আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী সা: প্রতি রাতে শোয়ার জন্য তাঁর বিছানায় এসে দুই হাত একত্র করে ‘কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’, ‘কুল আ’ঊযুবিরব্বিল ফালাক্ব’ ও ‘কুল আ’ঊযুবি রব্বিন্‌ নাস’ সূরাহ তিনটি পড়ে (হাতে) ফুঁক দিতেন, অতঃপর সেই হাত দু’টো দিয়ে যতদূর সম্ভব তাঁর শরীর মাসেহ করতেন এবং মাথা হতে মাসেহ শুরু করতেন, তারপর মুখমণ্ডল, শরীরের সম্মুখভাগ, অতঃপর শরীরের যেখানে যেখানে হাত পৌঁছানো সম্ভব। তিনি এরূপ তিনবার করতেন।




* হিংসুকের হিংসা -বিদ্বেষ থেকে বেঁচে থাকার জন্য কোরআনী দোয়া: 59:আল-হাশর:10




رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوٰنِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمٰنِ وَلَا تَجْعَلْ فِى قُلُوبِنَا غِلًّا لِّلَّذِينَ ءَامَنُوا رَبَّنَآ إِنَّكَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ




অর্থ- হে আমাদের রব, আমাদেরকে এবং আমাদের সেই সব ভাইকে মাফ করে দাও যারা আমাদের আগে ঈমান এনেছে। আর আমাদের মনে ঈমানদারদের জন্য কোন হিংসা-বিদ্বেষ রেখো না। হে আমাদের রব, তুমি অত্যন্ত মেহেরবান ও দয়ালু।




* যে মানুষের প্রতি দয়া করে না, আল্লাহও তার প্রতি দয়া করেন না- আদাবুল মুফরাদ-৯৫ 




 عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺَ: لَا يَرْحَمُ اللَّهُ مَنْ لَا يَرْحَمُ النَّاسَ




* ভাল মানুষের পরিচয় রাসূল (সা:) বর্ননা দিচ্ছেন-হিংসা-বিদ্বেষ মুক্ত অন্তরের অধিকারী, ইবনু মাজাহ হা/৪২১৬




ঊপদেশ:৫৩




عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ قِيْلَ لِرَسُوْلِ اللهِ ﷺَ: أَىُّ النَّاسِ أَفْضَلُ قَالَ كُلُّ مَخْمُوْمِ الْقَلْبِ صَدُوْقِ اللِّسَانِ. قَالُوْا صَدُوْقُ اللِّسَانِ نَعْرِفُهُ فَمَا مَخْمُوْمُ الْقَلْبِ قَالَ هُوَ التَّقِىُّ النَّقِىُّ لاَ إِثْمَ فِيْهِ وَلاَ بَغْىَ وَلاَ غِلَّ وَلاَ حَسَدَ 




অর্থ- আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলা হল, সবচেয়ে ভাল মানুষ কে? তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক হিংসা-বিদ্বেষ মুক্ত অন্তরের অধিকারী এবং সত্য কথার অধিকারী ব্যক্তি সবচেয়ে উত্তম মানুষ’। ছাহাবীগণ বললেন, আমরা সত্য কথার অধিকারী জানি। কিন্তু হিংসা-বিদ্বেষ মুক্ত অন্তর কি জিনিস তা জানি না। তিনি বললেন, যে ব্যক্তি স্বচ্ছ ও পরহেযগার। যার মধ্যে (১) পাপ নেই, পাপ হলেই ক্ষমা চায় (২) সীমালংঘন নেই (৩) খিয়ানত নেই (৪) হিংসা নেই (ইবনু মাজাহ হা/৪২১৬)




* হিংসা না করা রাসুল (সা:) এর সুন্নত, মিশকাতুল মাসাবিহ,১৭৫




وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ قَالَ لِي رَسُولُ اللهِ ﷺ يَا بُنَيَّ إِنْ قَدَرْتَ أَنْ تُصْبِحَ وَتُمْسِيَ لَيْسَ فِي قَلْبِكَ غِشٌّ لِأَحَدٍ فَافْعَلْ ثُمَّ قَالَ يَا بُنَيَّ وَذلِكَ مِنْ سُنَّتِي وَمَنْ أَحَبَّ سُنَّتِي فَقَدْ أَحَبَّنِي وَمَنْ أَحَبَّنِي كَانَ مَعِي فِي الْجَنَّةِ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ




অর্থ- আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রাসূল সা: আমাকে বলেছেন: হে বৎস! তুমি যদি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তোমার অন্তরে কারো প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ না রেখে কাটাতে পার তাহলে তাই কর। এরপর তিনি রাসূল সা: বললেন, হে বৎস! এটা আমার সুন্নাত। যে ব্যক্তি আমার সুন্নাতকে ভালবাসে সে আমাকেই ভালবাসে, আর যে আমাকে ভালবাসে সে আমার সাথে জান্নাতে থাকবে।




* আরও কতো সুন্নাত আছে তুমি জানকি -- জানলে ও জীবনে কখনো তা মানকি




* হাদিয়া দিলে মনের হিংসা-বিদ্বেষজনিত গ্লানি দূর হয়ে যায়। হিংসা দুর হবে-বুলুগুল মারাম-৯৩৬




وَعَنْ أَنَسٍ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - ﷺ -: تَهَادُوْا، فَإِنَّ الْهَدِيَّةَ تَسُلُّ السَّخِيمَة : َ رَوَاهُ الْبَزَّارُ بِإِسْنَادٍ ضَعِيفٍ




অর্থ- আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূল (সা:) বলেছেন- আপোষে উপঢৌকন দিতে থাকো, কেননা উপঢৌকন দ্বারা মনের হিংসা-বিদ্বেষজনিত গ্লানি দূর হয়ে যায়।




* রাসুল সা: মসজিদে বসা তিনি বলেন,এখন যিনি মসজিদে প্রবেশ করবেন তিনি বেহেশতের অধিবাসী।আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আছ রা. সেই সাহাবীর অনুগামী হলেন। মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ১৯১৮; আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া ৮/৭৪; আততারগীব ওয়াত তারহীব ৫/১৭৮-

আবু উসামা হাসান

হযরত আনাস ইবনে মালেক রা. বলেন, আমরা রাসূল সা: এর দরবারে (মসজিদে নববীতে) উপবিষ্ট ছিলাম। তখন তিনি বললেন, তোমাদের নিকট এখন একজন জান্নাতী মানুষ আগমন করবে। (বর্ণনাকারী বলেন) অতপর একজন সাহাবী আগমন করলেন। তাঁর দাড়ি থেকে সদ্যকৃত অযুর পানির ফোটা ঝরে পড়ছিল। তিনি তার বাম হাতে জুতা নিয়ে মসজিদে প্রবেশ করলেন।

তার পরদিনও নবী করীম সা: আমাদেরকে অনুরূপ কথা বললেন এবং প্রথমদিনের মতো সেই সাহাবী আগমন করলেন।

যখন তৃতীয় দিন হল, নবী করীম সা: সেই কথা আবার বললেন এবং যথারীতি সেই সাহাবী পূর্বের অবস্থায় আগমন করলেন। নবী করীম সা: যখন আলোচনা শেষ করে উঠে দাঁড়ালেন তখন হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আছ রা. সেই সাহাবীর অনুগামী হলেন। তিনি তাকে বললেন, আমি আমার পিতার সাথে ঝগড়া করে শপথ করেছি, তিনদিন পর্যন্ত তার ঘরে যাব না। এই তিনদিন আমাকে যদি আপনার ঘরে থাকার সুযোগ করে দিতেন, তবে আমি সেখানে থাকতাম। তিনি বললেন, হ্যাঁ,

থাকতে পার।

বর্ণনাকারী হযরত আনাস রা. বলেন, হযরত আবদুল্লাহ রা. বলতেন, তিনি তার সাথে সেখানে সেই তিন রাত অতিবাহিত করলেন। তিনি তাঁকে রাতে উঠে তাহাজ্জুদ নামায পড়তেও দেখলেন না। তবে তিনি যখন ঘুমাতেন, বিছানায় পার্শ্ব পরিবর্তন করতেন তখন আল্লাহর যিকির করতেন। হযরত আবদুল্লাহ রা. বলেন, তার মুখ থেকে কিন্তু ভালো কথা ছাড়া কোনো মন্দ কথা শুনিনি। যখন তিনদিন অতিবাহিত হয়ে গেল এবং তার আমলকে সাধারণ ও মামুলি মনে করতে লাগলাম, তখন তাকে বললাম, হে আল্লাহর বান্দা! আমি রাসূল সা: কে আপনার সম্পর্কে তিনবার একথা বলতে শুনেছি যে, এখনই তোমাদের নিকট একজন জান্নাতী মানুষ আগমন করবে। উক্ত তিনবারই আপনি আগমন করেছেন। তাই আমি ইচ্ছা করেছিলাম আপনি কী আমল করেন তা দেখতে আপনার নিকট থাকব। যাতে আমিও তা করতে পারি। আপনাকে তো বেশি আমল করতে দেখিনি। তাহলে কোন গুণ আপনাকে এই মহান মর্যাদায় উপনীত করেছে, যা রাসূল সা: বলেছেন?

তিনি বললেন, তুমি যা দেখেছ, ঐ অতটুকুই। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. বলেন, যখন আমি ফিরে আসছিলাম তখন তিনি আমাকে ডাকলেন। তারপর বললেন, আমার আমল বলতে ঐ অতটুকুই, যা তুমি দেখেছ। তবে আমি আমার অন্তরে কোনো মুসলমানের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করি না এবং আল্লাহ তাআলা কাউকে কোনো নেয়ামত দান করলে সেজন্য তার প্রতি হিংসা রাখি না। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. বলেন, এ গুণই আপনাকে এত বড় মর্যাদায় উপনীত করেছে। আর সেটাই আমরা করতে পারি না।








________________








-মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ১৯১৮; আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া ৮/৭৪; আততারগীব ওয়াত তারহীব ৫/১৭৮




হাদীসের কিছু ফাওয়ায়েদ




উক্ত হাদীসে আগন্তুক জান্নাতী সাহাবীর নাম অনুচ্চারিত হলেও তিনি হলেন বিখ্যাত সাহাবী হযরত সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রা., যিনি জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত দশ সাহাবীর একজন। এখানে তার ফযীলত ও অনন্য মর্যাদার পাশাপাশি তার বিশেষ একটি গুণ ও অনুপম স্বতন্ত্র বৈশিষ্টের কথা আলোচনা করা হয়েছে।




উক্ত হাদীসটিতে মুসনাদে আহমদের বর্ণনায় আগন্তুক সাহাবীকে ‘একজন আনছারী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। নিঃসন্দেহে তা পরবর্তী কোনো বর্ণনাকারীর ভুল। কারণ অন্যান্য বর্ণনাসূত্রে স্পষ্টভাবেই হযরত সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রা.-এর নাম উল্লেখ রয়েছে।




রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামের সম্মুখে এক জান্নাতী সাহাবীর কথা বলে নেক্কার মানুষের প্রশংসার মাধ্যমে সৎকর্ম ও উত্তম আচরণের প্রতি জোর তাকীদ দিয়েছেন এবং তাদেরকে সেই মহৎ স্বভাব ও বিশেষ গুণ অর্জন করার প্রতি উৎসাহিত করেছেন।




মুমিনদের করণীয় হলো : মুত্তাকী ও নেক্কার লোকদের আমল আগ্রহ ও মনোযোগের সাথে পর্যবেক্ষণ করা এবং অনুসরণ-অনুকরণের নিমিত্তে সেই গুণ অর্জন করার যথাসাধ্য চেষ্টা করা। প্রয়োজনে তাদের নিকট অবস্থান করে তাদের সান্নিধ্য গ্রহণ করা। যেমন আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) তারা ছিলেন এমন লোক যাদেরকে আল্লাহ হেদায়াত দান করেছেন। সুতরাং তুমিও তাদের পথের অনুসরণ করো।-সূরা আনআম : ৯০




হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. এই প্রেরণা থেকেই ঐ সাহাবীর নিকট অবস্থান করেছেন।




আর হাদীসের সেই সুস্পষ্ট বক্তব্য,যা সহজেই বোধগম্য, জান্নাত লাভের অধিকারী নিষ্কলুষ আত্মার ফযীলত। আত্মশুদ্ধি করা, অন্তরকে পাক-পবিত্র রাখা এবং হিংসা-বিদ্বেষ ও অন্যান্য আত্মার ব্যাধি থেকে মুক্ত রাখা হচ্ছে এমন একটি গুণ, যা মানুষকে দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতার শীর্ষ চূড়ায় নিয়ে যায়, তথা জান্নাত লাভের উপযোগী বানায়। কারণ, মানুষের অন্তর হল ঈমান-ইখলাস ও তাক্বওয়ার স্থান। সুতরাং কোনো খাঁটি মুমিনের অন্তরে ঈমান-তাক্বওয়া ও হিংসা-বিদ্বেষ কখনো একত্র হতে পারে না। এ জন্যই রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আনাস রা.কে বলেছেন, হে বৎস! কারো প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা ব্যতীত তুমি যদি সকাল-সন্ধ্যা অতিবাহিত করতে (জীবন কাটাতে) সক্ষম হও, তাহলে তাই করো।




হিংসা-বিদ্বেষ হল ঈমান-ইসলামের পরিপন্থী এমন অসৎ প্রবণতা, যা মানুষের নেকীকে ধ্বংস করে এবং জান্নাতের পথ হতে দূরে সরিয়ে দেয়। তাছাড়া হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, মানুষ যতক্ষণ হিংসা-বিদ্বেষ থেকে মুক্ত থাকবে ততক্ষণ তারা কল্যাণের উপর অবিচল থাকবে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে পবিত্র হৃদয় দান করুন। আমীন।








( স্বচ্ছ - النَّقِىُّ )  




 ( উকাদ’ (عُقَدِ) শব্দটি “উকদাতুন” (عقدة) শব্দের বহুবচন। এর মানে হচ্ছে গিরা )




( আমি পুরুষ যাদুকর বা মহিলা যাদুকরদের অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য প্রভাতের রবের আশ্রয় চাচ্ছি , মানে ফুঁক দেয়া--نفث )




( مَخْمُوْمِ- হিংসা-বিদ্বেষ মুক্ত অন্তরের অধিকারী)




( قَدَرْتَ - পারলে তো,,যদি পার )




( السَّخِيمَة-হিংসা )




( تَسُلُّ- অনুপ্রবেশ,,) 




( تَسُلُّ السَّخِيمَة- মনের হিংসা-বিদ্বেষজনিত গ্লানি দূর হয়ে যায়)




( غِشٌّঠকাই,,প্রতারণা,,হিংসা)




( لاَ بَغْىَ-সীমালংঘন নেই ) 




( مَا وَجَعُ-- কী ব্যথা )




( غِلًّا-হিংসা-বিদ্বেষ ) ( حَلِيفٌ- মিত্র) ( بَالُ- সাথী )  




( مَا بَالُ- এই লোকটির কি অবস্হা )




( غَاسِقٍ- রাতের অন্ধকারের) ( إِذَا وَقَبَ- যখন তা গভীর হয় )




(فِى الْعُقَدِ- গিরায় ফুঁৎকারদানকারীদের (বা কারিনীদের) )




( مُشْطٍ وَمُشَاقَة- চিরুনী আঁচড়াবার সময় উঠে আসা চুল) (مُشْطٍ-চিরুনী, আঁচড়ান)




( وَجُفِّ طَلْعَةٍ ذَكَرٍ -নর খেজুর গাছের ‘জুব’ এর মধ্যে ) جف:শুষ্ক       




الحناء:মেহেদি ( نُقَاعَةُ الْحِنَّاء-- মেহদী মিশ্রিত পানির তলানীর ন্যায়)




--"স্বচ্ছ - النَّقِىُّ--بَغْىَ-সীমালংঘন নেই --




_______________




180 রজব-4 সচ্ছরিত্রা, হিংসা করা✓




* অন্তরে ঈমান হিংসা একত্রিত হবে না সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৩১০৯




وَلَا يَجْتَمِعَانِ فِي قَلْبِ عَبْدٍ الْإِيمَانُ وَالْحَسَدُ»








أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ حَمَّادٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ ابْنِ عَجْلَانَ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يَجْتَمِعَانِ فِي النَّارِ مُسْلِمٌ قَتَلَ كَافِرًا ثُمَّ سَدَّدَ وَقَارَبَ، وَلَا يَجْتَمِعَانِ فِي جَوْفِ مُؤْمِنٍ غُبَارٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَفَيْحُ جَهَنَّمَ، وَلَا يَجْتَمِعَانِ فِي قَلْبِ عَبْدٍ الْإِيمَانُ وَالْحَسَدُ»








আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:








জাহান্নামে একত্রিত হবে না সে মুসলমান যে কোন কাফিরকে হত্যা করেছে, এরপর সঠিক ও সরল পথে দৃঢ় রয়েছে। আর কোন মু’মিনের পেটে আল্লাহ্‌র রাস্তার ধূলা এবং জাহান্নামের (আগুনের) শিখা একত্রিত হবে না। আর (আল্লাহ্‌র) বান্দার অন্তরে ঈমান ও হিংসা একত্রিত হবে না।




  








সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৩১০৯




হাদিসের মান: হাসান হাদিস








* হিংসা ছেরে ক্ষমা ও ভালবাসতে শিখি,হিংসা ভালবাসা এক নয়, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৯০৩




عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ قَالَ‏"‏ إِيَّاكُمْ وَالْحَسَدَ فَإِنَّ الْحَسَدَ يَأْكُلُ الْحَسَنَاتِ كَمَا تَأْكُلُ النَّارُ الْحَطَبَ‏.‏ أَوْ قَالَ‏"‏ الْعُشْبَ-








حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ صَالِحٍ الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ، - يَعْنِي عَبْدَ الْمَلِكِ بْنَ عَمْرٍو - حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ أَبِي أَسِيدٍ، عَنْ جَدِّهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ إِيَّاكُمْ وَالْحَسَدَ فَإِنَّ الْحَسَدَ يَأْكُلُ الْحَسَنَاتِ كَمَا تَأْكُلُ النَّارُ الْحَطَبَ ‏"‏ ‏.‏ أَوْ قَالَ ‏"‏ الْعُشْبَ ‏"‏ ‏.‏








আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:








তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহি ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা অবশ্যই হিংসা পরিহার করবে। কারণ আগুন যেভাবে কাঠকে বা ঘাসকে খেয়ে ফেলে, তেমনি হিংসাও মানুষের নেক আমলকে খেয়ে ফেলে। [৪৯০১]








দুর্বলঃ যঈফাহ হা/১৯০২।








ফুটনোটঃ




[৪৯০১] বুখারীর ‘আত-তারীক’, ‘আযদ ইবনু হুমাইদ আল-মুনতাখাব মিনাল মুসনাদ, ইবনু ‘আবদুল বার আত-তামহীদ। ইমাম বুখারী বলেনঃ বর্ণনাটি সহীহ নয়। সানাদে ইবরাহীমের দাদা অজ্ঞাত। কেননা তার নাম উল্লেখ করা হয়নি। 








সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৯০৩




হাদিসের মান: দুর্বল হাদিস




* হিংসুকের হিংসা থেকে বাচার দোয়া আল্লাহ জানিয়েছেন-




 








113:আল-ফালাক্ব:1








قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ








বলো,১ আশ্রয় চাচ্ছি২ আমি প্রভাতের রবের,৩




113:আল-ফালাক্ব:2








مِن شَرِّ مَا خَلَقَ








এমন প্রত্যেকটি জিনিসের অনিষ্টকারিতা থেকে যা তিনি সৃষ্টি করেছেন।৪




113:আল-ফালাক্ব:3








وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ








এবং রাতের অন্ধকারের অনিষ্টকারিতা থেকে, যখন তা ছেয়ে যায়।৫




113:আল-ফালাক্ব:4








وَمِن شَرِّ النَّفّٰثٰتِ فِى الْعُقَدِ








আর গিরায় ফুঁৎকারদানকারীদের (বা কারিনীদের) অনিষ্টকারিতা থেকে।৬








* ইসলামী দাওয়াতের সূচনা পর্বেই মনে হচ্ছিল, রসূলুল্লাহ্‌ ﷺ যেন ভীমরুলের চাকে হাত দিয়ে ফেলেছেন। তাঁর দাওয়াত যতই বিস্তার লাভ করতে থেকেছে কুরাঈশ বংশীয় কাফেরদের বিরোধিতাও ততোই বেড়ে যেতে থেকেছে।








কিন্তু নবী করীম ﷺ যখন দ্বীনের ব্যাপারে তাদের সাথে কোন প্রকার আপোষ রফা করার প্রশ্নে তাদেরকে সম্পূর্ণ নিরাশ করে দিলেন এবং সূরা আল কাফেরূনে তাদেরকে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলে দিলেন---








* রাসূল (সা:) এর দ্বীন প্রচারে হিংসায় চরম বিরোধীতা, রাষ্ট ক্ষমতা,কত টাকা চাও,সুন্দরী নারী চাও, রাসূল (সা:) সূরা কাফিরুন নাযিল হলে তা জানিয়ে দেন-








তিবরানীর রেওয়ায়েতে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন, কাফেররা প্রথমে পারস্পরিক শান্তির স্বার্থে রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)- এর সামনে এই প্রস্তাব রাখল যে, আমরা আপনাকে বিপুল পরিমাণে ধনৈশ্বর্য দেব, ফলে আপনি মক্কার সর্বাধিক ধনাঢ্য ব্যক্তি হয়ে যাবেন। আপনি যে মহিলাকে ইচ্ছা বিবাহ করতে পারবেন। বিনিময়ে শুধু আমাদের উপাস্যদেরকে মন্দ বলবেন না। যদি আপনি এটাও মেনে না নেন, তবে একবছর আমরা আপনার উপাস্যের এবাদত করব এবং একবছর আপনি মাদের উপাস্যদের এবাদত করবেন।








* হত্যার মানসেই রাসূল (সা:) কে যাদু করা হয় -




সূরা নাস ও ফালাকের




 শানে নুযুল নিম্নরুপ:-








عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سُحِرَ حَتَّى كَانَ يَرَى أَنَّهُ يَأْتِي النِّسَاءَ وَلاَ يَأْتِيهِنَّ‏.‏ قَالَ سُفْيَانُ وَهَذَا أَشَدُّ مَا يَكُونُ مِنَ السِّحْرِ إِذَا كَانَ كَذَا‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ يَا عَائِشَةُ أَعَلِمْتِ أَنَّ اللَّهَ قَدْ أَفْتَانِي فِيمَا اسْتَفْتَيْتُهُ فِيهِ، أَتَانِي رَجُلاَنِ فَقَعَدَ أَحَدُهُمَا عِنْدَ رَأْسِي، وَالآخَرُ عِنْدَ رِجْلَىَّ، فَقَالَ الَّذِي عِنْدَ رَأْسِي لِلآخَرِ مَا بَالُ الرَّجُلِ قَالَ مَطْبُوبٌ‏.‏ قَالَ وَمَنْ طَبَّهُ قَالَ لَبِيدُ بْنُ أَعْصَمَ، رَجُلٌ مِنْ بَنِي زُرَيْقٍ حَلِيفٌ لِيَهُودَ، كَانَ مُنَافِقًا‏.‏ قَالَ وَفِيمَ قَالَ فِي مُشْطٍ وَمُشَاقَةٍ‏.‏ قَالَ وَأَيْنَ قَالَ فِي جُفِّ طَلْعَةٍ ذَكَرٍ، تَحْتَ رَعُوفَةٍ، فِي بِئْرِ ذَرْوَانَ ‏"‏‏.‏ قَالَتْ فَأَتَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْبِئْرَ حَتَّى اسْتَخْرَجَهُ فَقَالَ ‏"‏ هَذِهِ الْبِئْرُ الَّتِي أُرِيتُهَا، وَكَأَنَّ مَاءَهَا نُقَاعَةُ الْحِنَّاءِ، وَكَأَنَّ نَخْلَهَا رُءُوسُ الشَّيَاطِينِ ‏"‏‏.‏ قَالَ فَاسْتُخْرِجَ، قَالَتْ فَقُلْتُ أَفَلاَ أَىْ تَنَشَّرْتَ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ أَمَا وَاللَّهِ فَقَدْ شَفَانِي، وَأَكْرَهُ أَنْ أُثِيرَ عَلَى أَحَدٍ مِنَ النَّاسِ شَرًّا ‏"‏‏.‏








‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ: রাসূল (সা:) -এর উপর একবার যাদু করা হয়। এমন অবস্থা হয় যে, তাঁর মনে হতো তিনি বিবিগণের কাছে এসেছেন, অথচ তিনি আদৌ তাঁদের কাছে আসেননি। সুফ্‌ইয়ান বলেনঃ এ অবস্থা যাদুর চরম প্রতিক্রিয়া। বর্ণনাকারী বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুম থেকে জেগে উঠেন এবং বলেনঃ হে আয়িশাহ! তুমি জেনে নাও যে, আমি আল্লাহ্‌র কাছে যে বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম তিনি আমাকে তা বলে দিয়েছেন। (স্বপ্নে দেখি) আমার নিকট দু'জন লোক এলেন। তাদের একজন আমার মাথার কাছে এবং অপরজন আমার পায়ের নিকট বসলেন। আমার কাছের লোকটি অন্যজনকে জিজ্ঞেস করলেনঃ এ লোকটির কী অবস্থা? দ্বিতীয় লোকটি বললেনঃ একে যাদু করা হয়েছে। প্রথমজন বলেনঃ কে যাদু করেছে? দ্বিতীয় জন বলেন, লাবীদ ইবনু আ’সাম। এ ইয়াহূদীদের মিত্র যুরায়ক্ব গোত্রের একজন, সে ছিল মুনাফিক। প্রথম ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেনঃ কিসের মধ্যে যাদু করা হয়েছে? দ্বিতীয় ব্যক্তি উত্তর দিলেনঃ চিরুনী ও চিরুনী করার সময় উঠে যাওয়া চুলের মধ্যে। প্রথম ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেনঃ সেগুলো কোথায়? উত্তরে দ্বিতীয়জন বললেনঃ পুং খেজুর গাছের জুবের মধ্যে রেখে ‘যারওয়ান’ কূপের ভিতর পাথরের নীচে রাখা আছে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উক্ত কূপের নিকট এসে সেগুলো বের করেন এবং বলেনঃ এইটিই সেই কূপ, যা আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। এর পানি মেহদী মিশ্রিত পানির তলানীর মত, আর এ কূপের (পার্শ্ববর্তী) খেজুর গাছের মাথাগুলো (দেখতে) শয়তানের মাথার ন্যায়। বর্ণনাকারী বলেনঃ সেগুলো তিনি সেখান থেকে বের করেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলামঃ আপনি কি একথা প্রকাশ করে দিবেন না? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্‌র কসম, তিনি আমাকে আরোগ্য দান করেছেন; আর আমি মানুষকে এমন বিষয়ে প্ররোচিত করতে পছন্দ করি না, যাতে অকল্যাণ রয়েছে। [৩১৭৫; মুসলিম ৩৯/১৭, হাঃ ২১৮৯, আহমাদ ২৪৩৫৪] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৩৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৪০)




  








সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৭৬৫




হাদিসের মান: সহিহ








عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ سُحِرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حَتّٰى إِنَّه“ لَيُخَيَّلُ إِلَيْهِ أَنَّه“ يَفْعَلُ الشَّيْءَ وَمَا فَعَلَه“ حَتّٰى إِذَا كَانَ ذَاتَ يَوْمٍ وَهُوَ عِنْدِي دَعَا اللهَ وَدَعَاه“ ثُمَّ قَالَ أَشَعَرْتِ يَا عَائِشَةُ أَنَّ اللهَ قَدْ أَفْتَانِي فِيمَا اسْتَفْتَيْتُه“ فِيهِ قُلْتُ وَمَا ذَاكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ جَاءَنِي رَجُلاَنِ فَجَلَسَ أَحَدُهُمَا عِنْدَ رَأْسِي وَالآخَرُ عِنْدَ رِجْلَيَّ ثُمَّ قَالَ أَحَدُهُمَا لِصَاحِبِه„ مَا وَجَعُ الرَّجُلِ قَالَ مَطْبُوبٌ قَالَ وَمَنْ طَبَّه“ قَالَ لَبِيدُ بْنُ الأَعْصَمِ الْيَهُودِيُّ مِنْ بَنِي زُرَيْقٍ قَالَ فِيمَا ذَا قَالَ فِي مُشْطٍ وَمُشَاطَةٍ وَجُفِّ طَلْعَةٍ ذَكَرٍ قَالَ فَأَيْنَ هُوَ قَالَ فِي بِئْرِ ذِي أَرْوَانَ قَالَ فَذَهَبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي أُنَاسٍ مِنْ أَصْحَابِه„ إِلَى الْبِئْرِ فَنَظَرَ إِلَيْهَا وَعَلَيْهَا نَخْلٌ ثُمَّ رَجَعَ إِلٰى عَائِشَةَ فَقَالَ وَاللهِ لَكَأَنَّ مَاءَهَا نُقَاعَةُ الْحِنَّاءِ وَلَكَأَنَّ نَخْلَهَا رُءُوسُ الشَّيَاطِينِ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَفَأَخْرَجْتَه“ قَالَ لاَ أَمَّا أَنَا فَقَدْ عَافَانِيَ اللهُ وَشَفَانِي وَخَشِيتُ أَنْ أُثَوِّرَ عَلَى النَّاسِ مِنْه“ شَرًّا وَأَمَرَ بِهَا فَدُفِنَتْ.








‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:








তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর উপর যাদু করা হয়। এমনকি তাঁর মনে হতো তিনি কাজটি করেছেন, অথচ তা তিনি করেননি। শেষে একদিন তিনি যখন আমার নিকট ছিলেন, তখন তিনি আল্লাহ্‌র নিকট বার বার দু’আ করলেন। তারপর ঘুম থেকে জেগে বললেনঃ হে ‘আয়িশাহ! তুমি কি বুঝতে পেরেছ? আমি যে বিষয়ে তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলাম, তিনি তা আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন। আমি বললামঃ হে আল্লাহর রসূল! তা কী? তিনি বললেনঃ আমার নিকট দু’জন লোক এলেন। তাঁদের একজন আমার মাথার নিকট এবং আরেকজন আমার পায়ের নিকট বসলেন। তারপর একজন অন্যজনকে জিজ্ঞেস করলেনঃ এ লোকটির কী ব্যথা? তিনি উত্তর দিলেনঃ তাঁকে যাদু করা হয়েছে। প্রথমজন বললেনঃ কে তাঁকে যাদু করেছে? দ্বিতীয় জন বললেন, লাবীদ ইবনু আ’সাম নামক ইয়াহূদী। প্রথমজন জিজ্ঞেস করলেনঃ যাদু কী দিয়ে করা হয়েছে? দ্বিতীয়জন বললেনঃ চিরুনী, চিরুনী আঁচড়াবার সময় উঠে আসা চুল ও নর খেজুর গাছের ‘জুব’ এর মধ্যে। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সহাবীদের কয়েকজনকে নিয়ে ঐ কূপের নিকট গেলেন এবং তা ভাল করে দেখলেন। কূপের পাড়ে ছিল খেজুর গাছ। তারপর তিনি ‘আয়িশাহ (রাঃ) এর নিকট ফিরে এসে বললেনঃ আল্লাহ্‌র কসম! কূপটির পানি (রঙ) মেহদী মিশ্রিত পানির তলানীর ন্যায়। আর পার্শ্ববর্তী খেজুর গাছের মাথাগুলো শয়তানের মাথার ন্যায়। আমি বললামঃ হে আল্লাহর রসূল! আপনি কি সেগুলো বের করবেন না? তিনি বললেনঃ না, আল্লাহ আমাকে আরোগ্য ও শিফা দান করেছেন, মানুষের মধ্যে এ ঘটনা থেকে মন্দ ছড়িয়ে দিতে আমি সঙ্কোচ বোধ করি। এরপর তিনি যাদুর দ্রব্যগুলোর ব্যাপারে নির্দেশ দিলে সেগুলো মাটিতে পুঁতে রাখা হয়।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৩৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৪১)




  




সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৭৬৬




হাদিসের মান: সহিহ হাদিস








! দুটি সূরা নাস ও ফালাক




আসুন জেনে নেই শানে নুযুল:




প্রিয় নবী (সা:) হঠাৎ করে পরপর তিনরাত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতে পারলেননা।এ নিয়ে কাফেররা হাসাহাসি করতে শুরু করলো,বলতে লাগলো মুহাম্মদ মনে হয় তার আল্লাহকে ভুলে গেছে(নাউজুবিল্লাহ)




তখন আল্লাহ সুবহানুতায়ালা নবীজিকে স্বপ্নে দেখালেন,"দুজন ফেরেস্তা নবীজির পায়ের কাছে দাড়িয়ে বলছে,কি হয়েছে রাসূলের?””তখন অন্য ফেরেস্তা জওয়াব দিলেন,”আল্লাহর রাসূলকে জাদু করা হয়েছে!!”।ফেরেস্তা জিজ্ঞেস করলো,”কে করেছে????কিভাবে করেছে!???”।অন্য ফেরেস্তা উওর দিলো,”অমুক এলাকার লাবিদ ইবনু আসাম নামক এক মহিলা নবীজির মাথার চুল সংগ্রহ করে তাতে এগারটি গিঁট দিয়ে পুরুষ খেজুর গাছের বাকল দিয়ে এই কালোজাদু করেছে এবং তা পুটলি বানিয়ে যারওয়ান কূপের পাতালে ফেলে দিয়েছে যাতে তা কেউ খুঁজে না পায়।




রাসূল ঘুম থেকে উঠে ফজর নামায আদায় করে,সাহাবীদের সব খুলে বলেন।প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে নবীজির সমস্যা সমাধান করতে মরিয়া হয়ে উঠেন হযরত আলী (রা:)।নেমে যান কূপের পাতালে এবং পুটলিটি তুলে আনেন।খুলে দেখতে পান এগারটি গিঁট! মহান আল্লাহ সূরা ফালাক নাযিল করেন।সূরা ফালাকের পাঁচ আয়াত পাঠ করে পাঁচটি গিঁট খুলতে বলেন আল্লাহ।এরপর ছয় আয়াতের সূরা নাস নাযিল করেন।ছয় আয়াতের সূরা নাস পড়ে বাকি ছয়টি গিঁট খোলা হয়।সব গিঁট খোলার পর নবীজি সুস্থ হয়ে উঠেন এবং ওই মহিলাকে শাস্তি দিতে মানা করেন।কারণ তার জন্যই মহান আল্লাহ আমাদের এমন আশ্চর্যময় সূরা উপহার দেন।

No comments

Powered by Blogger.