Header Ads

Header ADS

171 কন্যা সন্তানের মর্যাদা


يَا أَهْلَ الْكِتَابِ قَدْ جَاءَكُمْ رَسُولُنَا يُبَيِّنُ لَكُمْ كَثِيرًا مِّمَّا كُنتُمْ تُخْفُونَ مِنَ الْكِتَابِ وَيَعْفُو عَن كَثِيرٍ ۚ قَدْ جَاءَكُم مِّنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُّبِينٌ


(আল মায়িদাহ - ১৫)

হে আহলে-কিতাবগণ! তোমাদের কাছে আমার রাসূল আগমন করেছেন! কিতাবের যেসব বিষয় তোমরা গোপন করতে, তিনি তার মধ্য থেকে অনেক বিষয় প্রকাশ করেন এবং অনেক বিষয় মার্জনা করেন। তোমাদের কাছে একটি উজ্জল জ্যোতি এসেছে এবং একটি সমুজ্জল গ্রন্থ।


لِّلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ يَخْلُقُ مَا يَشَاءُ ۚ يَهَبُ لِمَن يَشَاءُ إِنَاثًا وَيَهَبُ لِمَن يَشَاءُ الذُّكُورَ


(আশ্‌-শূরা - ৪৯)

নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব আল্লাহ তা’আলারই। তিনি যা ইচ্ছা, সৃষ্টি করেন, যাকে ইচ্ছা কন্যা-সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন।


أَوْ يُزَوِّجُهُمْ ذُكْرَانًا وَإِنَاثًا ۖ وَيَجْعَلُ مَن يَشَاءُ عَقِيمًا ۚ إِنَّهُ عَلِيمٌ قَدِيرٌ


(আশ্‌-শূরা - ৫০)

অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাশীল।


وَإِذَا بُشِّرَ أَحَدُهُم بِالْأُنثَىٰ ظَلَّ وَجْهُهُ مُسْوَدًّا وَهُوَ كَظِيمٌ


(আন নাহল - ৫৮)

যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয়, তখন তারা মুখ কাল হয়ে যায় এবং অসহ্য মনস্তাপে ক্লিষ্ট হতে থাকে।


وَإِذَا الْمَوْءُودَةُ سُئِلَتْ


(আত তাক্‌ভীর - ৮)

যখন জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে,

بِأَيِّ ذَنبٍ قُتِلَتْ


(আত তাক্‌ভীর - ৯)

কি অপরাধে তাকে হত্য করা হল?


*  তাফছিরে রুনুল বায়ন নামক কিতাবে বর্ণিত আছে যে, দাহিয়া কালবী একজন কাফের ছিল। দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করার তার খুবই আগ্রহ ছিল এবং হুজুর পাক (সাঃ) অধিকাংশ সময় তার ইসলাম গ্রহণ করার জন্য আল্লাহ পাকের দরবারে দোয়া করতেন, কেন না তার সঙ্গে তার আত্মীয় স্বজনও প্রায় সাতশ ছিল। এই একটি লোক মাত্র ইসলাম গ্রহণ করলে, সাতশ লোকও চির শান্তিময় ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়ে যায়। যাক অবশেষে হুজুর (সাঃ) এর দোয়া মঞ্জুর হল। একদিন আপনা আপনি হঠাৎ তার অন্তঃকরণে ইসলামের মহব্বত, সত্যতা ও অনুপ্রেরণা জাগ্রত হল এবং মুসলমান হওয়ার জন্য হুজুর (সাঃ) এর সমীপে আসতে লাগল। এদিকে হযরত জিব্রাইল (আঃ) হজুর (সাঃ) কে সুসংবাদ প্রদান করলেন যে, 'হে নবী আল্লাহ পাক আপনার নিকট ছালাম প্রেরণ করে বলেছেন যে, দাহিয়া-কালবী আপনার খেদমতে ইসলাম গ্রহণ করার জন্য আসছে। অল্পক্ষণের মধ্যেই দাহিয়া কালবী হুজুর সমীপে হাজির হল। হুজুর (সাঃ) তাকে দেখে আপন চাদর মোবারক নিজ স্কন্দ মোবারক হতে নামিয়ে তাকে বসবার জন্য জমিনের ওপর বিছিয়ে ছিলেন। ইসলাম ধর্মে বিধান আছে যে, যদি কোনো কওমের নেতৃস্থানীয় বা সম্মানিত কোনো লোক তোমাদের নিকট উপস্থিত হয়, তখন তার সম্মান কর। সুতরাং হুজুর (সাঃ) তার সম্মানার্থে আপনি চাদর মোবারক বসবার জন্য বিছিয়ে দিলেন। তারপর দাহিয়া-কালবী হুজুর (সাঃ) এর পূত-পবিত্র চরিত্র ও আপন শত্রুর প্রতি অমায়িক ব্যবহার দেখে অশ্রু বিসর্জন করতে করতে চাদর জমিন হতে তুলে চুমো দিয়ে চোখে লাগিয়ে মাথার ওপর রেখে অতি বিনয় ও নম্রতা সহকারে বলতে লাগলো, হে নবী আমাকে ইসলাম ধর্মের শর্ত সমূহে বলে দিন এবং কালেমা তৌহিদ শিক্ষা দিয়ে দীক্ষিত করুন। তখন নবী করীম (সাঃ) এরশাদ করলেন, হে দাহিয়া বল তুমি, 'লাইলাহা ইল্লাল্লাহ মোহাম্মদুর রাসুল্লাহ'। দহিয়া-কালবী কালেমা তাইয়্যেবা পাঠ করে কাঁদতে কাঁদতে অস্থির হয়ে যেতে লাগলেন। তখন নবী করীম (সাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন হে দাহিয়া বল তুমি কাঁদছ কেন? দাহিয়া কালবী উত্তর, হুজুর আমি বড় পাপ করেছি, আল্লাহ পাকের দরবারে একটু আরজ করুন, আমার পাপ মোচনের কি কোনো উপায় হতে পারে? যদি আমাকে আপনি হত্যা করে ফেলেন তাও আমি অম্লানবদনে শিরোধার্য করে নেবো। আর যদি আমার যাবতীয় ধন-সম্পদ আল্লাহ পাকের রাস্তায় বিলিয়ে দিতে হয় তাও দেব। তবুও যেন আমার পাপ মাফ হয়ে যায়। হুজুর (সাঃ) দাহিয়া কালবীর এরূপ অবস্থা দেখে জিজ্ঞেস করলেন, হে নবী আমি আমার কওমের সর্দার। আমি লজ্জায় কারণে ৭০জন মেয়ে জীবিত হত্যা করেছি। হে আল্লাহর নবী আমার এ পাপ কি মাফ হবে? হুজুর (সাঃ) দাহিয়ার এ কথা শুনে স্তম্ভিত হয়ে অঙ্গুলি দন্ত মোবারকে রাখলেন এবং তার জুলুমও অত্যাচারের প্রতি অবাক হয়ে পড়লেন, আর মনে মনে চিন্তা করতে লাগলেন, হায় এ হেন জঘণ্য পাপ কিরূপে মাফ হতে পারে? এ দিকে দাহিয়া হুজুরের সম্মুখে দাঁড়িয়ে ক্রন্দন করতেছে, অপরদিকে হঠাৎ জিব্রাইল (আঃ) হুজুর (সাঃ) এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলতে লাগলেন, হে নবী (সাঃ) আল্লাহরাব্বুল আলামীন আপনার নিকট ছালাম প্রেরণ করেছেন, আপনি দাহিয়াকে বলে দেন যে, দাহিয়া লাইলাহা ইল্লাল্লাহ মোহাম্মদুর রাসুলুল্ল্যাহ পড়ার কারণে আল্লাহ পাক তার ৬০ বছরের মূর্তি পূজা ও কুফরী এবং ৬০ বছরের যাবতীয় পাপরাশি আর ৭০ জন নিস্পাপ মেয়েকে বিনা অপরাধে হত্যা করার যাবতীয় পাপ মার্জনা করে দিয়েছেন। অর্থাৎ পবিত্র ইসলাম ধর্মগ্রহণ করলে পূর্বেও যাবতীয় পাপ মাফ হয়ে যায়। আল্লাহ পাকের এ হুকুম মাত্র হুজুর (সাঃ) কাঁদতে কাঁদতে আকুল হয়ে ওঠলেন, উপস্থিত ছাহাবাগণও কাঁদতে লাগলেন, আর দাহিয়া কালবী তো ক্রন্দন করতে করতে বেহুশ হয়ে গেলেন। এমতাবস্থায় নবী করীম (সাঃ) এর পবিত্র কালেমা শরীফ পড়ে, তার সারা জীবনের মূর্তি পূজা, শিরক কুফর ও মেয়ে হত্যা ইত্যাদি যাবতীয় পাপ হতে মুক্তি পেয়ে গেল। আচ্ছা আমার উম্মতের মধ্যে যদি কোনো মোত্তাকী পরহেজগার জীবনব্যাপী এ কালেমা পাঠ করতে করতে মরে যায় তবে সে কেন তোমার ক্ষমা পাবে না? হে আল্লাহ নিশ্চয়ই সে ব্যক্তি তোমার ক্ষমা পেয়ে থাকবে।

*  

আইয়ামে জাহিলিয়াতের ইতিহাস খুললে দেখা যায় নারীরা সমাজে অবহেলিত ছিল। সেই সময় নারীদেরকে জিন্দা কবর দেওয়া হতো। সাহাবী দাহিয়াতুল কালবী নিজ হাতে নিজের মেয়েকে জিন্দা কবর দিয়েছেন।

দাহিয়াতুল কালবী মুসলমান হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ সা. তাকে বললেন. তুমি মুসলমান হয়েছ। আল্লাহপাক তোমার সব গোনাহ মাফ করে দিয়েছে। সাহাবী দাহিয়াতুল কালবী দুই চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বলেন, হে রাসূলুল্লাহ সা. সব গোনাহ মাফ হতে পারে কিন্ত একটি গোন্হা আমার মাফ হবে না। রাসূলুল্লাহ সা. বলেন,তুমি, কী মারাত্ম্ক পাপ করেছ?

এবার সাহাবী দাহিয়াতুল কালবী রোদন করে কাঁদতেছেন ঝর্ণার মত গাল বেয়ে বেয়ে পানি পড়ে যাচ্ছে। চোখের পানিগুলি ছেড়ে দিয়ে এতিমের মত কাঁদেন আর বলেন, হে আল্লাহর রসূলুল্লাহ সা.আমি যখন সফরে যাই তখন আমার স্ত্রী গর্ভবতী ছিল। আমি যাওয়ার সময় বলে গেলাম যদি আমার মেয়ে সন্তান হয় তাকে জিন্দা কবর দিয়ে দিবে। কিন্তু আমার স্ত্রী সন্তানের মায়ার তাকে বড় করে তোলেন। আমি সফর থেকে চার বৎসর পর বাড়ি এসে দেখি একটি মেয়ে আমাকে আব্বু আব্বু বলে ডাকছে। আমি স্ত্রী কে জিজ্ঞেস করলাম। কে এই মেয়ে? স্ত্রী ভয়ে ভয়ে জবাব দেয় এই মেয়ে তোমার মেয়ে। আমি স্ত্রীকে ধমক দিতে লাগলাম, কেন এই মেয়েকে ছোট কালে জিন্দা কবর দেয়নি। সে বলে স্বামী তুমি নজর করে দেখ তোমাকে আল্লাহতা’আলা যেমন সুন্দর করে বানিয়েছে। তোমার মেয়েকে আল্লাহপাক তোমার মত সুন্দর করে বানিয়েছে। সেই জন্য আমি তার নাম রেখেছি জামিলা। এত সুন্দর মেয়েকে আমি কেমন করে জিন্দা কবর দেব। রাতে যখন বিছানায় ঘুমাতে গেলাম ।বিছানায় মেয়েটা আমাকে আব্বু বলে একবার আামার দিকে ফিরে, আম্মু বলে তার মায়ের দিকে ফিরে। জমিলার উপর আমার মায়া হল। আমি চিন্তা করতে লাগলাম এত সুন্দর মেয়ে। কি করে আমি জিন্দা কবর দিব। কিন্তু পরক্ষণে মনে জাগল সমাজে আমি বন্ধু – বান্ধবদের কে কি জবাব দিব। তারা তো আমাকে উপহাস করবে। আহা কি ঘৃণার কথা মেয়ের বাপ হয়েছি। তখন মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম আগামীকাল সকালে আমি পাহাড়ের কিনারে গর্ত করে মেয়েকে জিন্দা কবর দিব।

সকালে উঠে স্ত্রীকে বললাম, জামিলাকে গোসল করিয়ে কিছু খাওয়ায়ে দাও। জমিলাকে নিয়ে বেড়াতে যাব। আমার স্ত্রী মেয়েকে গোসল করায়ে নতুন জমা পরিয়ে দেয় এবং জনমের মত দুই লোকমা খানা তার মুখে দিয়ে দেয়। আমি মেয়েটাকে নিয়ে রওয়ানা হলাম।

হে রাসূলুল্লাহ সা. আমি বহু দুরে পাহাড়ের পাশে গিয়ে গর্ত করতে লাগলাম। গর্ত করার সময় মাটির ছোট ছোট টুকরা আমার দাড়ির উপরে এসে লেগে যায়। আমার জমিলা আমার পাশে দাঁড়াইয়া নিজের হাতে দাড়িগুলি সাফ করে আর বারবার বলে, বাবা এটা কিসের গর্ত? এই গর্ত কার জন্য করছ? আমি জামিলা কে বললাম তুমি দুরে গিয়ে খেলা কর। আমি মনে মনে বললাম, কিছুক্ষণ পরে তুমি বুঝতে পারবা এটা কিসের গর্ত।

গর্ত যখন হয়ে গেল আমি ডাকলাম ‘জামিলা দেখে যায় গর্তের ভিতরে কি যেন দেখা যায়। মেয়েটি আমাকে আব্বু আব্বু বলে দুর থেকে দৌড়ে গর্তের পাশে এসে বলে,- আব্বু কৈ? গর্তের ভিতর কিছু দেখা যায় না ।

হে রাসূলুল্লাহ সা. আমি নিষ্ঠুর পিতা। আমি কত বড় নির্দয় পিতা। আমার যে একুট মায়া লাগল না। আমি পিছন দিক দিয়ে জামিলা কে ধাক্কা মেরে গর্তের ভিতরে ফেলে দিলাম।

গর্তের চারি দিকের পাথর ও মাটি যখন চাপা দিতে থাকি। জামিলা আমার দিকে নজর করে বলে আমি বারবার মায়ের কাছে বলতাম, মা আমার আব্বা কবে আসবে। আমি সব সময় তোমাকে এক নজর দেখার জন্য এবং একবার তোমাকে বাবা বলে ডাকার জন্য অস্থির থাকতাম। বাবা তুমি এই ভাবে আমাকে মেরে ফেল না। মা শুনলে সহৃ করতে পারবে না। আমাকে ছেড়ে দাও কোন দিন আর আমি তোমাকে বাবা বলে ডাকব না। কোন দিন তোমাকে আমার চেহারা দেখাব না। আমাকে প্রাণে মেরো না। জামিলা গর্ত থেকে হাত দুটো উচু করে কত চিৎকার মেরে কাঁদল আর বলল বাবা তোমার মত নিষ্ঠুর পিতা এই দুনিয়াতে নাই। আমি কোন কথা না শুনে মাটি চাঁপা দিয়ে চলে আসি।

হে আল্লাহর রাসূল, আল্লাহ সব গোনাহ মাফ করলেও এই গোনাহ মাফ করবেন না। আজও আমি প্রতি রাতে জামিলার সেই ডাক বাবা আমকে বাঁচাও বলে সেই চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পাই। তখন রাসূলুল্লাহ সা. বললেন, ওহে দাহিয়াতুল কালবী শোন তুমি যেই দিন এই অন্যায় পাপ কাজকরেছ তখন তুমি কাফের ছিলে। তুমি না বুঝে এ পাপ কাজ করেছ। আজ যখন তুমি মুসলমান হয়েছ, কালেমা পড়েছ, আমার সাহাবী হয়েছে, ইসলামের সুশীতল ছায়ার নিচে আশ্রয় নিয়েছ, আল্লাহ বাব্বুল আলামিন এত বড় অন্যায় পাপ কাজ তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। যেহেতু তুমি পড়েছে। “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ ।

কুরআনে আল্লাহ পাক বলেছেন, “যা কিছু আসমান ও যমীনে রয়েছে সবই আল্লাহর । তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন, যাকে ইচ্ছা আযাব দান করবেন। আর আল্লাহ হচ্ছেন, ক্ষমাকারী করুণাময়”। ( আল ইমরান ১২৯)


*  জাহেলি যুগের সেই কলুষিত অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়ে আরব জাতিকে সুসভ্য জাতিতে পরিণত করেছিলেন।j


* বিবাহের প্রথা


قَالَ يَحْيٰى بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ عَنْ يُونُسَ ح و حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنَا عَنْبَسَةُ حَدَّثَنَا يُونُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ أَنَّ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْه“ أَنَّ النِّكَاحَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ كَانَ عَلٰى أَرْبَعَةِ أَنْحَاءٍ فَنِكَاحٌ مِنْهَا نِكَاحُ النَّاسِ الْيَوْمَ يَخْطُبُ الرَّجُلُ إِلَى الرَّجُلِ وَلِيَّتَه“ أَوْ ابْنَتَه“ فَيُصْدِقُهَا ثُمَّ يَنْكِحُهَا وَنِكَاحٌ آخَرُ كَانَ الرَّجُلُ يَقُوْلُ لِامْرَأَتِه„ إِذَا طَهُرَتْ مِنْ طَمْثِهَا أَرْسِلِي إِلٰى فُلاَنٍ فَاسْتَبْضِعِي مِنْه“ وَيَعْتَزِلُهَا زَوْجُهَا وَلاَ يَمَسُّهَا أَبَدًا حَتّٰى يَتَبَيَّنَ حَمْلُهَا مِنْ ذ‘لِكَ الرَّجُلِ الَّذِي تَسْتَبْضِعُ مِنْه“ فَإِذَا تَبَيَّنَ حَمْلُهَا أَصَابَهَا زَوْجُهَا إِذَا أَحَبَّ وَإِنَّمَا يَفْعَلُ ذ‘لِكَ رَغْبَةً فِي نَجَابَةِ الْوَلَدِ فَكَانَ هٰذَا النِّكَاحُ نِكَاحَ الِاسْتِبْضَاعِ وَنِكَاحٌ آخَرُ يَجْتَمِعُ الرَّهْطُ مَا دُونَ الْعَشَرَةِ فَيَدْخُلُونَ عَلَى الْمَرْأَةِ كُلُّهُمْ يُصِيبُهَا فَإِذَا حَمَلَتْ وَوَضَعَتْ وَمَرَّ عَلَيْهَا لَيَالٍ بَعْدَ أَنْ تَضَعَ حَمْلَهَا أَرْسَلَتْ إِلَيْهِمْ فَلَمْ يَسْتَطِعْ رَجُلٌ مِنْهُمْ أَنْ يَمْتَنِعَ حَتّٰى يَجْتَمِعُوا عِنْدَهَا تَقُولُ لَهُمْ قَدْ عَرَفْتُمْ الَّذِي كَانَ مِنْ أَمْرِكُمْ وَقَدْ وَلَدْتُ فَهُوَ ابْنُكَ يَا فُلاَنُ تُسَمِّي مَنْ أَحَبَّتْ بِاسْمِه„ فَيَلْحَقُ بِه„ وَلَدُهَا لاَ يَسْتَطِيعُ أَنْ يَمْتَنِعَ بِه„ الرَّجُلُ وَنِكَاحُ الرَّابِعِ يَجْتَمِعُ النَّاسُ الْكَثِيرُ فَيَدْخُلُونَ عَلَى الْمَرْأَةِ لاَ تَمْتَنِعُ مِمَّنْ جَاءَهَا وَهُنَّ الْبَغَايَا كُنَّ يَنْصِبْنَ عَلٰى أَبْوَابِهِنَّ رَايَاتٍ تَكُونُ عَلَمًا فَمَنْ أَرَادَهُنَّ دَخَلَ عَلَيْهِنَّ فَإِذَا حَمَلَتْ إِحْدَاهُنَّ وَوَضَعَتْ حَمْلَهَا جُمِعُوا لَهَا وَدَعَوْا لَهُمْ الْقَافَةَ ثُمَّ أَلْحَقُوا وَلَدَهَا بِالَّذِي يَرَوْنَ فَالْتَاطَ بِه„ وَدُعِيَ ابْنَه“ لاَ يَمْتَنِعُ مِنْ ذ‘لِكَ فَلَمَّا بُعِثَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم بِالْحَقِّ هَدَمَ نِكَاحَ الْجَاهِلِيَّةِ كُلَّه“ إِلاَّ نِكَاحَ النَّاسِ الْيَوْمَ.


‘উরওয়া ইব্‌নু যুবায়র (রহঃ)


তিনি বলেন, তাঁকে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সহধর্মিণী ‘আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, জাহিলী যুগে চার প্রকারের বিয়ে প্রচলিত ছিল। এক প্রকার হচ্ছে, বর্তমান যে ব্যবস্থা চলছে অর্থাৎ কোন ব্যক্তি কোন মহিলার অভিভাবকের নিকট তার অধীনস্থ মহিলা অথবা তার কন্যার জন্য বিবাহের প্রস্তাব দিবে এবং তার মোহর নির্ধারণের পর বিবাহ করবে। দ্বিতীয় হচ্ছে, কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে মাসিক ঋতু থেকে মুক্ত হবার পর এ কথা বলত যে, তুমি অমুক ব্যক্তির কাছে যাও এবং তার সঙ্গে যৌন মিলন কর। এরপর স্ত্রী তার স্বামীর থেকে পৃথক থাকত এবং কখনও এক বিছানায় ঘুমাত না, যতক্ষণ না সে অন্য ব্যক্তির দ্বারা গর্ভবতী হত, যার সঙ্গে তার যৌন মিলন হত। যখন তার গর্ভ সুস্পষ্টভাবে ইচ্ছে করলে স্বামী তার স্ত্রীর সাথে যৌন সঙ্গম করত। এটা ছিল তার স্বামীর অভ্যাস। এতে উদ্দেশ্য ছিল যাতে করে সে একটি উন্নত জাতের সন্তান লাভ করতে পারে। এ ধরনের বিয়েকে ‘নিকাহুল ইস্‌তিবদা’ বলা হত। তৃতীয় প্রথা ছিল যে, দশ জনের কম কয়েক ব্যক্তি একত্রিত হয়ে পালাক্রমে একই মহিলার সঙ্গে যৌনমিলনে লিপ্ত হত। যদি মহিলা এর ফলে গর্ভবতী হত এবং সন্তান ভূমিষ্ট হবার পর কিছুদিন অতিবাহিত হত, সেই মহিলা এ সকল ব্যক্তিকে ডেকে পাঠাত এবং কেউই আসতে অস্বীকৃতি জানাতে পারত না। যখন সকলেই সেই মহিলার সামনে একত্রিত হত, তখন সে তাদেরকে বলত, তোমরা সকলেই জান- তোমরা কী করেছ! এখন আমি সন্তান প্রসব করেছি, সুতরাং হে অমুক! এটা তোমার সন্তান। ঐ মহিলা যাকে খুশি তার নাম ধরে ডাকত, তখন ঐ ব্যক্তি উক্ত শিশুটিকে গ্রহণ করতে বাধ্য থাকত এবং ঐ মহিলা তার স্ত্রীরূপে গণ্য হত। চতুর্থ প্রকারের বিবাহ হচ্ছে, বহু পুরুষ ঐ মহিলার সঙ্গে যৌন মিলনে লিপ্ত হত এবং ঐ মহিলা তার আছে যত পুরুষ আসত, কাউকে শয্যা-সঙ্গী করতে অস্বীকার করত না। এরা ছিল পতিতা, যার চিহ্ন হিসেবে নিজ ঘরের সামনে পতাকা উড়িয়ে রাখত। যে কেউ ইচ্ছে করলে অবাধে এদের সঙ্গে যৌন মিলনে লিপ্ত হওয়া সকল কাফাহ্‌ পুরুষ এবং একজন ‘কাফাহ্‌’ (এমন একজন বিশেষজ্ঞ, যারা সন্তানের মুখ অথবা শরীরের কোন অঙ্গ দেখে বলতে পারত- অমুকের ঔরসজাত সন্তান)-কে ডেকে আনা হত। সে সন্তানটির যে লোকটির সঙ্গে সাদৃশ্য দেখতে পেত তাকে বলত, এটি তোমার সন্তান। তখন ঐ লোকটি ঐ সন্তানকে নিজের হিসেবে গ্রহণ করতে বাধ্য হত এবং লোকে ঐ সন্তানকে তার সন্তান হিসেবে আখ্যা দিত এবং সে এই সন্তানকে অস্বীকার করতে পারত না। যখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে সত্য দ্বীনসহ পাঠানো হল তখন তিনি বর্তমানে প্রচলিত ব্যবস্থা ছাড়া জাহিলী যুগের সমস্ত বিবাহের রীতি বাতিল করে দিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- অনুচ্ছেদ ৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫১)


সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫১২৭


عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم مَنْ عَالَ جَارِيَتَيْنِ حَتَّى تَبْلُغَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَنَا وَهُوَ هَكَذَا وَضَمَّ أَصَابِعَهُ-


আনাস (রাঃ)


রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দু’টি কন্যার লালন-পালন করবে তাদের পূর্ণ বয়স্কা হওয়া পর্যন্ত, ক্বিয়ামতের দিন সে আমার সাথে এভাবে আসবে। এ বলে তিনি নিজের আঙ্গুলসমূহ একত্রিত করে দেখালেন’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯৫০)।


রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ২২৬

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


——————


قَدْ جَاءَكُم مِّنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُّبِينٌ

(আল মায়িদাহ - ১৫)


وَإِذَا الْمَوْءُودَةُ سُئِلَتْ

(আত তাক্‌ভীর - ৮)

بِأَيِّ ذَنبٍ قُتِلَتْ

(আত তাক্‌ভীর - ৯)


يَهَبُ لِمَن يَشَاءُ إِنَاثًا وَيَهَبُ لِمَن يَشَاءُ الذُّكُورَ

(আশ্‌-শূরা - ৪৯)

أَوْ يُزَوِّجُهُمْ ذُكْرَانًا وَإِنَاثًا ۖ وَيَجْعَلُ مَن يَشَاءُ عَقِيمًا ۚ إِنَّهُ عَلِيمٌ قَدِيرٌ

(আশ্‌-শূরা - ৫০)


وَإِذَا بُشِّرَ أَحَدُهُم بِالْأُنثَىٰ ظَلَّ وَجْهُهُ مُسْوَدًّا وَهُوَ كَظِيمٌ

(আন নাহল - ৫৮)


*  দাহিয়াতুল কালবী  নিজের মেয়েকে জিন্দা কবর দিয়েছেন।


*  কন্যা জন্মের সাথে ফেরস্তা নাযিল

*  কন্যার পিতা আর নবিজী একই পাশা পাশি স্হানে


عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم مَنْ عَالَ جَارِيَتَيْنِ حَتَّى تَبْلُغَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَنَا وَهُوَ هَكَذَا وَضَمَّ أَصَابِعَهُ-


রিয়াদুস সলেহিন,মুসলিম শরীফ, হাদিস নং ২২৬

* ছেলে মেট্রিক পাশ করলে বাপ হা করে,যৌতুক খাবেন না হাত তুলুন

*  মেয়ের হক তথা মিরাস আদায় না করলে হজ্বের মোনাজাত কাজ হবেনা 

*  গর্তের ভিতর থেকে রানীর  সিংহাসনে দিলেন ইসলাম

*  জাহেলি যুগের সেই কলুষিত অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়ে আরব জাতিকে সুসভ্য জাতিতে পরিণত করেছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.