139 শিরক
139 শিরক
156 আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের প্রত্যাশী তার সৎকাজ করা উচিত এবং বন্দেগীর ক্ষেত্রে নিজের রবের সাথে কাউকে শরীক করা উচিত নয়
_____________
* যে তার রবের সাক্ষাতের প্রত্যাশী তার সৎকাজ করা উচিত এবং বন্দেগীর ক্ষেত্রে নিজের রবের সাথে কাউকে শরীক করা উচিত নয়।18:আল-কাহাফ:110
قُلْ إِنَّمَآ أَنَا۠ بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوحٰىٓ إِلَىَّ أَنَّمَآ إِلٰهُكُمْ إِلٰهٌ وٰحِدٌ ۖ فَمَن كَانَ يَرْجُوا لِقَآءَ رَبِّهِۦ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صٰلِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِۦٓأَحَدًۢا
* প্রথমত নেক আমলের কথা বলা হয়েছে,মসজিদে ,মাহফিলে,তাবলিগ গেছেন নেক হয়ে গেছে,হক কথা বলা,সৎ কাজের আদেশ,ভাল পরামর্শ,সত্যর শাক্ষী,দ্বীনের পক্ষে স্লুগান দিছেন,সুবহানাল্লাহ বলছেন নেক হয়ে গেছে, 50:ক্বা-ফ:18
مَّا يَلْفِظُ مِن قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ
* প্রতিটি মূহর্ত নেক পরিবেশে থাকা, জ্বিহবাকে যিকির দ্বারা নারাচারা রাখা
* দু’টি কলেমা (বাণী) রয়েছে, যেগুলো দয়াময় আল্লাহ্র কাছে অতি প্রিয়, উচ্চারনে খুবই সহজ,বুখারী-৭৫৬৩
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم كَلِمَتَانِ حَبِيبَتَانِ إِلَى الرَّحْمَنِ خَفِيفَتَانِ عَلَى اللِّسَانِ ثَقِيلَتَانِ فِي الْمِيزَانِ سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيمِ
* আলী রা: থেকে বর্নিত,একবার গম পেষার যাঁতা ঘুরানোর কারণে ফাতেমাহ (রাঃ) এর হাতে ফোস্কা পড়ে গেল।সহিহ বুখারী ৬৩১৮
فَجَلَسَ بَيْنَنَا حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَ قَدَمَيْهِ عَلَى صَدْرِي
* দ্বিতীয়ত্ব বন্দগীর ক্ষেত্রে কাউকে শরীক না করাـ10:ইউনুস:106
وَلَا تَدْعُ مِن دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنفَعُكَ وَلَا يَضُرُّكَ ۖ فَإِن فَعَلْتَ فَإِنَّكَ إِذًا مِّنَ الظّٰلِمِينَ
* নাস্তিক এক আল্লাহ মানবে দুরের কথা কয় আল্লাহ বলতে কিছুই নাই, আবু হানিফার সাথে নাস্তিকের বাহাস
_____________
24-রবের সাথে সাক্ষাতের প্রত্যাশী
* যে তার রবের সাক্ষাতের প্রত্যাশী তার সৎকাজ করা উচিত এবং বন্দেগীর ক্ষেত্রে নিজের রবের সাথে কাউকে শরীক করা উচিত নয়।18:আল-কাহাফ:110
قُلْ إِنَّمَآ أَنَا۠ بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوحٰىٓ إِلَىَّ أَنَّمَآ إِلٰهُكُمْ إِلٰهٌ وٰحِدٌ ۖ فَمَن كَانَ يَرْجُوا لِقَآءَ رَبِّهِۦ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صٰلِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِۦٓ أَحَدًۢا
হে মুহাম্মাদ! বলো, আমি তো একজন মানুষ তোমাদেরই মতো, আমার প্রতি অহী করা হয় এ মর্মে যে, এক আল্লাহ তোমাদের ইলাহ, কাজেই যে তার রবের সাক্ষাতের প্রত্যাশী তার সৎকাজ করা উচিত এবং বন্দেগীর ক্ষেত্রে নিজের রবের সাথে কাউকে শরীক করা উচিত নয়।
* দু’টি কলেমা (বাণী) রয়েছে, যেগুলো দয়াময় আল্লাহ্র কাছে অতি প্রিয়, উচ্চারনে খুবই সহজ,সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৭৫৬৩
أَحْمَدُ بْنُ إِشْكَابٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ عَنْ عُمَارَةَ بْنِ الْقَعْقَاعِ عَنْ أَبِي زُرْعَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم كَلِمَتَانِ حَبِيبَتَانِ إِلَى الرَّحْمَنِ خَفِيفَتَانِ عَلَى اللِّسَانِ ثَقِيلَتَانِ فِي الْمِيزَانِ سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيمِ
আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দু’টি কলেমা (বাণী) রয়েছে, যেগুলো দয়াময় আল্লাহ্র কাছে অতি প্রিয়, উচ্চারনে খুবই সহজ (আমলের) পাল্লায় অত্যন্ত ভারী। (বাণী দু’টি হচ্ছে), সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহান্নাল্লাহিল আযীম’—আমরা আল্লাহ্ তা’আলার প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করছি, মহান আল্লাহ্ অতীব পবিত্র।(আধুনিক প্রকাশনী- ৭০৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৫৩)
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৭৫৬৩
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
* মুখের কথার ওজন হবে এমন কথা বলা যে কথায় নেক হবে,হক কথা বলা,সৎ কাজের আদেশ,ভাল পরামর্শ,সত্যর শাক্ষী,দ্বীনের পক্ষে স্লুগান, 50:ক্বা-ফ:18
مَّا يَلْفِظُ مِن قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ
এমন কোন শব্দ তার মুখ থেকে বের হয় না যা সংরক্ষিত করার জন্য একজন সদা প্রস্তুত রক্ষক উপস্থিত থাকে না।২১
একবার গম পেষার যাঁতা ঘুরানোর কারণে ফাতেমাহ (রাঃ) এর হাতে ফোস্কা পড়ে গেল।সহিহ বুখারী ৬৩১৮
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ عَلِيٍّ، أَنَّ فَاطِمَةَ ـ عَلَيْهِمَا السَّلاَمُ ـ شَكَتْ مَا تَلْقَى فِي يَدِهَا مِنَ الرَّحَى، فَأَتَتِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم تَسْأَلُهُ خَادِمًا، فَلَمْ تَجِدْهُ، فَذَكَرَتْ ذَلِكَ لِعَائِشَةَ، فَلَمَّا جَاءَ أَخْبَرَتْهُ. قَالَ فَجَاءَنَا وَقَدْ أَخَذْنَا مَضَاجِعَنَا، فَذَهَبْتُ أَقُومُ فَقَالَ " مَكَانَكِ ". فَجَلَسَ بَيْنَنَا حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَ قَدَمَيْهِ عَلَى صَدْرِي فَقَالَ " أَلاَ أَدُلُّكُمَا عَلَى مَا هُوَ خَيْرٌ لَكُمَا مِنْ خَادِمٍ، إِذَا أَوَيْتُمَا إِلَى فِرَاشِكُمَا، أَوْ أَخَذْتُمَا مَضَاجِعَكُمَا، فَكَبِّرَا ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، وَسَبِّحَا ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، وَاحْمَدَا ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، فَهَذَا خَيْرٌ لَكُمَا مِنْ خَادِمٍ ". وَعَنْ شُعْبَةَ عَنْ خَالِدٍ عَنِ ابْنِ سِيرِينَ قَالَ التَّسْبِيحُ أَرْبَعٌ وَثَلاَثُونَ.
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
একবার গম পেষার যাঁতা ঘুরানোর কারণে ফাতেমাহ (রাঃ) এর হাতে ফোস্কা পড়ে গেল। তখন তিনি একটি খাদিম চেয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর কাছে এলেন। কিন্তু তিনি তাঁকে পেলেন না। তখন তিনি আসার উদ্দেশ্যটি 'আয়িশাহ (রাঃ) -এর নিকট ব্যক্ত করে গেলেন। এরপর তিনি যখন গৃহে ফিরলেন তখন 'আয়িশাহ (রাঃ) এ বিষয়টি তাঁকে জানালেন। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের কাছে এমন সময় আগমন করলেন যখন আমরা বিশ্রাম গ্রহণ করেছি। তখন আমি উঠতে চাইলে তিনি বললেনঃ নিজ স্থানেই অবস্থান কর। তারপর আমাদের মাঝখানেই তিনি এমনিভাবে বসে গেলেন যে, আমি তার দু'পায়ের শীতল স্পর্শ আমার বুকে অনুভব করলাম। তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাদের এমন একটি 'আমাল বলে দেব না, যা তোমাদের জন্য একটি খাদিমের চেয়েও অনেক অধিক উত্তম। যখন তোমরা শয্যা গ্রহণ করতে যাবে, তখন তোমারা আল্লাহু আকবর ৩৩ বার, সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, আল্হামদু লিল্লাহ ৩৩ বার পড়বে। এটা তোমাদের জন্য একটি খাদিমের চেয়েও অনেক অধিক কল্যাণকর। ইবনু সীরীন (রহঃ) বলেনঃ তাসবীহ হলো ৩৪ বার।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৭৩,ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬৬)
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৩১৮
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
10:ইউনুস:106
وَلَا تَدْعُ مِن دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنفَعُكَ وَلَا يَضُرُّكَ ۖ فَإِن فَعَلْتَ فَإِنَّكَ إِذًا مِّنَ الظّٰلِمِينَ
আর আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন কোন সত্তাকে ডেকো না, যে তোমার না কোন উপকার করতে না ক্ষতি করতে পারে। যদি তুমি এমনটি করো তাহলে জালেমদের দলভুক্ত হবে।
* নাস্তিক এক আল্লাহ মানবে দুরের কথা কয় আল্লাহ বলতে কিছুই নাই, আবু হানিফার সাথে নাস্তিকের বাহাস
* (নাস্তিকের সাথে তর্কযুদ্ধ)
অনেক অনেক দিন আগের ঘটনা ৷ এক দেশে বাস করত
এক নাস্তিক সে ছিল বড়ই অহংকারী | নিজেকে সে
মহাজ্ঞানী মনে করত | একদিন সে ঘোষনা করল এই
জগতের কোন সৃষ্টিকর্তা নেই এটি প্রমাণিত |
সুতরাং
কে আছো আমার সাথে বিতর্ক করে প্রমান করবে
জগতের সৃষ্টকর্তা আছে | আর তিনি সবকিছু সৃষ্টি
করেছন | নাস্তিক মনে মনে ভাবল আমার এই
চ্যালেঞ্জ কেউ গ্রহণ করবে না |আর মুসলমানরা
আসলে আমি তাদের অনায়াসে হারিয়ে দেব | সারা
দেশে খবর ছড়িয়ে পরল | মুসলমানদের থেকে
চ্যালেঞ্জ গ্রহন করলেন ইমাম আবু হানিফা | দিন
তারিখ ধার্য করা হল, ২দিন পর ঐ স্থানে বিতর্ক
অনুষ্ঠিত হবে | নির্দিষ্ট সময়ে দলে দলে লোক জমা
হতে থাকে আল্লাহর অস্তিত্ব আছে কি নেই? এই
বিতর্ক অনুষ্ঠান শুনতে আর মুসলমানদের অস্তিত্ব
রক্ষা করতে ৷ ঠিক সময়ে শাস্তির গ্রন্থের বিশাল
ভাণ্ডার নিয়ে | এবং ভাবছে আজ মুসলমানদের
নাজেহাল করে ছাড়বে | নির্দিষ্ট সময় হয়ে গেছে
কিন্তু ইমাম সাহেব এখনো আসছেন না | সবার চোখে
মুখে চিন্তার ছাপ আর নাস্তিকের চেহারায়
বিজয়ের
হাসি | সে ভাবছে ইমাম সাহেব পরাজয়ের লজ্জায়
পালিয়েছে ৷ তাই সে সভাপতি কে তার কথা ঘোষনা
করতে বলছে | আর মুসলমানরা লজ্জায় ও পরাজয়ের
আশংকায় প্রায় শেষ | এমন সময় দেখা যাচেছ ইমাম
আবু হানিফা আসছেন | নাস্তিক তাচ্ছিল্যের সুরে
বলে ইমাম সাহেব পরাজয়ের ভয়ে লুকিয়ে ছিলেন
বুঝি | ইমাম সাহেব বলেন ভাই আমি ঠিক সময়ে
আসতাম কিন্তু আমার বাড়ীর পাশে বিশাল নদী |
নদী
পার হয়ে আসতে হয় কিন্তু যখন আসব দেখি কোন
নৌকা আর মাঝি নেই | তাই আমি নৌকার অপেক্ষা
করতে থাকি | এতে অনেক সময় চলে যায় | এরপর
হঠাৎ
দেখি একটি গাছ কেটে পড়ে যায় আর নিজে নিজে
কেটে তক্তা হতে থাকে | শেষে আপনাআপনি
জোড়া
লেগে নৌকা হয়ে যায়| অতপর আমি নৌকা চরে বসি
আর নৌকা নিজে নিজে আমাকে পার করে দেয় |
নাস্তিক এই কথা শুনে হাসতে হাসতে খুন | বলে ইমাম
সাহেব আপনাকে বুদ্ধিমান মনে করি ছিলাম কিন্তু
পরাজয়ের ভয়ে আপনি এমন আজগবি কাহিনী
শুনালেন?? ইমাম বললেন ভাই সত্যি কথা | নাস্তিক
এবার রেগে গিয়ে বলে রাখেন মিয়া! নৌকা কি
এমনি এমনি হতে পারে? আবার আপনাকে পার করে
দিল | ফাজলামোর জায়গা পান না | তখন ইমাম
সাহেব
বলেন যদি এই সামান্য একটি নৌকা নিজে নিজে
না
হতে পারে! তাহলে এই সুবিশাল আকাশ এই কোটি
কোটি গ্রহ নক্ষত্র, পাহাড় পর্বত | কোটি কোটি
মানুষ
কারো সাথে কারো চেহারার মিল নেই, এমনিতে
একা একাই সৃষ্টি হয়ে গেল?? নাস্তিক এই জবাব শুনে
একদম চুপ হয়ে গেল | আর মুসলমানরা বিজয়ের
তাকবীর
দিতে লাগল |
নারায়ে তাকবীর (আল্লাহু আকবার)
কিয়ামতের দিন আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কে আছে সুপারিশ করার
মানুষ কেন সুপারিশ খোঁজে?
আসুন বোঝার চেষ্টা করি মানুষ কেন এই ধরনের শির্ক করে শাফাআত পাওয়ার চেষ্টা করে। ধরুন, আপনি একটা কোম্পানিতে চাকরি করেন, যার চেয়ারম্যান খুবই ন্যায়পরায়ণ মানুষ। তিনি কাউকে কোনো ছাড় দেন না। প্রত্যেকের সাথে সমান আচরণ করেন এবং প্রত্যেকের কাজের খুঁটিনাটি হিসাব রাখেন। এখন তার অধীনে যে ডিরেকটররা আছে, তার মধ্যে একজন হচ্ছে আপনার মামা। আপনি জানেন যে আপনি যদি অফিসে একটু দেরি করে আসেন, মাঝে মধ্যে না বলে ছুটি নেন, হাজার খানেক টাকা এদিক ওদিক করে ফেলেন, তাতে কোনো সমস্যা নেই। চেয়ারম্যানের কাছে যদি একদিন ধরা পড়েও যান, আপনার মামা ঠিকই আপনাকে বাঁচিয়ে দেবে। হাজার হোক, মামা তো। সেজন্য মামাকে খুশি রাখার জন্য আপনি প্রতি মাসে তার বাসায় উপহার নিয়ে যান, অফিসে তাকে শুনিয়ে সবার কাছে তার নামে প্রশংসা করেন, তার জন্মদিনে বিপুল আয়োজন করে অনুষ্ঠান করেন। যেভাবেই হোক মামাকে হাতে রাখতেই হবে। মামা না থাকলে সর্বনাশ।
এই হচ্ছে শির্কের সমস্যা। মুসলিমরা জানে যে, আল্লাহ تعالى হচ্ছেন পরম বিচারক, পরম ন্যায়পরায়ণ। তিনি সব কিছুর পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার করবেনই। এদিকে মানুষ যে প্রতিদিন ইসলামের বড় বড় নিয়ম ভাঙছে, নিজের সুবিধার জন্য ঘুষ দিচ্ছে, সুদ নিচ্ছে– এগুলোর প্রত্যেকটা যদি গুণে গুণে হিসাব করা হয় এবং প্রতিটা অপকর্মের বিচার করা হয়, তাহলে তো সর্বনাশ হয়ে যাবে! জান্নাত পাওয়ার কোনো আশাই থাকবে না! তাহলে কী করা যায়? দেখি আল্লাহর تعالى অধীনে কাউকে হাত করা যায় কি না। তাহলে তাকে দিয়ে কিয়ামতের দিন আল্লাহকে تعالى বলালে তিনি হয়তো বড় দোষগুলো মাফ করে দিবেন।
আবার অনেকে মনে করেন: কিয়ামতের দিন যখন আল্লাহ تعالى তার বিচার করবেন, এবং বিচারের পরে দেখা যাবে তার অবস্থা খুবই খারাপ, তখন সে কিয়ামতের মাঠে দৌড়াদৌড়ি করে তার পির-দরবেশ-শেখ-মাওলানাদেরকে খুঁজে বের করতে পারবে এবং তাদেরকে গিয়ে অনুরোধ করতে পারবে, যেন তারা সুপারিশ করে তাকে বাঁচাতে পারে। আবার অনেকে মনে করেন: আল্লাহ تعالى যখন কিয়ামতে তার বিচার করে তার উপর অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হবেন, তখন সে যদি মরিয়া হয়ে আল্লাহকে تعالى অনুরোধ করে, “ও আল্লাহ, আমি লক্ষ লক্ষ টাকার ঘুষ খেয়েছি জানি—আমি খুবই দুঃখিত। কিন্তু আপনি আমার অমুক-বাগ শরীফের হুজুরকে একবার ডাকেন। আমি বিশ বছর তার বায়াতে ছিলাম। তাকে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়েছি। উনি আমার জন্য কিছু বলবেন।”
আবার অনেকে ধরে নেয় যে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ تعالى যখন বিচার করে তার উপরে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে থাকবেন, তখন সে যদি আল্লাহকে تعالى অনুরোধ করে, “ও আল্লাহ, আমি পর্দা না করে সারা জীবন নির্লজ্জের মতো ঘুরে বেড়িয়েছি, বান্ধবীদের কাছে ফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গিবত করেছি, হিন্দি সিরিয়াল দেখে শাশুড়ির সাথে অনেক কুটনামি করেছি—আমি অনেক অপরাধ করে ফেলেছি। কিন্তু আপনি একটু নবীকে عليه السلام ডাকেন। আমি ওনার জন্য অনেক দুরুদ পড়েছি, তাঁর জন্য কত মিলাদ দিয়েছি, কত সুন্নত নামাজ পড়েছি। উনাকে একটু ডাকেন, উনি আমার জন্য আপনাকে কিছু বলবেন, প্লিজ।”
আল-বাক্বারাহ’র ৪৮, ১২৩ এবং ২৫৪ —এই তিনটি আয়াতে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া আছে, কেউ অন্য কারও সাহায্যে নিজে থেকে এগিয়ে আসবে না। পির, দরবেশ, মাওলানা, শায়খ—কেউ নিজে থেকে এগিয়ে আসবে না আমাদের অপকর্মের জন্য সুপারিশ করতে, এমনকি তারা করলেও তা গ্রহণ করা হবে না। তারা সবাই, এমনকি আল্লাহর تعالى সবচেয়ে কাছের নবী, রাসুলরাও সেদিন আল্লাহর تعالى ভয়ে থাকবেন, নিজেদেরকে নিয়ে চিন্তিত থাকবেন[১৭]—
ওরা যাদেরকে সাহায্যের জন্য ডাকে, তারা নিজেরাই তো তাদের প্রভুর অনুগ্রহ পাওয়ার জন্য চেষ্টা করছে—যদিও তারা তাঁর সবচেয়ে কাছের। তারা সবাই তাঁর করুণার আশা করে, তাঁর শাস্তিকে প্রচণ্ড ভয় পায়। নিঃসন্দেহে, তোমার প্রভুর শাস্তি অত্যন্ত ভয় পাওয়ার মতো। [আল-ইসরা ১৭:৫৭]
তার কী হবে যার জন্য শাস্তির হুকুম অবধারিত হয়ে গেছে? তুমি (মুহাম্মাদ) কি তাদেরকে বাঁচাতে পারবে, যারা ইতিমধ্যেই আগুনে নিমজ্জিত? [আজ-জুমার ৩৯:১৯]
শাফাআতের সঠিক ধারণা
তবে কিয়ামতের দিন একেবারেই যে কোনো ধরনের শাফাআত হবে না—সেটা ভুল ধারণা। আল্লাহ تعالى যখন বিশেষ কিছু কারণে কাউকে অনুমতি দিবেন, তখন শুধু তারাই শাফাআত করতে পারবে। কু’রআনের অন্যান্য আয়াতে এই ধরনের সুপারিশের ঘটনা বলা আছে—
সেদিন কোনো সুপারিশ কাজে লাগবে না, তবে তার সুপারিশ ছাড়া, যাকে পরম করুণাময় অনুমতি দিবেন, যার কথায় তিনি সন্তুষ্ট। [সূরা তাহা ২০:১০৯]
শাফাআত পাবার জন্য তিনটি শর্ত[২৬৫] জরুরি—
১) আল্লাহ تعالى যার শাফাআত গ্রহণ করবেন, তাকে প্রথমে তিনি অনুমতি দিবেন। আল্লাহর تعالى অনুমতি ছাড়া কেউ শাফাআত করতে পারবে না।[২০:১০৯, ২:২৫৫, ৫৩:২৬]
২) যিনি শাফাআত করবেন, তার প্রতি আল্লাহ تعالى সন্তুষ্ট থাকতে হবেন।[২১:২৮, ৫৩:২৬]
৩) যার জন্য শাফাআত করা হবে, তার প্রতি আল্লাহ تعالى সন্তুষ্ট থাকতে হবেন, তার ঈমান থাকতে হবে—নামাজ, যাকাত, গরিবদের হক আদায় ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে পাশ করতে হবে।[৭৪:৩৮-৪৮]
যদি আল্লাহ تعالى কারও প্রতি সন্তুষ্ট না হন, সে যদি নিজেই ঘোরতর অপরাধী হয়ে আল্লাহর تعالى ক্রোধের কারণ হয়ে থাকে, তাহলে সে আর শাফাআত পাবে না। শাফাআত পাবার শর্ত হচ্ছে ঈমান থাকা।[৪] যাদের প্রতি আল্লাহ تعالى সন্তুষ্ট, যারা আল্লাহকে تعالى ভয় করে, শুধু তারাই শাফাআত পাওয়ার যোগ্য।[আম্বিয়া:২৮][১৭]
সুতরাং কেউ যদি ধরে নেয়: সে নামাজ না পড়ে, রোজা না রেখে, সামর্থ্য থাকতে যাকাত না দিয়ে, হজ্জ না করে, বড় বড় কবিরা গুনাহ করে, শুধুমাত্র কোনো নবী-পীর-দরবেশের সুপারিশ পেয়ে জান্নাতে চলে যাবেন, তাহলে শাফাআত সম্পর্কে তার একেবারেই ভুল ধারণা আছে। শাফাআত শুধু তারাই পাবে যারা মূলত ঈমানদার। ইসলামের মূল পাঁচটি ভিত্তি সম্পর্কে সে যথেষ্ট নিষ্ঠাবান ছিল, কিন্তু তার দুর্বলতার কারণে সে কিছু পাপ করে ফেলেছে, বা অল্প কিছু ভালো কাজের অভাবে জান্নাত হারিয়ে ফেলতে যাচ্ছে, তখন তাদের শাফাআত পাওয়ার সুযোগ হতে পারে।[১০][৮]
মানুষ একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারে যে, শাফাআতের পেছনে ছোটাছুটি করাটা কতটা বোকামি। কারও যদি ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রাফিক জ্যামে বসে কোনো হুজুরের কাছে যাবার সময় থাকে, তাহলে তার সেই সময়টা নফল নামাজ পড়ে, অথবা কু’রআন পড়ে বিরাট সওয়াব অর্জন করে, স্বয়ং আল্লাহকে تعالى আরও বেশি খুশি করাটা কি বেশি যুক্তিযুক্ত নয়? কারও যদি পকেটে যথেষ্ট টাকা থাকে হুজুরের সেবা করার জন্য, তাহলে কি তার সেই টাকাটা গরিব, ইয়াতিম মানুষদেরকে সাদাকা দিয়ে বিশাল সওয়াব অর্জন করে, আল্লাহকে تعالى আরও বেশি খুশি করাটা বেশি যুক্তিযুক্ত নয়? সরাসরি আল্লাহকে تعالى আরও বেশি খুশি করার চেষ্টা না করে, তার অধীনে অন্য কারও জন্য আমাদের সীমিত জীবনের মূল্যবান সময়, সম্পদ ব্যয় করাটা কি কোনো যৌক্তিক কাজ?
সূত্র:
[১] বাইয়িনাহ এর কু’রআনের তাফসীর। [২] ম্যাসেজ অফ দা কু’রআন — মুহাম্মাদ আসাদ। [৩] তাফহিমুল কু’রআন — মাওলানা মাওদুদি। [৪] মা’রিফুল কু’রআন — মুফতি শাফি উসমানী। [৫] মুহাম্মাদ মোহার আলি — A Word for Word Meaning of The Quran [৬] সৈয়দ কুতব — In the Shade of the Quran [৭] তাদাব্বুরে কু’রআন – আমিন আহসান ইসলাহি। [৮] তাফসিরে তাওযীহুল কু’রআন — মুফতি তাক্বি উসমানী। [৯] বায়ান আল কু’রআন — ড: ইসরার আহমেদ। [১০] তাফসীর উল কু’রআন — মাওলানা আব্দুল মাজিদ দারিয়াবাদি [১১] কু’রআন তাফসীর — আব্দুর রাহিম আস-সারানবি [১২] আত-তাবারি-এর তাফসীরের অনুবাদ। [১৩] তাফসির ইবন আব্বাস। [১৪] তাফসির আল কুরতুবি। [১৫] তাফসির আল জালালাইন। [১৬] লুঘাতুল কুরআন — গুলাম আহমেদ পারভেজ। [১৭] তাফসীর আহসানুল বায়ান — ইসলামিক সেন্টার, আল-মাজমাআহ, সউদি আরব [১৮] কু’রআনুল কারীম – বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসীর — বাদশাহ ফাহাদ কু’রআন মুদ্রণ কমপ্লেক্স। [২৬৬] শেখ ইয়াসির কাজির শাফাআতের উপর
No comments