86 কলেমার যিকির করা
‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আমর (রাঃ)
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : নূহ (আঃ) স্বীয় ইন্তিকালের সময় তাঁর দুই ছেলেকে ডেকে বলেছেন : আমি তো অক্ষম হয়ে পড়েছি। তাই আমি তোমাদেরকে অসিয়ত করে যাচ্ছি। আমি তোমাদেরকে দু’টি বিষয়ে আদেশ করছি এবং দু’টি বিষয় থেকে নিষেধ করছি। আমি তোমাদেরকে শির্ক এবং অহংকার থেকে নিষেধ করছি। আর যে দুটি বিষয়ে আদেশ করছি তার একটি হলো : “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্”। কেননা সমস্ত আসমান ও যমীন এবং এর মাছে যা কিছু আছে সব কিছু যদি এক পাল্লায় রাখা হয় আর অপর পাল্লায় “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্” রাখা হয়, তাহলে কালেমার পাল্লাই ঝুলে যাবে (ভারি হবে)। আর যদি সমস্ত আসমান-যমীন (সাত আকাশ ও সাত যমীন) এবং এর মধ্যকার যা কিছু আছে, একটি হালকা বা গোলাকার করে তার উপর এ কালেমাকে রাখা হয় তাহলে ওজনের কারণে তা ভেঙ্গে যাবে। আর আমি তোমাদেরকে আদেশ করছি ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামাদিহি’ (পাঠ করার জন্য), কেননা এটা প্রত্যেক বস্তুর তাসবীহ, এর দ্বারাই প্রত্যেক বস্তুকে রিযিক্ব দেয়া হয়। [১]
সহিহ ফাযায়েলে আমল, হাদিস নং ৪৫
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
* * তবে আমাদের শঙ্কিত বা হতাশ হবার কিছু নেই।
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي عَامِرُ بْنُ يَحْيَى، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " يُصَاحُ بِرَجُلٍ مِنْ أُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى رُءُوسِ الْخَلاَئِقِ فَيُنْشَرُ لَهُ تِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ سِجِلاًّ كُلُّ سِجِلٍّ مَدَّ الْبَصَرِ ثُمَّ يَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ هَلْ تُنْكِرُ مِنْ هَذَا شَيْئًا فَيَقُولُ لاَ يَا رَبِّ فَيَقُولُ أَظَلَمَتْكَ كَتَبَتِي الْحَافِظُونَ ثُمَّ يَقُولُ أَلَكَ عُذْرٌ أَلَكَ حَسَنَةٌ فَيُهَابُ الرَّجُلُ فَيَقُولُ لاَ . فَيَقُولُ بَلَى إِنَّ لَكَ عِنْدَنَا حَسَنَاتٍ وَإِنَّهُ لاَ ظُلْمَ عَلَيْكَ الْيَوْمَ فَتُخْرَجُ لَهُ بِطَاقَةٌ فِيهَا أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ قَالَ فَيَقُولُ يَا رَبِّ مَا هَذِهِ الْبِطَاقَةُ مَعَ هَذِهِ السِّجِلاَّتِ فَيَقُولُ إِنَّكَ لاَ تُظْلَمُ . فَتُوضَعُ السِّجِلاَّتُ فِي كِفَّةٍ وَالْبِطَاقَةُ فِي كِفَّةٍ فَطَاشَتِ السِّجِلاَّتُ وَثَقُلَتِ الْبِطَاقَةُ " . قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى الْبِطَاقَةُ الرُّقْعَةُ وَأَهْلُ مِصْرَ يَقُولُونَ لِلرُّقْعَةِ بِطَاقَةً
আবদুল্লাহ বিন আমর (রাঃ)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন সমস্ত সৃষ্টির সামনে আমার এক উম্মাতকে ডাকা হবে, অতঃপর তার সামনে নিরানব্বইটি দফতর পেশ করা হবে। প্রতিটি দফতর দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত দীর্ঘ হবে। মহান আল্লাহ বলবেন, তুমি কি এর কোন কিছু অস্বীকার করো? সে বলবে, না, হে আমার প্রভু! আল্লাহ বলবেন, তোমার উপর আমলনামা লেখক আমার ফেরেশতাগণ কি জুলুম করেছে? অতঃপর তিনি জিজ্ঞেস করবেন, তোমার নিকট কি কোন নেকী আছে? সে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়বে এবং বলবে, না। তখন আল্লাহ বলবেন, হাঁ, আমার নিকট তোমার কিছু নেকী জমা আছে। আজ তোমার উপর জুলুম করা হবে না। অতঃপর তার সামনে একটি চিরকুট তুলে ধরা হবে, যাতে লিপিবদ্ধ থাকবেঃ "আমি সাক্ষ্য দেই যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বান্দাহ ও রাসূল।" তখন সে বলবে, হে আমার রব! এতো বৃহৎ দফতরসমূহের তুলনায় এই ক্ষুদ্র চিরকুট আর কি উপকারে আসবে! তিনি বলবেন, তোমার প্রতি অন্যায় করা হবে না। অতঃপর সেই বৃহদাকার দফতরসমূহ এক পাল্লায় এবং সেই ক্ষুদ্র চিরকূটটি আরেক পাল্লায় রাখা হবে। এতে বৃহদাকার দফতরসমূহের পাল্লা হালকা হয়ে উপরে উঠে যাবে এবং ক্ষুদ্র চিরকুটের পাল্লা ভারী হয়ে যাবে। মুহাম্মাদ বিন ইয়াহইয়া বলেন, বিতাকা (চিরকুট) অর্থ রুক্আ (টুকরা) , মিসরবাসী রুক্আকে বিতাকা বলে।[৩৬৩২]
তাহকীক আলবানীঃসহীহ।
মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হাদিস নং ৪৩০০
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
* মহানবী (সাঃ) এর যে নির্দেশ পালন করতে হযরত উমর (রাঃ) আবু হুরায়রা (রাঃ) কে বাধা দিলেন ।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আমরা রাসূলূল্লাহ এর খেদমতে উপস্হিত ছিলাম এবং উনার চর্তুপাশ্বে বসা ছিলাম । হযরত আবু বকর (রাঃ) এবং হযরত উমর (রাঃ) ও আমাদের সাথে ঐ মজলিসে উপস্হিত ছিলেন । এরই মধ্যে রাসূলূল্লাহ (সাঃ) আমাদের মাঝখান হতে উঠে কোন এক দিকে চলে গেলেন । তারপর তার ফিরে আসতে অনেক দেরী হচ্ছিল বলে আমরা শংকিত হয়ে পড়লাম যে , একাকী আমাদেরকে ছেড়ে গিয়ে তিনি কোন দূর্ঘটনায় পড়লেন কিনা ? এ চিন্তুায় আমরা অস্হির হয়ে গেলাম এবং সবাই উনার খোজে বেরিয়ে পড়লাম । সবার আগে আমিই অস্হির হয়ে উনার সন্ধানে বেরিয়ে পড়লাম । খুজতে খুজতে শেষ পর্যন্ত আনসারদের বনু নজ্জার গোত্রের এক বাগানে এসে পৈাছলাম । বাগানটি চার দেয়াল দ্বারা বেষ্টিত ছিলো । আমি এখানে এসে চারদিক ঘুরতে লাগলাম যে ভিতরে যাওয়ার কোন রাস্তা পাই কিনা । কিন্তু কোন রাস্তা খোজে পেলাম না । হঠাৎ দেখলাম যে একটি ছোট্র একটি নালা । যা বাহিরের একটি কুয়া থেকে বাগানের ভিতর প্রবাহিত হচ্ছে । আমি নিজেকে সংকুচিত করে এই সরু নালা দিয়ে বাগানের ভিতর পৈাছে গেলাম এবং রাসূলূল্লাহ (সাঃ) এর সামনে হাজির হলাম ।
রাসূলূল্লাহ (সাঃ) আমাকে দেখে বললেন, আবু হুরায়রা ? আমি উত্তর দিলামঃ হ্যা, ইয়া রাসূলূল্লাহ । তিনি বললেনঃ কিভাবে এখানে আসা হলো ? আমি বললামঃ ইয়া রাসূলূল্লাহ ! আপনি আমাদের মাঝে ছিলেন , হঠাৎ উঠে আসলেন । তারপর যখন দেখলাম আপনার ফিরতে দেরী হচ্ছে , তখন আমাদের আশংকা হলো যে, আমাদের থেকে পৃথক হয়ে একাকী আপনি কোন অসুবিধার সম্মুখীন হলেন কিনা । এই আশংকায় আমরা সবাই ঘাবড়ে গিয়ে বেরিয়ে পড়লাম । আর সবার আগে আমিই শংকিত হয়ে বেরিয়ে পড়লাম । শেষ পর্যন্ত আমি এ বাগানে এসে পৈাছলাম আর শিয়ালের মত শরীর কুচকে এই সরু পথেই কোন রকমে ঢুকে পড়লাম । অন্যান্য লোকেরাও আমার পেছনে রয়েছে ।
এমন সময় রাসূলূল্লাহ (সাঃ) নিজের পাদুকাদ্বয় আমার হাতে দিয়ে বললেনঃ আমার এই জুতা দুটি নিয়ে যাও এবং এ বাগান থেকে বের হবার পর এমন যে ব্যাক্তির সাথেই তোমার সাক্ষাৎ হয়, যে আন্তুরিক বিশ্বাস নিয়ে 'লা-ইলাহা ইল্লাহর' সাক্ষ্য দেয় তাকে জান্নাতের সুসংবাদ শুনিয়ে দাও ।
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি সেখান থেকে বের হয়ে সামনে রওয়ানা দিলাম । সর্বপ্রথম যার সাথে আমার সাক্ষাৎ হলো তিনি হলেন হযরত উমর । তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আবু হুরায়রা ! তোমার হাতে এ পাদুকাদ্বয়ের রহস্য কি ? আমি উত্তর দিলাম, এ দুটি হচ্ছে হুযুর (সাঃ) এর জুতা মোবারক । আমাকে তিনি এগুলো দিয়ে পাঠিয়েছেন যে, এমন যার সাথেই আমার সাক্ষাৎ হয়, যে আন্তরিক ভাবে লা-ইলাহা ইল্লাহর' সাক্ষ্য প্রদান করে , আমি যেন তাকে জান্নাতের সুসংবাদ শুনিয়ে দেই ।
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, এই কথা শুনে হযরত উমর (রাঃ) আমার বুকে হাত দ্বারা এমন জোরে আঘাত করলেন যে, আমি চিৎ হয়ে পড়ে গেলাম । তারপর তিনি বললেন যে, পিছনের দিকে ফিরে যাও । আমি কাদঁতে কাদঁতে হুযুর (সাঃ) এর নিকট ফিরে আসলাম আর ওমরও আমার পেছন পেছন এসে হাজির হলেন ।
রাসূল (সাঃ) আমাকে এ অবস্হায় দেখে জিজ্ঞেস করলেন, আবু হুরায়রা ! তোমার কি হয়েছে ? আমি বললাম, ওমর (রাঃ) এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হলো । আপনি আমাকে যে সুসংবাদ দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিলেন , আমি তাকে সেই সুসংবাদ শুনালাম , তখন তিনি আমার বুকের উপর এমন আঘাত করলেন যে আমি চিৎ হয়ে পড়ে গেলাম । আর তিনি আমাকে এও বললেন যে, পিছনে ফিরে যাও । রাসূল (সাঃ) তখন ওমর (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বললেন যে, উমর তুমি কেন এমনটি করলে ?
হযরত উমর (রাঃ) নিবেদন করলেন, ইয়া রাসূলূল্লাহ ! আমার মাতাপিতা আপনার জন্য উৎসর্গীকৃত হউক । আপনি কি আবু হুরায়রাকে আপনার পাদুকাদ্বয় দিয়ে এজন্য পাঠিয়ে ছিলেন যে, সে এমন যার সাথেই সাক্ষাৎ করবে , যে আন্তরিকভাবে 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'র সাক্ষ্য প্রদান করে , তাকেই যেন জান্নাতের সুসংবাদ শুনিয়ে দেয় । হুযুর (সাঃ) বললেন, হ্যা, আমিই তাকে একথা বলে পাঠিয়ে ছিলাম । উমর (রাঃ) বললেন, দয়া করে আপনি এরূপ করবেন না । কেননা, আমার আশংকা হয় যে, মানুষ একথা শুনে এর উপরই ভরসা করে বসে থাকবে (এবং আমল ও সাধনা থেকে উদাসীন হয়ে যাবে )। তাই তাদেরকে এভাবে আরো আমল করতে দিন । মহানবী (সাঃ) বললেন, আচ্ছা , তাদেরকে আমল করার জন্য ছেড়ে দাও ।
(মুসলিম)
* আরশের খুটিতে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ [ﷺ]
★হাদীস নং- 1
روى سيدنا عبد الله بن عمر رضي الله عنهما قال: قال رسول الله صلى الله عليه وآله وسلم (لما اقترف آدم الخطيئة قال: يا رب أسألك بحق محمد إلا غفرت لي فقال الله تعالى يا آدم كيف عرفت محمدا ولم أخلقه؟ قال: يا رب إنك لما خلقتني رفعت رأسي فرأيت علي قوائم العرش مكتوبا لا إله إلا الله محمد رسول الله فعلمت أنك لم تضف إلى اسمك إلا أحب الخلق إليك فقال الله تعالى صدقت يا آدم إنه لأحب الخلق إلى وإذ سألتني بحقه فقد غفرت لك ولو لا محمد ما خلقتك
অনুবাদঃ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুল [ﷺ] বলেছেন, যখন আদম আলাইহিস সালামের নিকট তাঁর নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল ভক্ষণের বিষয়টি ধরা পড়ল, তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহ, আমি মুহাম্মাদের [ﷺ] ওয়াসীলা নিয়ে তোমার দরবারে ফরিয়াদ করছি, আমাকে ক্ষমা করে দাও।
অতঃপর আল্লাহ বললেন, হে আদম, তুমি মুহাম্মাদকে কীভাবে চিনলে, এখনো যাকে সৃষ্টি করি নাই?
তিনি বললেন, হে আল্লাহ, তুমি যখন আমাকে সৃষ্টি করেছিলে, আমি তখন আমার মাথা উঠিয়েছিলাম। তখন দেখতে পেয়েছিলাম, আরশের খুটিগুলোর উপর লেখা, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ। তখন আমি বুঝতে পেরেছিলাম, সমগ্র সৃষ্টির মধ্য সবচেয়ে প্রিয় না হলে তুমি তাঁর নাম তোমার নামের সাথে মিলাতে না।
অতঃপর আল্লাহ বললেন, হে আদম তুমি ঠিকই বলেছ। নিশ্চয়ই সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে সে আমার সবচেয়ে প্রিয়, আর যেহেতু তুমি তাঁর ওয়াসীলা নিয়ে আমার নিকট দোয়া করেছ, তাই তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম। আর(জেনে রাখ) মুহাম্মাদকে সৃষ্টি না করলে আমি তোমাকে সৃষ্টি করতাম না।
রেফারেন্সঃ
দালাইলুন নুবুওওয়াহ লিল বাইহাকী
৫/৪৮৯
আল মুস্তাদরাক লিল হাকিম-২/৬১৫
আল মু’জামুল আওসাত লিত তাবারানী- ৬৪৯৮
যে সকল মুহাদ্দিসীন এ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেনঃ
১-ইমাম হাকিম বলেছেন হাদিসটি সহীহ।
আল মুস্তাদরাক-২/৬১৫
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، أَخْبَرَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، لَمَّا حَضَرَتْ أَبَا طَالِبٍ الْوَفَاةُ جَاءَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَوَجَدَ عِنْدَهُ أَبَا جَهْلِ بْنَ هِشَامٍ، وَعَبْدَ اللَّهِ بْنَ أَبِي أُمَيَّةَ بْنِ الْمُغِيرَةِ، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لأَبِي طَالِبٍ " يَا عَمِّ، قُلْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، كَلِمَةً أَشْهَدُ لَكَ بِهَا عِنْدَ اللَّهِ ". فَقَالَ أَبُو جَهْلٍ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي أُمَيَّةَ يَا أَبَا طَالِبٍ، أَتَرْغَبُ عَنْ مِلَّةِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَلَمْ يَزَلْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَعْرِضُهَا عَلَيْهِ، وَيَعُودَانِ بِتِلْكَ الْمَقَالَةِ، حَتَّى قَالَ أَبُو طَالِبٍ آخِرَ مَا كَلَّمَهُمْ هُوَ عَلَى مِلَّةِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، وَأَبَى أَنْ يَقُولَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَمَا وَاللَّهِ لأَسْتَغْفِرَنَّ لَكَ، مَا لَمْ أُنْهَ عَنْكَ ". فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى فِيهِ {مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ} الآيَةَ.
সাঈদ ইব্নু মুসাইয়্যাব (রহঃ)
তিনি বলেন, আবূ তালিব এর মৃত্যুর সময় উপস্থিত হলে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার নিকট আসলেন। তিনি সেখানে আবূ জাহ্ল ইব্নু হিশাম ও ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু আবূ উমায়্যা ইব্নু মুগীরাকে উপস্থিত দেখতে পেলেন। (রাবী বলেন) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ তালিবকে লক্ষ্য করে বললেনঃ চাচাজান! ‘লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহু’ কালিমা পাঠ করুন, তাহলে এর অসীলায় আমি আল্লাহর সমীপে আপনার জন্য সাক্ষী দিতে পারব। আবূ জাহ্ল ও ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু আবূ উমায়্যা বলে উঠল, ওহে আবূ তালিব! তুমি কি আবদুল মুত্তালিবের ধর্ম হতে বিমুখ হবে? অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার নিকট কালিমাহ পেশ করতে থাকেন, আর তারা দু’জনও তাদের উক্তি পুনরাবৃত্তি করতে থাকে। অবশেষে আবূ তালিব তাদের সামনে শেষ কথাটি যা বলল, তা এই যে, সে আবদুল মুত্তালিবের ধর্মের উপর অবিচল রয়েছে, সে ‘লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহু’ বলতে অস্বীকার করল। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহর কসম! তবুও আমি আপনার জন্য মাগফিরাত কামনা করতে থাকব, যতক্ষণ না আমাকে তা হতে নিষেধ করা হয়। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা'আলা নাযিল করেনঃ - (নবীর জন্য সঙ্গত নয়......) مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ.. (সূরা আত্-তাওবাহ্ঃ ১১৩)।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১৩৬০
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
87 সুবহা নাল্লাহ এর ফজিলত
أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَتَّابٌ هُوَ ابْنُ بَشِيرٍ، عَنْ خُصَيْفٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، وَمُجَاهِدٍ، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: جَاءَ الْفُقَرَاءُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ الْأَغْنِيَاءَ يُصَلُّونَ كَمَا نُصَلِّي، وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُومُ، وَلَهُمْ أَمْوَالٌ يَتَصَدَّقُونَ وَيُنْفِقُونَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " إِذَا صَلَّيْتُمْ فَقُولُوا: سُبْحَانَ اللَّهِ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ عَشْرًا، فَإِنَّكُمْ تُدْرِكُونَ بِذَلِكَ مَنْ سَبَقَكُمْ، وَتَسْبِقُونَ مَنْ بَعْدَكُمْ "
---
[حكم الألباني] منكر بتعشير التهليل
ইব্ন আব্বাস (রাঃ)
তিনি বলেন, কিছু দরিদ্র লোক (একদা) রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে সে বলল, ইয়া রাসুল্লাল্লাহ! ধনীরাও সালাত আদায় করে থাকে যেমনিভাবে আমরা আদায় করে থাকি আর তারাও সিয়াম পালন করে থাকে যেমনিভাবে আমরা পালন করে থাকি, কিন্তু তাদের জন্য রয়েছে সম্পদ, যা থেকে তারা দান-সদকা করে থাকে এবং গোলাম (কিনে) আযাদ করে থাকে। তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যখন তোমরা সালাত আদায় করবে, তখন বলবে, সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার, আল্লাহু আকবর ৩৩ বার এবং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ১০ বার। কেননা, এর দ্বারা তোমরা তোমাদের অগ্রবর্তীদের সমপর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারবে এবং তোমাদের পরবর্তী থেকে অগ্রগামী হয়ে যেতে পারবে।
সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ১৩৫৩
হাদিসের মান: অন্যান্য
তাসবিহ মানে হলো আল্লাহর প্রশংসা করা। আর আল্লাহর প্রশংসায় দুনিয়া ও পরকালের অনেক কল্যাণ রয়েছে। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক হাদিসে তাসবিহ-তাহলিলের ফজিলত বর্ণনা করেছেন।
একবার হজরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৩টি তাসবিহ পড়ার নসিহত পেশ করেন। এ তাসবিহগুলোকে তাসবিহে ফাতেমি বলা হয়। আর তাহলো-
سُبْحَانَ الله (সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার)
اَلْحَمْدُ لِلّه (আল-হামদুলিল্লাহ ৩৩ বার)
اَللهُ اَكْبَر (আল্লাহু আকবার ৩৩/৩৪বার)
এ তাসবিহ প্রসঙ্গে প্রিয়নবির ঘোষণাটি ছিল এমন-
হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত একবার গম পেষার চাক্কি ঘুরানোর কারণে হজরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহার হাতে ফোস্কা পড়ে যায়। তখন তিনি একজন খাদেম চেয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গিয়েছিলেন কিন্তু তাকে পেলেন না।
তাঁর আসার উদ্দেশ্যটি হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জানালেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ঘরে আসলেন, তখন হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা তাঁকে হজরত ফাতেমার আবেদনের বিষয়টি জানালেন।
অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের (ঘরে) কাছে এমন সময় আসলেন যখন আমরা বিছানায় বিশ্রাম গ্রহণ করছি। তখন আমি উঠতে চাইলে প্রিয়নবি বললেন, নিজ জায়গায়ই থাকো। তারপর প্রিয়নবি আমাদের মাঝে এমনভাবে বসলেন যে, আমি তাঁর দু'পায়ের শীতল স্পর্শ আমার বুকে অনুভব করলাম।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি কি তোমাদের এমন একটি আমল বলে দেব না; যা তোমাদের জন্য একজন খাদেমের চেয়েও অনেক বেশি উত্তম।
86 কলেমার যিকির করা
‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আমর (রাঃ)
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : নূহ (আঃ) স্বীয় ইন্তিকালের সময় তাঁর দুই ছেলেকে ডেকে বলেছেন : আমি তো অক্ষম হয়ে পড়েছি। তাই আমি তোমাদেরকে অসিয়ত করে যাচ্ছি। আমি তোমাদেরকে দু’টি বিষয়ে আদেশ করছি এবং দু’টি বিষয় থেকে নিষেধ করছি। আমি তোমাদেরকে শির্ক এবং অহংকার থেকে নিষেধ করছি। আর যে দুটি বিষয়ে আদেশ করছি তার একটি হলো : “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্”। কেননা সমস্ত আসমান ও যমীন এবং এর মাছে যা কিছু আছে সব কিছু যদি এক পাল্লায় রাখা হয় আর অপর পাল্লায় “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্” রাখা হয়, তাহলে কালেমার পাল্লাই ঝুলে যাবে (ভারি হবে)। আর যদি সমস্ত আসমান-যমীন (সাত আকাশ ও সাত যমীন) এবং এর মধ্যকার যা কিছু আছে, একটি হালকা বা গোলাকার করে তার উপর এ কালেমাকে রাখা হয় তাহলে ওজনের কারণে তা ভেঙ্গে যাবে। আর আমি তোমাদেরকে আদেশ করছি ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামাদিহি’ (পাঠ করার জন্য), কেননা এটা প্রত্যেক বস্তুর তাসবীহ, এর দ্বারাই প্রত্যেক বস্তুকে রিযিক্ব দেয়া হয়। [১]
সহিহ ফাযায়েলে আমল, হাদিস নং ৪৫
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
* * তবে আমাদের শঙ্কিত বা হতাশ হবার কিছু নেই।
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي عَامِرُ بْنُ يَحْيَى، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " يُصَاحُ بِرَجُلٍ مِنْ أُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى رُءُوسِ الْخَلاَئِقِ فَيُنْشَرُ لَهُ تِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ سِجِلاًّ كُلُّ سِجِلٍّ مَدَّ الْبَصَرِ ثُمَّ يَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ هَلْ تُنْكِرُ مِنْ هَذَا شَيْئًا فَيَقُولُ لاَ يَا رَبِّ فَيَقُولُ أَظَلَمَتْكَ كَتَبَتِي الْحَافِظُونَ ثُمَّ يَقُولُ أَلَكَ عُذْرٌ أَلَكَ حَسَنَةٌ فَيُهَابُ الرَّجُلُ فَيَقُولُ لاَ . فَيَقُولُ بَلَى إِنَّ لَكَ عِنْدَنَا حَسَنَاتٍ وَإِنَّهُ لاَ ظُلْمَ عَلَيْكَ الْيَوْمَ فَتُخْرَجُ لَهُ بِطَاقَةٌ فِيهَا أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ قَالَ فَيَقُولُ يَا رَبِّ مَا هَذِهِ الْبِطَاقَةُ مَعَ هَذِهِ السِّجِلاَّتِ فَيَقُولُ إِنَّكَ لاَ تُظْلَمُ . فَتُوضَعُ السِّجِلاَّتُ فِي كِفَّةٍ وَالْبِطَاقَةُ فِي كِفَّةٍ فَطَاشَتِ السِّجِلاَّتُ وَثَقُلَتِ الْبِطَاقَةُ " . قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى الْبِطَاقَةُ الرُّقْعَةُ وَأَهْلُ مِصْرَ يَقُولُونَ لِلرُّقْعَةِ بِطَاقَةً
আবদুল্লাহ বিন আমর (রাঃ)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন সমস্ত সৃষ্টির সামনে আমার এক উম্মাতকে ডাকা হবে, অতঃপর তার সামনে নিরানব্বইটি দফতর পেশ করা হবে। প্রতিটি দফতর দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত দীর্ঘ হবে। মহান আল্লাহ বলবেন, তুমি কি এর কোন কিছু অস্বীকার করো? সে বলবে, না, হে আমার প্রভু! আল্লাহ বলবেন, তোমার উপর আমলনামা লেখক আমার ফেরেশতাগণ কি জুলুম করেছে? অতঃপর তিনি জিজ্ঞেস করবেন, তোমার নিকট কি কোন নেকী আছে? সে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়বে এবং বলবে, না। তখন আল্লাহ বলবেন, হাঁ, আমার নিকট তোমার কিছু নেকী জমা আছে। আজ তোমার উপর জুলুম করা হবে না। অতঃপর তার সামনে একটি চিরকুট তুলে ধরা হবে, যাতে লিপিবদ্ধ থাকবেঃ "আমি সাক্ষ্য দেই যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বান্দাহ ও রাসূল।" তখন সে বলবে, হে আমার রব! এতো বৃহৎ দফতরসমূহের তুলনায় এই ক্ষুদ্র চিরকুট আর কি উপকারে আসবে! তিনি বলবেন, তোমার প্রতি অন্যায় করা হবে না। অতঃপর সেই বৃহদাকার দফতরসমূহ এক পাল্লায় এবং সেই ক্ষুদ্র চিরকূটটি আরেক পাল্লায় রাখা হবে। এতে বৃহদাকার দফতরসমূহের পাল্লা হালকা হয়ে উপরে উঠে যাবে এবং ক্ষুদ্র চিরকুটের পাল্লা ভারী হয়ে যাবে। মুহাম্মাদ বিন ইয়াহইয়া বলেন, বিতাকা (চিরকুট) অর্থ রুক্আ (টুকরা) , মিসরবাসী রুক্আকে বিতাকা বলে।[৩৬৩২]
তাহকীক আলবানীঃসহীহ।
মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হাদিস নং ৪৩০০
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
* মহানবী (সাঃ) এর যে নির্দেশ পালন করতে হযরত উমর (রাঃ) আবু হুরায়রা (রাঃ) কে বাধা দিলেন ।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আমরা রাসূলূল্লাহ এর খেদমতে উপস্হিত ছিলাম এবং উনার চর্তুপাশ্বে বসা ছিলাম । হযরত আবু বকর (রাঃ) এবং হযরত উমর (রাঃ) ও আমাদের সাথে ঐ মজলিসে উপস্হিত ছিলেন । এরই মধ্যে রাসূলূল্লাহ (সাঃ) আমাদের মাঝখান হতে উঠে কোন এক দিকে চলে গেলেন । তারপর তার ফিরে আসতে অনেক দেরী হচ্ছিল বলে আমরা শংকিত হয়ে পড়লাম যে , একাকী আমাদেরকে ছেড়ে গিয়ে তিনি কোন দূর্ঘটনায় পড়লেন কিনা ? এ চিন্তুায় আমরা অস্হির হয়ে গেলাম এবং সবাই উনার খোজে বেরিয়ে পড়লাম । সবার আগে আমিই অস্হির হয়ে উনার সন্ধানে বেরিয়ে পড়লাম । খুজতে খুজতে শেষ পর্যন্ত আনসারদের বনু নজ্জার গোত্রের এক বাগানে এসে পৈাছলাম । বাগানটি চার দেয়াল দ্বারা বেষ্টিত ছিলো । আমি এখানে এসে চারদিক ঘুরতে লাগলাম যে ভিতরে যাওয়ার কোন রাস্তা পাই কিনা । কিন্তু কোন রাস্তা খোজে পেলাম না । হঠাৎ দেখলাম যে একটি ছোট্র একটি নালা । যা বাহিরের একটি কুয়া থেকে বাগানের ভিতর প্রবাহিত হচ্ছে । আমি নিজেকে সংকুচিত করে এই সরু নালা দিয়ে বাগানের ভিতর পৈাছে গেলাম এবং রাসূলূল্লাহ (সাঃ) এর সামনে হাজির হলাম ।
রাসূলূল্লাহ (সাঃ) আমাকে দেখে বললেন, আবু হুরায়রা ? আমি উত্তর দিলামঃ হ্যা, ইয়া রাসূলূল্লাহ । তিনি বললেনঃ কিভাবে এখানে আসা হলো ? আমি বললামঃ ইয়া রাসূলূল্লাহ ! আপনি আমাদের মাঝে ছিলেন , হঠাৎ উঠে আসলেন । তারপর যখন দেখলাম আপনার ফিরতে দেরী হচ্ছে , তখন আমাদের আশংকা হলো যে, আমাদের থেকে পৃথক হয়ে একাকী আপনি কোন অসুবিধার সম্মুখীন হলেন কিনা । এই আশংকায় আমরা সবাই ঘাবড়ে গিয়ে বেরিয়ে পড়লাম । আর সবার আগে আমিই শংকিত হয়ে বেরিয়ে পড়লাম । শেষ পর্যন্ত আমি এ বাগানে এসে পৈাছলাম আর শিয়ালের মত শরীর কুচকে এই সরু পথেই কোন রকমে ঢুকে পড়লাম । অন্যান্য লোকেরাও আমার পেছনে রয়েছে ।
এমন সময় রাসূলূল্লাহ (সাঃ) নিজের পাদুকাদ্বয় আমার হাতে দিয়ে বললেনঃ আমার এই জুতা দুটি নিয়ে যাও এবং এ বাগান থেকে বের হবার পর এমন যে ব্যাক্তির সাথেই তোমার সাক্ষাৎ হয়, যে আন্তুরিক বিশ্বাস নিয়ে 'লা-ইলাহা ইল্লাহর' সাক্ষ্য দেয় তাকে জান্নাতের সুসংবাদ শুনিয়ে দাও ।
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি সেখান থেকে বের হয়ে সামনে রওয়ানা দিলাম । সর্বপ্রথম যার সাথে আমার সাক্ষাৎ হলো তিনি হলেন হযরত উমর । তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আবু হুরায়রা ! তোমার হাতে এ পাদুকাদ্বয়ের রহস্য কি ? আমি উত্তর দিলাম, এ দুটি হচ্ছে হুযুর (সাঃ) এর জুতা মোবারক । আমাকে তিনি এগুলো দিয়ে পাঠিয়েছেন যে, এমন যার সাথেই আমার সাক্ষাৎ হয়, যে আন্তরিক ভাবে লা-ইলাহা ইল্লাহর' সাক্ষ্য প্রদান করে , আমি যেন তাকে জান্নাতের সুসংবাদ শুনিয়ে দেই ।
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, এই কথা শুনে হযরত উমর (রাঃ) আমার বুকে হাত দ্বারা এমন জোরে আঘাত করলেন যে, আমি চিৎ হয়ে পড়ে গেলাম । তারপর তিনি বললেন যে, পিছনের দিকে ফিরে যাও । আমি কাদঁতে কাদঁতে হুযুর (সাঃ) এর নিকট ফিরে আসলাম আর ওমরও আমার পেছন পেছন এসে হাজির হলেন ।
রাসূল (সাঃ) আমাকে এ অবস্হায় দেখে জিজ্ঞেস করলেন, আবু হুরায়রা ! তোমার কি হয়েছে ? আমি বললাম, ওমর (রাঃ) এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হলো । আপনি আমাকে যে সুসংবাদ দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিলেন , আমি তাকে সেই সুসংবাদ শুনালাম , তখন তিনি আমার বুকের উপর এমন আঘাত করলেন যে আমি চিৎ হয়ে পড়ে গেলাম । আর তিনি আমাকে এও বললেন যে, পিছনে ফিরে যাও । রাসূল (সাঃ) তখন ওমর (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বললেন যে, উমর তুমি কেন এমনটি করলে ?
হযরত উমর (রাঃ) নিবেদন করলেন, ইয়া রাসূলূল্লাহ ! আমার মাতাপিতা আপনার জন্য উৎসর্গীকৃত হউক । আপনি কি আবু হুরায়রাকে আপনার পাদুকাদ্বয় দিয়ে এজন্য পাঠিয়ে ছিলেন যে, সে এমন যার সাথেই সাক্ষাৎ করবে , যে আন্তরিকভাবে 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'র সাক্ষ্য প্রদান করে , তাকেই যেন জান্নাতের সুসংবাদ শুনিয়ে দেয় । হুযুর (সাঃ) বললেন, হ্যা, আমিই তাকে একথা বলে পাঠিয়ে ছিলাম । উমর (রাঃ) বললেন, দয়া করে আপনি এরূপ করবেন না । কেননা, আমার আশংকা হয় যে, মানুষ একথা শুনে এর উপরই ভরসা করে বসে থাকবে (এবং আমল ও সাধনা থেকে উদাসীন হয়ে যাবে )। তাই তাদেরকে এভাবে আরো আমল করতে দিন । মহানবী (সাঃ) বললেন, আচ্ছা , তাদেরকে আমল করার জন্য ছেড়ে দাও ।
(মুসলিম)
* আরশের খুটিতে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ [ﷺ]
★হাদীস নং- 1
روى سيدنا عبد الله بن عمر رضي الله عنهما قال: قال رسول الله صلى الله عليه وآله وسلم (لما اقترف آدم الخطيئة قال: يا رب أسألك بحق محمد إلا غفرت لي فقال الله تعالى يا آدم كيف عرفت محمدا ولم أخلقه؟ قال: يا رب إنك لما خلقتني رفعت رأسي فرأيت علي قوائم العرش مكتوبا لا إله إلا الله محمد رسول الله فعلمت أنك لم تضف إلى اسمك إلا أحب الخلق إليك فقال الله تعالى صدقت يا آدم إنه لأحب الخلق إلى وإذ سألتني بحقه فقد غفرت لك ولو لا محمد ما خلقتك
অনুবাদঃ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুল [ﷺ] বলেছেন, যখন আদম আলাইহিস সালামের নিকট তাঁর নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল ভক্ষণের বিষয়টি ধরা পড়ল, তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহ, আমি মুহাম্মাদের [ﷺ] ওয়াসীলা নিয়ে তোমার দরবারে ফরিয়াদ করছি, আমাকে ক্ষমা করে দাও।
অতঃপর আল্লাহ বললেন, হে আদম, তুমি মুহাম্মাদকে কীভাবে চিনলে, এখনো যাকে সৃষ্টি করি নাই?
তিনি বললেন, হে আল্লাহ, তুমি যখন আমাকে সৃষ্টি করেছিলে, আমি তখন আমার মাথা উঠিয়েছিলাম। তখন দেখতে পেয়েছিলাম, আরশের খুটিগুলোর উপর লেখা, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ। তখন আমি বুঝতে পেরেছিলাম, সমগ্র সৃষ্টির মধ্য সবচেয়ে প্রিয় না হলে তুমি তাঁর নাম তোমার নামের সাথে মিলাতে না।
অতঃপর আল্লাহ বললেন, হে আদম তুমি ঠিকই বলেছ। নিশ্চয়ই সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে সে আমার সবচেয়ে প্রিয়, আর যেহেতু তুমি তাঁর ওয়াসীলা নিয়ে আমার নিকট দোয়া করেছ, তাই তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম। আর(জেনে রাখ) মুহাম্মাদকে সৃষ্টি না করলে আমি তোমাকে সৃষ্টি করতাম না।
রেফারেন্সঃ
দালাইলুন নুবুওওয়াহ লিল বাইহাকী
৫/৪৮৯
আল মুস্তাদরাক লিল হাকিম-২/৬১৫
আল মু’জামুল আওসাত লিত তাবারানী- ৬৪৯৮
যে সকল মুহাদ্দিসীন এ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেনঃ
১-ইমাম হাকিম বলেছেন হাদিসটি সহীহ।
আল মুস্তাদরাক-২/৬১৫
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، أَخْبَرَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، لَمَّا حَضَرَتْ أَبَا طَالِبٍ الْوَفَاةُ جَاءَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَوَجَدَ عِنْدَهُ أَبَا جَهْلِ بْنَ هِشَامٍ، وَعَبْدَ اللَّهِ بْنَ أَبِي أُمَيَّةَ بْنِ الْمُغِيرَةِ، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لأَبِي طَالِبٍ " يَا عَمِّ، قُلْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، كَلِمَةً أَشْهَدُ لَكَ بِهَا عِنْدَ اللَّهِ ". فَقَالَ أَبُو جَهْلٍ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي أُمَيَّةَ يَا أَبَا طَالِبٍ، أَتَرْغَبُ عَنْ مِلَّةِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَلَمْ يَزَلْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَعْرِضُهَا عَلَيْهِ، وَيَعُودَانِ بِتِلْكَ الْمَقَالَةِ، حَتَّى قَالَ أَبُو طَالِبٍ آخِرَ مَا كَلَّمَهُمْ هُوَ عَلَى مِلَّةِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، وَأَبَى أَنْ يَقُولَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَمَا وَاللَّهِ لأَسْتَغْفِرَنَّ لَكَ، مَا لَمْ أُنْهَ عَنْكَ ". فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى فِيهِ {مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ} الآيَةَ.
সাঈদ ইব্নু মুসাইয়্যাব (রহঃ)
তিনি বলেন, আবূ তালিব এর মৃত্যুর সময় উপস্থিত হলে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার নিকট আসলেন। তিনি সেখানে আবূ জাহ্ল ইব্নু হিশাম ও ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু আবূ উমায়্যা ইব্নু মুগীরাকে উপস্থিত দেখতে পেলেন। (রাবী বলেন) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ তালিবকে লক্ষ্য করে বললেনঃ চাচাজান! ‘লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহু’ কালিমা পাঠ করুন, তাহলে এর অসীলায় আমি আল্লাহর সমীপে আপনার জন্য সাক্ষী দিতে পারব। আবূ জাহ্ল ও ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু আবূ উমায়্যা বলে উঠল, ওহে আবূ তালিব! তুমি কি আবদুল মুত্তালিবের ধর্ম হতে বিমুখ হবে? অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার নিকট কালিমাহ পেশ করতে থাকেন, আর তারা দু’জনও তাদের উক্তি পুনরাবৃত্তি করতে থাকে। অবশেষে আবূ তালিব তাদের সামনে শেষ কথাটি যা বলল, তা এই যে, সে আবদুল মুত্তালিবের ধর্মের উপর অবিচল রয়েছে, সে ‘লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহু’ বলতে অস্বীকার করল। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহর কসম! তবুও আমি আপনার জন্য মাগফিরাত কামনা করতে থাকব, যতক্ষণ না আমাকে তা হতে নিষেধ করা হয়। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা'আলা নাযিল করেনঃ - (নবীর জন্য সঙ্গত নয়......) مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ.. (সূরা আত্-তাওবাহ্ঃ ১১৩)।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১৩৬০
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
87 সুবহা নাল্লাহ এর ফজিলত
أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَتَّابٌ هُوَ ابْنُ بَشِيرٍ، عَنْ خُصَيْفٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، وَمُجَاهِدٍ، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: جَاءَ الْفُقَرَاءُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ الْأَغْنِيَاءَ يُصَلُّونَ كَمَا نُصَلِّي، وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُومُ، وَلَهُمْ أَمْوَالٌ يَتَصَدَّقُونَ وَيُنْفِقُونَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " إِذَا صَلَّيْتُمْ فَقُولُوا: سُبْحَانَ اللَّهِ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ عَشْرًا، فَإِنَّكُمْ تُدْرِكُونَ بِذَلِكَ مَنْ سَبَقَكُمْ، وَتَسْبِقُونَ مَنْ بَعْدَكُمْ "
---
[حكم الألباني] منكر بتعشير التهليل
ইব্ন আব্বাস (রাঃ)
তিনি বলেন, কিছু দরিদ্র লোক (একদা) রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে সে বলল, ইয়া রাসুল্লাল্লাহ! ধনীরাও সালাত আদায় করে থাকে যেমনিভাবে আমরা আদায় করে থাকি আর তারাও সিয়াম পালন করে থাকে যেমনিভাবে আমরা পালন করে থাকি, কিন্তু তাদের জন্য রয়েছে সম্পদ, যা থেকে তারা দান-সদকা করে থাকে এবং গোলাম (কিনে) আযাদ করে থাকে। তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যখন তোমরা সালাত আদায় করবে, তখন বলবে, সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার, আল্লাহু আকবর ৩৩ বার এবং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ১০ বার। কেননা, এর দ্বারা তোমরা তোমাদের অগ্রবর্তীদের সমপর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারবে এবং তোমাদের পরবর্তী থেকে অগ্রগামী হয়ে যেতে পারবে।
সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ১৩৫৩
হাদিসের মান: অন্যান্য
তাসবিহ মানে হলো আল্লাহর প্রশংসা করা। আর আল্লাহর প্রশংসায় দুনিয়া ও পরকালের অনেক কল্যাণ রয়েছে। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক হাদিসে তাসবিহ-তাহলিলের ফজিলত বর্ণনা করেছেন।
একবার হজরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৩টি তাসবিহ পড়ার নসিহত পেশ করেন। এ তাসবিহগুলোকে তাসবিহে ফাতেমি বলা হয়। আর তাহলো-
سُبْحَانَ الله (সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার)
اَلْحَمْدُ لِلّه (আল-হামদুলিল্লাহ ৩৩ বার)
اَللهُ اَكْبَر (আল্লাহু আকবার ৩৩/৩৪বার)
এ তাসবিহ প্রসঙ্গে প্রিয়নবির ঘোষণাটি ছিল এমন-
হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত একবার গম পেষার চাক্কি ঘুরানোর কারণে হজরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহার হাতে ফোস্কা পড়ে যায়। তখন তিনি একজন খাদেম চেয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গিয়েছিলেন কিন্তু তাকে পেলেন না।
তাঁর আসার উদ্দেশ্যটি হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জানালেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ঘরে আসলেন, তখন হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা তাঁকে হজরত ফাতেমার আবেদনের বিষয়টি জানালেন।
অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের (ঘরে) কাছে এমন সময় আসলেন যখন আমরা বিছানায় বিশ্রাম গ্রহণ করছি। তখন আমি উঠতে চাইলে প্রিয়নবি বললেন, নিজ জায়গায়ই থাকো। তারপর প্রিয়নবি আমাদের মাঝে এমনভাবে বসলেন যে, আমি তাঁর দু'পায়ের শীতল স্পর্শ আমার বুকে অনুভব করলাম।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি কি তোমাদের এমন একটি আমল বলে দেব না; যা তোমাদের জন্য একজন খাদেমের চেয়েও অনেক বেশি উত্তম।
(তিনি বলেন) যখন তোমরা (রাতে বিশ্রামের উদ্দেশ্যে) বিছানায় যাবে, তখন তোমরা আল্লাহু আকবার (اَللهُ اَكْبَر) ৩৩ বার, সুবহানাল্লাহ (سُبْحَانَ الله) ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ (اَلْحَمْدُ لِله) ৩৩ বার পড়বে।
এটা তোমাদের জন্য একজন খাদেমের চেয়েও অনেক বেশি মঙ্গলজনক। ইবনে শিরিন বলেন, তাসবিহ ৩৪ বার। (বুখারি)
উল্লেখ্য যে, তাসবিহে ফাতেমির প্রচলন এত বেশি যে মুসলিম উম্মাহর অনেকেই প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজের পর এ তাসবিহ বেশি বেশি আদায় করে থাকে। আর তাসবিহে ফাতেমির বাক্যগুলোর সবই আল্লাহর প্রশংসামূলক বাক্য।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয়নবির শেখানো প্রশংসামূলক বাক্যের মাধ্যমে নিয়মিত তাসবিহ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
(তিনি বলেন) যখন তোমরা (রাতে বিশ্রামের উদ্দেশ্যে) বিছানায় যাবে, তখন তোমরা আল্লাহু আকবার (اَللهُ اَكْبَر) ৩৩ বার, সুবহানাল্লাহ (سُبْحَانَ الله) ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ (اَلْحَمْدُ لِله) ৩৩ বার পড়বে।
এটা তোমাদের জন্য একজন খাদেমের চেয়েও অনেক বেশি মঙ্গলজনক। ইবনে শিরিন বলেন, তাসবিহ ৩৪ বার। (বুখারি)
উল্লেখ্য যে, তাসবিহে ফাতেমির প্রচলন এত বেশি যে মুসলিম উম্মাহর অনেকেই প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজের পর এ তাসবিহ বেশি বেশি আদায় করে থাকে। আর তাসবিহে ফাতেমির বাক্যগুলোর সবই আল্লাহর প্রশংসামূলক বাক্য।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয়নবির শেখানো প্রশংসামূলক বাক্যের মাধ্যমে নিয়মিত তাসবিহ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
No comments