Header Ads

Header ADS

 80/ 74 স্বামী  স্ত্রীর হক স্বামী স্ত্রীর ভালবাসা


* স্ত্রীদের সাথে কেমন আচরণ করতে হবে তার একটি উত্তম উদাহরণ রয়েছে হযরত ওমর (রাঃ)-এর জীবনে। খলিফা হযরত ওমরের খেলাফত কালের ঘটনা। এক ব্যক্তির স্ত্রী ছিল বেশ মুখরা ও ঝগড়াটে। সব সময় সে স্বমীকে জ্বালাতন করত। স্বামী বেচারা স্ত্রীর দুর্ব্যবহারে অতিষ্ট হয়ে এ ব্যাপারে নালিশ জানাতে একদিন সে হাজির হল হযরত ওমর (রাঃ) এর দরবারে। সে হযরত ওমরের বাড়ির ফটকে দাঁড়িয়ে খলিফার বের হওয়ার অপেক্ষা করতে লাগল। এ সময় সে শুনতে পেল খলিফাকে তাঁর বিবি কঠোর ভাষায় বকাবকি করছেন। কিন্তু হযরত ওমর (রাঃ) কোন জওয়াব দিচ্ছেন না , বরং নীরবে সব শুনে যাচ্ছেন। এ ভাবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে লোকটি চলে যেতে উদ্যত হল। সে মনে মনে ভাবল, এমন প্রতাপশালী খলিফার যখন এমন হাল তখন আমি আর কোন ছাই।


এমন সময় খলিফা বাড়ির বের হয়ে দেখতে পেলেন লোকটি চলে যাচ্ছে। তিনি লোকটিকে থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন ঃ“ কি হে বাপু, তুমি এলেই বা কেন, আর কিছু না বলে চলে যাচ্ছ কেন? ”


লোকটি জওয়াব দিল, “হুজুর, আমার স্ত্রী আমার সাথে দুর্ব্যবহার করে , কথায় কথায় ঝগড়া করে । তার বিরুদ্ধে নালিশ করার জন্য আপনার দরবারে এসেছিলাম। কিন্ত দেখতে পেলাম আপনার হাল আমার চেয়ে ভাল নয়। তাই কিছু না বলেই চলে যাচ্ছি।”


হযরত ওমর (রাঃ) বললেন : “শোন ভাই, আমার উপর আমার বিবি সাহেবার বেশ কিছু অধিকার কাছে, আমি তাই তার এ বকাবকি সহ্য করছি। দেখ সে আমার খাবার রান্না করে, রুটি বানায়, কাপড় চোপড় ধোয় , বাচ্চাদেরকে দুধ খাওয়ায়। অথচ এ সব কাজ তার জন্য বাধ্যতামূলক নয়, সে স্বেচ্ছায়ই এ সব করে। এ সব কাজ করে সে আমাকে হারাম উপার্জন থেকে বাচিয়ে রাখে। এখন বল আমি কি তাকে সহ্য না করে পারি?”


লোকটি বললঃ “আমিরুল মুমিনীন,আমার বিবিও তো এরূপ। ”


হযরত ওমর (রাঃ) বললেন , “তা হলে তাকে সহ্য করতে থাক, ভাই । দুনিয়ার জীবনটা তো নিতান্তই ক্ষণস্থায়ী। ” 


খলিফাতুল মুসলিমীন- এর এ ভাষণ থেকে স্বামীদের শিক্ষা গ্রহণ করে স্ত্রীদের প্রতি উত্তম ব্যবহার করা প্রয়োজন। কারণ নূর নবী (সঃ) বলেছেনঃ ‘তোমাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ঐ ব্যক্তি, যারা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সব চেয়ে ভাল ব্যবহার করে।’




হাসান বসরী (রহ.) বলেছেন:


-আমি মক্কার বাজারে গেলাম।


কাপড় কিনতে। দোকানদার শুরু থেকেই


কাপড়ের প্রশংসা করতে শুরু করলো।


ক্ষণে ক্ষণে শপথ করে বলতে


লাগলো:তার


কাপড়ই বাজারের সেরা, ইত্যাদি।


আমি কাপড় না কিনেই দোকান


থেকে


বেরিয়ে এলাম। এমন লোকের কাছ


থেকে


কিছু কেনা নিরাপদ নয়।দুই বছর পর


আবার


হজে গেলাম। আবার কাপড় কিনতে


গেলাম। অদূরে দাঁড়িয়ে লোকটার


প্রতি লক্ষ রাখলাম। নাহ, আগের মতো


প্রশংসা-শপথ কোনওটাই করছে না।


ক্রেতা নিজের পছন্দ মতো


কেনাকাটা


করছে।আমি এগিয়ে গেলাম। জানতে


চাইলাম:-তুমি কি অমুক লোক নও?


-জ্বি।


-তাহলে তোমার এই পরিবর্তনের


কারণ কী?


-তখন আমার ঘরে প্রথম স্ত্রী ছিল।


আমি যদি সন্ধ্যায় অল্প টাকা নিয়ে


ফিরতাম সে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে


আমার


রাতটাকে মাটি করে দিত। আর যত


বেশি টাকাই নিয়ে যেতাম,তার


চোখে


লাগত না। আরও বেশি কেন রুজি


করলাম না,


তা নিয়ে উঠতে-বসতে খোঁটা শুনতে


হতো।


তার বাপের বাড়ির দোহাই দিত!


-তারপর?


-আল্লাহ আমার দিকে ফিরে


তাকিয়েছেন। আমার প্রথম স্ত্রী


মারা গেছে। আমি দ্বিতীয় বিয়ে


করেছি। বিয়ের পরদিন বাজারে


আসছি, বউ


পেছন থেকে আমার জামা টেনে


গতি


রোধ


করে বললো:শুনুন! আল্লাহকে ভয় করে


চলবেন।


আমাদেরকে হালাল খাওয়াবেন।


গুনাহ


করে


বেশি কামানোর প্রয়োজন নেই।


আপনি


হালাল পথে কম রোজগার নিয়ে


এলেও,


সেটাকে আমি পরম সমাদরে অনেক


বেশি মনে করবো। আপনি যদি কিছু


না নিয়েই বা রাতে ফেরেন,সেটাই


আল্লাহর


ফয়সালা বলে,খালি পেটে ঘুমিয়ে


পড়বো।


তবুও হারামের পথে যাবেন না।


২।


হাজেরার মৃত্যুর পর ইবরাহীম (আঃ) যখন


ইসমাঈলকে দেখতে যান, তখন তার


স্ত্রীকে


কুশলাদি জিজ্ঞেস করলে তিনি


বলেন,


‘আমরা খুব অভাবে ও কষ্টের মধ্যে


আছি’।


জবাবে তিনি বলেন, তোমার স্বামী


এলে


তাকে আমার সালাম দিয়ে বলো


যে,


তিনি


যেন দরজার চৌকাঠ পাল্টে ফেলেন’।


পরে


ইসমাঈল বাড়ী ফিরলে ঘটনা শুনে


বলেন


উনি আমার আব্বা এবং তিনি


তোমাকে


তালাক দিতে বলেছেন।ফলে ইসমাঈল


স্ত্রীকে তালাক দেন ও অন্য স্ত্রী


গ্রহণ


করেন। পরে একদিন পিতা এসে একই


প্রশ্ন


করলে।স্ত্রী বলেন, আমরা ভাল ও


সচ্ছলতার মধ্যে আছি এবং তিনি


আল্লাহর প্রশংসা করেন।


ইবরাহীম তাদের সংসারে বরকতের


জন্য


আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করলেন।


অতঃপর


তাকেবলেন,তোমার স্বামী ফিরলে


তাকে বলো যেন


দরজার চৌকাঠ ঠিক রাখেন ও মযবূত


করেন’।


ইসমাঈল ফিরে এলে ঘটনা শুনে তার


ব্যাখ্যা


দেন ও বলেন, উনি আমার পিতা।


তোমাকে


স্ত্রীত্বে বহাল রাখার নির্দেশ


দিয়ে


গেছেন।


গল্প দুটি থেকে আমরা শিখতে পারি


যে,


স্বামীর জীবিকার উপর স্ত্রীর প্রভাব


অনেক। স্ত্রী যেমন স্বামীকে হারাম


রাস্তায় ঠেলেদিতে পারে তেমনি


পারে


হারাম থেকে বাঁচাতে।


একারণেই ইবরাহিম (আ) তার ছেলে


ইসমাইল


(আ) এর স্ত্রীকে দরজার চৌকাঠের


সাথে


তুলনা করে চৌকাঠ বদলে ফেলতে


বলেছিলেন।


ঘরের দরজায় যদি শক্ত চৌকাঠ না


থাকে


তবে তাতে সহজেই চোর ডাকাত


ঢুকতে


পারে। তেমনি স্ত্রী ঠিক না হলে


পরিবারেও


শয়তান সহজে ঢুকতে 




সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৩৬৪


হাদিসের মান: সহিহ হাদিস




* মহান রাব্বুল আলামিনের একমাত্র মনোনীত ধর্ম ইসলাম বলছে, পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা ও সৌহার্দ স্থাপিত না হলে পরিপূর্ণ ঈমানদার হওয়া যায় না, শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করা যায় না, এমনকি জান্নাতও লাভ করা যাবে না।




তাই রাসুলুল্লাহ (সা.) মোমিনদের পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা ও সৌহার্দ বৃদ্ধির জন্য একটি চমৎকার পন্থা বাতলে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তোমরা বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত ঈমানদার না হবে, তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা ও সৌহার্দ স্থাপন করবে। আমি কি তোমাদের এমন বিষয়ের কথা বলব না, যা করলে তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও সৌহার্দ প্রতিষ্ঠিত হবে? সাহাবিরা বললেন, নিশ্চয় ইয়া রাসুলাল্লাহ! (তিনি বললেন) ‘তোমাদের মধ্যে বহুল পরিমাণে সালামের প্রচলন করো।’ (মুসলিম : ৮১)।




অর্থ্যাৎ স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা বাড়াতে অবশ্যই প্রতিটি মুসলমানকে একে অপরকে সালাম দেয়ার অভ্যাস তৈরি করতেই হবে।




--------------------------------


* স্ত্রীদের সাথে কেমন আচরণ করতে হবে তার একটি উত্তম উদাহরণ রয়েছে হযরত ওমর (রাঃ)-এর জীবনে।এক ব্যক্তির স্ত্রী ছিল বেশ মুখরা ও ঝগড়াটে। 




* স্বামীর জীবিকার উপর স্ত্রীর প্রভাব অনেক। স্ত্রী যেমন স্বামীকে হারাম রাস্তায় ঠেলেদিতে পারে তেমনি পারে হারাম থেকে বাঁচাতে।


হাসান বসরী (রহ.) বলেছেন:


-আমি মক্কার বাজারে গেলাম।


কাপড় কিনতে। দোকানদার শুরু থেকেই


কাপড়ের প্রশংসা করতে শুরু করলো।




* ইসমাইল (আ) এর স্ত্রীর গঠনা থেকে আমরা আরো অনেক কিছু জানতে পারি ঘরের দরজায় যদি শক্ত চৌকাঠ না


থাকে


তবে তাতে সহজেই চোর ডাকাত


ঢুকতে


পারে। তেমনি স্ত্রী ঠিক না হলে


পরিবারেও


শয়তান সহজে ঢুকতে পারে্




* স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা বাড়াতে অবশ্যই প্রতিটি মুসলমানকে একে অপরকে সালাম দেয়ার অভ্যাস তৈরি করতেই হবে।

No comments

Powered by Blogger.