Header Ads

Header ADS

77/ 236  যৌবনের ইবাদত 

اِ۟لَّذِیْ خَلَقَ الْمَوْتَ وَ الْحَیٰوةَ لِیَبْلُوَكُمْ اَیُّكُمْ اَحْسَنُ عَمَلًا١ؕ وَ هُوَ الْعَزِیْزُ الْغَفُوْرُۙ

*  পুরুষের গোসল ফরজ ও মহিলাদের মেন্স হওয়ার পর থেকে প্রতিটি মূহুর্তের শাঁস প্রশাসের হিসাব নিবেন 

* প্রতিটি মানুষের তিনটি পর্যাক্রম,40 আল মু’মিন (গাফির 67

هُوَ الَّذِیْ خَلَقَكُمْ مِّنْ تُرَابٍ ثُمَّ مِنْ نُّطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ یُخْرِجُكُمْ طِفْلًا ثُمَّ لِتَبْلُغُوْۤا اَشُدَّكُمْ ثُمَّ لِتَكُوْنُوْا شُیُوْخًاۚ وَ مِنْكُمْ مَّنْ یُّتَوَفّٰى مِنْ قَبْلُ وَ لِتَبْلُغُوْۤا اَجَلًا مُّسَمًّى وَّ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُوْنَ

*  কিয়ামত দিবসে পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে । জামে' আত তিরমিজি, ২৪১৬

عَنْ عُمْرِهِ فِيمَا أَفْنَاهُ وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَا أَبْلاَهُ وَمَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَ أَنْفَقَهُ وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ

* যৌবন কালকে সূর্যের যাথে তুলনা

* প্রতিদিনই সূর্য উদয় হয় আবার অস্তও যায়,কিন্তু এর সাথে আমাদের জীবনের যে এক বিশাল মিল রয়েছে 

*  যৌবন কালের ইবাদত #শ্রেষ্ঠ ইবাদত।বৃদ্ধ দাদু তার যুবক নাতী রায়হানকে ফজরের নামাজ পড়তে ডাক দিলো!

* প্রেমিকাও ডাকে কয় আমার দিকে চাইলানা মোর মনের কথা বুজলানা, যৌবন থাকিতে বন্ধু আইলা না,নাউজুবিল্লাহ,আমি বলব

*  মুয়াজ্জিনের আল্লাহু আকবারের মর্ম বুজলানা জীবন থাকিতে নামাজ পরলানা

*  সরকারে ও ডাকে যৌবন দাও ষাট বছর হলে পেনশান দিব

* আল্লাহ বলেন তোমরা যৌবনকালের ইবাদত দাও বৃদ্ধাকালে রয়েছ পেনশান

*  যৌবনের চেহারাটা মানুষ পছন্দ করে। আল্লাহ আমল চান চেহারা নয়

-আর যৌবন কালের ইবাদত স্বয়ং আল্লাহ পছন্দ করেন!

*  ইবাদত কারী যুবক আরশের নিচে স্হান পাবে। সহিহ বুখারী-২২৭০

وَشَابٌّ نَشَأَ بِعِبَادَةِ اللَّهِ

*  দুনিয়ার সরকারের কাজ থেকে যৌবনের শক্তি দিয়ে অনেক কিছু আদায় করেছো কিন্তু আল্লাহর কাছ থেকে কি আদার করেছো। 

____________________________________

* প্রতিটি মানুষের তিনটি পর্যাক্রম,40 আল মু’মিন (গাফির 67

هُوَ الَّذِیْ خَلَقَكُمْ مِّنْ تُرَابٍ ثُمَّ مِنْ نُّطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ یُخْرِجُكُمْ طِفْلًا ثُمَّ لِتَبْلُغُوْۤا اَشُدَّكُمْ ثُمَّ لِتَكُوْنُوْا شُیُوْخًا١ۚ وَ مِنْكُمْ مَّنْ یُّتَوَفّٰى مِنْ قَبْلُ وَ لِتَبْلُغُوْۤا اَجَلًا مُّسَمًّى وَّ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُوْنَ


শব্দার্থ:        هُوَ =   তিনি ই (আল্লাহ) ,     الَّذِي =  যিনি,     خَلَقَكُمْ =    তোমাদের   সৃষ্টি    করেছেন  ,     مِنْ =  থেকে,     تُرَابٍ =  মাটি,     ثُمَّ =  এরপর,     مِنْ =  থেকে,     نُطْفَةٍ =  শুক্রবিন্দু,     ثُمَّ =  এরপর,     مِنْ =  থেকে,     عَلَقَةٍ =  জমাটরক্ত,     ثُمَّ =  এরপর,     يُخْرِجُكُمْ =    তোমাদের বের করেন ,     طِفْلًا =  শিশুরূপে,     ثُمَّ =  এরপর (বৃদ্ধিদেন) ,     لِتَبْلُغُوا =   তোমরা যেনউপনীতহও,     أَشُدَّكُمْ =    তোমাদের যৌবনে,     ثُمَّ =  এরপর,     لِتَكُونُوا =   তোমরা ওযেনহও,     شُيُوخًا =  বৃদ্ধ,     وَمِنْكُمْ =  এবং তোমাদের মধ্যথেকে,     مَنْ =  কেউ,     يُتَوَفَّىٰ =  মৃত্যুবরণকরে (বৃদ্ধহওয়ার) ,     مِنْ =    মধ্য হতে ,     قَبْلُ =  পূর্বেই,     وَلِتَبْلُغُوا =  আর (এসবএ জন্যে ) যেনউপনীতহও,     أَجَلًا =  একটিমেয়াদে,     مُسَمًّى =  নির্দিষ্ট,     وَلَعَلَّكُمْ =  এবং  যা তেতোমরা,     تَعْقِلُونَ =  অনুধাবনকরো,


অনুবাদ:    তিনিই তো সে সত্তা যিনি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন। তারপর শুক্র থেকে। তারপর রক্তের পিণ্ড থেকে। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে শিশুর আকৃতিতে বের করে আনেন। এরপর তিনি তোমাদেরকে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত করেন যাতে তোমরা নিজেদের পূর্ণ শক্তিতে উপনীত হতে পারো। তারপর আরো বৃদ্ধিপ্রাপ্ত করেন যাতে তোমরা বৃদ্ধাবস্থায় উপনীত হও। তোমাদের কাউকে আগেই ফিরিয়ে নেয়া হয়। এসব কাজ করা হয় এজন্য যাতে তোমরা তোমাদের নির্ধারিত সময়ের সীমায় পৌঁছতে পারো এবং যাতে প্রকৃত সত্য উপলব্ধি করতে পারো।


*  কিয়ামত দিবসে পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ হওয়ার আগপর্যন্ত আদম সন্তানের পদদ্বয় আল্লাহ্ তা'আলার নিকট হতে সরতে পারবে না। জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ২৪১৬

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

 عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ لاَ تَزُولُ قَدَمَا ابْنِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ عِنْدِ رَبِّهِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ عَنْ عُمْرِهِ فِيمَا أَفْنَاهُ وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَا أَبْلاَهُ وَمَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَ أَنْفَقَهُ وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ ‏"‏ ‏.‏ 


ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:


নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া  সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামত দিবসে পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ হওয়ার আগপর্যন্ত আদম সন্তানের পদদ্বয় আল্লাহ্ তা'আলার নিকট হতে সরতে পারবে না। তার জীবনকাল সম্পর্কে, কিভাবে অতিবাহিত করেছে? তার যৌবনকাল সম্পর্কে, কি কাজে তা বিনাশ করেছে ; তার ধন-সম্পদ সম্পর্কে, কোথা হতে তা উপার্জন করেছে এবং তা কি কি খাতে খরচ করেছে এবং সে যত টুকু জ্ঞান অর্জন করেছিল সে মুতাবিক কি কি আমল করেছে। 


জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ২৪১৬

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


*  মহান আল্লাহ প্রদত্ত নেয়ামতের অন্যতম একটি হলো "যৌবন কাল"। এ সময় শরীরে পর্যাপ্ত শক্তি থাকে, মনে থাকে অঢেল সাহস। এ সময়টার যথার্থ ব্যবহারের উপরেই নির্ভর করবে আমাদের পরকালীন সফলতার হিসাব-নিকাশ।সকল নবী রাসুলগণ যৌবন কালকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইবাদত,রিয়াজত,মোরাকাবা ও মোশাহাদায় ব্যয় করেছেন।হাশরের ময়দানে যে কয়টি বিষয়ের কড়া হিসাব নেয়া হবে তার একটি এই যৌবন কাল। চলুন আমরাও এ সময়টাকে অযথায় হেলায় খেলায় নষ্ট না করে ভালো কাজে কাটাই।আমীন।


* আল্লাহর জন্য পরস্পর ভালবাসবে সেদিন আরশের ছায়ায় তাদের স্থান, সহিহ বুখারী-২২৭০


حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، جَمِيعًا عَنْ يَحْيَى الْقَطَّانِ، - قَالَ زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، - عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، أَخْبَرَنِي خُبَيْبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللَّهُ فِي ظِلِّهِ يَوْمَ لاَ ظِلَّ إِلاَّ ظِلُّهُ الإِمَامُ الْعَادِلُ وَشَابٌّ نَشَأَ بِعِبَادَةِ اللَّهِ وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ فِي الْمَسَاجِدِ وَرَجُلاَنِ تَحَابَّا فِي اللَّهِ اجْتَمَعَا عَلَيْهِ وَتَفَرَّقَا عَلَيْهِ وَرَجُلٌ دَعَتْهُ امْرَأَةٌ ذَاتُ مَنْصِبٍ وَجَمَالٍ فَقَالَ إِنِّي أَخَافُ اللَّهَ ‏.‏ وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ فَأَخْفَاهَا حَتَّى لاَ تَعْلَمَ يَمِينُهُ مَا تُنْفِقُ شِمَالُهُ وَرَجُلٌ ذَكَرَ اللَّهَ خَالِيًا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ ‏"‏ ‏


আবূ হুরায়রাহ্‌ (রাঃ)

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ্‌ তা’আলা এমন একদিন (ক্বিয়ামাতের দিন) তাঁর (‘আর্‌শের) ছায়াতলে আশ্রয় দিবেন, যেদিন তাঁর ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া অবশিষ্ট থাকবে না। (১) ন্যায়পরায়ণ ইমাম (জনগণের নেতা), (২) ঐ যুবক, যে আল্লাহ্‌ তা’আলার ‘ইবাদাতে মশগুল থেকে বড় হয়েছে, (৩) সে ব্যক্তি, যার অন্তর মাসজিদের সাথে লেগে রয়েছে (অর্থাৎ জামা’আতের সাথে সলাত আদায়ে যত্নবান), (৪) সে দু’ব্যক্তি, যারা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একে অপরকে ভালবাসে ও পরস্পর মিলিত হয় এবং এ জন্যই (পরস্পর) বিচ্ছিন্ন হয়, (৫) যে ব্যক্তিকে কোন অভিজাত এবং সুন্দরী রমনী (ব্যভিচারের জন্য) আহ্বান জানায় আর তার জবাবে সে বলে, আমি আল্লাহকে ভয় করি, (৬) যে ব্যক্তি এতটা গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত কী দান করে তা তার বাম হাত টের পায়না এবং (৭) যে ব্যক্তি একাকী বসে আল্লাহকে স্মরণ করে আর তার চোখ দু’টো (আল্লাহ্‌র ভয় বা ভালবাসায়) অশ্রুপাত করে। (ই.ফা. ২২৪৯, ই.সে. ২২৫০)


সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২২৭০


হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


* সুস্থতা ও সুস্বাস্থ্য আল্লাহর নেয়ামত, যৌবনকাল বলতে উদ্দেশ্য কি?


وَمَا بِكُمْ مِنْ نِعْمَةٍ فَمِنَ اللَّهِ ثُمَّ إِذَا مَسَّكُمُ الضُّرُّ فَإِلَيْهِ تَجْأَرُونَ (53


‘তোমরা যেসব নে‘মত ভোগ কর তাতো আল্লাহই নিকট হতে; আবার যখন দুঃখ-দৈন্য তোমাদেরকে স্পর্শ করে তখন তোমরা তাঁকেই ব্যাকুলভাবে আহবান কর’। (সূরা নাহল-৫৩)


কয়েকটি আয়াত ও হাদীসের দিকে দৃষ্টি দিলে এ ব্যাপারে কিছু ধারণা পাওয়া যাবে-


عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” نِعْمَتَانِ مَغْبُونٌ فِيهِمَا كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ: الصِّحَّةُ وَالفَرَاغُ


‘ইবনু আববাস রা. বলেন, নবি করিম সা. এরশাদ করেছেন, দু’টি নে‘মতের ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষ ধোঁকার মধ্যে রয়েছে। তাহ’ল সুস্থতা ও সুস্বাস্থ্য’। (বুখারি–৬৪১২, ৬০৪৯)


عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِرَجُلٍ وَهُوَ يَعِظُهُ: ” اغْتَنِمْ خَمْسًا قَبْلَ خَمْسٍ , شَبَابَكَ قَبْلَ هَرَمِكَ , وَصِحَّتَكَ قَبْلَ سَقَمِكَ , وَغِنَاكَ قَبْلَ فَقْرِكَ , وَفَرَاغَكَ قَبْلَ شُغُلُكَ , وَحَيَاتَكَ قَبْلَ مَوْتِكَ


‘আমর ইবনু মায়মূন আল-আওদি রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. জনৈক ব্যক্তিকে উপদেশ স্বরূপ বলেন, পাঁচটি বস্তুর পূর্বে পাঁচটি বস্ত্তকে গণীমত মনে করো। যথা (১) তোমার বার্ধক্য আসার পূর্বে যৌবনকে (২) পীড়িত হওয়ার পূর্বে সুস্বাস্থ্যকে (৩) দারিদ্র্যতার পূর্বে সচ্ছলতাকে (৪) ব্যস্ততার পূর্বে অবসরকে (৫) মৃত্যুর পূর্বে জীবনকে’। (শুয়াবুল ঈমান-৯৭৬৭, মুস্তাদরাক-৭৮৪৬)


উল্লেখিত আয়াত এবং হাদীস একথার দিকেই ইংগিত করছে যে, যৌবন বলতে বুঝানো হচ্ছে শারিরীক শক্তিমত্বা ও সক্ষমতা। যখন শরীরে শক্তি থাকে, সাস্থ্য ভাল থাকে, ভাল-মন্দ সব কাজ করারই ক্ষমতা আছে। সেই সময় গুনাহের কাজ না করে সওয়াবের কাজ করা।


পাপের কাজ না করে পূণ্যের কাজ করা উত্তম ও শ্রেষ্ঠ দুর্বল হয়ে গেলে, শারিরীকভাবে অসুস্থ্য হয়ে গেলে, অক্ষম হয়ে গেলে পূণ্যের কাজ করার তুলনায়। কারণ যখন পাপ করার ক্ষমতা ছিল তখন নিজেকে বিরত রাখার দ্বারা আল্লাহর প্রতি মোহাব্বত ও ভয় প্রকাশ পায়। আর অসহায় হয়ে গেলে বাধ্য হয়ে করার বিষয়টি চলে আসে।


যেহেতু গোনাহ করার ক্ষমতা নেই তাই সওয়াবের কাজ করছে বলে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। যা যৌবনকাল তথা সুস্থ্য ও সবল থাকাকালে করলে হয় না।


সুতরাং যৌবনকালকে শুধু বয়স না বুঝে শক্তিমত্বা, সবলতা, সক্ষমতা ও সুসাস্থ্যের অধিকারী হিসেবে নেয়াই যুক্তিযুক্ত। সুতরাং যে ব্যক্তি সবল, শক্তিশালী, বয়সের ভাড়ে নুব্জ নয় সেই যুবক। আর যে বয়সের ভাড়ে নুব্জ, অসুস্থ্য, দুর্বল সেই অক্ষম ও বৃদ্ধের মত।


যৌবনকে বয়সের সাথে খাস না করে শারিরীক সক্ষমতাই যৌবন এদিকে নির্দেশ করে প্রখ্যাত হাদীস ব্যাখ্যাকার মোল্লা আলী কারী হানাফী রহঃ বলেন- (” شَبَابَكَ ) أَيْ: زَمَانَ قُوَّتِكَ عَلَى الْعِبَادَةِতোমার যৌবনকে তথা ইবাদত করার শক্তি থাকার সময়। (মিরকাতুল মাফাতিহ, কিতাবুর রিকাক)


* কস্টে যাব বৃদ্দ কাল,


যৌবন হলো শ্রেষ্ঠ কাল,


কাজে লাগাউ ইহকাল, 


বাঁঁচবো আমি কতকাল, 


ফাঁকি দিলাম বহুকাল, 


ঘুমিয়ে ছিলাম এতকাল, 


আজকেউ হবে গতকাল, 


হঠাৎ হবে ইন্তেকাল, 


বন্ধ হবে কার্যকাল,


শুরু হবে পরকাল, 


থাকতে হবে চিরকাল।


* প্রতিদিনই সূর্য উদয় হয় আবার অস্তও যায়,কিন্তু এর সাথে আমাদের জীবনের যে এক বিশাল মিল আছে তা কোন দিন নোটিস করে দেখিনি,কিন্তু আজ নোটিস করলাম।


সকালে যখন সূর্য উদয় হয় তার আলো কত মলিন হয়,কিন্তু যত বেলা বাড়ে একসময় তার আলো তার তেজ খুবই প্রখর হয়,কিন্তু যখন পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে আস্তে আস্তে তার তেজ কমে বিলিন হয়ে যায়।ঠিক সেরকম আমরা যখন জন্মগ্রহন করি শিশু অবস্থায় আমরা কত নিষ্পাপ থাকি,কিন্তু যত বড় হই কৈশোর ছেড়ে কাল যৌবন কালে প্রবেশ করি আমাদের মনের লোভ লালসার তেজ প্রখর হতে থাকে,যা একসময় এত প্রখর হয় যে আপনজনেরাও সেই তেজ সহ্য না করতে পেরে পর হয়ে যায়,কিন্তু আবার যখন যৌবন পেরিয়ে বৃদ্ধকালে প্রবেশ করি আস্তে আস্তে সেই তেজ কমতে শুরু করে কিন্তু তখন অনেক দেরী হয়ে যায় আর বহু আপনজন দূরে চলে যায় আর জীবনের সূর্যও অস্তাচলে চলে যায়।


তাই অন্তত এই সূর্য দেখে এইটুকু শিক্ষা আমরা নিতে পারি তেজ দেখিয়ে লাভ নেই কারন একদিন তেজ বিলীন হয়ে জীবনের সূর্য অস্তাচলে চলে যাবে।


*  যৌবন কালের ইবাদত শ্রেষ্ঠ ইবাদত।বৃদ্ধ দাদু তার যুবক নাতী রায়হানকে ফজরের নামাজ পড়তে ডাক দিলো! নাতী বললো, "দাদু, তোমার মতো বুড়ো হয়ে নিই তারপর আল্লাহকে ডাকবো, বেশি বেশি ইবাদত করবো"। জবাবে দাদু বললো, "তুই যে আমার বয়স পর্যন্ত যেতে পারবি তার কি কোনো গ্যারান্টি আছে?" রায়হান কোনো উত্তর দিতে পারলোনা। দাদু বললো, "চল আজ আমরা একটা গেম খেলি"। কি গেম?


দৌড় প্রতিযোগীতা! তুমি আমার সাথে দৌড়াবে! কিন্তু কেন? পরে বলবো। আগেতো প্রতিযোগীতা তো হোক। আচ্ছা। দাদু ফজরের নামাজ শেষে নাতীকে ডাকলো এবং প্রস্তুতি নিল এক কিঃমিঃ রাস্তা কে আগে পৌছাতে পারে!দুজনে দৌড় শুরু করলো। রায়হান ঠিকই তাড়াতাড়ি আগেই পৌছে গেল। রায়হান পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো দাদু অনেক দুরে বসে আছে, দৌড়াতে পারছেনা। রায়হান দৌড়ে দাদুর কাছে গেল। গিয়ে দেখে দাদুর হাত পা কাঁপছে। দম বন্ধ হবার অবস্থা। রায়হান দাদুর এই অবস্থা দেখে বললো, "কি দরকার ছিলো, তোমার যদি কিছু হয়ে যেতো?"


দাদু বললো, "শোন তোকে আমি এটাই বুঝাতে চাইছি যে, আমি যেমন মাঝপথে থেমে গেছি, দৌড়িয়ে পৌছাতে পারলামনা। ঠিক তেমনি বৃদ্ধ বয়সের ইবাদত আল্লাহর কাছে পৌছায় আবার কোন টা পৌছায়না। আর তুই যেমন খুব দ্রুত পৌছে গেলি, ঠিক তেমনি যৌবন কালের ইবাদত আল্লাহর কাছে দ্রুত পৌছে যায়। আল্লাহ্ তায়ালা যৌবন কালের ইবাদত সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন। এখন এই বৃদ্ধ বয়সে এসে আপসোস করা ছাড়া আর কিছু করার নাই। কেন যে যুবক বয়সে আল্লাহর ইবাদত করিনি!"


দাদু আরো বলতে থাকে, এই বৃদ্ধ বয়সে গায়ে জোর নাইরে নাতী, মনেও নাই সতেজতা। আল্লাহর ইবাদত করা ছাড়া আর কি করার আছে! এই বয়সে অন্যকিছু করার থাকেনা বলে সবাই আল্লাহ্ খোদার নাম নেয়, যার গুরুত্ব কম। এখন আমি মৃত্যুর দার প্রান্তে, একথা ভেবে আল্লাহকে ডাকছি। বৃদ্ধ কালে সবার চোখের দৃষ্টি কমে যায়, যখন কোরআন পড়তে যাই ভুল হয়ে যায়। স্বরন শক্তি কমে গেছে, নামাজেও ভুল ভ্রান্তি হয়। সঠিক ভাবে ইবাদত করা হয়না। আর যৌবন কালে গায়ে শক্তি থাকে, দুচোখে সবকিছু রঙিন লাগে, যা খুশি তাই করা যায়। অনেক কিছুই করতে মন চায়। ঐ যৌবন কালে সবকিছুকে তুচ্ছ করে আল্লাহর পথে চলা, তার ইবাদত করা, যেনতেন কথানা! যে করতে পারে, সে'ই জীবনে সফলকাম।


যৌবন কালে সবার মেমেরি থাকে সার্প। ভুল ভ্রান্তি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। সঠিক ও শুদ্ধ ভাবে ইবাদত করা যায়। সবশেষে একটা হাদিস শোন, হযরত জিব্রাঈল (আঃ) বলেন, "পৃথিবীতে কত ফোটা বৃষ্টি পড়ে, আমি গননা করিতে পারি। কিন্তু একজন বান্দার যৌবন কালের ইবাদতের যে নেকি আল্লাহ্ তায়ালা দান করেন, তা আমি গননা করিয়া শেষ করিতে পারিনা।" রায়হান "সুবহানআল্লাহ্" বললো। দাদুর কথাগুলো মনোযোগ সহকারে শুনলো। তারপর থেকে রায়হান পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া শুরু করে দেয়। এখন প্রতিদিন দাদু আর নাতী একসাথে মসজিদে যায়।


--------------


যৌবন বয়সের ইবাদত


যৌবনে এবাদতকারী যুবুক সেদিন আরশের ছায়ায় তাদের স্থান, সহিহ বুখারী-২২৭০


أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللَّهُ فِي ظِلِّهِ يَوْمَ لاَ ظِلَّ إِلاَّ ظِلُّهُ الإِمَامُ الْعَادِلُ وَشَابٌّ نَشَأَ بِعِبَادَةِ اللَّهِ وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ فِي الْمَسَاجِدِ وَرَجُلاَنِ تَحَابَّا فِي اللَّهِ اجْتَمَعَا عَلَيْهِ وَتَفَرَّقَا عَلَيْهِ وَرَجُلٌ دَعَتْهُ امْرَأَةٌ ذَاتُ مَنْصِبٍ وَجَمَالٍ فَقَالَ إِنِّي أَخَافُ اللَّهَ ‏.‏ وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ فَأَخْفَاهَا حَتَّى لاَ تَعْلَمَ يَمِينُهُ مَا تُنْفِقُ شِمَالُهُ وَرَجُلٌ ذَكَرَ اللَّهَ خَالِيًا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ


যৌবনকাল বলতে উদ্দেশ্য কি?


* সুস্থতা ও সুস্বাস্থ্য,নিরাপদ থাকা আল্লাহর নেয়ামত তোমরা যে নিয়ামতই লাভ করেছো তাতো আল্লাহরই পক্ষ থেকে। নহল 53


وَ مَا بِكُمْ مِّنْ نِّعْمَةٍ فَمِنَ اللّٰهِ ثُمَّ اِذَا مَسَّكُمُ الضُّرُّ فَاِلَیْهِ تَجْــٴَـرُوْنَۚ


কয়েকটি আয়াত ও হাদীসের দিকে দৃষ্টি দিলে এ ব্যাপারে কিছু ধারণা পাওয়া যাবে-


* ইবনু আববাস রা. বলেন, নবি করিম সা. এরশাদ করেছেন, দু’টি নে‘মতের ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষ ধোঁকার মধ্যে রয়েছে। তাহ’ল সুস্থতা ও সুস্বাস্থ্য’। (বুখারি–৬৪১২, ৬০৪৯)


عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” نِعْمَتَانِ مَغْبُونٌ فِيهِمَا كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ: الصِّحَّةُ وَالفَرَاغُ


* জনৈক ব্যক্তিকে উপদেশ স্বরূপ বলেন, পাঁচটি বস্তুর পূর্বে পাঁচটি বস্ত্তকে গণীমত মনে করো,শুয়াবুল ঈমান-৯৭৬৭, মুস্তাদরাক-৭৮৪৬


عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِرَجُلٍ وَهُوَ يَعِظُهُ: ” اغْتَنِمْ خَمْسًا قَبْلَ خَمْسٍ , شَبَابَكَ قَبْلَ هَرَمِكَ , وَصِحَّتَكَ قَبْلَ سَقَمِكَ , وَغِنَاكَ قَبْلَ فَقْرِكَ , وَفَرَاغَكَ قَبْلَ شُغُلُكَ , وَحَيَاتَكَ قَبْلَ مَوْتِكَ


উল্লেখিত আয়াত এবং হাদীস একথার দিকেই ইংগিত করছে যে, যৌবন বলতে বুঝানো হচ্ছে শারিরীক শক্তিমত্বা ও সক্ষমতা। 


* যৌবনকে বয়সের সাথে খাস না করে শারিরীক সক্ষমতাই যৌবন এদিকে নির্দেশ করে প্রখ্যাত হাদীস ব্যাখ্যাকার মোল্লা আলী কারী হানাফী রহঃ বলেন,মিরকাতুল মাফাতিহ, কিতাবুর রিকাক


 (” شَبَابَكَ ) أَيْ: زَمَانَ قُوَّتِكَ عَلَى الْعِبَادَة


ِতোমার যৌবনকে তথা ইবাদত করার শক্তি থাকার সময়।


* যৈাবন কালকে সূর্যের যাথে তুলনা


* প্রতিটি মানুষের তিনটি পর্যাক্রম,40:মু’মিন 67


هُوَ الَّذِیْ خَلَقَكُمْ مِّنْ تُرَابٍ ثُمَّ مِنْ نُّطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ یُخْرِجُكُمْ طِفْلًا ثُمَّ لِتَبْلُغُوْۤا اَشُدَّكُمْ ثُمَّ لِتَكُوْنُوْا شُیُوْخًاۚ وَ مِنْكُمْ مَّنْ یُّتَوَفّٰى مِنْ قَبْلُ وَ لِتَبْلُغُوْۤا اَجَلًا مُّسَمًّى وَّ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُوْنَ


* প্রেমিকাও ডাকে কয় আমার দিকে চাইলানা মোর মনের কথা বুজলানা, যৌবন থাকিতে বন্ধু আইলা না,নাউজুবিল্লাহ,আমি বলব


মুয়াজ্জিনের আল্লাহু আকবারের মর্ম বুজলানা জীবন থাকিতে নামাজ পরলানা,


সরকারো ডাকে যৌবন দাও ষাট বছর হলে পেনশান দিব


* আল্লাহ বলেন তোমরা যৌবনকালের ইবাদত দাও বৃদ্ধাকালে রয়েছ পেনশান


-------


কস্টে যাব বৃদ্দ কাল,


যৌবন হলো শ্রেষ্ঠ কাল,


কাজে লাগাউ ইহকাল, 


বাঁঁচবো আমি কতকাল, 


ফাঁকি দিলাম বহুকাল, 


ঘুমিয়ে ছিলাম এতকাল, 


আজকেউ হবে গতকাল, 


হঠাৎ হবে ইন্তেকাল, 


বন্ধ হবে কার্যকাল,


শুরু হবে পরকাল, 


থাকতে হবে চিরকাল।

No comments

Powered by Blogger.