Header Ads

Header ADS

৯৬/

161،31 শবে বরাতের পূর্বের জুমা

* আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আদি পিতা আদম (আ.)-এর ওপর রোজার বিধান জারির মধ্য দিয়ে মানব ইতিহাসে রোজার প্রচলন শুরু হয়। কামা কুতিবা আলাল্লাজিনা মিং ক্বাবলিকুম। আদম আঃ আইয়ামে বীজের রোজা রাখতেন 

* রাসূল সা এর চিরাচরিত অভ্যাস ছিল প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখতেন। সুনানে আন-নাসায়ী ২৪২০হাসান

صِيَامُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ صِيَامُ الدَّهْرِ، وَأَيَّامُ الْبِيضِ صَبِيحَةَ ثَلَاثَ عَشْرَةَ، وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ، وَخَمْسَ عَشْرَةَ

* আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আমর রাঃ কে নবীজী দাউদ আঃ এর ন্যায় রোজা রাখার নির্দেশ দেন।আল লু'লু ওয়াল মারজান- ৭১৫

* রাসূল সা রজব মাস আসলে এতো বেশি রোজা রাখতেন যে, সহিহ মুসলিম, ২৬১৬

* রাসূল সা: রজব মাস আসলে বেশি বেশি করে এই দোয়া পাঠ করতেন

اَللهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِىْ رَجَبَ وَ شَعْبَانَ وَ بَلِّغْنَا رَمَضَانَ

* সামনে আসতেছে শবে বরাত অত্যান্ত ফজিলত পূর্ণ রাত,যদিও একদল আলেম বলে থাকে, শবে বরাত বলতে কোরআন ও হাদিসে কিছুই নেই বলে অসংখ্য হাদীস অস্বীকার করছে। কোরআন ও হাদিসে নামাজ রোজা ও নেই তাহলে কি নামায রোযা বেদায়াত?

* সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর আল্লাহ পৃথিবীর নিকটতম আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আছো আমার নিকট ক্ষমাপ্রার্থী, আমি তাকে ক্ষমা করবোসুনানে ইবনে মাজাহ-১৩৮৮

قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ "‏ إِذَا كَانَتْ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَقُومُوا لَيْلَهَا وَصُومُوا يَوْمَهَا ‏.‏ فَإِنَّ اللَّهَ يَنْزِلُ فِيهَا لِغُرُوبِ الشَّمْسِ إِلَى سَمَاءِ الدُّنْيَا فَيَقُولُ أَلاَ مِنْ مُسْتَغْفِرٍ فَأَغْفِرَ لَهُ أَلاَ مُسْتَرْزِقٌ فَأَرْزُقَهُ أَلاَ مُبْتَلًى فَأُعَافِيَهُ أَلاَ كَذَا أَلاَ كَذَا حَتَّى يَطْلُعَ الْفَجْرُ

* অনেক কোম্পানী আছে দৈনিক সাপ্তাহিক মাসিক বাৎসরিক রিপোর্ট পেশ করা হয়। মানুষের আমলনামা দৈনিক সাপ্তাহিক সোমবার বৃহস্পতিবার বাৎসরিক শবে বরাতের রাতে পেশ করা হয় 

____________________________________

ইতিহাসে রোজার সূচনা যেভাবে

ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ রোজা। আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আদি পিতা আদম (আ.)-এর ওপর রোজার বিধান জারির মধ্য দিয়ে মানব ইতিহাসে রোজার প্রচলন শুরু হয়। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা : ১৮৩)। এই আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা আলুসি (রহ.) তার তাফসির গ্রন্থ ‘রুহুল মাআনি’তে বলেন, আয়াতের ‘মিন-কাবলিকুম’ শব্দ দ্বারা আদম (আ.) থেকে শুরু করে ঈসা (আ.) পর্যন্ত সব নবী-রাসুলের জামানা বোঝানো হয়েছে। 

* আদম-হাওয়া (আ.)-এর জান্নাত থেকে দুনিয়ায় আসার ঘটনা ঘটেছিল ১০ মহররম। তারা এ ভুলের জন্য অনুতপ্ত হয়ে তওবা-ইস্তেগফার করেন এবং তওবা কবুলের শুকরিয়াস্বরূপ ১৩, ১৪, ১৫ তারিখ তিন দিন রোজা রাখেন। সে সময় চাঁদ পূর্ণরূপে উদ্ভাসিত থাকে। তাই সেদিনকে বলা হয় ‘আইয়ামে বীজ’ অর্থাৎ শুভ্র দিনগুলো। এই ছিল মানব ইতিহাসে প্রথম রোজা। আদম (আ.)-এর উম্মত আইয়ামে বীজের এই তিন দিন রোজা রাখতেন। (তাফসিরে রুহুল মায়ানি)

* রামাদানের রোজা ছাড়াও সারা বছর অনেকগুলো নফল রোজা রয়েছে। তন্মধ্যে অন্যতম ফজিলতপূর্ণ নফল রোজা হচ্ছে আইয়ামে বীযের রোজা। প্রতি মাসে ৩ দিন আইয়ামে বিযের রোজা রাখলে তাতে পুরো মাস রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যাবে। নবীজি (সা) সারা বছর এই রোজা রাখতেন। এর থেকে আইয়ামে বীজের ফজিলত সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

* প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করা সারা জীবন সাওম (রোযা) পালন করার সমতুল্য।সুনানে আন-নাসায়ী-২৪২০হাসান


أَخْبَرَنَا مَخْلَدُ بْنُ الْحَسَنِ، قَالَ: حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ، عَنْ أَبِي إِسْحَقَ، عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «صِيَامُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ صِيَامُ الدَّهْرِ، وَأَيَّامُ الْبِيضِ صَبِيحَةَ ثَلَاثَ عَشْرَةَ، وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ، وَخَمْسَ عَشْرَةَ»


জারীর ইব্‌ন আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেনঃ প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করা সারা জীবন সাওম (রোযা) পালন করার সমতুল্য। আর আইয়ামে বীয -তের তারিখের সকাল থেকে চোদ্দ এবং পনের তারিখ পর্যন্ত।

  


সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ২৪২০

হাদিসের মান: হাসান হাদিস


* আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আমর রাঃ কে নবীজী দাউদ আঃ এর ন্যায় রোজা রাখার নির্দেশ দেন।আল লু'লু ওয়াল মারজান- ৭১৫

حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرو بْنِ الْعَاصِ، قَالَ: قَالَ لِي رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: [ص: 22] يَا عَبْدَ اللهِ أَلَمْ أُخْبَرْ أَنَّكَ تَصُومُ النَّهَارَ وَتَقُومُ اللَّيْلَ فَقُلْتُ: بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ: فَلاَ تَفْعَلْ، صُمْ وَأَفْطِرْ، وَقُمْ وَنَمْ، فَإِنَّ لِجَسَدِكَ عَلَيْكَ حَقًّا، وَإِنَّ لِعَيْنِكَ عَلَيْكَ حَقًّا، وَإِنَّ لِزَوْجِكَ عَلَيْكَ حَقًّا، وَإِنَّ لِزَوْرِكَ عَلَيْكَ حَقًّا، وَإِنَّ بِحَسْبِكَ أَنْ تَصُومَ كُلَّ شَهْرٍ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ، فَإِنَّ لَكَ بِكُلِّ حَسَنَةٍ عَشْرَ أَمْثَالِهَا، فَإِنَّ ذلِكَ صِيَامُ الدَّهْرِ كُلِّهِ فَشَدَّدْتُ فَشُدِّدَ عَلَيَّ، قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ إِنِّي أَجِدُ قُوَّةً قَالَ: فَصُمْ صِيَامَ نَبِيِّ اللهِ دَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلاَمُ، وَلاَ تَزِدْ عَلَيْهِ قُلْتُ: وَمَا كَانَ صِيَامُ نَبِيِّ اللهِ دَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلاَمُ قَالَ: نِصْفُ الدَّهْرِ

فَكَانَ عَبْدُ اللهِ يَقُولُ بَعْدَمَا كَبِرَ: يَا لَيْتَنِي قَبِلْتُ رُخْصَةَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ


‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আমর ইব্‌নুল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ হে ‘আবদুল্লাহ! আমি এ সংবাদ পেয়েছি যে, তুমি প্রতিদিন সওম পালন কর এবং সারা রাত সলাত আদায় করে থাক। আমি বললাম, ঠিক (শুনেছেন) হে আল্লাহর রসূল! তিনি বললেনঃ এরূপ করবে না (বরং মাঝে মাঝে) সওম পালন কর আবার ছেড়েও দাও। (রাতে) সলাত আদায় কর আবার ঘুমাও। কেননা তোমার উপর তোমার শরীরের হাক্ব রয়েছে, তোমার চোখের হাক্ব রয়েছে, তোমার উপর তোমার স্ত্রীর হাক্ব আছে, তোমার মেহমানের হাক্ব আছে। তোমার জন্য যথেষ্ট যে, তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন সওম পালন কর। কেননা নেক ‘আমলের বদলে তোমার জন্য রয়েছে দশগুণ নেকী। এভাবে সারা বছরের সওম হয়ে যায়। আমি (বললাম) আমি এর চেয়েও কঠোর ‘আমল করতে সক্ষম। তখন আমাকে আরও কঠিন ‘আমলের অনুমতি দেয়া হল। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি আরো বেশি শক্তি রাখি। তিনি বললেনঃ তবে আল্লাহর নাবী দাঊদ (‘আ.)-এর সওম পালন কর, এর চেয়ে বেশি করতে যেয়ো না। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহর নাবী দাঊদ (‘আ.)-এর সওম কেমন? তিনি বললেনঃ অর্ধেক বছর। রাবী বলেন, ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বৃদ্ধ বয়সে বলতেন, আহা! আমি যদি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রদত্ত রুখসত (সহজতর বিধান) কবূল করে নিতাম! (বুখারী পর্ব ৩০: /৫৫ হাঃ ১৯৭৫, মুসলিম ১৩/৩৩৫, হাঃ ১১৫৯)

  


আল লু'লু ওয়াল মারজান, হাদিস নং ৭১৫

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


*  

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ حَكِيمٍ الأَنْصَارِيُّ، قَالَ سَأَلْتُ سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ عَنْ صَوْمِ، رَجَبٍ - وَنَحْنُ يَوْمَئِذٍ فِي رَجَبٍ - فَقَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ - رضى الله عنهما - يَقُولُ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصُومُ حَتَّى نَقُولَ لاَ يُفْطِرُ ‏.‏ وَيُفْطِرُ حَتَّى نَقُولَ لاَ يَصُومُ ‏.


’উসমান ইবনু হাকীম আল আনসারী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ:


আমি রজব মাসের সিয়াম সম্পর্কে সা’ঈদ ইবনু জুবায়র (রাঃ)- কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একাধারে সিয়াম পালন করতে থাকতেন যাতে আমরা বলতাম, তিনি হয়ত আর সিয়াম ছাড়বেন না। আবার তিনি এমনভাবে ক্রমাগত সিয়াম না রেখে থাকতেন যাতে আমরা বলতাম, তিনি বুঝি আর (এ মাসে) সিয়াম পালন করবেন না। (ই.ফা. ২৫৯৩, ই.সে. ২৫৯২)

  


সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২৬১৬

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

* রাসূল সা রজব মাস আসলে বেশি বেশি করে এই দোয়া পাঠ করতেন

اَللهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِىْ رَجَبَ وَ شَعْبَانَ وَ بَلِّغْنَا رَمَضَانَ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।’অর্থ : ‘হে আল্লাহ! রজব ও শাবান মাস আমাদের জন্য বরকতময় করুন; রমজান মাস আমাদের নসিব করুন।’ (বুখারি ও মুসলিম) 


وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ إِذَا دَخَلَ رَجَبٌ قَالَ: «اللّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي رَجَبٍ وَشَعْبَانَ وَبَلِّغْنَا رَمَضَانَ» قَالَ: وَكَانَ يَقُولُ: «لَيْلَةُ الْجُمُعَةِ لَيْلَةٌ أَغَرُّ وَيَوْمُ الْجُمُعَةِ يَوْمٌ أَزْهَرُ» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي الدَّعَوَاتِ الْكَبِيرِ


আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজব মাস আসলে এ দু‘আ পড়তেন, ‘‘হে আল্লাহ! রজব ও শা‘বান মাসের (‘ইবাদাতে) আমাদেরকে বারাকাত দান করো। আর আমাদেরকে রমাযান মাস পর্যন্ত পৌঁছাও। বর্ণনাকারী আনাস (রাঃ) আরো বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, ‘‘জুমু‘আর রাত আলোকিত রাত। জুমু‘আর দিন আলোকিত দিন।’’ (বায়হাক্বী’র দা‘ওয়াতুল কাবীর


মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস নং ১৩৬৯

হাদিসের মান: দুর্বল হাদিস


__________________


* তিনি এমন আল্লাহ না চাইলে রাগ হন,৪০: আল-মু’মিন-৬০,دَاخِرِينَ =অপমানিতহয়ে,

وَ قَالَ رَبُّكُمُ ادْعُوْنِیْۤ اَسْتَجِبْ لَكُمْ١ؕ اِنَّ الَّذِیْنَ یَسْتَكْبِرُوْنَ عَنْ عِبَادَتِیْ سَیَدْخُلُوْنَ جَهَنَّمَ دٰخِرِیْنَ۠

* আমার উপর বান্দার ধারণা অনুযায়ী আমি তার সাথে আছি। সে যেখানেই আমাকে স্মরণ করে আমি তার সাথে আছি। আল্লাহর কসম, শূণ্য মাঠে তোমাদের কেউ হারানো প্রাণী পাওয়ার পর যে আনন্দিত হয় আল্লাহ তা‘আলা বান্দার তাওবার কারণে এর চেয়েও বেশি আনন্দিত হন। যদি কেউ একবিঘত সমান আমার দিকে অগ্রসর হয় তাহলে আমি তার দিকে একহাত অগ্রসর হই।সহিহ মুসলিম-৬৮৪৫ সহিহ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ‏ "‏ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي وَأَنَا مَعَهُ حَيْثُ يَذْكُرُنِي وَاللَّهِ لَلَّهُ أَفْرَحُ بِتَوْبَةِ عَبْدِهِ مِنْ أَحَدِكُمْ يَجِدُ ضَالَّتَهُ بِالْفَلاَةِ وَمَنْ تَقَرَّبَ إِلَىَّ شِبْرًا تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ ذِرَاعًا وَمَنْ تَقَرَّبَ إِلَىَّ ذِرَاعًا تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ بَاعًا وَإِذَا أَقْبَلَ إِلَىَّ يَمْشِي أَقْبَلْتُ إِلَيْهِ أُهَرْوِلُ

* তিনি এমন দয়াবান,পাহাড় পরিমান গুনাহ করে আসলে ও তার দরবার থেকে কেউ ফিরত যায়না

* হজরত মালেক বিন দিনার রহ: মদখোর থেকে পৃথিবী খ্যাত ইমাম হয়েছিলেন, ( দিনার নামকরণের কারণ তাজ: আউলিয়া-পৃ:-৩৯)একদিন লোক ভরপুর এক মাহফিলে বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি। শুরুতেই প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন এক শ্রোতা বললেন, আপনার বক্তৃতা পড়ে শুনব। তার আগে আমার একটি প্রশ্নের উত্তর দিন। বছর দশেক আগে আপনাকে মাতাল অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেছিলাম। আপনি ছিলেন ছন্নছাড়া এক ব্যক্তি। খারাপ কাজ ছাড়া ভালো কাজে দেখিনি কখনো। অথচ আজ আপনি আমাদের সামনে ওয়াজ করছেন। আপনার এই পরিবর্তন

কিভাবে হলো?

* ঈমান গ্রহণকারীদের জন্য এখনো কি সে সময় আসেনি যে, আল্লাহর স্মরণে তাদের মন বিগলিত হবে،৫৭: আল-হাদীদ-১৬

اَلَمْ یَاْنِ لِلَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اَنْ تَخْشَعَ قُلُوْبُهُمْ لِذِكْرِ اللّٰهِ وَ مَا نَزَلَ مِنَ الْحَقّ


* সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর আল্লাহ পৃথিবীর নিকটতম আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আছো আমার নিকট ক্ষমাপ্রার্থী, আমি তাকে ক্ষমা করবোসুনানে ইবনে মাজাহ-১৩৮৮:জাল হাদিস

إِذَا كَانَتْ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَقُومُوا لَيْلَهَا وَصُومُوا يَوْمَهَا ‏.‏ فَإِنَّ اللَّهَ يَنْزِلُ فِيهَا لِغُرُوبِ الشَّمْسِ إِلَى سَمَاءِ الدُّنْيَا فَيَقُولُ أَلاَ مِنْ مُسْتَغْفِرٍ فَأَغْفِرَ لَهُ أَلاَ مُسْتَرْزِقٌ فَأَرْزُقَهُ أَلاَ مُبْتَلًى فَأُعَافِيَهُ أَلاَ كَذَا أَلاَ كَذَا حَتَّى يَطْلُعَ الْفَجْر

* আইয়ামে বিজের রোযার ফজিলত-সুনানে আন-নাসায়ী-২৪২২ হাসান

عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ: " أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ نَصُومَ مِنَ الشَّهْرِ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ الْبِيضَ: ثَلَاثَ عَشْرَةَ، وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ، وَخَمْسَ عَشْرَةَ

* প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করা সারা জীবন সাওম (রোযা) পালন করার সমতুল্য।সুনানে আন-নাসায়ী-২৪২০হাসান

صِيَامُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ صِيَامُ الدَّهْرِ، وَأَيَّامُ الْبِيضِ صَبِيحَةَ ثَلَاثَ عَشْرَةَ، وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ، وَخَمْسَ عَشْرَةَ


_______________


* যদি কেউ একবিঘত সমান আমার দিকে অগ্রসর হয় তাহলে আমি তার দিকে একহাত অগ্রসর হই।সহিহ মুসলিম-৬৮৪৫ সহিহ

حَدَّثَنِي سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ مَيْسَرَةَ، حَدَّثَنِي زَيْدُ بْنُ أَسْلَمَ، عَنْ أَبِي، صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ‏ "‏ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي وَأَنَا مَعَهُ حَيْثُ يَذْكُرُنِي وَاللَّهِ لَلَّهُ أَفْرَحُ بِتَوْبَةِ عَبْدِهِ مِنْ أَحَدِكُمْ يَجِدُ ضَالَّتَهُ بِالْفَلاَةِ وَمَنْ تَقَرَّبَ إِلَىَّ شِبْرًا تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ ذِرَاعًا وَمَنْ تَقَرَّبَ إِلَىَّ ذِرَاعًا تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ بَاعًا وَإِذَا أَقْبَلَ إِلَىَّ يَمْشِي أَقْبَلْتُ إِلَيْهِ أُهَرْوِلُ ‏"‏ ‏.‏


আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ)-এর সানাদে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ রব্বুল ‘আলামীন ইরশাদ করেছেন : আমার উপর বান্দার ধারণা অনুযায়ী আমি তার সাথে আছি। সে যেখানেই আমাকে স্মরণ করে আমি তার সাথে আছি। আল্লাহর কসম, শূণ্য মাঠে তোমাদের কেউ হারানো প্রাণী পাওয়ার পর যে আনন্দিত হয় আল্লাহ তা‘আলা বান্দার তাওবার কারণে এর চেয়েও বেশি আনন্দিত হন। যদি কেউ একবিঘত সমান আমার দিকে অগ্রসর হয় তাহলে আমি তার দিকে একহাত অগ্রসর হই। যদি কেউ একহাত সমান আমার প্রতি অগ্রসর হয়, তাহলে আমি একগজ সমান তার প্রতি অগ্রসর হই। যদি কেউ আমার দিকে পায়ে হেঁটে আসে তবে আমি তার দিকে দৌড়ে আসি। (ই. ফা. ৬৭০০, ই. সে. ৬৭৫৫)

  


সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৬৮৪৫

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


* সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর আল্লাহ পৃথিবীর নিকটতম আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আছো আমার নিকট ক্ষমাপ্রার্থী, আমি তাকে ক্ষমা করবোসুনানে ইবনে মাজাহ-১৩৮৮

حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَنْبَأَنَا ابْنُ أَبِي سَبْرَةَ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ جَعْفَرٍ، عَنْ أَبِيهِ، 


عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ "‏ إِذَا كَانَتْ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَقُومُوا لَيْلَهَا وَصُومُوا يَوْمَهَا ‏.‏ فَإِنَّ اللَّهَ يَنْزِلُ فِيهَا لِغُرُوبِ الشَّمْسِ إِلَى سَمَاءِ الدُّنْيَا فَيَقُولُ أَلاَ مِنْ مُسْتَغْفِرٍ فَأَغْفِرَ لَهُ أَلاَ مُسْتَرْزِقٌ فَأَرْزُقَهُ أَلاَ مُبْتَلًى فَأُعَافِيَهُ أَلاَ كَذَا أَلاَ كَذَا حَتَّى يَطْلُعَ الْفَجْرُ ‏"‏ ‏.‏


আলী বিন আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন মধ্য শাবানের রাত আসে তখন তোমরা এ রাতে দাঁড়িয়ে সালাত পড় এবং এর দিনে সওম রাখ। কেননা এ দিন সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর আল্লাহ পৃথিবীর নিকটতম আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আছো আমার নিকট ক্ষমাপ্রার্থী, আমি তাকে ক্ষমা করবো। কে আছো রিযিকপ্রার্থী আমি তাকে রিযিক দান করবো। কে আছো রোগমুক্তি প্রার্থনাকারী, আমি তাকে নিরাময় দান করবো। কে আছ এই প্রার্থনাকারী। ফজরের সময় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত (তিনি এভাবে আহবান করেন


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১৩৮৮

হাদিসের মান: জাল হাদিস


* (২) : হজরত মালেক বিন দিনার রহ. এর ঘটনা : মদখোর থেকে পৃথিবী খ্যাত ইমাম হয়েছিলেন যিনিঃ

তিনি ছিলেন ২য় হিজরির বিখ্যাত সুফি। একদিন লোক ভরপুর এক মাহফিলে বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি। শুরুতেই প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন এক শ্রোতা বললেন, আপনার বক্তৃতা পড়ে শুনব। তার আগে

আমার একটি প্রশ্নের উত্তর দিন। বছর দশেক আগে আপনাকে মাতাল অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেছিলাম। আপনি ছিলেন ছন্নছাড়া এক ব্যক্তি। খারাপ কাজ ছাড়া ভালো কাজে দেখিনি কখনো। অথচ আজ আপনি আমাদের সামনে ওয়াজ করছেন। আপনার এই পরিবর্তন

কিভাবে হলো? শ্রোতার এমন প্রশ্ন এড়াতে পারলেন না বক্তা। বললেন, শুনুন তাহলে আমার ঘটনা। সেদিন ছিল শবে কদরের রাত। শহরের মদের দোকানগুলো বন্ধ ছিল। এক দোকানিকে

অনুরোধ করে মদ কিনলাম। তারপর চলে এলাম বাসায়। রাতে মদ ছাড়া ঘুমই আসত না। সেদিন বাসায় ঢুকেই দেখি স্ত্রী নামাজ পড়ছে। নিশ্চুপে আমার ঘরে চলে এলাম। টেবিলে রাখলাম বোতলটা। হঠাৎ আমার তিন বছরের মেয়েটা দৌড়ে এলো। টেবিলে সঙ্গে তার ধাক্কা লেগে মদের বোতলটি পড়ে ভেঙে গেল। সেটা দেখে অবুঝ মেয়েটি খিলখিল করে হাসতে লাগল। মেয়ে বলে তাকে কিছু বলতেও পারছিলাম না। ভাঙা বোতল ফেলে দিয়ে ঘুমিয়ে গেলাম। সেরাতে আর মদ খাওয়া হল না। তারপর চলে গেছে এক বছর। আবার এল লাইলাতুল কদর। অভ্যাস মতোই আমি মদ নিয়ে বাড়ি এলাম। বোতলটা টেবিলে রাখলাম। হঠাৎ বোতলের দিকে তাকাতেই বুক ভেঙে কান্না এলো। কারণ তিন মাস আগে আমার মেয়েটি মারা গেছে। গতবার তার বোতল ভাঙার কাহিনী আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছে। মদটা আর খেতে পারলাম না। ঘুমিয়ে পড়লাম। মাঝ রাতে স্বপ্নে দেখলাম এক বিরাট সাপ আমাকে তাড়া করছে। এত বড় সাপ আমি জীবনে দেখিনি। সেই ভয়ে আমি দৌড়াচ্ছি। এমন সময় এক দুর্বল বৃদ্ধকে দেখলাম। তাকে অনুরোধ করলাম সাপটি থেকে আমাকে রক্ষা করতে। কিন্তু বৃদ্ধ বলল, আমি খুব দুর্বল এবং ক্ষুধার্ত। এ সাপের সাথে আমি পারব না। তুমি বরং এই পাহাড়ের ডানে যাও। বৃদ্ধের কথা মতো পাহাড়ে উঠেই দেখি দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। আর পেছনেই এগিয়ে আসছে সেই মোটা কুৎসিত সাপ। আমি বৃদ্ধের কথা মতো ডানে ছুটলাম। দেখলাম সুন্দর এক বাগান। বাচ্চারা খেলছে। গেটে দারোয়ান। বাগানে ঢুকতে চাইলে দারোয়ান বাধা দিল। বাচ্চাদের ডেকে বললো, দেখতো এলোকটি কে? ওকে তো সাপটা খেয়ে ফেলবে, নয়তো আগুনে ফেলে দেবে। দারোয়ানের কথায় বাচ্চারা ছুটে এলো। এর মধ্যে তিন মাস আগে মৃত্যুবরণ করা আমার মেয়েটা কেউ দেখলাম। মেয়েটা আমাকে ডান হাতে জড়িয়ে বাম হাতে সাপটাকে থাপ্পর দিলো। ভয়ে সাপ পালিয়ে গেলো। ঘটনা দেখে চোখ কপালে উঠল। বললাম, মা তুমি কত ছোট আর এত বড় সাপ তোমাকে ভয় পায়? তুমি এতো সাহস কোথায় পেলে। মেয়ে বললো, আমি তো জান্নাতি মেয়ে। জাহান্নামের সাপ আমাদের ভয় পায়। বাবা ওই সাপকে তুমি চিনতে পেরেছো? বললাম, না মা সাপকে তো চিনতে পারিনি। বাবা ওতো তোমার নফস। তুমি নফসকে এতো বেশি খাবার দিয়েছো যে সে এমন বড় আর শক্তিশালী হয়েছে। সে তোমাকে জাহান্নাম পর্যন্ত তাড়িয়ে নিয়েছে। বললাম, পথে এক দুর্বল বৃদ্ধ তোমার এখানে আসার পথ বলে দিয়েছে। সে কে? মেয়ে বললো, তাকেও চেনোনি? সে তোমার রুহ। তাকে তো কোনোদিন খেতে দাওনি। তাই না খেয়ে দুর্বল হয়ে কোনো মতে বেঁচে আছে। এরপর আমার ঘুম ভেঙে গেলো। দীর্ঘ স্বপ্নের কথা বলে বক্তা একটু দম নিলেন। এরপর বললেন, সেইদিন থেকে আমি আমার রূহকে খাদ্য দিয়ে যাচ্ছি আর নফসের খাদ্য একদম বন্ধ করে দিয়েছি। এখনো চোখ বুঝলেই নফসের সেই ভয়াল রূপ দেখতে পাই। আর দেখি রূহকে। আহা কতো দুর্বল হাঁটতে পারে না। তারপর ঝরঝর করে কেঁদে ফেললেন বক্তা। বিখ্যাত এ বক্তার নাম হজরত মালেক বিন দিনার রহ.। হিজরি দ্বিতীয় বর্ষের বিখ্যাত সুফি ও ইসলাম বিশ্লেষক। এক সময় মদ খেয়ে মাতাল হয়ে পড়ে থাকতেন রাস্তায়। একটা স্বপ্ন তার জীবনকে পাল্টে দিল। তিনি হয়ে গেলেন ইসলামের মহামনীষী। পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ল তার খ্যাতি।


* মালেক ইবনে দিনার যার তওবার কাহিনী আপনার জীবনের মোড় ঘুড়িয়ে দিতে পারে।

এক দুঃস্বপ্ন মহান দরবেশ মালিক ইবনে দিনার রহঃ কে তাওবার দিকে নিয়ে যায়। তাঁকে তাঁর তাওবার পিছনের কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,

আমি ছিলাম পুলিশের লোক এবং মদ্যপায়ী। আমার এক দাসী ছিল যে আমার সাথে খুব ভালো আচরণ করতো। তাঁর গর্ভে আমার এক মেয়ে হয়, যার প্রতি আমার তীব্র অনুরাগ ছিল। যখন সে হাঁটতে শিখলো তখন তাঁর প্রতি আমার ভালোবাসা আরো বেড়ে যায়। আমি যখন মদ খেতে যেতাম তখন সে এসে আমার মদের গ্লাস ধরে টান দিত আর সব আমার কাপড়ের উপর গড়িয়ে পড়ত। আমার মেয়ের বয়স যখন দুই বছর , তখন সে মারা যায়। আমি অত্যন্ত ভেঙ্গে পড়লাম। সেই বছর এক শুক্রবারে ১৫ই শাবান* এলো। আমি নামায না পড়েই মাতাল হয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। আমি স্বপ্নে দেখলাম কিয়ামত এসে গেছে, শিংগায় ফুঁ দেয়া হয়েছে, কবরগুলোর পুনরুত্থান ঘটেছে। আরো দেখলাম মানুষদের একত্রিত করা হলো। আমিও ছিলাম তাদের মাঝে। আমি আমার পিছনে হিস হিস শব্দ শুনতে পেলাম। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি একটা নীল কালো বিশাল সাপ আমার দিকে তেড়ে আসছে। আমি ভয়ে আতংকে প্রাণপণে দৌড়াতে লাগলাম। আমি তখন একজন বুড়ো মানুষের মুখোমুখি হলাম। তাঁর পরনে ছিল সুন্দর পোশাক, গায়ে সুগন্ধি। আমি তাঁকে সালাম দিয়ে আমাকে সাহায্য করতে বললাম। তিনি কেঁদে উঠে বললেন তিনি অনেক দুর্বল আর সাপটি তাঁর চাইতে অনেক বেশী শক্তিশালী। তিনি আমাকে বললেন দৌড়াতে। হয়তো সামনে এমন কাউকে পাব যে আমাকে সাহায্য করতে পারবে। আমি দৌড়ে একটা উঁচু জায়গায় পৌঁছে গেলাম। খেলায় করে দেখি আমি আগুনের উপত্যকার শীর্ষে বসে আছি। আগুন দেখে এতটা ভয় পেলাম যে আমার মনে হলো আমি আগুনে প্রায় পড়েই যাচ্ছি। তখন আমি একটা আওয়াজ শুনতে পেলাম। কে যেন বলছে,এখান থেকে চলে যাও।

তুমি এখানকার নও। আমি সেই চিৎকার শুনে কিছুটা স্বস্তি বোধ করলাম। আমি আরো দৌড়াতে লাগলাম। সাপটি তখন আমার পায়ের গোড়ালির সাথে ছিল। আমি সেই বুড়োকে আবার দেখতে পেয়ে আমাকে সাহায্য করতে বললাম। তিনি পুনরায় একই জবাব দিলেন। এরপর তিনি আমাকে একটি পাহাড় দেখিয়ে দিলেন। বললেন, আমি সেখানে নিজের কিছু সঞ্চয় পেতে পারি যা হয়তো আমাকে সাহায্য করবে। আমি পাহাড়টার দিকে তাকিয়ে দেখলাম, এটি বৃত্তাকার এবং রুপার তৈরি। পাহাড়ে ছিল অনেকগুলো ছিদ্র করা জানালা ও ঝুলন্ত পর্দা। প্রতিটি জানালায় ছিল দুইটা সোনার কপাট। প্রতিটা কপাট রেশমী পর্দা দিয়ে সাজানো। আমি দ্রুত সেই পাহাড়ের দিকে দৌড়ে গেলাম। একজন ফেরেশতা বলে উঠলেন, পর্দা উঠাও। কপাট খুলে দেখো। হয়তো এখানে এই দুর্দশাগ্রস্ত মানুষটির কোন সঞ্চয় আছে যা তাঁকে সাহায্য করবে। আমি তখন অনেকগুলো ছোট শিশুকে দেখতে পেলাম যাদের চেহারা জানালার ফাঁক দিয়ে ছোট চাঁদের মত উকি দিচ্ছে। তখন তাদের একজন বলে উঠল, তোমাদের কি হলো? জলদি আসো, তাঁর শত্রু তাঁকে প্রায় ধরে ফেলেছে। তাঁরা এগিয়ে এলো এবং তাদের জানালার ফাঁক দিয়ে উকি দিয়ে তাকালো। তাঁরা সংখ্যায় শত শত। আমি তখন আমার মৃত মেয়েটির চেহারা দেখতে পেলাম। সে যখন আমাকে দেখলো, তখন সে কেঁদে উঠে বললো, খোদার শপথ! উনি আমার বাবা। এরপর সে জানালা দিয়ে এত দ্রুত বেরিয়ে নূরের পুকুরে লাফ দিল, ঠিক যেন ধনুক থেকে বের হওয়া তীর। তারপর সে আমার দিকে তাঁর হাত বাড়ালো। আমি তাঁর হাত আঁকড়ে ধরে ঝুলে রইলাম। সে তাঁর আরেকটি হাত দিয়ে সাপটিকে তাড়িয়ে দিল। এরপর সে আমাকে বসালো। আমার কোলের উপর বসে আমার দাড়িতে হাত বুলিয়ে বললো, ‘আব্বা! যারা মুমিন তাদের জন্য কি আল্লাহর স্মরণে এবং যে সত্য অবতীর্ণ হয়েছে তার কারণে হৃদয় বিগলিত হবার সময় আসেনি?’ (সূরা আল-হাদীদ, আয়াত ১৬)


৫৭: আল-হাদীদ,:আয়াত: ১৬,


اَلَمْ یَاْنِ لِلَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اَنْ تَخْشَعَ قُلُوْبُهُمْ لِذِكْرِ اللّٰهِ وَ مَا نَزَلَ مِنَ الْحَقِّ١ۙ وَ لَا یَكُوْنُوْا كَالَّذِیْنَ اُوْتُوا الْكِتٰبَ مِنْ قَبْلُ فَطَالَ عَلَیْهِمُ الْاَمَدُ فَقَسَتْ قُلُوْبُهُمْ١ؕ وَ كَثِیْرٌ مِّنْهُمْ فٰسِقُوْنَ


ঈমান গ্রহণকারীদের জন্য এখনো কি সে সময় আসেনি যে, আল্লাহর স্মরণে তাদের মন বিগলিত হবে, তাঁর নাযিলকৃত মহা সত্যের সামনে অবনত হবে এবং তারা সেসব লোকদের মত হবে না যাদেরকে ইতিপূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার কারণে তাদের মন কঠোর হয়ে গিয়েছে এবং আজ তাদের অধিকাংশই ফাসেক হয়ে গেছে।


আমি কাঁদতে শুরু করলাম। তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম সে কোথা থেকে কুরআন শিখলো। সে বললো এখানকার শিশুরা পৃথিবীতে যা জানতো তাঁর চাইতে বেশী জানে। আমি তখন আমার পিছনে আসা সাপটি সম্পর্কে জানতে চাইলাম। সে জানালো, সেটি হলো আমার খারাপ আমল যা আমাকে দোযখে নিয়ে যেত। আমি তখন সেই বুড়ো লোকটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। আমার মেয়ে বললো, সে হলো আমার ভালো আমল যা এত দুর্বল যে আমাকে সাপটি থেকে রক্ষা করতে পারলো না।

আমি এরপর জানতে চাইলাম, তাঁরা (শিশুরা) পাহাড়ের ভিতরে কি করছে? সে জানালো, এরা সবাই হলো মুসলিমদের মৃত সন্তান। এরা তাদের বাবা মায়ের সাথে দেখা হবার জন্য অপেক্ষা করছে। তাঁরা কিয়ামতের দিন তাদের বাবা মায়ের জন্য শাফায়াত করবে। মালিক বলেন, আমি আতংকে ঘুম থেকে জেগে উঠলাম। আমি আমার মদের সব বোতল ভেঙ্গে ফেললাম আর আল্লাহর কাছে তাওবা করলাম। এই হচ্ছে আমার তাওবার কাহিনী।

* আইয়ামে বিজের রোযার ফজিলত-সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ২৪২২

হাদিসের মান: হাসান হাদিস

أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ، قَالَ: أَنْبَأَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى، عَنْ فِطْرٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَامٍ، عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ: " أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ نَصُومَ مِنَ الشَّهْرِ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ الْبِيضَ: ثَلَاثَ عَشْرَةَ، وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ، وَخَمْسَ عَشْرَةَ "


আবূ যর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে প্রত্যেক মাসের আইয়ামে বীযের তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন- তের তারিখ, চৌদ্দ তারিখ এবং পনের তারিখের।

  


সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ২৪২২

হাদিসের মান: হাসান হাদিস


أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مَعْمَرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَبَّانُ، قَالَ: حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ سِيرِينَ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ قَتَادَةَ بْنِ مِلْحَانَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: " كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْمُرُنَا بِصَوْمِ أَيَّامِ اللَّيَالِي الْغُرِّ الْبِيضِ: ثَلَاثَ عَشْرَةَ، وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ، وَخَمْسَ عَشْرَةَ "


আব্দুল মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে আলোকোজ্জ্বল রাত বিশিষ্ট আইয়ামের বীযের তিন দিনের সাওম (রোযা) পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন তের, চৌদ্দ এবং পনের তারিখের।

  


সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ২৪৩২

হাদিসের মান: দুর্বল হাদিস

No comments

Powered by Blogger.