Header Ads

Header ADS

৯৪। দুনিয়া মোমেনের জন্য জেলখানা তোমরা হতাশ হয়ো না। দুঃখের পরেই সুখ

الدُّنْيَا سِجْنُ الْمُؤْمِنِ وَجَنَّةُ الْكَافِرِ.

* মানুষের জীবন সাজিয়েছেন একটি জিনিস দ্বারা আবার কাফেরদের জীবন সাজিয়েছেন দুনিয়ার চাকচিক্য দ্বারা

زُیِّنَ لِلَّذِیْنَ كَفَرُوا الْحَیٰوةُ الدُّنْیَا وَ یَسْخَرُوْنَ مِنَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا١ۘ وَ الَّذِیْنَ اتَّقَوْا فَوْقَهُمْ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ١ؕ وَ اللّٰهُ یَرْزُقُ مَنْ یَّشَآءُ بِغَیْرِ حِسَابٍ

* আজকে বিশ্ব পরিচালনা করেছেন বিজাতি সম্প্রদায়

দুনিয়া মোমেনের জন্য সুখের জায়গা নয়। সুখের জায়গা জান্নাত।

* তাই দুঃখ দুর্দশা মোমেনের জীবনে লেগেই থাকবে । আল্লাহু অভয় বানী শুনাচ্ছেন, আলে-ইমরান ১৩৯

وَ لَا تَهِنُوْا وَ لَا تَحْزَنُوْا وَ اَنْتُمُ الْاَعْلَوْنَ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ

وَ كَانَ حَقًّا عَلَیْنَا نَصْرُ الْمُؤْمِنِیْنَ

* আল্লাহর সাহায্য ছাড়া তার দয়া ছাড়া এই পৃথিবীতে কেউ সুখী হতে পারে না

* আল্লাহুকে পাওয়ার চেষ্টা কম করি কিন্তু দুনিয়ার সুখ পাওয়ার চেষ্টা বেশি করি

* এই দুনিয়া সুখের জায়গা নয়। মুমিনের জন্য জেলখানা

* যারা দুনিয়াদার, দেখলে মনে হয় সুখী কিন্তু ভেতরের অবস্থা ভিন্ন রকম। আর যদি সুখী হয় তাহলে একটা কথা আছে। একদা এক ব্যক্তি একটা গাধা আর একটা খাসি পালতো। ত্বোয়াহ - ১২৪

وَمَنْ أَعْرَضَ عَن ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنكًا وَنَحْشُرُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْمَىٰ

* খিজির আ: কাছে কয় হুজুর সুখি হতে চাই, ( ওয়াজ ও খুতবা-২/ ১৮৩)


__________________________________________________

২: আল-বাক্বারাহ:আয়াত: ২১২


زُیِّنَ لِلَّذِیْنَ كَفَرُوا الْحَیٰوةُ الدُّنْیَا وَ یَسْخَرُوْنَ مِنَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا١ۘ وَ الَّذِیْنَ اتَّقَوْا فَوْقَهُمْ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ١ؕ وَ اللّٰهُ یَرْزُقُ مَنْ یَّشَآءُ بِغَیْرِ حِسَابٍ


যারা কুফরীর পথ অবলম্বন করেছে তাদের জন্য দুনিয়ার জীবন বড়ই প্রিয় ও মনোমুগ্ধকর করে সাজিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ধরনের লোকেরা ঈমানের পথ অবলম্বনকারীদেরকে বিদ্রূপ করে। কিন্তু কিয়ামতের দিন তাকওয়া অবলম্বনকারীরাই তাদের মোকাবিলায় উন্নত মর্যাদার আসীন হবে। আর দুনিয়ার জীবিকার ক্ষেত্রে আল্লাহ‌ যাকে ইচ্ছা অপরিমিত দান করে থাকেন।


৩: আলে-ইমরান:আয়াত: ১৩৯


وَ لَا تَهِنُوْا وَ لَا تَحْزَنُوْا وَ اَنْتُمُ الْاَعْلَوْنَ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ


মনমরা হয়ো না, দুঃখ করো না, তোমরাই বিজয়ী হবে, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো।

৩০: আর-রূম:আয়াত: ৪৭


وَ لَقَدْ اَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ رُسُلًا اِلٰى قَوْمِهِمْ فَجَآءُوْهُمْ بِالْبَیِّنٰتِ فَانْتَقَمْنَا مِنَ الَّذِیْنَ اَجْرَمُوْا١ؕ وَ كَانَ حَقًّا عَلَیْنَا نَصْرُ الْمُؤْمِنِیْنَ


আমি তোমার পূর্বে রসূলদেরকে তাদের সম্প্রদায়ের কাছে পাঠাই এবং তারা তাদের কাছে আসে উজ্জ্বল নিদর্শনাবলী নিয়ে। তারপর যারা অপরাধ করে তাদের থেকে আমি প্রতিশোধ নিই আর মুমিনদেরকে সাহায্য করা ছিল আমার দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত।


* যারা দুনিয়াদার, দেখলে মনে হয় সুখী কিন্তু ভেতরের অবস্থা ভিন্ন রকম। ত্বোয়াহ - ১২৪

وَمَنْ أَعْرَضَ عَن ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنكًا وَنَحْشُرُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْمَىٰ

আমাদের চিন্তা সম্পদে শান্তি,

যাকে দেখলে সুখি মনে হয়। যার মধ্যে আল্লাহর হুকুম নবীর তরিকা নাই ওরা কখনো সুখী মানুষের কাতারে পড়তে পারে না। এর পরেও যদি তারা সুখী হয় বুঝে নেবে তাদের জন্য কুরবানীর চাঁদ উঠছে। দুনিয়াদাররাই প্রকৃত দুখি

* খিজির আ: কাছে কয় হুজুর সুখি হতে চাই, ( ওয়াজ ও খুতবা-২/ ১৮৩)

দুঃখ-কষ্ট ছাড়া কোন মানুষের জীবন নাই।আমরা বুঝতে পারি না তাই বলে থাকি যে আমার চেয়ে দুঃখী আর কেউ নাই।অথচ অন্য লোক যাদেরকে দেখতে দেখা যায় কোন দুঃখ নাই সেটা আমার দুঃখের মত নয়, অন্য ভাবে দুঃখে জড়িত হয়েছে।তাই বুঝতে পারি না।খোজ নিলে দেখা যাবে তার কষ্ট আমার চেয়ে অনেক বেশী।এরূপ একটি ঘটনা এখানে বর্ণনা করলে বিষয়টি পরিষ্কার বুঝতে পারবেন।


জুয়েলারী দোকানের মালিকের কষ্টঃ


~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~


একব্যক্তি ছিল।তার খিযির( আঃ) এর সাথে সাক্ষাৎ করার খুব সাধ জাগলো । একদিন সত্যি সত্যি খিযির( আঃ) তার সামনে এসে হাজির হলেন এবং শুধালেন,"কেন এত সাধ হয়েছে এই সাক্ষাতের? "লোকটি আরয করলো, "হুযুর, আমাকে দোয়া করেন আমি যেন দুনিয়াতে সকল দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্তি লাভ করে নিশ্চিন্তে এবং নির্ভাবনায় জীবন যাপন করতে পারি।"হযরত খিযির (আঃ) বললেন,"এভাবে দোয়া নয়। বরং তোমার দৃষ্টিতে দুনিয়াতে যাকে সুখী মনে হয় তুমি তার মত যেন হতে পার সেই দোয়া করিয়ে নাও।


লোকটি বললো, 'ঠিক আছে তাই হবে। আমি সুখি ব্যক্তি খুঁজে দেখছি। 'খিযির (আঃ) তখন চলে গেলন। লোকটি সুখী ব্যক্তি খুজতে লাগলো,বহু খোঁজাখুঁজির পর একদিন এক জুয়েলারী দোকানের মালিককে দেখতে পেলো,এমন সুন্দার চেহারা, এত ভাল স্বাস্থ্য আর এমন হাসি-মাখা মুখ কোথাও হয় না।ধন-সম্পদ,সুন্দরী স্ত্রী,স্বাস্থ্যবান সন্তান-সন্তুতি,আরামের বাসস্থান আর আয়েশের সকল বস্তুই তার আছে।সে দেখেই বুঝতে পারলো যে এর চেয়ে সুখী ব্যক্তি দুনিয়ায় আরএকজনও নাই।লোকটি ভাবলো, আমাকে এর মতই হতে হবে। তবে দোয়া করানোর আগে লোকটির ভিতরের খোঁজ-খবর নেওয়া যাক, এমন যেন না হয় যে যদি গোপনে তার কোন শোক -দুঃখ থেকে থাকে তবে তা'আমার ভাগে পড়ে যায়।'এইভেবে লোকটি তার কাছে সাক্ষাৎ করে বললো, দেখুন আমি আপনার মত সুখী জীবন লাভ করার জন্যে খিযির (আঃ) এর কাছে দোয়া করাতে চাই। আমার দৃষ্টিতে আপনার মত সুখি ব্যক্তি আর একজনও নাই এব্যপারে আপনার মতামত কী?"জুয়েলারীর মালিক একটি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বললো, "আর বলবেন না, ভাই!আমার সবই আছে। কিন্তু তবু এমন এক গোপন দুঃখে ডুবে আছি যা'ব্যক্ত করার নয়। আল্লাহ যেন আমারদুশমনকেওএইকষ্টটি না দেন।"


সেই গোপন দুঃখটি কী, সেটা জানার জন্যে লোকটি তার কছে বার বার অনুরোধ জানাতে লাগলো। অবশেষে মালিক তার জীবনের ইতিহাস বলতে লাগলো, 'আমার স্ত্রী ছিলেন সম্ভ্রান্ত পরিবারের এক অপূর্ব সুন্দরী যুবতী। তার সৌন্দর্যে আমি মুগ্ধছিলাম। তার প্রতি প্রবল ভালবাসা আমাকে পাগল করে তুলেছিল।উঠতে-বসতে, চলতে-ফিরতে সর্বদাই তার কথা ভাবতাম। একবার স্ত্রীর অসুখ হলো, ভীষণ অসুখ। স্ত্রী আর বাঁচবেন না বুঝতে পারলাম। তাই তার মৃত্যু-শয্যার পাশে বসে কাঁদতে লাগলাম।স্ত্রী আমাকে সান্তনা দিয়ে বলতে লাগলেন,'খামোখা কেঁদে মন খারাব করবেন না।আমার মৃত্যুর পরে আরেকটি বিয়ে করে নিবেন।'আমি তাকে বিশ্বাস করানোর চেষ্টা করলাম,'এরূপ হতেই পারে না। তোমাকে ছাড়া আমি অন্য কোন নারীকে পসন্দ করতে পারি না।'স্ত্রী বললেন,'ওটা একটা কথার কথা মাত্র।সব ঠিক হয়ে যাবে।থাক, কাঁদতে নাই' কিন্তু আমি তাকে কী দিয়ে বিশ্বাস করাই?মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এসেছে, বিশ্বাস তাকে করাতেই হবে। মৃত্যুর আগে অন্ততঃ সে জেনে যাক যে সে-ই আমার সবচেয়ে বড় সম্পদ। তাকে হারালে আমি নিঃসহায় হয়ে পড়বো। কিভাবে বিশ্বাস করাই সর্বক্ষণ সেই চিন্তাই করতাম। একদিন তার শয্যার পাশে বসে কাঁদছি। সে তখন আমাকে সান্তনা দিয়ে বারবার বলছে, 'স্ত্রী মারা গেলে পুরুষদের বিয়ে করা কোন দোষের নয়।আমার মৃত্যুর পর আপনি বিয়ে করবেন এ কথা জানতে পারলে আমি খুশী হয়ে মরতে পারী। একথা শুনে আমার জিদ আরো চেপে বসলো। তাকে এ কথাটি বিশ্বাস করাতেই হবে যে, তার মৃত্যুর পর আমি আর বিয়ে করবো না।আমার মাথায় তখন একটি বুদ্ধি জাগলো। আমি আমার পুরুষাঙ্গটি কেটে তার সামনে রেখে দিলাম। আর বললাম, নাও এবার অবশ্যই বিশ্বাস হবে, তোমার মৃত্যুর পর কোন নারীকে আমার প্রয়োজন হবেনা। 'এই দৃশ্য দেখে স্ত্রী অবাক হলেন।আমার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে দিন কাটাতে লাগলেন। কিছু দিন পর দেখা গেল স্ত্রী সুস্থ্য হয়ে উঠেছেন।সেই সৌন্দর্য, সেই যৌবন, সেইমন কেড়ে নেওয়া চাহনি, সবই আছে তার,কিন্তু আমার কিছুই নাই।বাড়ীটা আমার মরুভূমি,তৃষ্ঞার্ত এক চাতক পাখীর মত সে আমার দিকে চেয়ে থাকে, আমি তাকে কিছই দিতে পারী না।এখন যে কত দুঃখ নিয়ে জীবন কাটাচ্ছি তা'ব্যক্ত করা সম্ভব নয়।এই করুন ইতিহাস শোনার পর লোকটি বাড়ী ফিরে এসে চিন্তা করতে লাগলো। যে-লোকটি কে দুনিয়াতে সব চেয়ে সুখী মনে হলো সে আমার চেয়ে ও দুঃখী।সুতরাংএ দুনিয়াতে সুখ হবে না।সুখ পরকালেই হবে। 


অতএব পরকালে সুখী হওয়ার চেষ্টা করাই ভাল। ঘটনাক্রমে একদিন আবার খিযির (আঃ) এর সাথে তার দেখা হলো। লোকটি আরয করলো, "হুযূর, আমি বুঝতে পেরেছি এই দুনিয়ায় কেহ সুখী জীবনের অধিকারী হতে পারে না।আমাকে বরং পরকালের জন্যে দোয়া করুন।যেন আমার পরকাল ঠিক হয়ে যায়। 


একথা সত্য যে দুঃখ-কষ্টে ফেলার জন্যেই আল্লাহতায়ালা মানুষকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন।এই দুঃখ শেষ হবে জান্নাতে প্রবেশের পর। তার আগে জীবনের দুঃখ-কষ্টকে তারাই শুধু দূর করতে পারবে যারা দুনিয়াকে জান্নাত বানাতে পেরেছে। দুনিয়াকে জান্নাত বানানো যায় কিভাবে? পরহেজগার ব্যক্তিকে এ-প্রশ্ন করলে তাঁরা এই জওয়াব দিবেন।,"জান্নাত হলো সে-টাই যেখানে কষ্ট নাই।কারো সঙ্গে কারো কোন প্রয়োজন নাই।" আল্লাহর সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক হয়ে গেলে দুনিয়ার কোন মানুষের কাছে বান্দার কোন প্রয়োজন থাকে না। এক আল্লাহ-ই তাকে সবকিছু দেন।আল্লাহর রহমতের ধারা অনবরত তার মাথায় বর্ষিত হতে থাকে। দুনিয়া তখন তার জন্যে বেহেশত হয়ে যায়।আল্লাহর সঙ্গে এত গভীর ভালবাসা হয়ে যায় যে তাঁর দেওয়া দুঃখ-কষ্টের মধ্যে বেহেশতী সুখ পাওয়া যায়।আল্লাহকে ভালবাসলে তাঁর দেওয়া আঘাত ও ভাল লাগবে

* দুনিয়া মুমিনের জন্য জেলখানা এবং কাফিরের জন্য জান্নাতঃ

-----------------------------------------------------------------------

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الدُّنْيَا سِجْنُ الْمُؤْمِنِ وَجَنَّةُ الْكَافِرِ.

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, "দুনিয়া মুমিনের জন্য জেলখানা এবং কাফিরের জন্য জান্নাত। (সহীহ মুসলিম হাঃ ২৯৫৬; জামে তিরমিযী হাঃ ২৩২৪; ইবনে মাজাহ হাঃ ৪১১৩; মুসনাদে আহমদ হাঃ ৮০৯০, ৯৯১৬; রিয়াযুস স্বালিহীন হাঃ ৪৭৪; মিশকাত হাঃ ৫১৫৮; আল মুখতারাতু মিনাস সুন্নাহ হাঃ ৯৫)

No comments

Powered by Blogger.