173 হায় আমার বলতে কিছুই নাই-দান সদকা-2
* শিশু বাচ্ছাকে বলেন এই ঘরটি কার? সে বলবে আমার
* আইছো একা যাইবা একা সংগে যাবে কি, সংগে যাবে দুটো নাম আল্লাহ আর নবী
* মৃত্যুর সময় তিন বন্দু সাথে যায় ৷ সহিহ বুখারী,৬৫১৪(মাওয়ায়েযে সিরাজী-৫/৬৫
يَتْبَعُ الْمَيِّتَ ثَلاَثَةٌ فَيَرْجِعُ اثْنَانِ وَيَبْقَى مَعَهُ وَاحِدٌ يَتْبَعُهُ أَهْلُهُ وَمَالُهُ وَعَمَلُهُ فَيَرْجِعُ أَهْلُهُ وَمَالُهُ وَيَبْقَى
অর্থ- তিনটি বস্তু মৃত ব্যক্তির অনুসরণ করে। দু’টি ফিরে আসে, আর একটি তার সঙ্গে থেকে যায়। তার পরিবারবর্গ, তার মাল ও তার ‘আমাল তার অনুসরণ করে। তার পরিবারবর্গ ও তার মাল ফিরে আসে, এবং তার ‘আমাল তার সঙ্গে থেকে যায়
* আব্দুল কাদের জিলানী র: কে দাওয়াত দিল,বেচারার একটা ছেলে, একটা ঘর, তিন হাজার টাকা আছে
= আমার একটা ছেলে আমি সত্য বলেছি,নেক সন্তান একমাত্র সন্তান
= আমার একটা ঘর সত্য বলেছি,সুনানে ইবনে মাজাহ,৪১১৪
عُدَّ نَفْسَكَ مِنْ أَهْلِ الْقُبُور
= আমার তিন হাজার টাকা সত্য বলেছি,সহিহ মুসলিম,৭৩১০
يَقُولُ ابْنُ آدَمَ مَالِي مَالِي - قَالَ - وَهَلْ لَكَ يَا ابْنَ آدَمَ مِنْ مَالِكَ إِلاَّ مَا أَكَلْتَ فَأَفْنَيْتَ أَوْ لَبِسْتَ فَأَبْلَيْتَ أَوْ تَصَدَّقْتَ فَأَمْضَيْتَ
(মাওয়ায়েযে সিরাজী - ৫/৬৯ )
* ভায়েরা আমার । এ হল দুনিয়ার নকশা । দুনিয়ায় থাকাকালীন প্রথম দুই প্রকার বন্ধুকেই আমরা প্রকৃত বন্ধু বলে মনে করে থাকি । অথচ এ দুটি জিনিস যখন বৃদ্ধি পেতে থাকে তখনই মানুষ দুনিয়ার প্রতি ক্রমান্বয়ে আকৃষ্ট হতে থাকে।মাওয়ায়েযে সিরাজী-65
মহান আল্লাহ আমাদেরকে সতর্ক আর সাবধান করে ইরশাদ করেন
৬৩: আল-মুনাফিকুন:৯
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تُلْهِكُمْ اَمْوَالُكُمْ وَ لَاۤ اَوْلَادُكُمْ عَنْ ذِكْرِ اللّٰهِۚ وَ مَنْ یَّفْعَلْ ذٰلِكَ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْخٰسِرُوْنَ
* দুনিয়ায় রেখে যাওয়া নেক সন্তান কবরে সবচেয়ে বড় সম্পদ হয়ে দাঁড়াবে
মাতরাফ ইবনে শুখাইর (র) সপ্নে দেখে কবর বাসী টোকাচ্ছে,,,পৃ- বেহেস্তী নারী -186
* মৃত্যু আসার আগেই দান করার নির্দেশ
وَأَنفِقُوا مِن مَّا رَزَقْنَاكُم مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِيَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ فَيَقُولَ رَبِّ لَوْلَا أَخَّرْتَنِي إِلَىٰ أَجَلٍ قَرِيبٍ فَأَصَّدَّقَ وَأَكُن مِّنَ الصَّالِحِينَ
_______________
49 আমার বলতে কিছুই নাই-দান সদকা-2 ✓
* আসছি খালি হাতে যাব খালি হাতে সব কিছু মাঝখানে পরে থাকবে
* শিশু বাচ্ছাকে বলেন এই ঘরটি কার? সে বলবে আমার
* আইছো একা যাইবা একা
* মৃত্যুর সময় তিন বন্দু
—(মাওয়ায়েযে সিরাজী - ৫/৬৫ )
* মৃত্যুর সময় তিন বন্ধুর সাথে কথােপকথন এ হাদীসখানাকে এভাবে বুঝা যেতে পারে যে , যখন মানুষের মৃত্যুর সময় । ঘনিয়ে আসে তখন সে তার তিনজন বন্ধু থেকে সবচেয়ে প্রিয়জনকে ডেকে জিজ্ঞেস করবে , বন্ধু আমার এই বিপদের সময় তুমি আমাকে কি সাহায্য করতে পার ? আমি তাে আমার মেধা , শ্রম ও সময় সবই তােমাকে অর্জন করার জন্য ব্যয় করেছিলাম । সে জবাবে বলবে , আমি সারাজীবন তোমার খেদমত করেছি , সুখে - দুঃখে তােমার হাতের শক্তি ও সঙ্গী ছিলাম । কিন্তু আজ তােমার মৃত্যুর এ কঠিন সময় আমার করনীয় কিছুই নেই । তােমার মৃত্যুর সাথে সাথেই আমি । অন্যের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করবাে , এই আমার নীতি । মানুষ আমার জন্য সব করে এবং আপন বানাতে চায় । কিন্তু আমি আপন হওয়ার ভাব দেখাই তবে কারাে আপন হইনা , মানুষকে এভাবে ধোকা দেয়াই আমার কাজ । আমি অত্যন্ত নিঠুর ও নির্মম । অতঃপর সে দ্বিতীয় বন্ধুকে ডাকবে এবং বলবে এ মুহূর্তে বন্ধু তুমি আমার কি উপকার করতে পারাে ? সে বলবে তোমাকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করার কোন ক্ষমতা আমার নেই , তবে মৃত্যুর পরে তোমাকে ভালভাবে গােছল দিয়ে , উত্তম কাফন পড়িয়ে , আতর গােলাপে সজ্জিত করে কবরে দিয়ে আসতে পারব এবং মাঝেমাঝে তােমার কবরে ফুল দিয়ে আসতে পারবাে । জানি না তা তােমার সে জগতে কতটুকু কাজে আসবে । তারপর সে তৃতীয় বন্ধুকে ডাকবে , সে উত্তরে বলবে বন্ধু । চিন্তা করাে না , আমি সারাজীবন বিশ্বস্থতার সাথে তােমার সঙ্গে রয়েছি , মৃত্যুর সময়ও থাকবাে , এমনকি কবরে হাশরে এবং হিসাব - নিকাশের কঠিন মুহূর্তগুলােতে তােমার সঙ্গী হয়ে থাকব । কিন্তু তুমি তাে আমাকে তৃতীয় পর্যায়ের বন্ধু মনে করতে , কখনাে । ভালবাসা দেখিয়েছে , কখনাে না । যাই হােক , তােমার এ কঠিন মুহূর্তে সর্বক্ষণ সাধ্যমত আমি তােমার সাহায্য করে যাব কিন্ত আমি খুবই দুর্বল । এরপর হজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন , জানাে মানুষের তিন বন্ধু কারা ? বললেন , যেনে রেখাে , প্রথম জন হল তার ধন - সম্পদ , দ্বিতীয় জন হল তার সন্তান - সন্ততি বা আত্মীয় - স্বজন , আর তৃতীয় জন হল তার নেক আমল ।
الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
يَتْبَعُ الْمَيِّتَ ثَلاَثَةٌ فَيَرْجِعُ اثْنَانِ وَيَبْقَى مَعَهُ وَاحِدٌ يَتْبَعُهُ أَهْلُهُ وَمَالُهُ وَعَمَلُهُ فَيَرْجِعُ أَهْلُهُ وَمَالُهُ وَيَبْقَى عَمَلُهُ
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তিনটি বস্তু মৃত ব্যক্তির অনুসরণ করে। দু’টি ফিরে আসে, আর একটি তার সঙ্গে থেকে যায়। তার পরিবারবর্গ, তার মাল ও তার ‘আমাল তার অনুসরণ করে। তার পরিবারবর্গ ও তার মাল ফিরে আসে, এবং তার ‘আমাল তার সঙ্গে থেকে যায়।[মুসলিম পর্ব ৫৩/হাঃ ২৯৬০, আহমাদ ১২০৮১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৭০)
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৫১৪
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
ভায়েরা আমার । এ হল দুনিয়ার নকশা । দুনিয়ায় থাকাকালীন প্রথম দুই প্রকার বন্ধুকেই আমরা প্রকৃত বন্ধু বলে মনে করে থাকি । অথচ এ দুটি জিনিস যখন বৃদ্ধি পেতে থাকে তখনই মানুষ দুনিয়ার প্রতি ক্রমান্বয়ে আকৃষ্ট হতে থাকে ।
মাওয়ায়েযে সিরাজী-65
এবং তার পূর্ব অহংকার ও আখেরাত বিমুখতা বাড়তে থাকে এবং আখেরাতকে লতে শুরু করে । এই মহান আল্লাহ আমাদেরকে সতর্ক আর সাবধান করে ইরশাদ করেন
৬৩: আল-মুনাফিকুন:৯,
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تُلْهِكُمْ اَمْوَالُكُمْ وَ لَاۤ اَوْلَادُكُمْ عَنْ ذِكْرِ اللّٰهِۚ وَ مَنْ یَّفْعَلْ ذٰلِكَ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْخٰسِرُوْنَ
হে১৭ সেই সব লোক যারা ঈমান এনেছো, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তানাদি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফিল করে না দেয়। ১৮ যারা এরূপ করবে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকবে।
হযরত হাসান বসরী ( রহঃ ) বলেন , আমি বিস্মিত হই ঐ সকল ব্যক্তিদের উপর যাদের আখেরাতের সফর অত্যন্ত নিকটবর্তী এবং সফরের সামান তৈরীর হকুমও করা হয়েছে , তথাপিও তারা দুনিয়ার খেল তামাশায় লিপ্ত । তিনি কোন মৃত ব্যক্তি দেখলে এত বেশী শােক প্রকাশ করতেন , যেন এই মাত্র তিনি স্বীয় মতাকে দাফন করে এসেছেন ।
* আ: কাদের জিলানী র: কে দাওয়াত দিল,বেচারার একটা ছেলে, একটা ঘর, তিন হাজার টাকা আছে,
একজন কল্যাণকামী সৎ সাধকের চিন্তা - চেতনার নমুনা একদিন এক ব্যক্তি বড় পীর আব্দুল কাদির জিলানী ( রহ : ) কে দাওয়াত দিল যে , অমুক তারিখে আমার বাড়িতে আপনার খাবার দাওয়াত । হযরত তখন তাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে , তােমার সন্তান কয় জন ? সে বলল , শুধু এক ছেলে । আবার জিজ্ঞাসা করলেন , ঘর কয়টা ? সে বলল , একটা । আবারাে জিজ্ঞাসা করলেন , টাকা কত আছে ? বলল , মাত্র তিন হাজার টাকা আছে । তখন হযরত বললেন , যাও ! আমি সময় মত চলে আসব । হযরত সময় মত রওয়ানা হলেন , পথে এক ব্যক্তি বলল , হুজুর সে একজন মিথুক লােক , তার ঘরে দাওয়াত খাওয়া আপনার মত ব্যক্তির জন্য শােভা পায় না । তখন , হয়রত বললেন , ঠিক আছে ওয়াদা যেহেতু করেছি তাই যেতে হবে । কেননা , ওয়াদা রক্ষা করা ওয়াজিব । হ্যা , সেখানে যাওয়ার পর সে যদি মিথুক বলে প্রমাণিত হয় তাহলে না খেয়ে চলে আসব । একথা বলে সামনে অগ্রসর হতে লাগলেন । একটু এগুতেই একটি সুন্দর ফুটফুটে ছেলে দৌড়ে আসল এবং অত্যন্ত বিনয়ের সাথে হযরতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে লাগল । হযরত তাকে জিজ্ঞাসা করলেন , তুমি কে ? ছেলেটি বলল , যিনি আপনাকে দাওয়াত করেছেন আমি তারই ছেলে । অত : পর হযরত তাকে জিজ্ঞাসা করলেন , তােমরা কয় ভাই এবং তােমাদের কয়টি ঘর আছে ও টাকা - পয়সা কেমন আছে ? উত্তরে ছেলেটি বলল , আমরা আট ভাই আর এই পাড়ায় যত ঘর দেখছেন সবই আমাদের , আর টাকা পয়সার কোন হিসাব নাই , আমরা বহু টাকা পয়সার মালিক । হযরত ছেলেটির কথা শুনে মনে মনে অত্যন্ত রাগান্বিত হলেন । অতঃপর ঘরে প্রবেশ করতেই লােকটিকে জিজ্ঞাসা করলেন , তুমি আমার সাথে প্রতারনা করলে কেন এবং মিথ্যা বললে কেন ? তােমার আট ছেলে অথচ তুমি বলেছিলে এক ছেলে । তােমার অনেক ঘর - বাড়ী , অথচ তুমি বলে ছিলে একটি ঘর আছে । তােমার টাকা পয়সার হিসাব নাই , তুমি বহু টাকা - পয়সার মালিক , অথচ তুমি বলেছিলে মাত্র তিন হাজার টাকা আছে। হযরতের মুখে এসব কথা শুনতেই লােকটি অনুনয় করে বলল , হুজুর আমি আপনার সাথে মােটেই প্রবঞ্চনা করিনি যা বলেছি সব ঠিক ঠিক বলেছি । কেননা , আপনাদের মুখেই শুনেছি যে , নেক সন্তানই একমাত্র সন্তান এই হিসাব অনুযায়ী আট জনের মধ্যে এই একটিই আমার ছেলে । আর বাকী সাত জন তারা ছেলে নয় ‘ টেলে । এই একটি ছেলেই সর্বদা আমার পাশে থাকে এবং আমার যাবতীয় খেদমতের আঞ্জাম দেয় । নামাজের সময় হলে ওজুর পানি এনে দেয় , গোসলের সময় হলে নিজ হাতে আমাকে গােসল করিয়ে দেয় , খাওয়ার সময় হলে যথাযথ সময়ে খাবার ব্যবস্থা করে , ঘুমের সময় হলে বিছানা পরিস্কার করে দেয় এবং মাথায় তেল দিয়ে হাত পা টিপে দিয়ে আমার ঘুমের ব্যবস্থা করে এবং সেও সাথে গুমিয়ে যায় । আবাৱ শেষ রাতে তাহাজ্জুদের সময় হলে আমার হাত পা নারিয়ে দেয় এবং বলে যে , আব্বু উঠেন , তাহাজ্জদের নামায পড়েন , যে আল্লাহ সবকিছু দিয়েছেন ও এত আরামের ঘুমের সুযােগ করে দিয়েছেন , তাকে স্মরণ করেন । এভাবে সে । নিজেও তাহাজ্জুদ পড়ে এবং আমাকেও তাহাজ্জুদ পড়ায় এবং আমার যাবতীয় খেদমত করে । আর বাকী সাত ছেলে নামায পড়ে না , কখনাে আমার খোঁজ খবৱ নেয় না , বরং আরাে জ্বালা - যন্ত্রনা দেয় । ওদের জন্য টাকা - পয়সা রাখা যায়। বাজার থেকে কিছু আনলে হাতাহাতি করে খেয়ে সব শেষ করে দেয়। আমার জন্য কিছুই রাখে না। এছাড়াও ওদের গড়ার কারণে মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে চাইতে আমার ইজ্জত - সমান সৰ শেষ। এ জন্যই আমি বলেছি , আমার সন্তান একজন। অতঃপর হযরত বললেন , তুমি যথাযথ ঠিক বলেছ। তারপর লােকটি বলল , হুজুর আমি ওলামায়ে কেরামদের মুখে শুনেছি যে, এই দুনিয়ার ঘরবাড়ী আসল ঘরবাড়ী নয়
সব ছেড়ে একদিন সাড়ে তিন হাত মাটির নিচে কবরে যেতে হবে । অতএব কে সুন্দর কর ও বাড়ী বানাও হুজুর । সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও ইরশাদ করেন ,
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبِ بْنِ عَرَبِيٍّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ لَيْثٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ أَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بِبَعْضِ جَسَدِي فَقَالَ " يَا عَبْدَ اللَّهِ كُنْ فِي الدُّنْيَا كَأَنَّكَ غَرِيبٌ أَوْ كَأَنَّكَ عَابِرُ سَبِيلٍ و
َعُدَّ نَفْسَكَ مِنْ أَهْلِ الْقُبُورِ " .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার দেহ স্পর্শ করে বলেনঃ হে আবদুল্লাহ! দুনিয়াতে এমনভাবে বসবাস করো যেন তুমি একজন প্রবাসী অথবা পথচারী মুসাফির। তুমি নিজেকে কবরবাসীদের অন্তর্ভুক্ত মনে করো। [৩৪৪৬]
তাহকীক আলবানীঃ (আরবি) বাক্যটি ব্যতীত সহীহ। রাওদুন নাদীর ৫৭৪।
সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৪১১৪
হাদিসের মান: অন্যান্য
অর্থাৎ তুমি তােমাকে কবরের অধিবাসী হিসেবে জান । কেননা , এটাই তােমার আসল বাড়ী । আর একটি মানুষের জন্য । একটিই কবর হয়ে থাকে । এই জন্য আমি বলেছি আমার ঘর বা বাড়ী একটি । হযরত বললেন , তুমি যথাযথ সত্য বলেছ । অতঃপর টাকা পয়সা সম্পর্কে লােকটি বলল , হুজুর ওলামায়ে কেরামের শুনেছি , হাদীস শরীফে এসেছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন ,
حَدَّثَنَا هَدَّابُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ مُطَرِّفٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَقْرَأُ { أَلْهَاكُمُ التَّكَاثُرُ} قَالَ "
يَقُولُ ابْنُ آدَمَ مَالِي مَالِي - قَالَ - وَهَلْ لَكَ يَا ابْنَ آدَمَ مِنْ مَالِكَ إِلاَّ مَا أَكَلْتَ فَأَفْنَيْتَ أَوْ لَبِسْتَ فَأَبْلَيْتَ أَوْ تَصَدَّقْتَ فَأَمْضَيْتَ
মুতার্রিফ (রাযিঃ)-এর পিতা থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, একদা আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসলাম। তখন তিনি …… (সূরাহ্ আত্ তাকা-সুর) পাঠ করছিলেন। তিনি বললেন, আদাম সন্তানগণ বলে, আমার মাল আমার সম্পদ। বস্তুতঃ হে আদাম সন্তান! তোমার সম্পদ সেটা যা তুমি খেয়ে নিঃশেষ করে দিয়েছ, পরিধান করে পুরাতন করে ফেলেছ এবং দান করে খরচ করেছো। (ই.ফা. ৭১৫২, ই.সে. ৭২০৪)
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৭৩১০
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
অর্থঃ বনী আদম বলে থাকে যে , আমার মাল , আমার মাল , অথচ দুনিয়ায় রেখে যাওয়া কোন মালই তার মাল নয় । হ্যা , যা সে খেয়ে নষ্ট করে দিয়েই । আর যা সে পরিধান করে পুরানাে করে দিয়েছে । আর যা সে সদকা করে আগ্লাহর রিজার্ভ ব্যাংকে জমা রেখেছে । এ ছাড়া সব তার হাত ছাড়া হয়ে যাবে । এবং পরিত্যাগ হয়ে থাকবে ।এ হাদীসের মর্মার্থ অনুযায়ী আমি হিসাব করে দেখেছি যে , আমি তিন হাজার টাকার মত সদকা করেছি তাই আমি আপনাকে বলেছি যে , আমি তিন হাজার টাকার মালিক । এবার বলুন , আমি ঠিক বলেছি কি না ? অত : পর হযরত বললেন , ঠিকই বলেছ এবং সত্য কথা বলেছ । পরিশেষে হযরত তার ঘরে খাওয়া দাওয়া করলেন । কল্যাণকামী , সত্যের সাধক , খােদাভীরু একজন সত্যিকার ঈমানদারের চিন্তা - চেতনা , ধ্যান - ধারণা এমনি হওয়া উচিত
—(মাওয়ায়েযে সিরাজী - ৫/৬৯ )
* এই জীবনের জন্য আফসোস হবে যখন গলায় গেরগিরি ইষ্টার্ট
হবে
إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِن قَرِيبٍ فَأُولَـٰئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا
(আন নিসা - ১৭)
অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন, যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, রহস্যবিদ।
وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّىٰ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الْآنَ وَلَا الَّذِينَ يَمُوتُونَ وَهُمْ كُفَّارٌ ۚ أُولَـٰئِكَ أَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا
(আন নিসা - ১৮)
আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে, এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُلْهِكُمْ أَمْوَالُكُمْ وَلَا أَوْلَادُكُمْ عَن ذِكْرِ اللَّهِ ۚ وَمَن يَفْعَلْ ذَٰلِكَ فَأُولَـٰئِكَ هُمُ الْخَاسِرُونَ
(আল মুনাফিকূন - ৯)
মুমিনগণ! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে। যারা এ কারণে গাফেল হয়, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।
* মৃত্যু আসার আগেই দান করার নির্দেশ
وَأَنفِقُوا مِن مَّا رَزَقْنَاكُم مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِيَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ فَيَقُولَ رَبِّ لَوْلَا أَخَّرْتَنِي إِلَىٰ أَجَلٍ قَرِيبٍ فَأَصَّدَّقَ وَأَكُن مِّنَ الصَّالِحِينَ
(আল মুনাফিকূন - ১০)
আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর। অন্যথায় সে বলবেঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলে না কেন? তাহলে আমি সদকা করতাম এবং সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।
* মাতরাফ ইবনে শুখাইর (রহঃ) নামক প্রখ্যাত এক বুযুর্গ বলেন, আমি একদিন রাতে ঘুমে স্বপ্নে এক কবরস্থান দেখলাম। কবরবাসী কি যেন মাটি থেকে কুড়াচ্ছে। তবে এক বৃদ্ধলোক তাদের থেকে আলাদা। তিনি এদের থেকে একটু দূরে এক জায়গায় বসে আছেন, আমি তাঁর নিকট এগিয়ে গেলাম।
জিজ্ঞেস করলাম, এরা কি কুড়াচ্ছে?
বৃদ্ধ বললেন, পথচারীরা কবরস্থানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কুরআনের কিছু তেলাওয়াত করে বা দরূদ পাঠ করে—এর সওয়াব পৌঁছে দিয়ে যায়। এরা সেই সওয়াবই কুড়াচ্ছে ।
আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কেন ওদের সাথে সওয়াব কুড়াচ্ছেন না?
বৃদ্ধ বললেন—আমার এর কোন দরকার নেই। কেননা, প্রত্যেক দিন আমার নিকট বিশাল অংকের সওয়াব পৌঁছে যায়।
আমি বললাম, আপনার কেন দরকার নেই? আর প্রত্যেক দিন কতটুকু সওয়াব আপনার নিকট পৌঁছে? সেটা কিভাবে পৌঁছে?
বৃদ্ধ বললেন—আমার এক পুত্র হাফেযে কুরআন। সে অমুক বাজারে মিষ্টান্নের দোকানের মিষ্টির ব্যবসা করে। দিনভর সে বেচাকেনার সাথে সাথে পূর্ণাঙ্গ এক খতম কুরআন পাঠ করে তাঁর সওয়াব আমার নামে পৌঁছে দেয়। এজন্য আমার সওয়াব কুড়ানোর দরকার হয় না। আমার সঙ্গী কবরবাসীদের এই সওয়াবের প্রয়োজন রয়েছে। তাই ওরা এভাবে সওয়াব কুড়ায়। আর আমি এখানে বসে বসে সে দৃশ্য দেখি।
মাতরাফ ইবনে শুখাইর (রহঃ) বলেন, পরের দিন ভোরে ঘুম ভাঙ্গার পর ফজরের নামায আদায় করে বের হয়ে পড়লাম। সেই বাজারে চলে গেলাম। খুঁজতে খুঁজতে একটি মিষ্টির দোকানে পেয়ে গেলাম। দোকানে এক যুবক মিষ্টান্ন বিক্রি করছে। আর সাথে সাথে মৃদু আওয়াজে কুরআন মাজীদে তেলাওয়াত করছে।
আমি জিজ্ঞেস করলাম বেটা! তুমি কি পাঠ করছো?
যুবক বললো, জি জনাব! কুরআন পাঠ করছি।
প্রত্যেক দিন কতটুকু পড়ো? আমি জিজ্ঞেস করলাম।
প্রত্যেক দিন এক খতম করে তেলাওয়াত করি জনাব! যুবক বলল।
এক খতম করে প্রত্যেক দিন কেন পড়ো? জিজ্ঞেস করলাম।
যুবক বললো, আমার পিতা আমার প্রতি অনেক বড় এহসান করে গিয়েছেন। আমি এই এহসানের কিছুটা বদলা পরিশোধ করতে চাই। আমাকে তিনি পবিইত্র কুরআনের শিক্ষা দিয়ে গেছেন। আমি এই পরম অনুগ্রহের বিনিময় দিতে চাই।
মাতরাফ ইবনে শুখাইর (রহঃ) অনেক বড় আলেম ছিলেন। ছিলেন যমানার খ্যাতিমান মুহাদ্দিস, মুফাসসির, এবং লেখকও। তিনি ঘটনা এ পর্যন্ত লিখে রাখলেন।
তিনি লিখেন—আরো কয়েক বছর কেটে গেলো। এক রাতে আবার সেই কবর স্থান স্বপ্নে দেখলাম। কবরবাসী পূর্বের মতোই সওয়াব কুড়াচ্ছে। সাথে সেই বৃদ্ধ লোকটিও রয়েছে। বৃদ্ধও সবার সাথে ব্যস্ত হয়ে সওয়াব কুড়াচ্ছেন।
আমার ঘুম ভাঙ্গতেই মনে হলো-আজ এই নগরে কোন কিছু হয়ে গেছে। ফজরের নামাযের পর সেই দোকানে গেলাম। আশে পাশের দোকানগুলো ততক্ষণে খুলে ফেলেছে। অথচ এই মিষ্টির দোকানটি বন্ধ। লোকজনকে জিজ্ঞেস করলাম, এই দোকানের সেই যুবক মালিক কোথায়?
লোকেরা বলল, জনাব! ছেলেটা গতকাল ইন্তেকাল করেছে।
আহা! সওয়াবের কি সুনিশ্চিত এক ধারা চলছিলো। সেটা বন্ধ হয়ে গেলো। আর সন্তানের পিতাও সওয়াব কুড়ানোদের দলে ভিড়ে গেলেন।
সূত্রঃ তাজা ঈমানের সত্য কাহিনী বই থেকে নেওয়া।
* কবরে সন্তান সবচেয়ে বর সম্পদ
মাতরাফ ইবনে শুখাইর (র) সপ্নে দেখে কবর বাসী টোকাচ্ছে,,,পৃ- বেহেস্তী নারী -186
-------------------------
No comments