Header Ads

Header ADS

 60/ 187 মদ পান করা


* মদ খাওয়া হারাম হওয়ার পর্যায়ক্রম নীতি:




 মদ খাওয়া হারাম


হওয়ার পর্যায়ক্রম নীতি:




ইসলাম মানুষের স্বভাবধর্ম। মানুষ সাধারণত নেশার গোলাম। তাই মানুষের স্বভাব বুঝে আল্লাহ ক্রমধারা অনুযায়ী এটাকে নিষিদ্ধ করেছেন। শিশুকে বুকের দুধ ছাড়াতে মা যেমন ধীরগতির কৌশল অবলম্বন করেন, স্নেহশীল পালনকর্তা আল্লাহ তেমনি বান্দাকে মদের কঠিন নেশা ছাড়াতে ধীরগতির কৌশল অবলম্বন করেছেন। সে সময় আরবরা ছিল দারুণভাবে মদে অভ্যস্ত।




মদ্যপান ছিল সে যুগে আভিজাত্যের প্রতীক। আরব-আজম সর্বত্র ছিল এর ব্যাপক প্রচলন। তাই ইসলাম প্রথমে তার অনুসারীদের মানসিকতা তৈরী করে নিয়েছে। তারপর চূড়ান্তভাবে একে নিষিদ্ধ করেছে। আর যখনই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, তখনই তা বাস্তবায়িত হয়েছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে। এজন্য কোন যবরদস্তি প্রয়োজন হয়নি।




মদ নিষিদ্ধের জন্য পরপর তিনটি আয়াত নাযিল হয়। বাক্বারাহ ২১৯, নিসা ৪৩ ও সবশেষে মায়েদাহ ৯০-৯১। প্রতিটি আয়াত নাযিলের মধ্যে নাতিদীর্ঘ বিরতি ছিল এবং মানুষের মানসিকতা পরিবর্তনের অবকাশ ছিল। প্রতিটি আয়াতই একেকটি ঘটনা উপলক্ষে নাযিল হয়। যাতে মানুষ নিষেধাজ্ঞার গুরুত্ব উপলব্ধি করে তাকে সহজে গ্রহণ করে নেয়। যেমন (১) কিছু ছাহাবী এসে মদের অপকারিতা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং এ বিষয়ে আল্লাহর নির্দেশ কামনা করেন। তখন নাযিল হয়,




يَسْأَلُوْنَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ قُلْ فِيْهِمَا إِثْمٌ كَبِيْرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِن نَّفْعِهِمَا- (البقرة ২১৯)-




‘তারা আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে। আপনি বলে দিন যে, এ দু’টির মধ্যে রয়েছে বড় পাপ ও মানুষের জন্য রয়েছে কিছু উপকারিতা। তবে এ দু’টির পাপ এ দু’টির উপকারিতার চাইতে অধিক’ (বাক্বারাহ ২/২১৯)। এ আয়াত নাযিলের ফলে বহু লোক মদ-জুয়া ছেড়ে দেয়। তবুও কিছু লোক থেকে যায়।




অতঃপর (২) একদিন এক ছাহাবীর বাড়ীতে মেযবানী শেষে মদ্যপান করে একজন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। অন্যজন ছালাতে ইমামতি করতে গিয়ে সূরা কাফিরূণে نَحْنُ نَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ পড়েন। যার অর্থ ‘আমরা ইবাদত করি তোমরা যাদের ইবাদত কর’।[4]




যাতে আয়াতের মর্ম একেবারেই পরিবর্তিত হয়ে যায়। তখন আয়াত নাযিল হয়,


يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَقْرَبُوا الصَّلاَةَ وَأَنْتُمْ سُكَارَى حَتَّى تَعْلَمُوا مَا تَقُولُونَ- (النساء 43)-


‘হে মুমিনগণ! তোমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছালাতের নিকটবর্তী হয়ো না। যতক্ষণ না তোমরা যা বল তা বুঝতে পার’ (নিসা ৪/৪৩)। এ আয়াত নাযিলের পর মদ্যপায়ীর সংখ্যা আরও হ্রাস


 পায়।




পরে (৩) একদিন জনৈক ছাহাবীর বাড়ীতে খানাপিনার পর মদ্যপান শেষে কিছু মেহমান অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এ সময় জনৈক মুহাজির ছাহাবী নিজের বংশ গৌরব কাব্যাকারে বলতে গিয়ে আনছারদের দোষারোপ করে কবিতা বলেন। তাতে একজন আনছার যুবক তার মাথা লক্ষ্য করে উটের হাড্ডি ছুঁড়ে মারেন। তাতে তার নাক মারাত্মকভাবে আহত হয়। পরে বিষয়টি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট পেশ করা হয়। তখন সূরা মায়েদাহর আলোচ্য আয়াতদ্বয় নাযিল হয়।[5]




হযরত আনাস বিন মালেক (রাঃ) বলেন, ছাহাবী আবু ত্বালহা আনছারীর বাড়ীতে মেযবানী শেষে ‘ফাযীহ’ (الفضيح ) নামক উন্নতমানের মদ্যপান চলছিল। এমন সময় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর পক্ষ থেকে একজন ঘোষক উচ্চ কণ্ঠে ঘোষণা দিয়ে যান أَلاَ إِنَّ الْخَمْرَ قَدْ حُرِّمَتْ ‘হুঁশিয়ার হও! মদ হারাম করা হয়েছে’।[6]




ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ)-এর বর্ণনায় এসেছে, মদ সম্পর্কে তিনি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে বলেন, اللهُمَّ بَيِّنْ لَنَا فِى الْخَمْرِ بَيَانًا شَافِيًا ‘হে আল্লাহ! আমদেরকে মদ সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিন’। পরে বাক্বারাহ ২১৯ আয়াত নাযিল হয়। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে ডেকে আয়াতটি শুনিয়ে দেন। তখন ওমর (রাঃ) পুনরায় পূর্বের ন্যায় দো‘আ করেন। তখন নিসা ৪৩ আয়াতটি নাযিল হয়। তখন পূর্বের রাসূল (ছাঃ) তাকে ডেকে আনেন ও আয়াতটি শুনিয়ে দেন।




কিন্তু ওমর (রাঃ) পুনরায় পূর্বের ন্যায় দো‘আ করেন। তখন মায়েদাহ ৯০-৯১ আয়াতদ্বয় নাযিল হয়। তখন ওমর (রাঃ)-কে ডেকে এনে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে শুনিয়ে দেন। এবারে তিনি খুশী হয়ে বলে ওঠেন, انْتَهَيْنَا ‘এখন আমরা বিরত হলাম’ (অর্থাৎ আর দাবী করব না)।[7] আবু মায়সারাহ বলেন, মদ নিষিদ্ধের আয়াত নাযিল হয়েছিল ওমর (রাঃ)-এর কারণে (কুরতুবী, মায়েদাহ ৯০)।




ত্বীবী বলেন, সূরা মায়েদাহর অত্র আয়াতে মদ নিষিদ্ধের পক্ষে ৭টি দলীল রয়েছে।-




(১) মদকে رِجْسٌ বলা হয়েছে। যার অর্থ নাপাক বস্ত্ত (২) একেمِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ বা শয়তানী কাজ বলা হয়েছে, যা করা নিষিদ্ধ (৩) বলা হয়েছে فَاجْتَنِبُوهُ ‘তোমরা এ থেকে বিরত হও’। আল্লাহ যা থেকে বিরত থাকতে বলেন, তা নিঃসন্দেহে হারাম (৪) বলা হয়েছে لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ‘যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও’। অর্থাৎ যা থেকে বিরত থাকার মধ্যে কল্যাণ রয়েছে, তা অবশ্যই নিষিদ্ধ (৫) إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ




‘শয়তান মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে চায়’। অর্থাৎ যার মাধ্যমে এগুলি সৃষ্টি হয়, তা নিঃসন্দেহে হারাম (৬) বলা হয়েছে, وَيَصُدَّكُمْ عَنْ ذِكْرِ اللهِ وَعَنِ الصَّلاَةِ ‘আল্লাহর স্মরণ ও ছালাত থেকে তোমাদের বিরত রাখে’। এক্ষণে যার মাধ্যমে শয়তান এই দুষ্কর্মগুলি করে, তা অবশ্যই নিষিদ্ধ (৭) فَهَلْ أَنْتُمْ مُنْتَهُونَ ‘অতএব তোমরা কি নিবৃত্ত হবে’? অর্থ انتهوا ‘তোমরা নিবৃত্ত হও’। অতএব আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের যে কাজ হ’তে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন তা নিঃসন্দেহে হারাম’।[8]




[4]. তিরমিযী হা/৩০২৬।


[5]. মুসলিম হা/১৭৪৮; বায়হাক্বী ৮/২৮৫।


[6]. বুখারী হা/২৪৬৪, মুসলিম হা/১৯৮০; আবুদাঊদ হা/৩৬৭৩।


[7]. আবুদাঊদ হা/৩৬৭০; তিরমিযী হা/৩০৪৯; ছহীহাহ হা/২৩৪৮;




নেটে দেবে




ইমাম যুহরী (রঃ) বর্ণনা করেছেন যে, হযরত উসমান ইবনে আফফান (রাঃ) একবার জনগণকে সম্বোধন করে বলেন, তোমরা মদ্য পান থেকে বিরত থাক, কেননা, এটাই হচ্ছে সমস্ত দুস্কার্য ও অশ্লীলতার মূল। তোমাদের পূর্ব যুগে একজন বড় ‘আবেদ লোক ছিল। সে জনগণের সাহচর্যে থাকতো না। একটি পতিতা মহিলার তার প্রতি দৃষ্টি পড়ে যায়। সে সাক্ষ্য নেয়ার বাহানায় তার চাকরাণীর মাধ্যমে তাকে ডেকে পাঠায়। সে তার সাথে চলে আসে। অতঃপর সে যে দরজা দিয়ে প্রবেশ করে, পিছন থেকে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। অবশেষে সে মহিলাটির নিকট হাযির হয়ে দেখতে পায় যে, সেখানে একটি শিশু ও মদের একটি কলস রয়েছে। সে তখন তাকে বলে, “আল্লাহ্র কসম! আমি আপনাকে সাক্ষ্য নেয়ার উদ্দেশ্যে ডাকিনি। বরং ডেকেছি এই উদ্দেশ্যে যে, আপনি আমার কাছে থেকে রাত কাটাবেন, অথবা এই শিশুটিকে হত্যা করবেন কিংবা মদ পান করবেন।” তখন সে (হত্যা ও ব্যভিচার অপেক্ষা মদ্যপানের পাপকে ছোট মনে করে) এক পেয়ালা মদ পান করে ফেলে। তারপর বলেঃ আমাকে আরও দাও।' শেষ পর্যন্ত সে নেশাগ্রস্ত হয়ে শিশুটিকে হত্যা করে বসে এবং মহিলাটির সাথে ব্যভিচার করে ফেলে। তাই তোমরা মদ্যপান থেকে বিরত থাক। মদ ও ঈমান কখনও এক জায়গায় জমা হতে পারে না। মদ থাকলে ঈমান নেই এবং ঈমান থাকলে মদ নেই। তাঁর এ উক্তির প্রমাণ হিসেবে সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের ঐ হাদীসটি উল্লেখ করা যেতে পারে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ ব্যভিচারী যে সময় ব্যভিচার করে সে সময় সে মুমিন থাকে না, চোর যখন চুরি করে তখন সে মুমিন থাকে না এবং মদ্যপানকারী যখন মদ্যপান করে তখন সে মুমিন থাকে না। মুসনাদ আহমাদে আসমা বিনতে ইয়াযীদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি নবী করীম (সঃ)-কে বলতে শুনেছি- “যে ব্যক্তি মদ্য পান করে, আল্লাহ তার উপর চল্লিশ দিন পর্যন্ত অসন্তুষ্ট থাকেন। ঐ অবস্থায় যদি সে মারা যায় তবে সে কাফির হয়ে মারা যাবে। আর যদি সে তাওবা করে তবে আল্লাহ সেই তাওবা কবুল করবেন। কিন্তু যদি সে পুনরায় এতে ফিরে যায় (অর্থাৎ পুনরায় পান করতে শুরু করে। তবে তাকে (আরবী) পান করাবার অধিকার আল্লাহর আছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সঃ) (আরবী) কি? তিনি উত্তরে বললেনঃ তা হচ্ছে জাহান্নামীদের পূজ।




* حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيمِ أَبُو يَحْيَى، أَخْبَرَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ كُنْتُ سَاقِيَ الْقَوْمِ فِي مَنْزِلِ أَبِي طَلْحَةَ، وَكَانَ خَمْرُهُمْ يَوْمَئِذٍ الْفَضِيخَ، فَأَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُنَادِيًا يُنَادِي ‏"‏ أَلاَ إِنَّ الْخَمْرَ قَدْ حُرِّمَتْ ‏"‏‏.‏ قَالَ فَقَالَ لِي أَبُو طَلْحَةَ اخْرُجْ فَأَهْرِقْهَا، فَخَرَجْتُ فَهَرَقْتُهَا، فَجَرَتْ فِي سِكَكِ الْمَدِينَةِ فَقَالَ بَعْضُ الْقَوْمِ قَدْ قُتِلَ قَوْمٌ وَهْىَ فِي بُطُونِهِمْ‏.‏ فَأَنْزَلَ اللَّهُ ‏{‏لَيْسَ عَلَى الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جُنَاحٌ فِيمَا طَعِمُوا‏}‏ الآيَةَ‏.‏




আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:




তিনি বলেন, একদিন আমি আবূ তালহার বাড়িতে লোকজনকে শরাব পান করাচ্ছিলাম। সে সময় লোকেরা ফাযীখ শরাব ব্যবহার করতেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে আদেশ করলেন, যেন সে এই মর্মে ঘোষনা দেয় যে, সাবধান! শরাব এখন হতে হারাম করে দেয়া হয়েছে। আবূ তালহা (রাঃ) আমাকে বললেন, বাহিরে যাও এবং সমস্ত শরাব ঢেলে দাও। আমি বাইরে গেলাম এবং সমস্ত শরাব রাস্তায় ঢেলে দিলাম। আনাস (রাঃ) বলেন, সে দিন মদীনার অলিগলিতে শরাবের প্লাবন বয়ে গিয়েছিল। তখন কেউ কেউ বলল, একদল লোক নিহত হয়েছে, তথচ যাদের পেটে শরাব ছিল। তখন এই আয়াত নাযিল হল : “যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারা পূর্বে যা কিছু পানাহার করেছে তার জন্য তাদের কোন গুনাহ হবে না” – (আল-মা-য়িদাহ ৯৩)।


  




সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২৪৬৪


হাদিসের মান: সহিহ হাদিস




* حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ مُوسَى الْخُتَّلِيُّ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ، - يَعْنِي ابْنَ جَعْفَرٍ - عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، قَالَ لَمَّا نَزَلَ تَحْرِيمُ الْخَمْرِ قَالَ عُمَرُ اللَّهُمَّ بَيِّنْ لَنَا فِي الْخَمْرِ بَيَانًا شِفَاءً فَنَزَلَتِ الآيَةُ الَّتِي فِي الْبَقَرَةِ ‏{‏ يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ ‏}‏ الآيَةَ قَالَ فَدُعِيَ عُمَرُ فَقُرِئَتْ عَلَيْهِ قَالَ اللَّهُمَّ بَيِّنْ لَنَا فِي الْخَمْرِ بَيَانًا شِفَاءً فَنَزَلَتِ الآيَةُ الَّتِي فِي النِّسَاءِ ‏{‏ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَقْرَبُوا الصَّلاَةَ وَأَنْتُمْ سُكَارَى ‏}‏ فَكَانَ مُنَادِي رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ يُنَادِي أَلاَ لاَ يَقْرَبَنَّ الصَّلاَةَ سَكْرَانُ فَدُعِيَ عُمَرُ فَقُرِئَتْ عَلَيْهِ فَقَالَ اللَّهُمَّ بَيِّنْ لَنَا فِي الْخَمْرِ بَيَانًا شِفَاءً فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ ‏{‏ فَهَلْ أَنْتُمْ مُنْتَهُونَ ‏}‏ قَالَ عُمَرُ انْتَهَيْنَا ‏.




‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:




তিনি বলেন, মদ পান হারাম হওয়া সম্পর্কিত আদেশ তখনও অবতীর্ণ হয়নি। আমি বললাম, হে আল্লাহ! আমাদের জন্য মদের বিষয়টি সুস্পষ্ট করে দিন। অতঃপর সূরাহ আল-বাক্বারাহর (২১৯ নং) আয়াত অবতীর্ণ হলোঃ “(হে রাসূল)! তারা আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে প্রশ্ন করছে। আপনি বলুন, উভয়ের মধ্যে বড় বড় পাপের উপাদান আছে, যদিও এতে লোকদের জন্য কিছু উপকারিতাও আছে। কিন্তু উভয় কাজের পাপ ও অকল্যাণের পরিমাণ উপকারিতার চেয়ে অনেক বেশি।” অতঃপর ‘উমার (রাঃ)-কে ডাকা হলো এবং তাকে এ আয়াত পড়ে শুনানো হলো। তিনি বললেন, হে আল্লাহ! মদের ব্যাপারে আমাদের সুস্পষ্টভাবে বলে দিন। অতঃপর সূরাহ আন-নিসার (৪২ নং) আয়াত অবতীর্ণ হলোঃ “হে ঈমানদারগণ! তোমরা মাতাল অবস্থায় সলাতের কাছেও যাবে না; সলাত তখন পড়বে যখন তোমরা বুঝতে পারো তোমরা কি পড়ছো।” এরপর হতে যখন সলাতের জামা‘আত প্রস্তুত হতো, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ঘোষক ঘোষণা করতেন, সাবধান! মাতাল অবস্থায় সলাতের কাছেও আসবে না। ‘উমার (রাঃ)-কে ডেকে এনে এ আয়াত পড়ে শুনানো হলো। তিনি আবার দু‘আ করলেন, হে আল্লাহ! মদের বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে বলে দিন। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হলোঃ “হে ঈমানদারগণ! মদ, জুয়া, আস্তানা ও পাশা এসবই নাপাক, শয়তানী কাজ। তোমরা এসব থেকে দূরে থাকো......”(সূরাহ আল-মায়িদাহঃ ৯০-৯১)। ‘উমার (রাঃ) বলেন, আমরা এসব কাজ বর্জন করলাম।


  




সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৬৭০


হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

No comments

Powered by Blogger.