Header Ads

Header ADS

135 অহংকার

  135 অহংকার

*  অহংকার একটি খারাপ গুণ। এটা শয়তানের বৈশিষ্ট্য, রাহমানের বান্দা তারাই যাদের মধ্যে অহংকার নেই ৩২: আস-সাজদাহ :১৫

اِنَّمَا یُؤْمِنُ بِاٰیٰتِنَا الَّذِیْنَ اِذَا ذُكِّرُوْا بِهَا خَرُّوْا سُجَّدًا وَّ سَبَّحُوْا بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَ هُمْ لَا یَسْتَكْبِرُوْنَ

অর্থ- আমার আয়াতের প্রতি তো তারাই ঈমান আনে যাদেরকে এ আয়াত শুনিয়ে যখন উপদেশ দেয়া হয় তখন তারা সিজদায় লুটিয়ে পড়ে এবং নিজেদের রবের প্রশংসা সহকারে তার মহিমা ঘোষণা করে এবং অহংকার করে না

*  মানুষকে গুমরা করার জন্যে শয়তানের অসংখ্য ফাঁদ রয়েছে, অহংকার হলো শয়তানের একটি জাল, আদাবুল মুফরাদ- ৫৫৫ হাসান মাওকুফ

عَنِ الْهَيْثَمِ بْنِ مَالِكٍ الطَّائِيِّ قَالَ: سَمِعْتُ النُّعْمَانَ بْنَ بَشِيرٍ يَقُولُ عَلَى الْمِنْبَرِ، قَالَ: إِنَّ لِلشَّيْطَانِ مَصَالِيًا وَفُخُوخًا، وَإِنَّ مَصَالِيَ الشَّيْطَانِ وَفُخُوخَهُ: الْبَطَرُ بِأَنْعُمِ اللَّهِ، وَالْفَخْرُ بِعَطَاءِ اللَّهِ، وَالْكِبْرِيَاءُ عَلَى عِبَادِ اللَّهِ، وَاتِّبَاعُ الْهَوَى فِي غَيْرِ ذَاتِ اللَّهِ

অর্থ- হায়সাম ইবনে মালেক আত-তাই (র)আমি নোমান ইবনে বশীর (রাঃ)-কে মিম্বারের উপর বলতে শুনেছি, শয়তানের অনেক রকম জাল ও ফাঁদ আছে। শয়তানের জাল ও ফাঁদ হচ্ছে আল্লাহর নিয়ামত সম্পর্কে অহংকার করা, আল্লাহর দান সম্পর্কে গর্ব করা, আল্লাহর বান্দাগণের উপর অহংকার করা এবং আল্লাহর সত্তা ব্যতীত নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করা (বায়হাকীর শুআবুল ঈমান, জামে সগীর, ইবনে আসাকির

*  সব মানুষ এক উপাদানে তৈরী,আদম আঃ এর সন্তান, অহংকার করার কি আছে,সুরা ফাতাহ- 13 জামে' আত-তিরমিজি,৩২৭০ সহিহ। মক্কা বিজয়ের দিন রাসুল সা: উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন এবং বলেন: হে জনমন্ডলী! তোমাদের হতে আল্লাহ তা’আলা জাহিলিয়াত যুগের দম্ভ ও অহংকার এবং পূর্বপুরুষের গৌরবগাথা বাতিল করেছেন। এখন মানুষ দুই অংশে বিভক্তঃ এক দল মানুষ নেককার, পরহেজগার, আল্লাহ তা’আলার নিকট প্রিয় ও সম্মানিত এবং অন্য দল পাপিষ্ঠ, দুর্ভাগা, আল্লাহ তা’আলার নিকট অত্যন্ত নিকৃষ্ট, নিচু ও ঘৃণিত। সকল মানুষই আদমের সন্তান। আল্লাহ তা’আলা আদম (আঃ)- কে মাটি দিয়ে তৈরী করেছেন। মহান আল্লাহ তা’আলা বলেছেন-

يا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ ذَكَرٍ وَأُنْثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ

অর্থ- হে লোক সকল! তোমাদেরকে আমি একজন পুরুষ ও একজন নারী হতে তৈরী করেছি, তারপর বিভিন্ন বংশ ও গোত্রে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি, তোমরা যাতে একে অন্যকে চিনতে পার। যে লোক তোমাদের মাঝে বেশি পরহেজগার সেই আল্লাহ তা’আলার নিকট বেশি মর্যাদার অধিকারী। আল্লাহ তা’আলা সবকিছু সম্পর্কে জ্ঞাত, সব খবর রাখেন”-(৪৯: আল-হুজুরাত,: আয়াত: ১৩,) জামে' আত-তিরমিজি- ৩২৭০ সহিহ হাদিস

*  অহংকারের পরিনীতি জাহান্নাম,যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।সহিহ মুসলিম,১৬৮:সহিহ

لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِنْ كِبْرٍ

* অনেকেই পরিধেয় বস্ত্র মাটিতে হেঁচড়িয়ে চলে,হেঁচড়িয়ে চলার পরিনাম, সুনানে আবু দাউদ- ৪০৮৫:সহিহ

مَنْ جَرَّ ثَوْبَهُ خُيَلاَءَ لَمْ يَنْظُرِ اللَّهُ إِلَيْهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ إِنَّ أَحَدَ جَانِبَىْ إِزَارِي يَسْتَرْخِي إِنِّي لأَتَعَاهَدُ ذَلِكَ مِنْهُ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ لَسْتَ مِمَّنْ يَفْعَلُهُ خُيَلاَءَ

অর্থ- যে ব্যক্তি অহংকার বশতঃ পরিধেয় বস্ত্র মাটিতে হেঁচড়িয়ে চলে, ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না। একথা শুনে আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আমার লুঙ্গির একদিক মাঝে মধ্যে ঝুলে পড়ে। আমি তো সেদিকে সর্বদা সতর্ক হতে পারি না। তিনি বললেনঃ যারা অহংকারবশে এরূপ করে আপনি তো তাদের মত নন

*  হযরত লোকমান হাকিম সন্তানদের উপদেশ দেন, অহংকার বশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করো না এবং পৃথিবীতে গর্বভরে পদচারণ করো না,লোকমান-১৮

وَلَا تُصَعِّرْ خَدَّكَ لِلنَّاسِ وَلَا تَمْشِ فِي الْأَرْضِ مَرَحًا ۖ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ كُلَّ مُخْتَالٍ فَخُورٍ

*  হে আমার ছেলে পদচারণায় মধ্যবর্তিতা অবলম্বন কর,এবং কন্ঠস্বর নীচু কর, লোকমান-১৯

وَاقْصِدْ فِي مَشْيِكَ وَاغْضُضْ مِن صَوْتِكَ ۚ إِنَّ أَنكَرَ الْأَصْوَاتِ لَصَوْتُ الْحَمِيرِ

*  হযরত নুহ আ: মৃত্যুর সময় সন্তানদের উপদেশ দিলেন,রাসূল সাঃ বলেছেন:নূহ আঃ স্বীয় ইন্তিকালের সময় তাঁর দুই ছেলেকে ডেকে বলেছেন:আমি তো অক্ষম হয়ে পড়েছি। তাই আমি তোমাদেরকে অসিয়ত করে যাচ্ছি।আমি তোমাদেরকে দু’টি বিষয়ে আদেশ করছি এবং দু’টি বিষয় থেকে নিষেধ করছি। আমি তোমাদেরকে শির্‌ক এবং অহংকার থেকে নিষেধ করছি। আর যে দুটি বিষয়ে আদেশ করছি তার একটি হলো: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্”। কেননা সমস্ত আসমান ও যমীন এবং এর মাছে যা কিছু আছে সব কিছু যদি এক পাল্লায় রাখা হয় আর অপর পাল্লায় “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্” রাখা হয়, তাহলে কালেমার পাল্লাই ঝুলে যাবে (ভারি হবে)। আর যদি সমস্ত আসমান-যমীন (সাত আকাশ ও সাত যমীন) এবং এর মধ্যকার যা কিছু আছে, একটি হালকা বা গোলাকার করে তার উপর এ কালেমাকে রাখা হয় তাহলে ওজনের কারণে তা ভেঙ্গে যাবে। আর আমি তোমাদেরকে আদেশ করছি ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামাদিহি’ (পাঠ করার জন্য), কেননা এটা প্রত্যেক বস্তুর তাসবীহ, এর দ্বারাই প্রত্যেক বস্তুকে রিযিক্ব দেয়া হয়,সহিহ ফাযায়েলে আমল,৪৫ সহিহ

*  অহংকারের কারনে ফেরাউনের  গোষ্ঠী ধ্বংস হয়ে যায়,২৮: আল-ক্বাসাস:৩৮-৪০

وَ قَالَ فِرْعَوْنُ یٰۤاَیُّهَا الْمَلَاُ مَا عَلِمْتُ لَكُمْ مِّنْ اِلٰهٍ غَیْرِیْ١ۚ فَاَوْقِدْ لِیْ یٰهَامٰنُ عَلَى الطِّیْنِ فَاجْعَلْ لِّیْ صَرْحًا لَّعَلِّیْۤ اَطَّلِعُ اِلٰۤى اِلٰهِ مُوْسٰى١ۙ وَ اِنِّیْ لَاَظُنُّهٗ مِنَ الْكٰذِبِیْنَ

আর ফেরাউন বললো, “হে সভাসদবর্গ! তো আমি নিজেকে ছাড়া তোমাদের আর কোন প্রভু আছে বলে জানি না। ওহে হামান! আমার জন্য ইট পুড়িয়ে একটি উঁচু প্রাসাদ তৈরি করো, হয়তো তাতে উঠে আমি মূসার প্রভুকে দেখতে পাবো, আমিতো তাঁকে মিথ্যুক মনে করি।”

২৮: আল-ক্বাসাস: ৩৯

وَ اسْتَكْبَرَ هُوَ وَ جُنُوْدُهٗ فِی الْاَرْضِ بِغَیْرِ الْحَقِّ وَ ظَنُّوْۤا اَنَّهُمْ اِلَیْنَا لَا یُرْجَعُوْنَ

সে এবং তার সৈন্যরা পৃথিবীতে কোন সত্য ছাড়াই নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের অহংকার করলো এবং মনে করলো তাদের কখনো আমার কাছে ফিরে আসতে হবে না।

২৮: আল-ক্বাসাস: ৪০

فَاَخَذْنٰهُ وَ جُنُوْدَهٗ فَنَبَذْنٰهُمْ فِی الْیَمِّ١ۚ فَانْظُرْ كَیْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الظّٰلِمِیْنَ

শেষে আমি তাকে ও তার সৈন্যদেরকে পাকড়াও করলাম এবং সাগরে নিক্ষেপ করলাম।  এখন এ জালেমদের পরিণাম কি হয়েছে দেখে নাও।

*  অহংকারের কারনে নমরুদের গোষ্ঠী ধ্বংস হয়ে যায়। নমরূদ আল্লাহকে মারার জন্য আকাশে তীর মারলো শেষ পরিণতি কারো অজানা নয়

*  অহংকারের কারনে হাজার বছর ইবাদতকারী আজ অভিশপ্ত শয়তান ৭-আরাফ ১২

قَالَ مَا مَنَعَكَ اَلَّا تَسْجُدَ اِذْ اَمَرْتُكَؕ-قَالَ اَنَا خَیْرٌ مِّنْهُۚ-خَلَقْتَنِیْ مِنْ نَّارٍ وَّ خَلَقْتَهٗ مِنْ طِیْنٍ

قَالَ اَنْظِرْنِیْۤ اِلٰى یَوْمِ یُبْعَثُوْنَ

قَالَ اِنَّكَ مِنَ الْمُنْظَرِیْنَ

قَالَ فَبِمَاۤ اَغْوَیْتَنِیْ لَاَقْعُدَنَّ لَهُمْ صِرَاطَكَ الْمُسْتَقِیْمَۙ

ثُمَّ لَاٰتِیَنَّهُمْ مِّنْۢ بَیْنِ اَیْدِیْهِمْ وَ مِنْ خَلْفِهِمْ وَ عَنْ اَیْمَانِهِمْ وَ عَنْ شَمَآئِلِهِمْؕ-وَ لَا تَجِدُ اَكْثَرَهُمْ شٰكِرِیْنَ

قَالَ اخْرُ جْ مِنْهَا مَذْءُوْمًا مَّدْحُوْرًاؕ-لَمَنْ تَبِعَكَ مِنْهُمْ لَاَمْلَــٴَـنَّ جَهَنَّمَ مِنْكُمْ اَجْمَعِیْنَ

*  অহংকারের কারনে ধ্বংস হয়েছে বিশ্বখ্যাত টাইটানিক জাহাজ। টাইটানিক জাহাজের নির্মাতার নাম হলঃ হারল্যান্ড অ্যান্ড উল্ফ পিপইয়ার্ড়।টাইটান হচ্ছে গ্রীক পুরানের শক্তিশালী দেবতার নাম।এই শক্তিশালী দেবতার নাম অনুসারে এই জাহাজের নাম রাখা হয়েছিল টাইটানিক।জাহাজটি যখন তৈরি হয়েছিল তখন নির্মাতাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল,এ জাহাজটি সাগরে কতটুকু নিরাপদ?তখন নির্মাতা অহংকার করে বলেছিল,এটা কেউ ধ্বংস করতে পারবেনা।ইহা চিরস্হায়ী।কারো অজানা নয়,১৯১২ সালে ইহা সাগরে হিমশৈল(আইসবার্গ)বরফের টুকরারের সাথে ধাক্কা লেগে ধ্বংস হয়ে গেল।হে বন্ধুরা,আল্লাহ তাআলা অহংকারীকে পছন্দ করেনা।মনে রাখ,যাহা পারে মুনিবে,তাহা পারে না গোলামে

*  জনৈক লোক তার দু’টি চাদর পরিধান করে অহংকারের সাথে চলাফেরা করছিল। অকস্মাৎ আল্লাহ তাকে জমিনে ধসে দিলেন,সহিহ মুসলিম,৫৩৬০ সহিহ হাদিস

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ بَيْنَمَا رَجُلٌ يَتَبَخْتَرُ يَمْشِي فِي بُرْدَيْهِ قَدْ أَعْجَبَتْهُ نَفْسُهُ فَخَسَفَ اللَّهُ بِهِ الأَرْضَ فَهُوَ يَتَجَلْجَلُ فِيهَا إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ

 অর্থ- জনৈক লোক তার দু’টি চাদর পরিধান করে অহংকারের সাথে চলাফেরা করছিল। আপন ব্যক্তিত্বকে সে ভাল মনে করছিল। অকস্মাৎ আল্লাহ তাকে জমিনে ধসে দিলেন। কিয়ামত অবধি সে মাটির জমিনে ধসতে থাকবে

*  কিয়ামতের দিন অহংকারীদেরকে পিপিলিকা সদৃশ (ক্ষুদ্রদেহ) মানুষরূপে হাশরের মাঠে সমবেত করা হবে।,তিরমিযী, নাসাঈ, আহমাদ, আদাবুল মুফরাদ,৫৫৯:হাসান

يُحْشَرُ الْمُتَكَبِّرُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَمْثَالَ الذَّرِّ فِي صُورَةِ الرِّجَالِ، يَغْشَاهُمُ الذُّلُّ مِنْ كُلِّ مَكَانٍ، يُسَاقُونَ إِلَى سِجْنٍ مِنْ جَهَنَّمَ يُسَمَّى: بُولَسَ، تَعْلُوهُمْ نَارُ الْأَنْيَارِ، وَيُسْقَوْنَ مِنْ عُصَارَةِ أَهْلِ النَّارِ، طِينَةَ الْخَبَالِ

অর্থ- কিয়ামতের দিন অহংকারীদেরকে পিপিলিকা সদৃশ (ক্ষুদ্রদেহ) মানুষরূপে হাশরের মাঠে সমবেত করা হবে। তারা সব দিক থেকে লাঞ্ছনা পরিবেষ্টিত থাকবে। তাদেরকে দোযখের বূলাস নামক কারাগারের দিকে হাঁকিয়ে নেয়া হবে। তারা দোযখের আগুনে জ্বলতে থাকবে এবং দোযখীদের (দেহ নিৰ্গত) ঘাম পান করবে

*  ক্বিয়ামাত দিবসে জাহান্নাম হতে একটি গর্দান (মাথা) বের হবে, হাশরের ময়দানের দিকে এগিয়ে আসবে,জামে' আত-তিরমিজি,২৫৭৪:সহিহ

يَخْرُجُ عُنُقٌ مِنَ النَّارِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لَهُ عَيْنَانِ تُبْصِرَانِ وَأُذُنَانِ تَسْمَعَانِ وَلِسَانٌ يَنْطِقُ يَقُولُ إِنِّي وُكِّلْتُ بِثَلاَثَةٍ بِكُلِّ جَبَّارٍ عَنِيدٍ وَبِكُلِّ مَنْ دَعَا مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ وَبِالْمُصَوِّرِينَ

অর্থ- ক্বিয়ামাত দিবসে জাহান্নাম হতে একটি গর্দান (মাথা) বের হবে। এর দুটি চোঁখ থাকবে যা দিয়ে সে দেখবে, দুটি কান থাকবে যা দিয়ে সে শুনবে এবং একটি জিহবা থাকবে যা দিয়ে সে কথা বলবে। সে বলবে, তিন ধরনের লোকের জন্য আমাকে নিয়োজিত করা হয়েছেঃ (১) প্রতিটি অবাধ্য অহংকারী যালিমের জন্য, (২) আল্লাহ তা‘আলার সাথে অন্য কোন কিছুকে যে ব্যক্তি ইলাহ বলে ডাকে তার জন্য এবং (৩) ছবি নির্মাতাদের জন্য।

*  জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যে তর্ক-বির্তক হলো। জান্নাত বললো, গরীব-মিসকীন ও দুর্বল ব্যক্তি আমার মধ্যে প্রবেশ করবে। জামে' আত-তিরমিজি,২৫৬১ হাসান সহিহ

احْتَجَّتِ الْجَنَّةُ وَالنَّارُ فَقَالَتِ الْجَنَّةُ يَدْخُلُنِي الضُّعَفَاءُ وَالْمَسَاكِينُ ‏.‏ وَقَالَتِ النَّارُ يَدْخُلُنِي الْجَبَّارُونَ وَالْمُتَكَبِّرُونَ ‏.‏ فَقَالَ لِلنَّارِ أَنْتِ عَذَابِي أَنْتَقِمُ بِكِ مِمَّنْ شِئْتُ ‏.‏ وَقَالَ لِلْجَنَّةِ أَنْتِ رَحْمَتِي أَرْحَمُ بِكِ مَنْ شِئْتُ

অর্থ- জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যে তর্ক-বির্তক হলো। জান্নাত বললো, গরীব-মিসকীন ও দুর্বল ব্যক্তি আমার মধ্যে প্রবেশ করবে। জাহান্নাম বললো, যতো স্বৈরাচারী যালিম ও অহংকারীরা আমার মধ্যে প্রবেশ করবে। আল্লাহ্ তা'আলা জাহান্নামকে বলেনঃ তুই আমার আযাব, আমি তোর দ্বারা যার থেকে ইচ্ছা প্রতিশোধ গ্রহণ করবো। তিনি জান্নাতকে বলেনঃ তুমি আমার রাহমাত, আমি তোমার দ্বারা যাকে ইচ্ছা উপকৃত করবো।

*  জান্নাত ও জাহান্নামী লোকদের বৈশিষ্ট্য যেমন হবে। দ্বীনের নবী বলেন। সহিহ বুখারী,৬০৭১ সহিহ

‏أَلاَ أُخْبِرُكُمْ بِأَهْلِ الْجَنَّةِ، كُلُّ ضَعِيفٍ مُتَضَاعِفٍ، لَوْ أَقْسَمَ عَلَى اللَّهِ لأَبَرَّهُ، أَلاَ أُخْبِرُكُمْ بِأَهْلِ النَّارِ كُلُّ عُتُلٍّ جَوَّاظٍ مُسْتَكْبِرٍ

অর্থ- আমি কি তোমাদের জান্নাতীদের সম্পর্কে জ্ঞাত করবো না? (তারা হলেন) : ঐ সকল লোক যারা অসহায় এবং যাদের তুচ্ছ মনে করা হয়। তারা যদি আল্লাহর নামে শপথ করে, তাহলে তা তিনি নিশ্চয়ই পুরা করে দেন। আমি কি তোমাদের জাহান্নামীদের সম্পর্কে জ্ঞাত করবো না? তারা হল: কর্কশ স্বভাব, শক্ত হৃদয় ও অহংকারী


___________________________


192  অহংকার


* حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، أَنَّ أَبَا أُسَامَةَ، أَخْبَرَهُمْ عَنْ عُمَرَ بْنِ حَمْزَةَ، قَالَ قَالَ سَالِمٌ أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ يَطْوِي اللَّهُ السَّمَوَاتِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ثُمَّ يَأْخُذُهُنَّ بِيَدِهِ الْيُمْنَى ثُمَّ يَقُولُ أَنَا الْمَلِكُ أَيْنَ الْجَبَّارُونَ أَيْنَ الْمُتَكَبِّرُونَ ثُمَّ يَطْوِي الأَرَضِينَ ثُمَّ يَأْخُذُهُنَّ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ ابْنُ الْعَلاَءِ ‏"‏ بِيَدِهِ الأُخْرَى ثُمَّ يَقُولُ أَنَا الْمَلِكُ أَيْنَ الْجَبَّارُونَ أَيْنَ الْمُتَكَبِّرُونَ ‏"‏ ‏.


আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ ক্বিয়ামাতের দিন আসমানসমূহকে গুটিয়ে তাঁর ডান হাতে নিয়ে বলবেন, আমিই সর্বময় কর্তা ও মালিক, স্বৈরাচারীরা ও অহংকারকারীরা কোথায়? অতঃপর পৃথিবীসমূহকে গুটিয়ে অপর হাতে নিয়ে বলবেন, আমিই মালিক স্বৈরাচারীরা ও অহংকারকারীরা কোথায়?সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৭৩২

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


* ইবনু উমার (রাঃ)মক্কা বিজয়ের দিন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন এবং বলেনঃ হে জনমন্ডলী! তোমাদের হতে আল্লাহ তা’আলা জাহিলিয়াত যুগের দম্ভ ও অহংকার এবং পূর্বপুরুষের গৌরবগাথা বাতিল করেছেন। এখন মানুষ দুই অংশে বিভক্তঃ এক দল মানুষ নেককার, পরহেজগার, আল্লাহ তা’আলার নিকট প্রিয় ও সম্মানিত এবং অন্য দল পাপিষ্ঠ, দুর্ভাগা, আল্লাহ তা’আলার নিকট অত্যন্ত নিকৃষ্ট, নিচু ও ঘৃণিত। সকল মানুষই আদমের সন্তান। আল্লাহ তা’আলা আদম (আঃ)- কে মাটি দিয়ে তৈরী করেছেন। মহান আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ “হে লোক সকল! তোমাদেরকে আমি একজন পুরুষ ও একজন নারী হতে তৈরী করেছি, তারপর বিভিন্ন বংশ ও গোত্রে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি, তোমরা যাতে একে অন্যকে চিনতে পার। যে লোক তোমাদের মাঝে বেশি পরহেজগার সেই আল্লাহ তা’আলার নিকট বেশি মর্যাদার অধিকারী। আল্লাহ তা’আলা সবকিছু সম্পর্কে জ্ঞাত, সব খবর রাখেন”-(সুরা ফাতহ ১৩) জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩২৭০ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


*  অহংকারের পরকালীন শাস্তি

وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبَانَ بْنِ تَغْلِبَ، عَنْ فُضَيْلٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِنْ كِبْرٍ ‏"‏ ‏.


‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ)


নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (ই.ফা. ১৬৯; ই.সে. ১৭৫)


সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১৬৮

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

 হাদিস


*  অহংকারের দুনিয়ার শাস্তি

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا الْمُغِيرَةُ، - يَعْنِي الْحِزَامِيَّ - عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ بَيْنَمَا رَجُلٌ يَتَبَخْتَرُ يَمْشِي فِي بُرْدَيْهِ قَدْ أَعْجَبَتْهُ نَفْسُهُ فَخَسَفَ اللَّهُ بِهِ الأَرْضَ فَهُوَ يَتَجَلْجَلُ فِيهَا إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ ‏"‏ ‏.‏


আবূ হুরায়রা (রাঃ)


রসুলুল্লাহ ((সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) বলেছেনঃ জনৈক লোক তার দু’টি চাদর পরিধান করে অহংকারের সাথে চলাফেরা করছিল। আপন ব্যক্তিত্বকে সে ভাল মনে করছিল। অকস্মাৎ আল্লাহ তাকে জমিনে ধসে দিলেন। কিয়ামত অবধি সে মাটির জমিনে ধসতে থাকবে। 


সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৫৩৬০

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


*  কিয়ামতের দিন আল্লাহ বলবেন

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، أَنَّ أَبَا أُسَامَةَ، أَخْبَرَهُمْ عَنْ عُمَرَ بْنِ حَمْزَةَ، قَالَ قَالَ سَالِمٌ أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ يَطْوِي اللَّهُ السَّمَوَاتِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ثُمَّ يَأْخُذُهُنَّ بِيَدِهِ الْيُمْنَى ثُمَّ يَقُولُ أَنَا الْمَلِكُ أَيْنَ الْجَبَّارُونَ أَيْنَ الْمُتَكَبِّرُونَ ثُمَّ يَطْوِي الأَرَضِينَ ثُمَّ يَأْخُذُهُنَّ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ ابْنُ الْعَلاَءِ ‏"‏ بِيَدِهِ الأُخْرَى ثُمَّ يَقُولُ أَنَا الْمَلِكُ أَيْنَ الْجَبَّارُونَ أَيْنَ الْمُتَكَبِّرُونَ ‏"‏ ‏.


আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)


তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ ক্বিয়ামাতের দিন আসমানসমূহকে গুটিয়ে তাঁর ডান হাতে নিয়ে বলবেন, আমিই সর্বময় কর্তা ও মালিক, স্বৈরাচারীরা ও অহংকারকারীরা কোথায়? অতঃপর পৃথিবীসমূহকে গুটিয়ে অপর হাতে নিয়ে বলবেন, আমিই মালিক স্বৈরাচারীরা ও অহংকারকারীরা কোথায়?


সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৭৩২

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


*    সব মানুষ এক উপাাদানে তৈরী

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَطَبَ النَّاسَ يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ فَقَالَ ‏"‏ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ اللَّهَ قَدْ أَذْهَبَ عَنْكُمْ عُبِّيَّةَ الْجَاهِلِيَّةِ وَتَعَاظُمَهَا بِآبَائِهَا فَالنَّاسُ رَجُلاَنِ رَجُلٌ بَرٌّ تَقِيٌّ كَرِيمٌ عَلَى اللَّهِ وَفَاجِرٌ شَقِيٌّ هَيِّنٌ عَلَى اللَّهِ وَالنَّاسُ بَنُو آدَمَ وَخَلَقَ اللَّهُ آدَمَ مِنْ تُرَابٍ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ اللَّهُ ‏:‏ ‏(‏ يا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ ذَكَرٍ وَأُنْثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ ‏)‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ ‏.‏ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ يُضَعَّفُ ضَعَّفَهُ يَحْيَى بْنُ مَعِينٍ وَغَيْرُهُ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ هُوَ وَالِدُ عَلِيِّ بْنِ الْمَدِينِيِّ ‏.‏ قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ ‏.‏


ইবনু উমার (রাঃ)


মক্কা বিজয়ের দিন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন এবং বলেনঃ হে জনমন্ডলী! তোমাদের হতে আল্লাহ তা’আলা জাহিলিয়াত যুগের দম্ভ ও অহংকার এবং পূর্বপুরুষের গৌরবগাথা বাতিল করেছেন। এখন মানুষ দুই অংশে বিভক্তঃ এক দল মানুষ নেককার , পরহেজগার, আল্লাহ তা’আলার নিকট প্রিয় ও সম্মানিত এবং অন্য দল পাপিষ্ঠ, দুর্ভাগা, আল্লাহ তা’আলার নিকট অত্যন্ত নিকৃষ্ট, নিচু ও ঘৃণিত। সকল মানুষই আদমের সন্তান। আল্লাহ তা’আলা আদম (আঃ)- কে মাটি দিয়ে তৈরী করেছেন। মহান আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ “হে লোক সকল!  তোমাদেরকে আমি একজন পুরুষ ও একজন নারী হতে তৈরী করেছি, তারপর বিভিন্ন বংশ ও গোত্রে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি, তোমরা যাতে একে অন্যকে চিনতে পার। যে লোক তোমাদের মাঝে বেশি পরহেজগার সেই আল্লাহ তা’আলার নিকট বেশি মর্যাদার অধিকারী। আল্লাহ তা’আলা সবকিছু সম্পর্কে জ্ঞাত, সব খবর রাখেন”-(সুরা ফাতহ ১৩)।

জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩২৭০

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


*  শয়তানের জাল


حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو رَوَاحَةَ يَزِيدُ بْنُ أَيْهَمَ، عَنِ الْهَيْثَمِ بْنِ مَالِكٍ الطَّائِيِّ قَالَ: سَمِعْتُ النُّعْمَانَ بْنَ بَشِيرٍ يَقُولُ عَلَى الْمِنْبَرِ، قَالَ: إِنَّ لِلشَّيْطَانِ مَصَالِيًا وَفُخُوخًا، وَإِنَّ مَصَالِيَ الشَّيْطَانِ وَفُخُوخَهُ: الْبَطَرُ بِأَنْعُمِ اللَّهِ، وَالْفَخْرُ بِعَطَاءِ اللَّهِ، وَالْكِبْرِيَاءُ عَلَى عِبَادِ اللَّهِ، وَاتِّبَاعُ الْهَوَى فِي غَيْرِ ذَاتِ اللَّهِ


হায়সাম ইবনে মালেক আত-তাই (র)আমি নোমান ইবনে বশীর (রাঃ)-কে মিম্বারের উপর বলতে শুনেছি, শয়তানের অনেক রকম জাল ও ফাঁদ আছে। শয়তানের জাল ও ফাঁদ হচ্ছে আল্লাহর নিয়ামত সম্পর্কে অহংকার করা, আল্লাহর দান সম্পর্কে গর্ব করা, আল্লাহর বান্দাগণের উপর অহংকার করা এবং আল্লাহর সত্তা ব্যতীত নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করা (বায়হাকীর শুআবুল ঈমান, জামে সগীর, ইবনে আসাকির)।


আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং ৫৫৫

হাদিসের মান: হাসান মাওকুফ


* নবীর মধ্যে অহংকাৱ নেই

ক্বিয়ামাতের দিন আমি আদম-সন্তানদের ইমাম (নেতা) হব,


حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ ابْنِ جُدْعَانَ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ أَنَا سَيِّدُ وَلَدِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ فَخْرَ وَبِيَدِي لِوَاءُ الْحَمْدِ وَلاَ فَخْرَ وَمَا مِنْ نَبِيٍّ يَوْمَئِذٍ آدَمُ فَمَنْ سِوَاهُ إِلاَّ تَحْتَ لِوَائِي وَأَنَا أَوَّلُ مَنْ تَنْشَقُّ عَنْهُ الأَرْضُ وَلاَ فَخْرَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْحَدِيثِ قِصَّةٌ وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ ‏.‏ وَقَدْ رُوِيَ بِهَذَا الإِسْنَادِ عَنْ أَبِي نَضْرَةَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏.


আবূ সা'ঈদ আল-খুদরী (রাঃ)


তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন আমি আদম-সন্তানদের ইমাম (নেতা) হব, এতে অহংকার নেই। হামদের (আল্লাহ তা’আলার প্রশংসার) পতাকা আমার হাতেই থাকবে, এতেও গর্ব নেই। সে দিন আল্লাহ তা’আলার নবী আদম ('আঃ) এবং নাবীগণের সকলেই আমার পতাকার নীচে থাকবেন। সর্বপ্রথম আমার জন্য মাটিকে বিদীর্ণ করা হবে, এতে কোন অহংকার নেই।


সহীহঃ ইবনু মাজাহ (৪৩০৮) এর কিছু অংশ মুসলিমেও আছে।


জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৬১৫

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


*  পিপিলিকার ন্যায় উঠানো হবে


حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَّامٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَجْلَانَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " يُحْشَرُ الْمُتَكَبِّرُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَمْثَالَ الذَّرِّ فِي صُورَةِ الرِّجَالِ، يَغْشَاهُمُ الذُّلُّ مِنْ كُلِّ مَكَانٍ، يُسَاقُونَ إِلَى سِجْنٍ مِنْ جَهَنَّمَ يُسَمَّى: بُولَسَ، تَعْلُوهُمْ نَارُ الْأَنْيَارِ، وَيُسْقَوْنَ مِنْ عُصَارَةِ أَهْلِ النَّارِ، طِينَةَ الْخَبَالِ "


আমর ইবনে শুআইব (র)


মহানবী (সাঃ) বলেনঃ কিয়ামতের দিন অহংকারীদেরকে পিপিলিকা সদৃশ (ক্ষুদ্রদেহ) মানুষরূপে হাশরের মাঠে সমবেত করা হবে। তারা সব দিক থেকে লাঞ্ছনা পরিবেষ্টিত থাকবে। তাদেরকে দোযখের বূলাস নামক কারাগারের দিকে হাঁকিয়ে নেয়া হবে। তারা দোযখের আগুনে জ্বলতে থাকবে এবং দোযখীদের (দেহ নিৰ্গত) ঘাম পান করবে। (তিরমিযী, নাসাঈ, আহমাদ)


আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং ৫৫৯

হাদিসের মান: হাসান হাদিস


*  সরাসরি দোযখে নিক্ষিপ্ত হবে)।


حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ صَالِحٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو هَانِئٍ الْخَوْلَانِيُّ، عَنْ أَبِي عَلِيٍّ الْجَنْبِيِّ، عَنْ فَضَالَةَ بْنِ عُبَيْدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " ثَلَاثَةٌ لَا يُسْأَلُ عَنْهُمْ: رَجُلٌ فَارَقَ الْجَمَاعَةَ وَعَصَى إِمَامَهُ فَمَاتَ عَاصِيًا، فَلَا تَسْأَلْ عَنْهُ، وَأَمَةٌ أَوْ عَبْدٌ أَبِقَ مِنْ سَيِّدِهِ، وَامْرَأَةٌ غَابَ زَوْجُهَا، وَكَفَاهَا مَؤُونَةَ الدُّنْيَا فَتَبَرَّجَتْ وَتَمَرَّجَتْ بَعْدَهُ. وَثَلَاثَةٌ لَا يُسْأَلُ عَنْهُمْ: رَجُلٌ نَازَعَ اللَّهَ رِدَاءَهُ، فَإِنَّ رِدَاءَهُ الْكِبْرِيَاءُ، وَإِزَارَهُ عِزَّهُ، وَرَجُلٌ شَكَّ فِي أَمْرِ اللَّهِ، وَالْقُنُوطُ مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ "


ফাদালা ইবনে উবাইদ (রাঃ)


নবী (সাঃ) বলেনঃ তিন ব্যক্তিকে কোনরূপ জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না (সরাসরি দোযখে নিক্ষিপ্ত হবে)। (১) যে ব্যক্তি জামাআত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলো এবং তার ইমামের (নেতার) অবাধ্য হলো এবং অবাধ্য অবস্থায় মারা গেলো। তাকে কোনরূপ জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না। (২) যে ক্রীতদাসী বা ক্রীতদাস তার মনিবের নিকট থেকে পালিয়ে গেলো। (৩) যে নারীর স্বামী বহির্দেশে গিয়েছে, সে যদি তার অনুপস্থিতিতে তার রূপ-যৌবনের পসরা করে বেড়ায় এবং ভ্রষ্টা হয়। আরো তিন ব্যক্তিকে কোনরূপ জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না। (১) যে ব্যক্তি আল্লাহর চাদর নিয়ে টানাহেঁচড়া করে। আর তাঁর চাদর হচ্ছে অহংকার এবং তাঁর পরিধেয় হচ্ছে তাঁর ইজ্জত। (২) যে ব্যক্তি আল্লাহর হুকুমের মধ্যে সন্দেহ পোষণ করে। (৩) যে ব্যক্তি আল্লাহর রহমাত থেকে নিরাশ হয়। (আবু দাউদ)


আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং ৫৯৩

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


*  অহংকার একটি খারাপ গুণ। এটা শয়তানের বৈশিষ্ট্য, 


null


‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আমর (রাঃ)


রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : নূহ (আঃ) স্বীয় ইন্তিকালের সময় তাঁর দুই ছেলেকে ডেকে বলেছেন : আমি তো অক্ষম হয়ে পড়েছি। তাই আমি তোমাদেরকে অসিয়ত করে যাচ্ছি। আমি তোমাদেরকে দু’টি বিষয়ে আদেশ করছি এবং দু’টি বিষয় থেকে নিষেধ করছি। আমি তোমাদেরকে শির্‌ক এবং অহংকার থেকে নিষেধ করছি। আর যে দুটি বিষয়ে আদেশ করছি তার একটি হলো : “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্”। কেননা সমস্ত আসমান ও যমীন এবং এর মাছে যা কিছু আছে সব কিছু যদি এক পাল্লায় রাখা হয় আর অপর পাল্লায় “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্” রাখা হয়, তাহলে কালেমার পাল্লাই ঝুলে যাবে (ভারি হবে)। আর যদি সমস্ত আসমান-যমীন (সাত আকাশ ও সাত যমীন) এবং এর মধ্যকার যা কিছু আছে, একটি হালকা বা গোলাকার করে তার উপর এ কালেমাকে রাখা হয় তাহলে ওজনের কারণে তা ভেঙ্গে যাবে। আর আমি তোমাদেরকে আদেশ করছি ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামাদিহি’ (পাঠ করার জন্য), কেননা এটা প্রত্যেক বস্তুর তাসবীহ, এর দ্বারাই প্রত্যেক বস্তুকে রিযিক্ব দেয়া হয়। [১]


সহিহ ফাযায়েলে আমল, হাদিস নং ৪৫

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


#অহংকারের কারনে হাজার বছর ইবাদতকারী

    আজ অভিশপ্ত শয়তান।অহংকার করে সে বলেছিল আমি আগুনের তৈরি হয়ে মাটির তৈরি মানুষকে কিভাবে সেজদা করব? তখন থেকে অভিশপ্ত হয়ে গেল। অহংকারের কারনে পৃথিবীতে অনেক কিছু ধ্বংস হয়েছে।আপনার চারপাশে একটু খেয়াল করে দেখেন।অবশ্যই পাওয়া যাবে।অহংকারের কারনে ধ্বংস হয়েছে বিশ্বখ্যাত টাইটানিক জাহাজ। টাইটানিক জাহাজের নির্মাতার নাম হলঃহারল্যান্ড অ্যান্ড উল্ফ পিপইয়ার্ড়।টাইটান হচ্ছে গ্রীক পুরানের শক্তিশালী দেবতার নাম।এই শক্তিশালী দেবতার নাম অনুসারে এই জাহাজের নাম রাখা হয়েছিল টাইটানিক।জাহাজটি যখন তৈরি হয়েছিল তখন নির্মাতাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল,এ জাহাজটি সাগরে কতটুকু নিরাপদ?তখন নির্মাতা অহংকার করে বলেছিল,এটা কেউ ধ্বংস করতে পারবেনা।ইহা চিরস্হায়ী।কারো অজানা নয়,১৯১২ সালে ইহা সাগরে হিমশৈল(আইসবার্গ)বরফের টুকরারের সাথে ধাক্কা লেগে ধ্বংস হয়ে গেল।হে বন্ধুরা,আল্লাহ তাআলা অহংকারীকে পছন্দ করেনা।মনে রাখ,

                 যাহা পারে মুনিবে,

                 তাহা পারে না গোলামে।

#হে আল্লাহ আমাদের সকলকে অহংকার থেকে রক্ষা করুন।

No comments

Powered by Blogger.