133 উপহাস করা
ঈমান না আনার কারণে কাফেরদেরকে মহা এক প্রাবনে ডুবিয়ে মারা হবে ' নবীর এই ভবিষ্যৎ বাণী তারা অবিশ্বাস করেছিল । শুষ্ক সেই মরুভূমিতে কিভাবে নৌকা চালানাে যায় । এই কথা বুঝতে না পেরে তারা নবীকে পাগল বলে আখ্যায়িত করলাে । নূহ ( আঃ ) আল্লাহর নির্দেশে নৌকা নির্মাণ সমাপ্ত করে বন্যার অপেক্ষায় থাকলেন । নৌকার প্রতি কাফেরদের ঘৃণা ও কৌতুক দিন দিন বাড়তে লাগলাে । অসভ্য এই কাফেররা এমন এক পর্যায়ে পৌছে গেল যে নৌকা নিয়ে তামাশা শুরু করে দিল । তামাশাচছলে নৌকায় গিয়ে তারা পায়খানা করে আসতাে । এই তামাশা তাদের একটি উৎসবে পরিণত হলাে । দলে দলে লােক এসে এই অশ্লীল আনন্দ করে চলে যেতাে । মুসলমানগণ সংখ্যায় ছিল মাত্র চল্লিশ জোড়া এবং কাফের ছিল অসংখ্য । তাই কাফেরদের এই বেয়াদবী প্রতিরােধ করার ক্ষমতা তাদের ছিল না । মুসলমানগণ শুধু দোয়া করতে পারতাে
কয়েকদিন যেতে না যেতেই কাফেরদের মধ্যে কুষ্ঠ রোগ দেখা দিল । দেহের ঘা আর সারে না । যতই চিকিৎসা করা হয় ততই ঘা বেড়ে যায় । কোন ওষুধেই কাজ হয় না । কষ্ট ৩ যাতনায় দেশ হাহাকার করে উঠলো । একদিন একটি লােক নৌকায় গেল পাঞখানা করতে । নৌকার পায়খানা তখন ছিল কানায় কানায় ভরা । পা ফসকিয়ে সে নৌকার ভিতর পড়ে গেল । পায়খানার ভিতর হাবুডুবু খেয়ে কোন রকমে সে নৌকার উপরে উঠে আসলাে । তারপর বাড়ী গিয়ে গা ধুয়ে দেখে তার কুষ্ঠ রােগ ভাল হয়ে গেছে । যে - রােগের কোন চিকিৎসা নাই , যে রােগ সারা শরীরকে খেয়ে ফেলতাে সে - রােগ এখন দূর হয়ে গেছে । শরীর এখন সম্পূর্ণ 1 সকাল বেলায় প্রতিবেশীরা তাকে সুস্থ দেখে জিজ্ঞাসা করলাে কোন ওষুধ ব্যবহার করে সে সুস্থ হয়েছে । সে বলে দিল ঐ নৌকার মলের বরকতে ’ সে এখন সুস্থ । আর যায় । কোথায় , কাফেরের দল সব বালতি নিয়ে ছুটলাে । বালতি বােঝাই করে করে নিজেদের মল নিজেরাই বাড়ী নিয়ে যেতে লাগলাে । আর বরকত মনে করে গা ধুতে লাগলাে । আর সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ হয়ে যেতে লাগলাে । কাফের মহলে মল সংগ্রহ করার জন্যে কাড়াকাড়ি লেগে গেল । শেষে যখন নৌকা মল - শূণ্য হয়ে পড়লাে তখনও অনেক রুগী বাকী থাকলাে । অগত্যা তারা নৌকা ধুয়ে ধুয়ে পানি নিতে লাগলাে । সেই পানিতেও রােগ দূর হতে থাকলাে । ফলে নৌকা কয়েকবার ধােয়া হয়ে গেল এবং নৌকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে পড়লাে । এটা ছিল একটা উপহাস এবং বন্যায় ডুবিয়ে মারা ছিল আরেকটা মহা - উপহাস । সুতরাং এই ঘটনা উপরােক্ত আয়াতের সত্যতা দৃঢ় ভাবে প্রমাণ করেছে যে , আমরাও তোমাদেরকে সেইরূপ উপহাস করবাে যেরূপ তােমরা উপহাস করছে ' । আল্লাহর নবীগণকে যারা উপহাস ও বিদ্রুপ করে আল্লাহও তাদেরকে এরূপ লাঞ্ছনার আযাব দিয়ে উপহাস করেন । আর পরকালে রয়েছে আরও কঠিন আযাব । যাহােক , কিশতী যখন আরােহী বহন করার উপযুক্ত হলাে তখন আল্লাহ হুকুম করলেনঃ ৩৭৭ ; ; ai ass 6-৬২১jj ak1,93196555-৫১ ১২ ৫ে ob das alles “ এতে উঠিয়ে নাও প্রত্যেক শ্রেণীর যুগলের দুইটি , আর যাদের বিরুদ্ধে ( আযাবের ) ব সিদ্ধান্ত হয়েছে তারা ব্যতীত উঠিয়ে নাও তােমার পরিবার - পরিজনকে এবং যারা ইমান এনেছে তাদেরকে । "
সুতরাং নির্দেশ অনুযায়ী নূহ ( আঃ ) কিশতীতে আরােহন করাতে লাগলেন । ইতিহাস থেকে জানা যায় যে কিশতীতে তিনটি তলা ছিল । মহিলাগণ তৃতীয় তলায় আরােহন করলাে । দ্বিতীয় তলায় আরােহন করলাে পুরুষগণ । নীচ তলা বরাদ্দ হলাে জীব - জন্তুদের জন্যে । আল্লাহ পাকের কুদরতে হিংস্র প্রাণীরাও তখন তাদের হিংস্রতা ভুলে গিয়েছিল । সমস্ত প্রাণীর একটি নর ও একটি মাদী জন্তু মাথা নিচু করে ভয়ে জড় - সড় হয়ে নৌকায় গিয়ে উঠে বসলাে । মানুষ ছিল চল্লিশ জোড়া । তুফান শুরু হয়ে গেল । মাটির তলা চিরে পানি উথলিয়ে উঠতে লাগলাে । আর আকাশ থেকে স্রোতের মত পানি ঢেলে পড়তে
লাগলাে মুহুর্তে পৃথিবী পানিতে ভরে গেল । পৃথিবীর সর্বোচ্চ পাহাড়ের চূড়াটিও ভুবতে বাকী ছিল না । চারিদিকে শুধু পানি আর পানি । পানিতে ডুবে গুনাহগার কাফের সহ সমস্ত প্রাণী মারা গেল । শুধু বেঁচে থাকলে কিশর্তীতে আরােহনকারী চল্লিশ জোড়া মানুষ আর কিছু জীব জন্তু । অথৈ পানিতে কিশতী ভাসতে লাগলাে । ভাসতে ভাসতে চল্লিশ দিন অতিক্রান্ত হলাে । অতঃপর পানি শুকাতে লাগলো । পাহাড় সমূহ জেগে উঠলো । একটি পাহাড়ের নাম ছিল ' জুদী ’ । সেই পাহাড়ে নুহ ( আঃ ) এর কিন্তী এসে ভিড়লাে । আল্লাহ Gaj - 64 ; --S : / ২৬,51 : 39.65- টু- s , ০৩- ~ & SE0 \ ২-৪ ; “ এরপর বলা হলাে , হে পৃথিবী ! তুমি তােমার পানি গ্রাস করে নাও এবং হে আকাশ ! ক্ষান্ত হও । ' এরপর বন্যা প্রশমিত হলাে এবং কাজ সমাধা হলাে , নৌকা জুদী পর্বতের উপর স্থির হলো , এবং বলা হলাে যালেম কওম ধংস হউক * -পূর্ব ১১ হন , ৪৪ আয়াত কিশতীর সাথে আশুরার সম্পর্ক এই ধ্বংস লীলার মধ্যে থেকে আল্লাহ পাক নূহ ( আঃ ) এর কির্তীকে নিরাপদে সূদী পর্বতে নিয়ে ভিড়ালেন । দুনিয়ার সমস্ত কাফের ও সকল প্রাণী নিশ্চিহ্ন হলাে । শুধু বেঁচে থাকলাে কিশতীতে আরােহনকারী চল্লিশ জোড়া মানুষ আর কিছু জীব - জন্তু । এই নিয়ে শুরু হলাে দুনিয়ার মানুষের পুনঃর্যত্র । তাই নুহ ( আঃ ) কে দ্বিতীয় আদম বলা হয় । কারণ এক লক্ষ চল্লিশ হাজার পয়গম্বরের মধ্যে প্রথম মানুষ আদম ( আঃ ) থেকে নূহ ( আঃ ) পর্যন্ত মাত্র কয়েক জন পয়গম্বর এসেছিলেন বাকী সমস্ত পয়গম্বর এই কিশতীতে বেঁচে থাকা চল্লিশ ( মতান্তরে পঞ্চাশ ) জোড়া মানুষ থেকে জন্ম নিয়েছেন । শুধু পয়গম্বরগণই নন ; বরং এ পর্যন্ত যত মানুষ জন্ম নিয়েছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ জন্ম নিবে সবই এই কিশত্যর মানুষের রক্ত ধারার স্রোত । তাই এই কিশতীর নিরাপদে জুদী পর্বতে হির হওয়ার তারিখটি একটি স্মরণীয় তারিখ । আর সেটা হলাে এই আশুরার দিন । এই কিশতী মানুষের জন্যে এক বৈপ্লবিক শিক্ষা বহন করছে । সেটা হলাে মহররমের শিক্ষা । আল্লাহ পাক এরশাদ করেন ? ০৩ : ১jjag [ Clasj245Jyasi38546 “ অতঃপর আমি তাকে ( নূহকে ) এবং কিশতীতে যারা আরােহন করেছিল তাদেরকে রক্ষা করলাম এবং বিশ্বজগতের জন্যে এ ( কিশতী ) -কে করলাম একটি নমূনা । ” -সূরা ২৯ , আনকাবুত , ১৫ আয়াত এই কিশতী দেখে বিশ্বের মানুষ শিক্ষা লাভ করবে যে , নবীর অনুসরণ না করলে মানুষের কী ভয়ঙ্কর পরিণতি হয় । তাই এই কির্তী মানুষের শিক্ষার জন্যে কেয়ামত পর্যন্ত অটুট থাকবে । আল্লাহ পাক ঘোষণা দিয়েছেন , বিশ্বজগতের ( মানুষের জন্যে এ ( কিশতী ) -কে করলাম একটি নমুনা ’ । বিশ্বজগত যতদিন টিকে থাকবে ততদিন তিনিই এই কিশতী রক্ষা করবেন । বিশ্বের আবহাওয়া তার নিয়ন্ত্রণে , মাটির পঁচনশীলতার শক্তি তার নিয়ন্ত্রণে , কীট - পতঙ্গের উপদ্রব , এমনকি মানুষের শক্তিও তার নিয়ন্ত্রণে । সুতরাং এই কিশষ্ঠী বিনষ্ট করবে কে ? হয়েছেও তাই । সেই কিশতী আজও পৃথিবীতে অটুট অবস্থায়
No comments