Header Ads

Header ADS

39 ওয়াদা ভঙ্গ করা

 39  ওয়াদা ভঙ্গ করা 

আল ইমরান- ৩১

قُلْ اِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّوْنَ اللّٰهَ فَاتَّبِعُوْنِیْ یُحْبِبْكُمُ اللّٰهُ وَ یَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ١ؕ وَ اللّٰهُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ

ফাত্তাবিওনি হলো নবীর চলা ফেরা উঠা বসা লেনদেন হুবহুব মেনে চলা। অংগ ভংগির দিক পর্যন্ত খেয়াল করে অর্থাৎ নবীর তিষট্রি বছরের জীবনে ফলো করা

*  তাবে হবে পুরোপুরি আংশিক নয়। আল-বাক্বারাহ:আয়াত: ৮৫

اَفَتُؤْمِنُوْنَ بِبَعْضِ الْكِتٰبِ وَ تَكْفُرُوْنَ بِبَعْضٍ١ۚ فَمَا جَزَآءُ مَنْ یَّفْعَلُ ذٰلِكَ مِنْكُمْ اِلَّا خِزْیٌ فِی الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا١ۚ وَ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ یُرَدُّوْنَ اِلٰۤى اَشَدِّ الْعَذَابِ١ؕ وَ مَا اللّٰهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ

*  আমরা বলি একরকম করি আরেকরকম সূরা সফ - ১-৩

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لِمَ تَقُوْلُوْنَ مَا لَا تَفْعَلُوْنَ

كَبُرَ مَقْتًا عِنْدَ اللّٰهِ اَنْ تَقُوْلُوْا مَا لَا تَفْعَلُوْنَ

*  নবীর আখলাকে নেই মিথ্যা, আছে? ধোঁকা, ঘোষ, সূদ, ওয়াদা ভঙ্গ করা, আমানতের খিয়ানত করা। 

*  যার আমানাতদারী নেই তার ঈমানও নেই এবং যার ওয়া’দা-অঙ্গীকারের মূল্য নেই তার দীনও নেই। মিশকাতুল মাসাবিহ,৩৫: সহিহ

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ : قَلَمَّا خَطَبَنَا رَسُوْلُ اللهِ ﷺ اِلَّا قَالَ : لَا إِيْمَانَ لِمَنْ لَا أَمَانَةَ لَه وَلَا دِيْنَ لِمَنْ لَا عَهْدَ لَه». رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيمَانِ

*  আমানতের খিয়ানত করা ঈমানদারের স্বভাব নয় এটা আবু জাহেলের স্বভাব। কাজী আবুল হাসান আল মাওয়ারদী তাঁর “আলামূন নুবুওয়াহ” কিতাবে একটি অদ্ভূত ঘটনা বর্ণনা করেছেন।

* শ্রেষ্টতম আমানতদার ছিলেন মুহাম্মদ সা, হিজরতের সময় নবীজি আমানতের মাল হযরত আলী রা,কে বুঝিয়ে দিয়েছেন

*  প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে তোমাদের জবাবদিহি করতে হবে। ১৭: বনী ইসরাঈল: ৩৪

وَ لَا تَقْرَبُوْا مَالَ الْیَتِیْمِ اِلَّا بِالَّتِیْ هِیَ اَحْسَنُ حَتّٰى یَبْلُغَ اَشُدَّه۪ٗ وَ اَوْفُوْا بِالْعَهْدِۚ اِنَّ الْعَهْدَ كَانَ مَسْـٴُـوْلًا

* হজরত হুজাইফা রা: এর সঙ্গে আবু জাহেলের ওয়াদা, হজরত হুজাইফা রা: তিনি এবং তার পিতা মুসলমান হয়ে মদীনায় আসছিলেন, পথিমধ্যে আবু জেহেলের বাহিনীর সঙ্গে তাদের সাক্ষাৎ ঘটে যায়।


______________________________


আল-বাক্বারাহ:আয়াত: ৮৫

اَفَتُؤْمِنُوْنَ بِبَعْضِ الْكِتٰبِ وَ تَكْفُرُوْنَ بِبَعْضٍ١ۚ فَمَا جَزَآءُ مَنْ یَّفْعَلُ ذٰلِكَ مِنْكُمْ اِلَّا خِزْیٌ فِی الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا١ۚ وَ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ یُرَدُّوْنَ اِلٰۤى اَشَدِّ الْعَذَابِ١ؕ وَ مَا اللّٰهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ

তাহলে কি তোমরা কিতাবের একটি অংশের ওপর ঈমান আনছো এবং অন্য অংশের সাথে কুফরী করছো? তারপর তোমাদের মধ্য থেকে যারাই এমনটি করবে তাদের শাস্তি এ ছাড়া আর কি হতে পারে যে, দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছিত ও পর্যুদস্ত হবে এবং আখেরাতে তাদেরকে কঠিনতম শাস্তির দিকে ফিরিয়ে দেয়া হবে? তোমাদের কর্মকান্ড থেকে আল্লাহ‌ বেখবর নন।


*  আবু জাহেল ছিল আমানতের খিয়ানতকারী,কাজী আবুল হাসান আল মাওয়ারদী তাঁর “আলামূন নুবুওয়াহ” কিতাবে একটি অদ্ভূত ঘটনা বর্ণনা করেছেন। ঘটনাটি হচ্ছেঃ আবু জেহেল ছিল একটি এতিম ছেলের অভিভাবক। ছেলেটি একদিন তার কাছে এলো। তার গায়ে এক টুকরা কাপড়ও ছিল না। সে কাকুতি মিনতি করে তার বাপের পরিত্যক্ত সম্পদ থেকে তাকে কিছু দিতে বললো। কিন্তু জালেম আবু জেহেল তার কথায় কানই দিল না। সে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর শেষে নিরাশ হয়ে ফিরে গেলো। কুরাইশ সরদাররা দুষ্টুমি করে বললো, “যা মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে চলে যা। সেখানে গিয়ে তাঁর কাছে নালিশ কর। সে আবু জেহেলের কাছে সুপারিশ করে তোর সম্পদ তোকে দেবার ব্যবস্থা করবে।” ছেলেটি জানতো না আবু জেহেলের সাথে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কি সম্পর্ক এবং এ শয়তানরা তাকে কেন এ পরামর্শ দিচ্ছে। সে সোজা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে পৌঁছে গেলো এবং নিজের অবস্থা তাঁর কাছে বর্ণনা করলো। তার ঘটনা শুনে নবী (সা.) তখনই দাঁড়িয়ে গেলেন এবং তাকে সঙ্গে নিয়ে নিজের নিকৃষ্টতম শত্রু আবু জেহেলের কাছে চলে গেলেন। তাঁকে দেখে আবু জেহেল তাঁকে অভ্যর্থনা জানালো। তারপর যখন তিনি বললেন, এ ছেলেটির হক একে ফিরিয়ে দাও তখন সে সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর কথা মেনে নিল এবং তার ধন-সম্পদ এনে তার সামনে রেখে দিল। ঘটনার পরিণতি কি হয় এবং পানি কোন দিকে গড়ায় তা দেখার জন্য কুরাইশ সরদাররা ওঁৎ পেতে বসেছিল। তারা আশা করছিল দু’ জনের মধ্যে বেশ একটা মজার কলহ জমে উঠবে। কিন্তু এ অবস্থা দেখে তারা অবাক হয়ে গেলো। তারা আবু জেহেলের কাছে এসে তাকে ধিক্কার দিতে লাগলো। তাকে বলতে লাগলো, তুমিও নিজের ধর্ম ত্যাগ করেছো। আবু জেহেল জবাব দিল, আল্লাহর কসম! আমি নিজের ধর্ম ত্যাগ করিনি। কিন্তু আমি অনুভব করলাম, মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ডাইনে ও বাঁয়ে এক একটি অস্ত্র রয়েছে। আমি তার ইচ্ছার সামান্যতম বিরুদ্ধাচরণ করলে সেগুলো সোজা আমার শরীরের মধ্যে ঢুকে যাবে। এ ঘটনাটি থেকে শুধু এতটুকুই জানা যায় না যে, সে যুগে আরবের সবচেয়ে বেশী উন্নত ও মর্যাদা গোত্রের বড় বড় সরদাররা পর্যন্ত এতিম ও সহায়-সম্বলহীন লোকদের সাথে কেমন ব্যবহার করতো বরং এই সঙ্গে একথাও জানা যায় যে, রসূলুল্লাহ ﷺ কত উন্নত নৈতিক চরিত্রের অধিকারী ছিলেন এবং তাঁর নিকৃষ্টতম শত্রুদের ওপরও তাঁর এ চারিত্রিক প্রভাব কতটুকু কার্যকর হয়েছিল।

* শ্রেষ্টতম আমানতদার ছিলেন মুহাম্মদ সা, হিজরতের সময় নবীজি আমানতের মাল হযরত আলী রা,কে বুঝিয়ে দিয়েছেন,আমানত রক্ষা করা,কাফিরগণ যখন আমাদের নূর নবীর উপর অকথ্য অত্যাচার উৎপীড়নে তৎপর, এমন কি শত্রুগণ যখন তাঁহাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, তখন সতরজন বিশিষ্ট পাহলোয়ান তরবারি হস্তে তাঁহার গৃহ পরিবেষ্টন করিয়া রাখিয়াছিল। আল্লাহর অপার মহিমা! ঐ রাত্রেই আল্লাহ তায়ালার হুকুম হইল- মক্কা হইতে মদীনায় হিজরত করিতে। তিনি আল্লাহর হুকুম পালনে বিলম্ব করিলেন না, করিতেও পারেন না। কাফিরদের অনেক টাকা-পয়সা তাঁহার নিকট আমানত ছিল। তিনি বালক আলীকে বলিলেন, প্রিয় বৎস! এই রাত্রে আমার বিছানায় শুইয়া থাকিবে। প্রাতে যাহার যে আমানত আছে, তাহা তাঁহাকে দিয়া দিবে। পারিবে তো? হযরত আলী নির্ভীক চিত্তে বলিলেন, আল্লাহ চাহেন ত পারিব।


হযরত আলী (রাঃ) হযরতের বিছানায় চাদর মুড়ি দিয়া শুইয়া পড়িলেন। এইদিকে হযরত (সাঃ) শত্রুর বেড়াজাল ভেদ করিয়া গৃহ হইতে বাহির হইয়া গেলেন। তাঁহারা বিন্দুমাত্রও টের পাইল না। প্রত্যুষে কাফির দল গৃহে প্রবেশ করিয়া ফেলে। তাহারা চাদর আবৃত আলী (রাঃ) কে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মনে করিয়া কেহ কেহ বলিল, এক কোপেই শেষ করিয়া ফেল। কেহ কেহ বাধা দিয়া বলিল, না না, নিদ্রাবস্থায় হত্যা করা কাপুরুষতার পরিচায়ক। এরূপ বলাবলি করিতে করিতে একজন চাদর টান দিয়া দেখিল, এ তো তাহাদের শিকার (হযরত) মুহাম্মদ (সাঃ) নয়, এ যে আলী শুইয়া আছে! তাঁহারা বিস্মিত হইল। হযরত আলী দেখাইলেন, গচ্ছিত দ্রব্যসমূহ ফেরত দিবার জন্য, আমানতের হেফাযতের জন্য তিনি প্রাণ দিতেও প্রস্তুত। ইহাকেই বলে আমানতদারী, ইহার নাম বিশ্বস্ততা।

উৎসঃ বেহেস্তি যেওর, মাওলানা আশরাফ আলী থানবী (রহঃ)

*  হজরত হুজাইফা বিন ইয়ামেন একজন প্রসিদ্ধ সাহাবি ছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিশ্বস্ত ছিলেন। যখন তিনি এবং তার পিতা মুসলমান হয়ে মদীনায় আসছিলেন, পথিমধ্যে আবু জেহেলের বাহিনীর সঙ্গে তাদের সাক্ষাৎ ঘটে যায়। সে সময় আবু জেহেল তার বাহিনী নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাচ্ছিল।তারা হজরত হুজাইফা (রাদি.) এর পিতাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। তোমরা যাচ্ছ কোথায়? উত্তরে তারা বললেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে সাক্ষাত করার উদ্দেশে মদীনায় যাচ্ছি। একথা শুনে আবু জেহেল বলল, তা হলে তো তোমাদের ছেড়ে দেয়া যাবে না। কেননা যেখানে গিয়ে তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। জবাবে তারা বললেন- আমরা তো কেবল তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি। আমরা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করব না। যুদ্ধে অংশগ্রহণ করব না।আবু জেহেল তাকে বলল, তা হলে আমার সঙ্গে ওয়াদা কর মদীনাতে গিয়ে তোমরা লড়াইয়ে লিপ্ত হবে না। তখন তিনি এই ওয়াদা করলেন। তৎক্ষণাৎ আবু জেহেল তাদের ছেড়ে দিলো। হজরত হুজাইফা যখন মদীনা মুনাওয়ারাতে পৌঁছলেন দেখতে পেলেন- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনা থেকে যুদ্ধের জন্য বদর প্রান্তরে রওয়ানা হয়েছেন। পথিমধ্যে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটে যায়,হক বাতিলের প্রথম যুদ্ধ গযওয়ায়ে ‘বদর’:ইসলামের সর্বপ্রথম যুদ্ধ এই বদর যুদ্ধ। আর এটা এমন এক যুদ্ধ যে ব্যাপারে কোরআনে বলা হয়েছে ‘হক বাতিলের মধ্যে ফয়সালা হওয়ার যুদ্ধ’। ওই যুদ্ধে যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের ‘বদরি সাহাবি’ বলা হয়। সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে বদরি সাহাবিগণের মর্যাদা ছিল অনেক বেশি। বদরি সাহাবাগণের নামসমূহ জিকির হিসেবে পড়া হয়ে থাকে। তাঁদের নাম পড়ার দ্বারা আল্লাহ পাক দোয়া কবুল করে থাকেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল বদরি সাহাবিগণের ব্যাপারে বলেছেন, আল্লাহ পাক সকল বদরি সাহাবিগণকে মাফ করে দিয়েছেন। বদর যুদ্ধ এমন মর্যাদাপূর্ণ যুদ্ধ ছিল।গর্দানে তারবারি রেখে করানো ওয়াদা:হজরত হুজাইফা (রাদি.) যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে সাক্ষাত করলেন তখন আবু জেহেলের সঙ্গে কৃত ওয়াদার কথা উল্লেখ করলেন। এবং আবু জেহেল কর্তৃক তাদেরকে আটকের কাহিনী বর্ণনা করেন। এবং বললেন, ‘আমি কেবল জীবন বাঁচানোর জন্য আবু জেহেরে সঙ্গে ওয়াদা করে এসেছি যে, আমি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করব না। কেবল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্যেই যাচ্ছি। এখন আমি আপনার নিকট আরজ পেশ করছি- ইয়া রাসূলুল্লাহ! এই বদরের যুদ্ধ হক বাতিলের সর্বপ্রথম যুদ্ধ। আর আপনি যেহেতু এখন বদরের দিকে রওয়ানা হয়ে চলেছেন। তাই আমার বড় ইচ্ছে এই যুদ্ধে আমি শরিক হব। আবু জেহেল তো আমার গর্দানে তারবারি রেখে আমাকে ওয়াদা করিয়েছে আমি যাতে আপনার সঙ্গে যুদ্ধে শরিক না হই। আমি যদি তার সঙ্গে এই ওয়াদা না করতাম তা হলে তো আবু জেহেল আমাকে ছাড়তো না। এজন্যেই তো আমি ওয়াদা করেছি। কাজেই আপনি আমাকে এখন অনুমতি প্রদান করুন যাতে এ যুদ্ধে আমি অংশ গ্রহণ করতে পারি এবং এর ফজিলত আমি লাভ করতে পারি। তুমি ওয়াদা করে জবান দিয়ে এসেছো:রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাবে বললেন- তুমি আবু জেহেলের সঙ্গে ওয়াদা করে এসেছো যে, কেবল আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য আসবে এবং আমার সঙ্গে মিলে যুদ্ধে আবু জেহেলের বিরুদ্ধে লড়বে না। কাজেই তোমাকে আমি যুদ্ধে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করতে পারব না। এটা এমন এক সময়ের ঘটনা যখনমুসলমানদের কঠিন পরীক্ষা চলছিলো। এ জবান দ্বারাই মানুষের পরীক্ষা হয়ে থাকে যে, ব্যক্তি নিজের জিহ্বা দ্বারা কৃত ওয়াদার প্রতি কতটুকু যত্নবান। অথচ আমরা কেমন মানুষ,এহেন অবস্থায় হাজারো যুক্তি উপস্থাপন করতে থাকি। যেমন: যে ওয়াদা আমি করে এসেছি এটাতো অন্তর থেকে করিনি। সেতো আমাকে জোরপূর্বক ওয়াদা করিয়েছে। এছাড়াও নানা ধরনের খোঁড়া যুক্তি পেশ করতে দ্বিধাবোধ করা হয় না। অথচ আল্লাহর রাসূল (সা.) এর সঙ্গে থেকে যুদ্ধ করা, তাও আবার এমন ঘোরতর দুর্বিপাকের সময়; যে মুহূর্তে এক এক জন যোদ্ধার মূল্য অনেক। কারণ মুসলমানদের সৈন্যসংখ্যা কেবল ৩১৩ জন ছিল। তাদের নিকট শুধু ৭০টি উট, ২টি ঘোড়া এবং ৮টি তাওবারি আর বাকীদের নিকট লাঠি কিংবা পাথর,এ অল্প সংখ্যক সৈন্য এক হাজারের বিশাল সৈন্যবাহিনীর মোকাবেলায় নিতান্তই ক্ষুদ্র দল। এজন্য এহেন মুহূর্তে একজন মুসলমানের মূল্য অনেক বেশি। অথচ রাসূল সা: হজরত হুজাইফা (রাদি.)-কে বলে দিলেন, যেহেতু তুমি আবূ জেহেলের সঙ্গে ওয়াদা করে এসেছো কাজেই তুমি আমাদের সঙ্গে আবু জেহেলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। কেননা তুমি তাকে যা বলে এসেছে, তার সঙ্গে যে ওয়াদা করে এসেছো এর বিপরীত করাটাই ওয়াদার খেলাফ। কাজেই তুমি তা করতে পারবে না,


৩: আলে-ইমরান:আয়াত: ৩১


قُلْ اِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّوْنَ اللّٰهَ فَاتَّبِعُوْنِیْ یُحْبِبْكُمُ اللّٰهُ وَ یَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ١ؕ وَ اللّٰهُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ


হে নবী! লোকদের বলে দাওঃ “যদি তোমরা যথার্থই আল্লাহ‌কে ভালোবাসো, তাহলে আমার অনুসরণ করো, আল্লাহ‌ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গোনাহ মাফ করে দেবেন। তিনি বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাম


য়।”


৬১-সফ



(61:1)

سَبَّحَ لِلّٰهِ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الْاَرْضِ١ۚ وَ هُوَ الْعَزِیْزُ الْحَكِیْمُ


শব্দার্থ: سَبَّحَ = তসবীহকরে, لِلَّهِ = আল্লাহর, مَا = যা কিছু , فِي = মধ্যে, السَّمَاوَاتِ = আসমান সমূহের, وَمَا = ওযা, فِي = মধ্যে, الْأَرْضِ = পৃথিবীর, وَهُوَ = এবং তিনি ই, الْعَزِيزُ = পরাক্রমশালী, الْحَكِيمُ = প্রজ্ঞাময়,


অনুবাদ: আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে তা সবই আল্লাহর তাসবীহ করেছে। তিনি মহাপরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞানী।




(61:2)

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لِمَ تَقُوْلُوْنَ مَا لَا تَفْعَلُوْنَ


শব্দার্থ: يَاأَيُّهَا = ওহে, الَّذِينَ = যারা, آمَنُوا = ঈমান এনেছো, لِمَ = কেন, تَقُولُونَ = তোমরা বলো, مَا = যা, لَا = না, تَفْعَلُونَ = তোমরা করো ,


অনুবাদ: হে মু’মিনগণ! তোমরা এমন কথা কেন বল যা নিজেরা করো না?




(61:3)

كَبُرَ مَقْتًا عِنْدَ اللّٰهِ اَنْ تَقُوْلُوْا مَا لَا تَفْعَلُوْنَ


শব্দার্থ: كَبُرَ = অতিশয়, مَقْتًا = ক্রোধজনক, عِنْدَ = কাছে , اللَّهِ = আল্লাহর, أَنْ = যে, تَقُولُوا = তোমরা বলো, مَا = যা, لَا = না, تَفْعَلُونَ = তোমরা করো ,


অনুবাদ: আল্লাহর কাছে এটা অত্যন্ত অপছন্দনীয় কাজ যে, তোমরা এমন কথা বলো যা করো না।



No comments

Powered by Blogger.