38 চোগল খোরী আল হুজরাত-১২
* চোগলখোরী করা গীবতের চেয়ে ও মারাত্মক। চুগলখোরের মধ্যে ঝগড়া লাগানোর ইচ্ছা থাকে। সূরা হুজুরাত-12
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اجْتَنِبُوْا كَثِیْرًا مِّنَ الظَّنِّ١٘ اِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ اِثْمٌ وَّ لَا تَجَسَّسُوْا وَ لَا یَغْتَبْ بَّعْضُكُمْ بَعْضًا١ؕ اَیُحِبُّ اَحَدُكُمْ اَنْ یَّاْكُلَ لَحْمَ اَخِیْهِ مَیْتًا فَكَرِهْتُمُوْهُ١ؕ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ تَوَّابٌ رَّحِیْمٌ
* মুসা নবীর দোয়া তিন বারে ও কবুল হয়নি চোগল খোর থাকার কারনে। সম্মেলিত ভাবে তৌবাহ করে দোয়া করতে হয়েছে। দুর্ভিক্ষের জন্য দোয়া করেছিলেন
* চোগল খোরী স্ববাবের দাস ক্রয় করে বিপদে পড়েন এই ভাবে যে,
* চোগল খোরীর কারনে কবরে আজাব হবে। একবার রাসুল(সা) মদীনা বা মক্কার কোন একটি বাগানের পাশদিয়ে অতিক্রম করছিলেন। দুটি কবরের পাশ দিয়ে যান দেখেন আযাব হচ্ছে। সুনানে আন-নাসায়ী, ১৩৬১
* চোগল খুরীরা জান্নাতে যাবে না। সহিহ মুসলিম-১
" لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ نَمَّامٌ
لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَتَّاتٌ
সূরা লাহাব
سَيَصْلَىٰ نَارًا ذَاتَ لَهَبٍ
وَامْرَأَتُهُ حَمَّالَةَ الْحَطَبِ
______________________________
38 চোগল খোরী।
* চোগলখোরী করা গীবতের চেয়ে ও মারাত্মক। চুগলখোরের মধ্যে ঝগড়া লাগানোর ইচ্ছা থাকে। আল হুজরাত-১২
৪৯: আল-হুজুরাত:আয়াত: ১২
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اجْتَنِبُوْا كَثِیْرًا مِّنَ الظَّنِّ١٘ اِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ اِثْمٌ وَّ لَا تَجَسَّسُوْا وَ لَا یَغْتَبْ بَّعْضُكُمْ بَعْضًا١ؕ اَیُحِبُّ اَحَدُكُمْ اَنْ یَّاْكُلَ لَحْمَ اَخِیْهِ مَیْتًا فَكَرِهْتُمُوْهُ١ؕ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ تَوَّابٌ رَّحِیْمٌ
শব্দার্থ: يَاأَيُّهَا = হে, الَّذِينَ = যারা, آمَنُوا = ঈমান এনেছ, اجْتَنِبُوا = দূরেথাক, كَثِيرًا = অত্যাধিক, مِنَ = হতে, الظَّنِّ = অনুমানকরা, إِنَّ = নিশ্চয়ই , بَعْضَ = কিছু, الظَّنِّ = অনুমান, إِثْمٌ = পাপ, وَلَا = এবং না , تَجَسَّسُوا = তোমরা দোষখোঁজকরো, وَلَا = এবং না , يَغْتَبْ = নিন্দাকরো, بَعْضُكُمْ = তোমাদের কেউ, بَعْضًا = কাউকে, أَيُحِبُّ = পছন্দকরেকি, أَحَدُكُمْ = তোমাদের কেউ, أَنْ = যে, يَأْكُلَ = সেখাবে, لَحْمَ = গোশত, أَخِيهِ = তারভাইয়ের, مَيْتًا = (যে) মৃত, فَكَرِهْتُمُوهُ = বস্তুতঃতা তোমরা ঘৃণাইকর, وَاتَّقُوا = এবং তোমরা ভয় করো , اللَّهَ = আল্লাহকে, إِنَّ = নিশ্চয়ই , اللَّهَ = আল্লাহ, تَوَّابٌ = তওবাকবুলকারী, رَحِيمٌ = পরম দয়ালু,
অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ, বেশী ধারণা ও অনুমান করা থেকে বিরত থাকো কারণ কোন কোন ধারণা ও অনুমান গোনাহ। দোষ অন্বেষণ করো না। আর তোমাদের কেউ যেন কারো গীবত না করে। এমন কেউ কি তোমাদের মধ্যে আছে, যে তার নিজের মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া পছন্দ করবে? দেখো, তা খেতে তোমাদের ঘৃণা হয়। আল্লাহকে ভয় করো। আল্লাহ অধিক পরিমাণে তাওবা কবুলকারী এবং দয়ালু।
* মুসা নবীর দোয়া তিন বারে ও কবুল হয়নি চোগল খোর থাকার কারনে। সম্মেলিত ভাবে তৌবাহ করে দোয়া করতে হয়েছে। দুর্ভিক্ষের জন্য দোয়া করেছিলেন
হজরত কাব ইবনে আহবার রা: বলেন, হজরত মুসা আ:-এর যুগে একবার প্রচণ্ড দুর্ভিক্ষ দেখা দিলো। হজরত মুসা আ: তিনবার জাতিকে নিয়ে আল্লাহর দরবারে দোয়া করলেন, কিন্তু দোয়া কবুল হলো না। তখন তিনি আরজ করলেন, হে আল্লাহ! আমি আমার দলের সবাইকে নিয়ে আপনার দরবারে তিনবার দোয়া করলাম, কিন্তু আপনি তা কবুল করলেন না কেন?
তখন মুসা আ:-এর প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহি অবতীর্ণ হলো, হে মুসা! তোমার দলের মধ্যে একজন চোগলখোর আছে, যার কারণে তোমাদের কারো দোয়াই কবুল হলো না।
হজরত মুসা আ: আরজ করলেন, হে আল্লাহ! কে সে ব্যক্তি? আমাকে তার সম্পর্কে বলুন, যাতে করে আমি তাকে শনাক্ত করে এ নিন্দনীয় কাজ থেকে ফেরাতে পারি। আর যদি সে এ কাজটি ত্যাগ না করে তাহলে আমার দল থেকে বের করে দিতে পারি।
ইরশাদ হলো, হে মুসা, আমি চোগলখোরিকে নিষেধ করেছি আবার আমিই চোগলখুরি করব? এ কেমন কথা! এ জন্য তোমরা সবাই একত্র হয়ে তাওবা করো। তখন মুসা আ: দলের সবাইকে নিয়ে তাওবা করে আবারো আল্লাহর দরবারে দোয়া করলেন। এবার আল্লাহ তায়ালা মুসা নবীর দোয়া কবুল করলেন। এরপরই দুর্ভিক্ষ বিদূরিত হলো।
চোগলখোর সম্পর্কে রাসূল সা: ইরশাদ করেন, চোগলখোর কোনো দিন বেহেশতে যেতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তাওবা করে।’ তিরমিজি।
* চোগল খোরী স্বভাবের দাস ক্রয় করে বিপদে পড়েন এই ভাবে যে,
একবার এক ব্যক্তি দেখতে পেল বাজারে একজন নিজের দাস বিক্রি করছে। বিক্রেতা এভাবে হাকডাক করছে “এ গোলামের একটু চোগলখোরি ব্যতীত আর কোন ত্রুটি নেই”। লোকটি এ দোষটি গুরুত্ব না দিয়ে গোলামটিকে কিনে নিল। গোলামটি তার বাড়িতে অবস্থান করতে লাগল। কিছুদিন পর সে তার মনিবের স্ত্রীকে বলল, আমার মনিব আর একটি বিয়ে করতে চাইছেন, কেননা তিনি আপনার প্রতি আর তেমন অনুরক্ত নেই। আপনি কি এ বিয়ে ঠেকাতে চান আর আপনার স্বামী আপনাকে আগের মতই ভালোবাসুক এটা চান , তাহলে উনি যখন নিদ্রা যাবেন, তখন একটা ছুরি দিয়ে তার কন্ঠনালীর উপরের একটা পশম কেটে নিয়ে নিজের কাছে রাখবেন।
অন্য দিকে মনিবকে সে বলল, আপনার স্ত্রী তলে তলে অন্য একজনের প্রতি আকৃষ্ট এবং তাকে তিনি ভালোবাসেন এবং তার সাথে চক্রান্ত করে তিনি আজ আপনাকে ঘুমন্ত অবস্থায় হত্যা করবেন। আপনি যদি বাঁচতে চান তাহলে আপনি না ঘুমিয়ে কেবল ঘুমের ভান করে শুয়ে থেকে দেখবেন, আপনার স্ত্রী কিভাবে আপনার গলায় ছুরি চালায়।
গোলামের কথামত মনিব ঠিক তাই করল, রাতে যেই তার স্ত্রী ছুরি দিয়ে তার গলার পশম কাটতে উদ্যত হল, অমনি মনিব উঠে তার হাত থেকে ছুরি নিয়ে স্ত্রীকে সাথে সাথে হত্যা করল। এরপর স্ত্রীর আত্মীয়রা এসে মনিবকে হত্যা করল। এরপর উভয়পক্ষে তুমুল গন্ডগোল শুরু হল এবং এতে উভয় পক্ষ সর্বস্বান্ত হয়ে গেল। এজন্যই আল্লাহ চোগলখোরকে ফাসিক বলে উল্লেখ করেছেন।
আল্লাহ বলেন, “যদি তোমাদের কাছে কোন ফাসিক সংবাদ নিয়ে আসে, তাহলে তা যাচাই করে নাও। না জেনে যদি কারো অনিষ্ট সাধন কর, তাহলে পরিণামে তোমরা কষ্ট ভোগ করবে।”
* চোগল খোরীর কারনে কবরে আজাব হবে। একবার রাসুল(সা) মদীনা বা মক্কার কোন একটি বাগানের পাশদিয়ে অতিক্রম করছিলেন। দুটি কবরের পাশ দিয়ে যান দেখেন আযাব হচ্ছে। সুনানে আন-নাসায়ী, ১৩৬১
চোগলখোরীর জন্য কবরে আজাব হবে
* حَدَّثَنَا يَحْيَى، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ مَرَّ بِقَبْرَيْنِ يُعَذَّبَانِ فَقَالَ " إِنَّهُمَا لَيُعَذَّبَانِ وَمَا يُعَذَّبَانِ فِي كَبِيرٍ أَمَّا أَحَدُهُمَا فَكَانَ لاَ يَسْتَتِرُ مِنَ الْبَوْلِ، وَأَمَّا الآخَرُ فَكَانَ يَمْشِي بِالنَّمِيمَةِ ". ثُمَّ أَخَذَ جَرِيدَةً رَطْبَةً فَشَقَّهَا بِنِصْفَيْنِ، ثُمَّ غَرَزَ فِي كُلِّ قَبْرٍ وَاحِدَةً. فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ، لِمَ صَنَعْتَ هَذَا فَقَالَ " لَعَلَّهُ أَنْ يُخَفَّفَ عَنْهُمَا مَا لَمْ يَيْبَسَا ".
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন দু’টি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন যে কবর দু’টির বাসিন্দাদের উপর আযাব দেয়া হচ্ছিল। তখন তিনি বললেনঃ এদের দুজনকে আযাব দেয়া হচ্ছে অথচ তাদের এমন গুনাহর জন্য আযাব দেয়া হচ্ছে না (যা হতে বিরত থাকা) দুরূহ ছিল। তাদের একজন পেশাবের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করত না, আর অপরজন চোগলখুরী করে বেড়াত। অতঃপর তিনি খেজুরের একটি তাজা ডাল নিয়ে তা দু’ভাগে বিভক্ত করলেন, অতঃপর প্রতিটি কবরে একটি করে পুঁতে দিলেন। সাহাবীগন জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি কেন এরূপ করলেন? তিনি বললেনঃ ডাল দুটি না শুকানো পর্যন্ত আশা করি তাদের আযাব হালকা করা হবে।
সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ১৩৬১
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
* চোগল খুরীরা জান্নাতে যাবে না। সহিহ মুসলিম-১
وَحَدَّثَنِي شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ الضُّبَعِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا مَهْدِيٌّ، - وَهُوَ ابْنُ مَيْمُونٍ - حَدَّثَنَا وَاصِلٌ الأَحْدَبُ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ، أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ رَجُلاً، يَنِمُّ الْحَدِيثَ فَقَالَ حُذَيْفَةُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ نَمَّامٌ " .
আবূ ওয়ায়িল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হুযাইফাহ্ (রাঃ)-এর নিকট খবর পৌঁছল যে, এক ব্যক্তি চোগলখোরী করে বেড়ায়। তিনি বললেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, কোন চোগলখোরই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। [৪৪] (ই.ফা. ১৯২; ই.সে. ১
ফুটনো
[৪৪] একজনের কথা অন্যজনের সামনে এ জন্য বলে যে, তাদের মধ্যে যেন শত্রুতার সৃষ্টি হয় ও ঝগড়া-বিবাদ লেগে যায় তাকে ‘নাম্মাম’ বা চোগলখোর বলে। (নাবাবী
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১
হাদিসের মান: সহিহ হাদি
Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IR
Dস৯১) টঃ৯৮):ড অ্যাপ, IRD
لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَتَّاتٌ ".
হুযাইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বললেনঃ আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি যে, চোগলখোরী কক্ষনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না। [মুসলিম১/৪৫, হাঃ ১০৫, আহমাদ ২৩৩০৭] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৬২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫১৭)
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬০৫৬
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
সূরা লাহাব
سَيَصْلَىٰ نَارًا ذَاتَ لَهَبٍ
وَامْرَأَتُهُ حَمَّالَةَ الْحَطَبِ
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন মদিনার একটি খেজুর বাগান দিয়ে যাচ্ছিলেন, সেখানে তিনি দুই ব্যক্তির আহাজারি শুনতে পেলেন। তখন তাদেরকে কবরে শাস্তি দেয়া হচ্ছিল। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘এ (ব্যক্তি) দু’জনকে বড় কোনো কারণে আযাব দেয়া হচ্ছে না; অবশ্য এগুলো কবিরা গোনাহ। তাদের একজন পেশাব থেকে পবিত্রতা অর্জন করত না; আর অন্যজন চোগলখুরি করে বেড়াত।’ (বুখারি, মুসলিম ও মিশকাত)
* গীবতকারী ও চুগলখোরের মধ্যে পার্থক্য এই যে, চুগলখোরের মধ্যে ঝগড়া লাগানোর ইচ্ছা থাকে। আর গীবতকারীর মধ্যে তা থাকা শর্ত নয়।
* ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ
مَرَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِحَائِطٍ مِنْ حِيطَانِ الْمَدِينَةِ أَوْ مَكَّةَ فَسَمِعَ صَوْتَ إِنْسَانَيْنِ يُعَذَّبَانِ فِي قُبُورِهِمَا فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعَذَّبَانِ وَمَا يُعَذَّبَانِ فِي كَبِيرٍ ثُمَّ قَالَ بَلَى كَانَ أَحَدُهُمَا لَا يَسْتَتِرُ مِنْ بَوْلِهِ وَكَانَ الْآخَرُ يَمْشِي بِالنَّمِيمَةِ ثُمَّ دَعَا بِجَرِيدَةٍ فَكَسَرَهَا كِسْرَتَيْنِ فَوَضَعَ عَلَى كُلِّ قَبْرٍ مِنْهُمَا كِسْرَةً فَقِيلَ لَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ لِمَ فَعَلْتَ هَذَا قَالَ لَعَلَّهُ أَنْ يُخَفَّفَ عَنْهُمَا مَا لَمْ تَيْبَسَا أَوْ إِلَى أَنْ يَيْبَسَا
একদা রাসূল (সাঃ) মদীনা বা মক্কার কোন একটি বাগানের পাশদিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তথায় তিনি দু'জন এমন মানুষের আওয়াজ শুনতে পেলেন, যাদেরকে কবরে শাস্তি দেয়া হচ্ছিল। রাসূল (সাঃ)) বললেন, তাদেরকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে অথচ বড় কোন অপরাধের কারণে আজাব দেয়া হচ্ছে না। অতঃপর তিনি বললেন, তাদের একজন পেশাব করার সময় আড়াল করতনা। আর দ্বিতীয় ব্যক্তি একজনের কথা অন্যজনের কাছে লাগাত। এরপর নবী (সাঃ) একটি কাঁচা খেজুরের শাখা আনতে বললেন। অতঃপর উক্ত খেজুরের শাখাটিকে দু'ভাগে বিভক্ত করে প্রত্যেক কবরের উপর একটি করে রেখে দিলেন। রাসূল (সাঃ)কে জিজ্ঞেস করা হল, আপনি কেন এরকম করলেন? উত্তরে তিনি বললেন, হয়ত খেজুরের শাখা দু'টি জীবিত থাকা পর্যন্ত তাদের কবরের আজাব হালকা করা হবে।(বুখারী)
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ
لَمَّا عُرِجَ بِي مَرَرْتُ بِقَوْمٍ لَهُمْ أَظْفَارٌ مِنْ نُحَاسٍ يَخْمُشُونَ وُجُوهَهُمْ وَصُدُورَهُمْ فَقُلْتُ مَنْ هَؤُلَاءِ يَا جِبْرِيلُ قَالَ هَؤُلَاءِ الَّذِينَ يَأْكُلُونَ لُحُومَ النَّاسِ وَيَقَعُونَ فِي أَعْرَاضِهِمْ
যখন আমাকে মি'রাজে নিয়ে যাওয়া হল, তখন আমি তামার নখ বিশিষ্ট একদল লোকের কাছ দিয়ে অতিক্রম করলাম। তারা নখগুলো দিয়ে তাদের মুখমন্ডল ও বক্ষদেশে আঘাত করে ক্ষত-বিক্ষত করছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে জিবরীল! এসমস্ত লোক কারা? জিবরীল (আঃ) বললেন, এরা দুনিয়াতে মানুষের গোশ্ত ভক্ষন করত এবং তাদের মান-সম্মান নষ্ট করত। অর্থাৎ তারা মানুষের গীবত ও চুগলখোরী করত। (আবু দাউদ
* হজরত কাব ইবনে আহবার রা: বলেন, হজরত মুসা আ:-এর যুগে একবার প্রচণ্ড দুর্ভিক্ষ দেখা দিলো। হজরত মুসা আ: তিনবার জাতিকে নিয়ে আল্লাহর দরবারে দোয়া করলেন, কিন্তু দোয়া কবুল হলো না। তখন তিনি আরজ করলেন, হে আল্লাহ! আমি আমার দলের সবাইকে নিয়ে আপনার দরবারে তিনবার দোয়া করলাম, কিন্তু আপনি তা কবুল করলেন না কেন?
তখন মুসা আ:-এর প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহি অবতীর্ণ হলো, হে মুসা! তোমার দলের মধ্যে একজন চোগলখোর আছে, যার কারণে তোমাদের কারো দোয়াই কবুল হলো না।
হজরত মুসা আ: আরজ করলেন, হে আল্লাহ! কে সে ব্যক্তি? আমাকে তার সম্পর্কে বলুন, যাতে করে আমি তাকে শনাক্ত করে এ নিন্দনীয় কাজ থেকে ফেরাতে পারি। আর যদি সে এ কাজটি ত্যাগ না করে তাহলে আমার দল থেকে বের করে দিতে পারি।
ইরশাদ হলো, হে মুসা, আমি চোগলখোরিকে নিষেধ করেছি আবার আমিই চোগলখুরি করব? এ কেমন কথা! এ জন্য তোমরা সবাই একত্র হয়ে তাওবা করো। তখন মুসা আ: দলের সবাইকে নিয়ে তাওবা করে আবারো আল্লাহর দরবারে দোয়া করলেন। এবার আল্লাহ তায়ালা মুসা নবীর দোয়া কবুল করলেন। এরপরই দুর্ভিক্ষ বিদূরিত হলো।
চোগলখোর সম্পর্কে রাসূল সা: ইরশাদ করেন, চোগলখোর কোনো দিন বেহেশতে যেতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তাওবা করে।’ তিরমিজি।
No comments