Header Ads

Header ADS

37 সালাম

37  

 228 এক মুসলমান ও অপর মুসলমানের হক ছয়টি-(৪) নং যখন তার সাথে সাক্ষাৎ হবে তাকে সালাম করবে 3


* নিরাপদে বেহেস্তে যেতে হলে চারটি কাজ করতে হবে: —


وَعَنْ أَبي يُوسُفَ عَبدِ اللهِ بنِ سَلاَمٍ رضي الله عنه، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، يَقُولُ: « يَا أيُّهَا النَّاسُ، أَفْشُوا السَّلاَمَ، وَأطْعِمُوا الطَّعَامَ، وَصِلُوا الأرْحَامَ، وَصَلُّوا والنَّاسُ نِيَامٌ، تَدْخُلُوا الجَنَّةَ بِسَلاَم ». رواه الترمذي، وقال: حديث حسن صحيح »




আবূ ইউসুফ আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রাঃ)




তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘‘হে লোক সকল! তোমরা সালাম প্রচার কর, (ক্ষুধার্তকে) অন্নদান কর, আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখ এবং লোকে যখন (রাতে) ঘুমিয়ে থাকে, তখন তোমরা নামায পড়। তাহলে তোমরা নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’’




রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ৮৫৩

সালামের ফজিলত 

সালামের প্রচলন শূরু হয়: —


وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: لَمَّا خَلَقَ اللهُ آدَمَ عليه السلام، قَالَ: اذْهَبْ فَسَلِّمْ عَلَى أُولئِكَ ـ نَفَرٍ مِنَ المَلاَئِكَةِ جُلُوسٌ ـ فَاسْتَمِعْ مَا يُحَيُّونَكَ ؛ فَإنَّهَا تَحِيَّتُكَ وَتَحِيَّةُ ذُرِّيتِكَ . فَقَالَ: السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ، فَقَالُوا: السَّلاَمُ عَلَيْكَ وَرَحْمَةُ اللهِ، فَزَادُوهُ: وَرَحْمَةُ اللهِ . متفقٌ عَلَيْهِ


আবূ হুরাইরা (রাঃ)


আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘আল্লাহ যখন আদম আলাইহিস সালাম-কে সৃষ্টি করলেন। তখন তাঁকে বললেন, ‘তুমি যাও এবং ঐ যে ফিরিশ্‌তামন্ডলীর একটি দল বসে আছে, তাদের উপর সালাম পেশ কর। আর ওরা তোমার সালামের কী জবাব দিচ্ছে তা মন দিয়ে শুনো। কেননা, ওটাই হবে তোমার ও তোমার সন্তান-সন্ততির সালাম বিনিময়ের রীতি।’ সুতরাং তিনি (তাঁদের কাছে গিয়ে) বললেন, ‘আসসালামু আলাকুম’। তাঁরা উত্তরে বললেন, ‘আসসালামু আলাইকা অরাহমাতুল্লাহ’। অতএব তাঁরা ‘অরাহমাতুল্লাহ’ শব্দটা বেশী বললেন।’’


রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ৮৫০


সর্বোত্তম ইসলামী কাজ কী?’


وَعَنْ عَبدِ اللهِ بنِ عَمرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، أنَّ رَجُلاً سَأَلَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: أَيُّ الإِسْلاَمِ خَيْرٌ ؟ قَالَ: « تُطْعِمُ الطَّعَامَ، وَتَقْرَأُ السَّلاَمَ عَلَى مَنْ عَرَفْتَ وَمَنْ لَمْ تَعْرِفْ ». متفقٌ عَلَيْهِ



আব্দুল্লাহ ইবনে আম্‌র ইবনুল ‘আস (রাঃ)



এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করল, ‘সর্বোত্তম ইসলামী কাজ কী?’ তিনি বললেন, “(ক্ষুধার্তকে) অন্নদান করবে এবং পরিচিত-অপরিচিত নির্বিশেষে সকলকে (ব্যাপকভাবে) সালাম পেশ করবে।’’



রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ৮৪৯


সালামের মাধ্যমে ভালবাসা সৃষ্টি হয়: —
وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: « لاَ تَدْخُلُوا الجَنَّةَ حَتَّى تُؤمِنُوا، وَلاَ تُؤْمِنُوا حَتَّى تَحَابُّوا، أوَلاَ أدُلُّكُمْ عَلَى شَيْءٍ إِذَا فَعَلْتُمُوهُ تَحَابَبْتُمْ ؟ أَفْشُوا السَّلاَمَ بَيْنَكُمْ ». رواه مسلم

আবূ হুরাইরা (রাঃ)

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমরা ঈমানদার না হওয়া পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর যতক্ষণ না তোমাদের পারস্পরিক ভালোবাসা গড়ে উঠবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা প্রকৃত ঈমানদার হতে পারবে না। আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি কাজ বলে দেব না, যা করলে তোমরা একে অপরকে ভালবাসতে লাগবে? (তা হচ্ছে) তোমরা আপোসের মধ্যে সালাম প্রচার কর।’’

রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ৮৫২



সালামের ফজিলত 40 নেকি
عَن عِمْرَانَ بنِ الحُصَينِ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، فَقَالَ: السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ، فَرَدَّ عَلَيْهِ ثُمَّ جَلَسَ، فَقَالَ النبيُّ صلى الله عليه وسلم: عَشْرٌ ثُمَّ جَاءَ آخَرُ، فَقَالَ: السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ، فَرَدَّ عَلَيْهِ فَجَلَسَ، فَقَالَ: عِشْرُونَ ثُمَّ جَاءَ آخَرُ، فَقَالَ: السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ الله وَبَركَاتُهُ، فَرَدَّ عَلَيْهِ فَجَلَسَ، فَقَالَ: ثَلاثُونَ رواه أَبُو داود والترمذي، وقال: حديث حسن

ইমরান ইবনে হুসাইন (রাঃ)

তিনি বলেন, একটি লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে এভাবে সালাম করল ‘আসসালামু আলাইকুম’ আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জবাব দিলেন। অতঃপর লোকটি বসে গেলে তিনি বললেন, ‘‘ওর জন্য দশটি নেকী।’’ তারপর দ্বিতীয় ব্যক্তি এসে ‘আসসালামু আলাইকুম অরহমাতুল্লাহ’ বলে সালাম পেশ করল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সালামের উত্তর দিলেন এবং লোকটি বসলে তিনি বললেন, ‘‘ওর জন্য বিশটি নেকী।’’ তারপর আর একজন এসে ‘আসসালামু আলাইকুম অরাহমাতুল্লাহি অবারাকাতুহ’ বলে সালাম দিল। তিনি তার জবাব দিলেন। অতঃপর সে বসলে তিনি বললেন, ‘‘ওর জন্য ত্রিশটি নেকী।’’

রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ৮৫৫


কেমন ছিলেন সাহাবিরা? ছোট্ট এই ঘটনাটির মাধ্যমে তা জেনে নিন-

হযরত আলী (রা.) সর্বদাই হযরত আবু বকর ছিদ্দিক (রা.) কে আগে সালাম দিতেন। আবু বকর ছিদ্দিক (রা.) অনেক চেষ্টা করেও আগে সালাম দিতে সক্ষম হতেন না।

একদিন ব্যতিক্রম হলো। আলী (রা.) একদিন ইচ্ছে করেই আগে সালাম দিলেন না। আবু বকর (রা.) আগে সালাম দিয়ে দিলেন। যদিও বিষয়টি ওখানেই শেষ হয়ে গেলো। কিন্তু হযরত আবু বকর (রা.) ভাবলেন যে, হয়তো আলী (রা.) কোন কারনে তার উপর মনক্ষুন্ন হয়েছেন, তাই হয়ত আগে সালাম দেননি।
আবু বকর (রা.) ঘটনাটি রাসূল ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ এর দরবারে পেষ করলেন। প্রিয় নবী ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ হযরত আলী (রা.) কে এর কারন জিজ্ঞেস করলেন।

তখন হযরত আলী (রা.) বললেন – “ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি স্বপ্নে অতি সুন্দর একটি প্রাসাদ দেখেছি। আমাকে বলা হলো যে, সর্ব প্রথম অন্যকে সালাম দিবে তাকে এই প্রাসাদ দেয়া হবে। স্বপ্ন দেখে আমি ভাবলাম, হযরত আবু বকর ই এই প্রাসাদের যথার্থ অধিকারী। তিনি জ্ঞানে গুনে, মর্যাদায় ও আত্মত্যাগে আমার চেয়েও শ্রেষ্ঠ। সুতরাং তার আসন সব জায়গায় আমার উপর থাকা উচিত। তাই আমি আগে ইচ্ছে করেই আগে সালাম দেইনি, যেন তিনি আগে সালাম দিয়ে প্রাসাদটি লাভ করতে পারেন।

এই শিক্ষামূলক ঘটনাটি থেকে আমরাও শিক্ষা নিয়ে বাস্তাব জীবনকে দ্বীনের আলোয় রাঙিয়ে তুলবো।


সালামের কত মূল্য তাদের কাছে ছিল: —
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، أَنَّ الطُّفَيْلَ بْنَ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ أَخْبَرَهُ، أَنَّهُ كَانَ يَأْتِي عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ فَيَغْدُو مَعَهُ إِلَى السُّوقِ، قَالَ: فَإِذَا غَدَوْنَا إِلَى السُّوقِ لَمْ يَمُرَّ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ عَلَى سَقَّاطٍ، وَلَا صَاحِبِ بَيْعَةٍ، وَلَا مِسْكِينٍ، وَلَا أَحَدٍ إِلَّا يُسَلِّمُ عَلَيْهِ. قَالَ الطُّفَيْلُ: فَجِئْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ يَوْمًا، فَاسْتَتْبَعَنِي إِلَى السُّوقِ، فَقُلْتُ: مَا تَصْنَعُ بِالسُّوقِ وَأَنْتَ لَا تَقِفُ عَلَى الْبَيْعِ، وَلَا تَسْأَلُ عَنِ السِّلَعِ، وَلَا تَسُومُ بِهَا، وَلَا تَجْلِسُ فِي مَجَالِسِ السُّوقِ؟ فَاجْلِسْ بِنَا هَاهُنَا نَتَحَدَّثُ، فَقَالَ لِي عَبْدُ اللَّهِ: يَا أَبَا بَطْنٍ، وَكَانَ الطُّفَيْلُ ذَا بَطْنٍ، إِنَّمَا نَغْدُو مِنْ أَجْلِ السَّلَامِ، نُسَلِّمُ عَلَى مَنْ لَقِيَنَا

তুফাইল ইবনে উবাই ইবনে কাব (র)

তিনি আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ)-এর নিকট যাতায়াত করতেন এবং তার সাথে বাজারে যেতেন। রাবী বলেন, আমরা বাজারে যাওয়ার পথে আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ)-র সাথে সর্বসাধারণ, দোকানদার, ফকীর-মিসকীন বা অন্য যে কোন লোকের সাক্ষাত হতো তিনি তাকে সালাম দিতেন। তুফাইল (র) বলেন, একদিন আমি আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ)-র নিকট আসলাম। তিনি আমাকে নিয়ে বাজারে যেতে চাইলেন। আমি বললাম, আপনি বাজারে গিয়ে কি করবেন? না আপনি কেনাকাটা করেন, না কোন পণ্য সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন, না দরদাম করেন, আর না বাজারের কোন মজলিসে বসেন। বরং আমাদের নিয়ে এখানেই বসুন, কিছু আলাপ-আলোচনা করি। আবদুল্লাহ (রাঃ) আমাকে বলেন, হে ভুরিওয়ালা (তার পেট মোটা ছিল)। আমরা তো বাজারে যাই যাকে সামনে পাই তাকে সালাম দেয়ার জন্য। -(মুয়াত্তা মালিক, তাবাকাত ইবনে সাদ)

আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং ১০১৬


No comments

Powered by Blogger.