Header Ads

Header ADS

২৪। ঈদুল আজহার দিবস

*  ইসলামে ঈদের প্রচলন। রাসূল (সা:) মাদীনাহ্তে এসে দেখেন মাদীনাহ্বাসীরা নির্দিষ্ট দু’টি দিনে খেলাধূলা ও আনন্দ করে থাকে। সুনানে আবু দাউদ-১১৩৪ সহিহ

*  কোরবানীর আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দিবো। গোস্ত নিজেরাও খাবো এবং গরীব দুর্দশাগ্রস্ত অভাবীকেও খাওয়াবো ২২: আল-হাজ্জ:২৮

فَكُلُوْا مِنْهَا وَ اَطْعِمُوا الْبَآئِسَ الْفَقِیْرَ٘

* মানুষকে খাওয়ানো উত্তম কাজ এই বৈশিষ্ট্য নবীদের ছিল,হযরত ইব্রাহিম আ: মেহমান ছাড়া খাবার খাইতেন না

* মানুষকে খাওয়ার ফলে মুচিকে আল্লাহ হজ্জের সওয়াব দান করেন। ইসলামী পণ্ডিত আব্দুল্লাহ বিন মোবারক পবিত্র কাবা ঘরের পাশে ঘুমিয়ে ছিলেন। সেসময় তিনি স্বপ্নে দেখেন দুজন ফেরেসতা নিজদের মধ্যে আলাপ করে আকাশ থেকে নেমে আসছে।

*  কুরবানী ওয়াজিব নামাজ ফরজ। নামাজ না পরলে জানোয়ার হয়ে জাহান্নামে যেতে হবে

*  বেনামাজী যেনাকারী মহিলার চেয়ে নিকৃষ্ট মুসা আঃ এর সময় এক মহিলা যিনা করে বাচ্চা পর্যন্ত হত্যা করে 


________________________________________________________

*  ইসলামে ঈদের প্রচলন,সুনানে আবু দাউদ-১১৩৪ সহিহ


عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْمَدِينَةَ وَلَهُمْ يَوْمَانِ يَلْعَبُونَ فِيهِمَا فَقَالَ ‏"‏ مَا هَذَانِ الْيَوْمَانِ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا كُنَّا نَلْعَبُ فِيهِمَا فِي الْجَاهِلِيَّةِ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ إِنَّ اللَّهَ قَدْ أَبْدَلَكُمْ بِهِمَا خَيْرًا مِنْهُمَا يَوْمَ الأَضْحَى وَيَوْمَ الْفِطْرِ


অর্থ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:তিনি বলেন,রাসূল (সা:) মাদীনাহ্তে এসে দেখেন মাদীনাহ্বাসীরা নির্দিষ্ট দু’টি দিনে খেলাধূলা ও আনন্দ করে থাকে। রাসূল (সা:) জিজ্ঞেস করলেনঃ এ দু’টি দিন কিসের? সকলেই বললো, জাহিলী যুগে আমরা এ দু’ দিন খেলাধূলা করতাম। রাসূল (সা:) বললেন, মহান আল্লাহ তোমাদের এ দু’ দিনের পরিবর্তে উত্তম দু’টি দিন দান করেছেন। তা হলো, ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিত্বরের দিন


ঈদের দিন অত্যন্ত ফজিলত পূর্ণ কাজ হলো কোরবানি করা আর কুরবানীর পশুর প্রত্যেকটা পশমের বদলে বান্দার জন্য পূর্ণ রয়েছে। তবে সওয়াব টা পাওয়া যাবে নিয়ত অনুযায়ী


বি:দ্রব্য পূর্বে যে মুসলমানেরা জাহেলী যুগের সময় দুই দিন আনন্দ করে আসছিল সেই পরিপ্রেক্ষিতে মুসলমান হওয়ার পরও তারা নির্দিষ্ট দুই দিন আনন্দ উৎসব করছিলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এই দৃশ্য দেখে তাদের বলেছিলেন যে এটা কিসের আনন্দ তোমরা করো তখন তারা বলেছিল যে আমরা জাহেলী যুগে এই নির্দিষ্ট দুই দিন আনন্দ করতাম নবী সাঃ এই দুদিনের পরিবর্তে ঈদুল আযহা ঈদুল ফিতরের দিন আনন্দের ঘোষণা দিলেন এবং এটাই যে আল্লাহর সিদ্ধান্ত এ কথা জানিয়ে দিলেন

____________________________


২৪। ঈদুল আজহার দিবস 

 * নিয়তের নাম বরকত,যে কাজই করবেন সেটার নিয়ত ঠিক রাখবেন তবেই ফল পাবেন, নিয়তে বেজাল হলে হরিনের মত মাহরুম হতে হবে


* একদল শহীদ,আলেম, দানবীর জাহান্নামে যাবে আবার একজন বেশ্যানারী পিপাসার্থ কুকুরকে পানি পান করার ফলে জান্নাতে যাবে। কারণ এই পানি পানের মধ্যে কোনো রিয়া ছিল না 


* সুতরাং এই কোরবানীর আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দিবো। গোস্ত নিজেরাও খাবো এবং গরীব দুর্দশাগ্রস্ত অভাবীকেও খাওয়াবো ২২: আল-হাজ্জ:২৮,


فَكُلُوْا مِنْهَا وَ اَطْعِمُوا الْبَآئِسَ الْفَقِیْرَ٘


* মানুষকে খাওয়ানো উত্তম কাজ এই বৈশিষ্ট্য নবীদের ছিল,হযরত ইব্রাহিম আ: মেহমান ছাড়া খাবার খাইতেন না


* মানুষকে খাওয়ার ফলে মুচিকে আল্লাহ হজ্জের সওয়াব দান করেন


* আগে কুরবানী নাকি আগে নামাজ। বেনামাযী জেনাকারীর চেয়ে নিকৃষ্ট 


_____________________________________________________


ঈদ অর্থ কী?


ঈদ অর্থ আনন্দ। এর শাব্দিক অর্থ


হলো ‘বারবার ফিরে


আসা’ ( ﻋَﺎﺩَ-ﻳَﻌُﻮْﺩُ-ﻋِﻴْﺪًﺍ ) এ দিনটি


বারবার ফিরে আসে বলে এর


নামকরণ হয়েছে ঈদ। আল্লাহ


তা‘আলা এদিনে তার


বান্দাকে নি‘আমাত ও অনুগ্রহ


দ্বারা বারবার ধন্য করে


থাকেন, বারবার ইহসান করেন।


রমযানের পানাহার নিষিদ্ধ


করার পর আবার পানাহারের


আদেশ প্রদান করেন। ফিত্রা


প্রদান ও গ্রহণ, হজ পালন ও


কুরবানীর গোশত ভক্ষণ ইত্যাদি


নি‘আমাত বছর ঘুরিয়ে তিনি


বারবার বান্দাদেরকে


ফিরিয়ে দেন। এতে মানুষের


প্রাণে আনন্দের সঞ্চার হয়। এসব


কারণে এ দিবসের নামকরণ


হয়েছে ঈদ।


ঈদ শব্দের অর্থ ফিরে আসা। যেহেতু ঈদুল ফিতর ঈদুল আযহা বারবার ফিরে আসে এই দুইটা দিন যেহেতু বারবার ফিরে আসে সেজন্য এর নাম রাখা হয়েছে ঈদ।


ঈদ শব্দের আরেকটি অর্থ হচ্ছে আনন্দ। ঈদুল ফিতরের দিন এবং ঈদুল আযহার দিন আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ করে থাকেন। এতে আমরা খুশি না বেজার এই যে গুনাহ মাফ করে দেন আল্লাহ সেজন্য এর নাম রাখা হয়েছে ঈদ।


* ইসলামে ঈদের প্রচলন,সুনানে আবু দাউদ-১১৩৪ সহিহ


عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْمَدِينَةَ وَلَهُمْ يَوْمَانِ يَلْعَبُونَ فِيهِمَا فَقَالَ ‏"‏ مَا هَذَانِ الْيَوْمَانِ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا كُنَّا نَلْعَبُ فِيهِمَا فِي الْجَاهِلِيَّةِ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ إِنَّ اللَّهَ قَدْ أَبْدَلَكُمْ بِهِمَا خَيْرًا مِنْهُمَا يَوْمَ الأَضْحَى وَيَوْمَ الْفِطْرِ


অর্থ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:তিনি বলেন,রাসূল (সা:) মাদীনাহ্তে এসে দেখেন মাদীনাহ্বাসীরা নির্দিষ্ট দু’টি দিনে খেলাধূলা ও আনন্দ করে থাকে। রাসূল (সা:) জিজ্ঞেস করলেনঃ এ দু’টি দিন কিসের? সকলেই বললো, জাহিলী যুগে আমরা এ দু’ দিন খেলাধূলা করতাম। রাসূল (সা:) বললেন, মহান আল্লাহ তোমাদের এ দু’ দিনের পরিবর্তে উত্তম দু’টি দিন দান করেছেন। তা হলো, ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিত্বরের দিন


ঈদের দিন অত্যন্ত ফজিলত পূর্ণ কাজ হলো কোরবানি করা আর কুরবানীর পশুর প্রত্যেকটা পশমের বদলে বান্দার জন্য পূর্ণ রয়েছে। তবে সওয়াব টা পাওয়া যাবে নিয়ত অনুযায়ী


* নিয়তের নাম বরকত,যে কাজই করবেন সেটার নিয়ত ঠিক রাখবেন তবেই ফল পাবেন, নিয়তে বেজাল হলে হরিনের মত মাহরুম হতে হবে ৷ আদম (আ) যখন বেহেস্ত থেকে দুনিয়াতে আসলেন, তখন বনের কিছু হরিণ আদম নবীকে দেখার জন্য খুব ব্যাকুল হয়ে পড়ল। তাই তারা উনাকে দেখতে গেল। আদম নবীকে তারা মন ভরে দেখল এবং কথাবার্তা হল। হরিণগুলো বনে ফিরে যাওয়ার সময় আদম (আ) এদের পিঠে হাত বুলিয়ে দিলেন। উনার এই হাতের স্পর্শে এদের শরীর থেকে এতো সুগন্ধ আসতে লাগল যা অন্যান্য হরিণরা আশ্চর্য হয়ে গেল এবং তারাও এই সুগন্ধ নেয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে গেল। তাই তারাও ছুটল আদম নবীর নিকট। পূর্বের ন্যায় আদম (আ) তাদের পিঠেও হাত বুলিয়ে দিলেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এদের শরীর থেকে ঐ সুগন্ধ আর আসছে না। আদম নবীর নিকট (হাত) থেকে কি সুগন্ধ শেষ হয়ে গিয়েছিল? না কখনোই না। দুই দল হরিণের দুই উদ্দেশ্য ছিল। প্রথম দলের উদ্দেশ্য ছিল আদম (আ) কে দেখা। এদের অন্তরে প্রেম, মহব্বত ও ভক্তি ছিল। তাই তাদের উদ্দেশ্য তো পূরণ হলোই বরং তার চেয়েও বেশি কিছু পেল তারা। আর দ্বিতীয় দলের উদ্দেশ্য ছিল সুগন্ধ নেয়া, যা লোভ বা হিংসা জনিত ব্যপার। তাই তারা সেটা পেল না। বুখারী শরীফের প্রথম হাদীস "ইন্না মাল আমালু বিন নিয়্যাত"


  অর্থঃ প্রত্যেকটি কর্মের ফলাফ নিয়্যতের উপর নির্ভরশীল


* ইব্রাহিম আ: মেহমান ছারা খাইতেন না।হযরত ইব্রাহীম (আ) এর জীবন কাহীনি থেকে একটা গল্প বলি। ইব্রাহীম (আ)


কখনো একা


খাবার খেতেন না। ভাগ্যে যখনই


যা কিছু খাবার জুটতো, তা নিয়ে বসে থাকতেন


কোনো মেহমানের আশায়। মেহমান যদি না আসত তা হলে রাস্তা থেকে


কাউকে ধরে


নিয়ে এসে এক সাথে বসে


খাবার খেতেন।


এমনি করে একদিন দুপুর বেলায়,খাবারের সময় হয়ে গেছে। কিন্তু বাসায়


কোনো মেহমান


আসেনি। তাই তিনি খাবার সাজিয়ে


রেখে রাস্তার পাশে বসে আছেন। যদি


কোনো মুসাফির পাওয়া যায়, এই


আশায়। অনেকক্ষন পর তিনি দেখলেন,


অনেক দূরে


একটি লোক দেখা যাচ্ছে এবং


লোকটি এই দিকেই আসছে। তিনি


অপেক্ষা করতে


লাগলেন। লোকটি কাছে আসতেই ইব্রাহীম (আ) জিজ্ঞাস করলেন, হে মুসাফির তুমি কি দুপুরের খাবার খেয়েছ? লোকটি


জবাব দিলো, নাহ সে খায়নি এবং


তার সাথে


জানিয়ে দিলো সে খুবই ক্ষুধার্ত। ইব্রাহীম (আ) খুশী হয়ে হাত ধরে লোকটিকে ঘরে নিয়ে গেলেন এবং বললেন, যাও


ঐখানে পানি আছে হাত-মুখ ধুয়ে আসো তারপর


আমরা এক সাথে খাবার খাবো।


লোকটি হাত মুখ ধুয়ে এসে খাবার'এর


সামনে বসলো।


এইবার ইব্রাহীম (আ) বললেন, নাও


আল্লাহর নামে খাওয়া শুরু করো। এই কথা শুনে লোকটি হতভম্ব হয়ে বললেন,


আল্লাহ কে?


আমিতো তাঁকে চিনি না। তাছাড়া তারঁ নামে আমি খাবার শুরু করবো


কেনো? এই কথা শুনে ইব্রাহীম (আ) প্রচন্ড রেগে


গিয়ে বললেন, বলিস কিরে


বেটা? তুই


আল্লাহ কে চিনিস না? কাফির


কোথকার,


যা ভাগ এখান থেকে, তোর মত


কাফিরকে


আমি খাবার দিবনা। মুসাফির


লোকটি আর


কোনো কথা না বলে মনে দুঃখ


নিয়ে চলে


গেল। ইব্রাহীম (আ) আবার রাস্তার সামনে বসে অন্য কারো জন্যে অপেক্ষা করতে লাগলেন আর মনে মনে ভাবলেন '


ইস আল্লাহ


কি বাচাঁনোটাই না


বাঁচিয়েছেন। একটা


কাফিরের সাথে বসে এক


প্লেটে খাবার


খাওয়া! এইটা কি ভাবা যায়? কত


বড় গুনাহটাই না হয়ে যেত, অল্পের


জন্য রক্ষা"।


এমন সময় ইব্রাহীম (আ) শুনতে


পেলেন আল্লাহ


(সো) তাঁকে বলছেন, " হে


ইব্রাহীম, আমি


যদি দুনিয়ার সমস্ত


কাফিরদেরকে বেঁচে থাকার সুযোগ দিতে পারি,


তাদের ক্ষুধায়


আহার যোগাতে পারি, তাহলে


তুমি তাদের খাবার না দেওয়ার


কে?" এই কথা


শুনে ইব্রাহীম (আ) পাগলের মত


তাড়িয়ে দেওয়া মুসাফিরের পিছনে


ছুটতে লাগলেন।


অবশেষে তিনি মুসাফিরকে


খুজে পেয়ে


ক্ষমা চেয়ে সব কিছু খুলে বললেন।


মুসাফির


তারঁ সমস্ত কথা শুনে বললেন,


তোমার আল্লাহ


যদি এই কথা বলে থাকেন তাহলে


সত্যিই তিনি সকল কিছুর সৃস্টিকর্তা এবং আমি তার


আনুগত্য মেনে ।


নিলাম


* মানুষকে খাওয়ার ফলে মুচিকে আল্লাহ হজ্জের সওয়াব দান করেন :-একজন মুচির হজ্জ কিভাবে কবুল হলো। একজন অতিশয় জ্ঞানী , ইসলামী পণ্ডিত আব্দুল্লাহ বিন মোবারক পবিত্র কাবা ঘরের পাশে ঘুমিয়ে ছিলেন। সেসময় তিনি স্বপ্নে দেখেন দুজন ফেরেসতা নিজদের মধ্যে আলাপ করে আকাশ থেকে নেমে আসছে। একজন ফেরেসতা অপরজনকে


জিজ্ঞেস করছেন,


" জানেনকি এবার কত লোক হজ্জ্ব করতে এসেছে "? " ছয় লক্ষ "।


আব্দুল্লাহ বিন মোবারকও সেবছর হজ করতে এসেছেন। প্রথম ফেরেসতা এবার


জিজ্ঞেস করলেন ,


" কতজনের হজ্জ্ব কবুল হয়েছে"? দ্বিতীয় জন উত্তর দিলেন," আমার সন্দেহ হয় ,হয়তো কারোটাই নয়। "


আব্দুল্লাহ বিন মোবারক এটি শুনে ভীষণ দু:খিত হলেন। তিনি ভাবলেন," কত লোক এসেছে সারা দুনিয়া থেকে ! কত পাহাড় ,জংগল , মরুভূমি , সাগর - কত বাঁধা তারা


পার হয়ে এসেছে। কত অর্থ তারা ব্যয়


করেছে ,তাদের চেষ্টা কি বৃথা যাবে ? আল্লাহ তো কারো চেষ্টাই বিফল করেন


না। " এটুকু ভাবতেই আবদুল্লাহ শুনতে পেলেন , একজন ফেরেসতা বলছে ,"দামেস্কে একজন মুচি আছে যার নাম আলী বিন মুফিক, তিনি এবার হজে আসতে


পারেননি। কিন্তু আল্লাহ তার হজের


বাসনা পূর্ণ করেছেন। শুধু তারই নয় , তার


ওসিলায় আল্লাহ সবারই হজ্জ্ব কবুল


করেছেন।আবদুল্লাহ মোবারক জেগে উঠে সিদ্ধান্ত


নিলেন , তিনি দামেস্কে যেয়ে সে মুচির সাথে দেখা করবেন , যার সদিচ্ছা এত


গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয়েছে। দামেস্কে


পৌঁছে লোকজনকে জিজ্ঞেস করলেন


তারা আলী বিন আল মুফিক নামের


মুচিকে চিনে কিনা। তারা তখন


আবদুল্লাহ মোবারককে একটা বাড়িতে নিয়ে গেল। বাড়ী থে কে একটা লোক বের হয়ে আসলে আবদুল্লাহ মোবারক তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তার নাম আলী


কি না। লোকটি বললেন , " হ্যাঁ , আমি আলী।" আপনার পেশা কি ? আলী বিন


মুফিক জবাব দিলেন," আমি একজন মুচি ,


জুতা সেলাই করি।" তারপর আলী তাকে খুঁজতে আসা আগন্তকের নাম জিজ্ঞাসা করলেন।


আবদুল্লাহ বিন মোবারক তাঁর পান্ডত্যের জন্য মশহুর ছিলেন। তাঁর পরিচয় পেয়ে


আলী আবদুল্লাহ বিন মোবারক কেন


তাকে খুঁজছেন এনিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে


পড়লেন। যখন আবদুল্লাহ বিন মোবারক হজের বিষয়ে আলীর কোন পরকল্পনা


আছে কিনা জানতে চাইলেন , তখন আলী


উত্তর দিলেন," গত ৩০ বছর ধরে আমি হজে


যাবার বাসনা পোষন করে আসছিলাম।


এবছর হজে যাবার মত উপযুক্ত অর্থ আমি যোগাড়ও করেছিলাম। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা তা ছিলনা। তাই, আমার স্বপ্ন


বাস্তবে রূপ নিতে পারেনি।"


আবদুল্লাহ বিন মোবারক জানতে উদ্বিগ্ন ছিলেন কিভাবে মানুষটির হজ্জ্ব কবুল হল


এবং অন্য সব হাজীদের জন্য এটি


আশীর্বাদ হিসেবে দেখা দিল, যেখানে


সে নিজেই হজে যেতে পারলোনা !


আলোচনা কালে আবদুল্লাহ বিন মোবারক


মুচিটির হৃদয়ের নিস্কলুষতা টের পেলেন। ইসলাম সম্পদ কিংবা ক্ষমতােক মহৎ মনে করে না বরং সৌজন্য , সদ্ব্যবহার এবং হৃদয়ের উদার্যকেই মর্যাদা প্রদান করে।


আবদুল্লাহ বিন মোবারক হজে না যেতে পারার কারণ জানতে চাইলে আলী বললেন ," এটা ছিল আল্লার ইচ্ছা"। আবদুল্লাহ বিন মোবারক বিষয়টি বলার


জন্য জোর অনুরোধ জানালে অালী বললেন ," একদিন আমি আমার একজন


প্রতবেশিকে দেখতে তার বাড়ী যাই।পরিবারটা মাত্র দুপুরের আহারের জন্য


বসেছে। আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম না। তবুও ভেবেছিলাম প্রতিবেশিটি সৌজন্য হিসেবে আমােক খেতে বলবে। কিন্ত


প্রতিবেশিকে কেমন উদ্বিগ্ন মনে হল


এবং আমাকে আহারে আমন্ত্রন


জানানোর বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইল। কিছুক্ষণ পর একটু দ্বিধার সাথে সে আমাকে বলল," দুঃখিত, আমি তোমাকে


খাবারে আমন্ত্রণ জানাতে পারলামনা।


গত তিন দিন আমাদের ঘরে কোন খাবার


নেই। বাচ্চাদের ক্ষুধার্ত মুখ সহ্য করা আমার দুঃসাধ্য হয়ে পড়লে খাদ্যের সন্ধানে বের হয়ে রাস্তায় একটা মৃত


গাধা পেলাম। অনন্যোপায় হয়ে সেই মৃত


প্রানীটির কিছু মাংস কেটে বাড়ীতে নিয়ে আসি, যাতে আমার স্ত্রী কিছু


একটা রান্না করতে পারে। আমাদের


শোচনীয় অবস্থায় এটি আমাদের জন্য হালাল। কিন্তু আমি এটি আপনাকে


সাধতে পারছিনা। "


আলী বিন মুফিক বলতে লাগলেন," এ কথা শুনে আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হতে লাগল। আমি উঠে সোজা বাড়ী চলে এলাম,হজের জন্য আমার সংগৃহীত তিন হাজার


দিনার আমার প্রতিবেশিকে দিয়ে


দিলাম। এটা ঠিক এই অর্থ সংগ্রহে


আমাকে ক্ষুধার্ত থাকতে হয়েছিল , তবে এটা কেবল হজের টাকা সঞ্চয়ের জন্য।


আমার মনে হ' ল বিপদে প্রতিবেশিকে


সহায়তা করা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।


আল্লাহ সহায়, ভবিষ্যতে কোন এক সময়


হজে যাব এ সদিচ্ছা আমার এখনো রয়েছে। "আবদুল্লাহ বিন মোবারক মুচি আলীর কাহিনী শুনে ভীষণ অনুপ্রাণিত হলেন


এবং তার দেখা স্বপ্নের কথা মুচিকে


বললেন। আল্লাহ পরম দয়ালু। তিনি তাদেরকই দয়া


প্রদর্শন করেন যারা তার সৃষ্টির প্রতি


দয়াশীল। আলী মুচির এ দয়ার্দ্রতা এতই হৃদয়স্পর্শী যে আল্লাহ শুধু তার হজ্জ্ব কবুল


করে নিলেন তা নয় যারা সেবছর হজে


গেলেন এই এক অছিলায় সবাইকেই তিনি


পুরস্কৃত করলেন।প্রতিবেশিদের প্রতি


কর্তব্য পালনে ইসলামে কঠোর তাগিদ রয়েছে। একটি হাদিসে উল্লেখ করা


হয়েছে ,সে ব্যক্তি মুসলমান নয়, যে ভরপেট আহার করে আর তার প্রতিবেশি অভুক্ত


থাকে। যোগাযোগ ব্যবস্থার বিস্ময়কর উন্নতিতে


যখন সারা পৃথিবী হাতের মুঠোয় চলে


এসেছে , তখন শুধু বাড়ীর আশেপাশে নয় ,যারা সহজ যোগাযোগ সীমার মধ্যে রয়েছে , দেশের সেসব গরীব দুঃখী


মানুষেরাও আমাদের প্রতিবেশি বৈকি!


কল্পনা করা যাক, সামান্য অর্থাভাবে


কত মানব সন্তান জীবনের মৌলিক


অধিকার বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে ! বর্ণিত প্রেক্ষাপটে ' আলী


মুচির কাহিনীটি নিসন্দেহে অর্থবহ ।


বর্ণিত আছে যে, বণী ইসরাঈলের এক মহিলা একবার হযরত মূসার (আঃ) কাছে এল ।


সে বললোঃ হে আলাহর রাসুল । আমি একটি ভীষণ পাপের কাজ করেছি । পরে তওবাও করেছি । আপনি দোয়া করুন যেন আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করেন । মূসা (আঃ) বললেনঃ তুমি কী গুনাহ করেছো? সে বললোঃ আমি ব্যভিচার করেছিলাম ।


অতঃপর একটি অবৈধ সন্তান প্রসব করি এবং তাকে হত্যা করে ফেলি ।


মূসা (আঃ) বললেনঃ “হে মহাপতাকিনী । এক্ষুনি বেরিয়ে যাও ।


আমার আশংকা, আকাশ থেকে এক্ষুনি আগুন নামবে এবং তাতে আমরা সবাই ভস্মীভূত হবো ।” মহিলাটি ভগ্ন হৃদয়ে বেরিয়ে গেল ।


অল্পক্ষণ পরেই জিবরীল (আঃ) এলেন । তিনি বললেনঃ “হে মূসা! আল্লাহ আপনাকে জিজ্ঞাসা করাছেন কী কারণে এই তওবাকারিণীকে তাড়িয়ে দিলেন? তার চেয়েও কি কোন অধম মানুষকে আপনি দেখেন নি?” মূসা বললেনঃ “হে জিবরীল! এর চেয়ে পাপিষ্ঠ কে আছে?”


জিবরীল (আঃ) বললেনঃ “ইচ্ছাকৃতভাবে নামায তর্ককারী ।”

No comments

Powered by Blogger.