Header Ads

Header ADS

22 কুরবানীর পূর্বের জুমা। যাদের পক্ষ থেকে কুরবানী কবুল হবে 

* কুরবানী আসতেছে সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছে এখন কার কুরবানী কবুল হবে কোরআন থেকে জেনে নেই

* #এক আল্লাহ তাআলা মুত্তক্বীদের কুরবানী কবুল করবেন ৫  আল-মায়িদাহ, আয়াত: ২৭

وَ اتْلُ عَلَیْهِمْ نَبَاَ ابْنَیْ اٰدَمَ بِالْحَقِّ١ۘ اِذْ قَرَّبَا قُرْبَانًا فَتُقُبِّلَ مِنْ اَحَدِهِمَا وَ لَمْ یُتَقَبَّلْ مِنَ الْاٰخَرِ١ؕ قَالَ لَاَقْتُلَنَّكَ١ؕ قَالَ اِنَّمَا یَتَقَبَّلُ اللّٰهُ مِنَ الْمُتَّقِیْنَ

*  কাবিল ছিল চাষি। তাই তিনি গমের শীষ থেকে ভাল ভালগুলো বের করে নিয়ে খারাপগুলোর একটি আটি কোরবানির জন্য পেশ করল। আর হাবিল ছিল পশুপালনকারী। তাই সে তার জন্তুর মধ্যে থেকে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট একটি দুম্বা কোরবানির জন্য পেশ করল।

* মুত্তাকীদের পরিচয়। প্রথমত গুনাহ গৃনার সাথে বর্জন করা। দ্বিতীয়ত্ব

 সূরা বাকারার শুরুতে আল্লাহ তা'আলা এরশাদ করেন

الٓمّٓۚ (১) ذٰلِكَ الْكِتٰبُ لَا رَیْبَ١ۛۖۚ فِیْهِ١ۛۚ هُدًى لِّلْمُتَّقِیْنَۙ (২) الَّذِیْنَ یُؤْمِنُوْنَ بِالْغَیْبِ وَ یُقِیْمُوْنَ الصَّلٰوةَ وَ مِمَّا رَزَقْنٰهُمْ یُنْفِقُوْنَۙ (৩) وَ الَّذِیْنَ یُؤْمِنُوْنَ بِمَاۤ اُنْزِلَ اِلَیْكَ وَ مَاۤ اُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَ١ۚ وَ بِالْاٰخِرَةِ هُمْ یُوْقِنُوْنَؕ (৪) اُولٰٓئِكَ عَلٰى هُدًى مِّنْ رَّبِّهِمْ١ۗ وَ اُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ

বিশ্বাস স্থাপনের পর দুটি আমল করতে হবে সেটা হলো নামায দান সদকা 

*  #দুই কিয়ামতের দিন যার পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে তার অন্যান্য ইবাদত কুরবানীর তখন আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। সুতরাং নামায আগে না কুরবানীর আগে? সূরা কাওসার

সূরা আনয়ামের ১৬২ আয়াতে সেখানে ও আগে নামাজের কথা বলা হয়েছে 

قُلْ اِنَّ صَلَاتِیْ وَ نُسُكِیْ وَ مَحْیَایَ وَ مَمَاتِیْ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَۙ

*  #সালাত ও কুরবানী হারিয়ে যাবে যদি উপার্জন বৈধতা না হয়

* হালাল বা বৈধ টাকা,আল্লাহ হালাল খাবারের নির্দেশ দিচ্ছেন,নিন্মোক্ত দুটি আয়াতে। বাক্বারাহ ১৬৮

یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ كُلُوْا مِمَّا فِی الْاَرْضِ حَلٰلًا طَیِّبًا ﳲ وَّ لَا تَتَّبِعُوْا خُطُوٰتِ الشَّیْطٰنِؕ اِنَّهٗ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِیْنٌ

হালাল খাবার খাও শুকরিয়া আদায় কর,বাক্বারাহ ১৭২

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا كُلُوْا مِنْ طَیِّبٰتِ مَا رَزَقْنٰكُمْ وَ اشْكُرُوْا لِلّٰهِ اِنْ كُنْتُمْ اِیَّاهُ تَعْبُدُوْنَ

* যে ব্যক্তি অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে, সেই অর্থের প্রকৃত মালিক সে নিজে নয়, অন্য কেও। আর অন্যের টাকা দিয়ে নিজে সওয়াব অর্জন করার চেষ্টা করা বড় রকমের বোকামি ছাড়া কিছু নয়।হারাম জানার পরও হারাম টাকা দিয়ে কোরবানী করে সওয়াবেহর আশায়,ঐ চোরের মত ,যে চোর গরু চুরি করে কোরবানী করে সওয়াব অর্জন করতে চায়

*  হারাম খাদ্য দ্বারা পরিপুষ্ট শরীর জান্নাতে যাবে না’ মিশকাত ২৭৮৭ ঊপদেশ ৩৩

لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ جَسَدٌ غُذِّيَ بِالْحَرَام

*  কুরবানী করা ওয়াজিব নফল নয়। সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১২৩

مَنْ كَانَ لَهُ سَعَةٌ وَلَمْ يُضَحِّ فَلاَ يَقْرَبَنَّ مُصَلاَّنَا

 


______________________________________


*  কুরবানী করা ওয়াজিব নফল নয়। সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১২৩

مَنْ كَانَ لَهُ سَعَةٌ وَلَمْ يُضَحِّ فَلاَ يَقْرَبَنَّ مُصَلاَّنَا


حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ الْحُبَابِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ ‏ "‏ مَنْ كَانَ لَهُ سَعَةٌ وَلَمْ يُضَحِّ فَلاَ يَقْرَبَنَّ مُصَلاَّنَا ‏"‏ ‏.‏


আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্তেও কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদের মাঠের কাছেও না আসে। [৩১২৩]


সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৩১২৩

হাদিসের মান: হাসান 

* আল্লাহ তাআলা মুত্তক্বীদের কুরবানী কবুল করবেন ৫  আল-মায়িদাহ, আয়াত: ২৭

وَ اتْلُ عَلَیْهِمْ نَبَاَ ابْنَیْ اٰدَمَ بِالْحَقِّ١ۘ اِذْ قَرَّبَا قُرْبَانًا فَتُقُبِّلَ مِنْ اَحَدِهِمَا وَ لَمْ یُتَقَبَّلْ مِنَ الْاٰخَرِ١ؕ قَالَ لَاَقْتُلَنَّكَ١ؕ قَالَ اِنَّمَا یَتَقَبَّلُ اللّٰهُ مِنَ الْمُتَّقِیْنَ


আর তাদেরকে আদমের দু’ছেলের সঠিক কাহিনী ও শুনিয়ে দাও। তারা দু’জন কুরবানী করলে তাদের একজনের কুরবানী কবুল করা হলো, অন্য জনেরটা কবুল করা হলো না। সে বললো, “আমি তোমাকে মেরে ফেলবো। সে জবাব দিল, আল্লাহ তো মুত্তাকিদের নজরানা কবুল করে থাকে।”


* আল-আনয়ামের ১৬২ আয়াতে সেখানে ও আগে নামাজের কথা বলা হয়েছে 

قُلْ اِنَّ صَلَاتِیْ وَ نُسُكِیْ وَ مَحْیَایَ وَ مَمَاتِیْ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَۙ


বলো, আমার নামায, আমার ইবাদাতের সমস্ত অনুষ্ঠান, আমার জীবন ও মৃত্যু সবকিছু আল্লাহ‌ রব্বুল আলামীনের জন্য,


* ইব্রাহিম আ: মেহমান ছারা খাইতেন না।হযরত ইব্রাহীম (আ) এর জীবন কাহীনি থেকে একটা গল্প বলি। ইব্রাহীম (আ)


কখনো একা


খাবার খেতেন না। ভাগ্যে যখনই


যা কিছু খাবার জুটতো, তা নিয়ে বসে থাকতেন


কোনো মেহমানের আশায়। মেহমান যদি না আসত তা হলে রাস্তা থেকে


কাউকে ধরে


নিয়ে এসে এক সাথে বসে


খাবার খেতেন।


এমনি করে একদিন দুপুর বেলায়,খাবারের সময় হয়ে গেছে। কিন্তু বাসায়


কোনো মেহমান


আসেনি। তাই তিনি খাবার সাজিয়ে


রেখে রাস্তার পাশে বসে আছেন। যদি


কোনো মুসাফির পাওয়া যায়, এই


আশায়। অনেকক্ষন পর তিনি দেখলেন,


অনেক দূরে


একটি লোক দেখা যাচ্ছে এবং


লোকটি এই দিকেই আসছে। তিনি


অপেক্ষা করতে


লাগলেন। লোকটি কাছে আসতেই ইব্রাহীম (আ) জিজ্ঞাস করলেন, হে মুসাফির তুমি কি দুপুরের খাবার খেয়েছ? লোকটি


জবাব দিলো, নাহ সে খায়নি এবং


তার সাথে


জানিয়ে দিলো সে খুবই ক্ষুধার্ত। ইব্রাহীম (আ) খুশী হয়ে হাত ধরে লোকটিকে ঘরে নিয়ে গেলেন এবং বললেন, যাও


ঐখানে পানি আছে হাত-মুখ ধুয়ে আসো তারপর


আমরা এক সাথে খাবার খাবো।


লোকটি হাত মুখ ধুয়ে এসে খাবার'এর


সামনে বসলো।


এইবার ইব্রাহীম (আ) বললেন, নাও


আল্লাহর নামে খাওয়া শুরু করো। এই কথা শুনে লোকটি হতভম্ব হয়ে বললেন,


আল্লাহ কে?


আমিতো তাঁকে চিনি না। তাছাড়া তারঁ নামে আমি খাবার শুরু করবো


কেনো? এই কথা শুনে ইব্রাহীম (আ) প্রচন্ড রেগে


গিয়ে বললেন, বলিস কিরে


বেটা? তুই


আল্লাহ কে চিনিস না? কাফির


কোথকার,


যা ভাগ এখান থেকে, তোর মত


কাফিরকে


আমি খাবার দিবনা। মুসাফির


লোকটি আর


কোনো কথা না বলে মনে দুঃখ


নিয়ে চলে


গেল। ইব্রাহীম (আ) আবার রাস্তার সামনে বসে অন্য কারো জন্যে অপেক্ষা করতে লাগলেন আর মনে মনে ভাবলেন '


ইস আল্লাহ


কি বাচাঁনোটাই না


বাঁচিয়েছেন। একটা


কাফিরের সাথে বসে এক


প্লেটে খাবার


খাওয়া! এইটা কি ভাবা যায়? কত


বড় গুনাহটাই না হয়ে যেত, অল্পের


জন্য রক্ষা"।


এমন সময় ইব্রাহীম (আ) শুনতে


পেলেন আল্লাহ


(সো) তাঁকে বলছেন, " হে


ইব্রাহীম, আমি


যদি দুনিয়ার সমস্ত


কাফিরদেরকে বেঁচে থাকার সুযোগ দিতে পারি,


তাদের ক্ষুধায়


আহার যোগাতে পারি, তাহলে


তুমি তাদের খাবার না দেওয়ার


কে?" এই কথা


শুনে ইব্রাহীম (আ) পাগলের মত


তাড়িয়ে দেওয়া মুসাফিরের পিছনে


ছুটতে লাগলেন।


অবশেষে তিনি মুসাফিরকে


খুজে পেয়ে


ক্ষমা চেয়ে সব কিছু খুলে বললেন।


মুসাফির


তারঁ সমস্ত কথা শুনে বললেন,


তোমার আল্লাহ


যদি এই কথা বলে থাকেন তাহলে


সত্যিই তিনি সকল কিছুর সৃস্টিকর্তা এবং আমি তার


আনুগত্য মেনে ।


নিলাম

* এক প্রসিদ্ধ চোর জুমার নামাজ আদায় করতে গিয়ে মসজিদে ইমাম সাহেবের মুখে কোরবানীর ফযিলত সম্পর্কে বয়াণ শুনে অন্তরটা নরম হয়ে গেছে৷ .বাড়ি ফিরে প্রতিজ্ঞা করলো-যা হয় হবে, এমন


ফযিলত পূর্ণ কোরবানী বাদ দেওয়া যাবে না.তাই রাতেই পাশের গ্রাম থেকে একটি গরু চুরি করে আনতে গিয়েছে কোরবানী দেওয়ার জন্য৷ .ইমাম সাহেব ফজরের নামাজ পড়তে উঠে দেখে ঐ চোর চুরি করা গরু নিয়ে বাড়ি ফিরছে। ইমাম সাহেব


তাকে জিঙ্গেস করলোঃ তুমি তো গরীব মানুষ, গরু কোথায় পাইলা? ওই মিয়া কার গরু চুরি করে নিয়া যাও?চোর বলছে-হুজুর আপনি জুমার নামাজে


কোরবানীর ফযিলত সম্পর্কে যে বয়ান


করেছেন তাতে আমার অন্তরটা নরম হয়ে


গেছে ,তাই গরুটি কোরবানী দিতে নিয়ে যাচ্ছি।ইমাম সাহেব বললো চুরি করে কোরবানী দিলে তো কোরবানী হবে না বরং গুনাহ হবে৷ .চোর বলছে ,হুজুর এ নিয়ে আপনি টেনশনকইরেন না ৷ আমি এর হিসেবও মিলিয়ে রেখেছি ,চুরি করলে যে গুনাহ হবে তা কোরবানীর দিলে যে সওয়াব পাওয়া যাবে তা দিয়ে কাটাকাটি ৷


মাঝখানে গোশত খাওয়া ফাও।হা-হা-হা.


উপসংহারঃ গল্পটি রূপক হলেও আমাদের দেশে গরুচুরি করে কোরবানী না দিলেও সুদের টাকা,ঘুষের টাকা, শ্রমিকের টাকা মেরে, চিটারি বাটপারি করে টাকার পাহাড় গড়ে, মানুষের টাকা মেরে ঐ চুরির টাকা দিয়ে কিন্তু ঠিকই মানুষ অহরহ কোরবানী


দেয়। তাই ঐ চোর আর এদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। আল্লাহর নবী (সাঃ)বলেছেন- খিয়ানাতের সম্পদ থেকে সদাকাহ কবুল হয় না। সহিহ মুসলিম ১ম খন্ড,তাহারাত অধ্যায়, হাদিস নং৪২৩


___________________


*  কুরবানী কবুল হওয়ার শর্ত হালাল অর্থ ও সহীহ নিয়্যাত এবং রিয়া না থাকা


কুরবানী আমাদের হাতের নাগালে এসে গেছে এই কুরবানীর রয়েছে অত্যন্ত ফজিলত এবং গুরুত্ব


*  কুরবানী কবুল হওয়া হালাল অর্থ ও সহীহ নিয়্যাতের ব্যাপার সেপার


*  নিয়তের নাম বরকত,যে কাজই করবেন সেটার নিয়ত ঠিক রাখবেন তবেই ফল পাবেন, নিয়তে বেজাল হলে হরিনের মত মাহরুম হতে হবে


*  রিয়াকারের উপমা,জনৈক আলেম বলেন ,যে লোক দেখানো ইবাদত করার উপমা  পাথরকনা দ্বারা পরিপূর্ন ব্যাগ নিয়ে বাজারে গেলো । রিয়া ছোট শিরক,সেদিন রিয়াকারদের বলবেন, যাও


* লোক দেখানো আমল হলো শিরকে আসগর, সহিহ হাদিসে কুদসি,৭ সহীহ


*  হযরত লোকমান হাকিম সন্তানদেরকে উপদেশ দেন,৩১: লুকমান:১৩


یٰبُنَیَّ لَا تُشْرِكْ بِاللّٰهِﳳ اِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِیْمٌ


যা হবে আল্লাহর জন্য 


 

__________________________________________


* নিয়তের নাম বরকত,যে কাজই করবেন সেটার নিয়ত ঠিক রাখবেন তবেই ফল পাবেন, নিয়তে বেজাল হলে হরিনের মত মাহরুম হতে হবে ৷ আদম (আ) যখন বেহেস্ত থেকে দুনিয়াতে আসলেন, তখন বনের কিছু হরিণ আদম নবীকে দেখার জন্য খুব ব্যাকুল হয়ে পড়ল। তাই তারা উনাকে দেখতে গেল। আদম নবীকে তারা মন ভরে দেখল এবং কথাবার্তা হল। হরিণগুলো বনে ফিরে যাওয়ার সময় আদম (আ) এদের পিঠে হাত বুলিয়ে দিলেন। উনার এই হাতের স্পর্শে এদের শরীর থেকে এতো সুগন্ধ আসতে লাগল যা অন্যান্য হরিণরা আশ্চর্য হয়ে গেল এবং তারাও এই সুগন্ধ নেয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে গেল। তাই তারাও ছুটল আদম নবীর নিকট। পূর্বের ন্যায় আদম (আ) তাদের পিঠেও হাত বুলিয়ে দিলেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এদের শরীর থেকে ঐ সুগন্ধ আর আসছে না। আদম নবীর নিকট (হাত) থেকে কি সুগন্ধ শেষ হয়ে গিয়েছিল? না কখনোই না। দুই দল হরিণের দুই উদ্দেশ্য ছিল। প্রথম দলের উদ্দেশ্য ছিল আদম (আ) কে দেখা। এদের অন্তরে প্রেম, মহব্বত ও ভক্তি ছিল। তাই তাদের উদ্দেশ্য তো পূরণ হলোই বরং তার চেয়েও বেশি কিছু পেল তারা। আর দ্বিতীয় দলের উদ্দেশ্য ছিল সুগন্ধ নেয়া, যা লোভ বা হিংসা জনিত ব্যপার। তাই তারা সেটা পেল না। বুখারী শরীফের প্রথম হাদীস "ইন্না মাল আমালু বিন নিয়্যাত"


  অর্থঃ প্রত্যেকটি কর্মের ফলাফ নিয়্যতের উপর নির্ভরশীল।


*  আদমকন্যা আকলিমার বিয়ে ও পৃথিবীর প্রথম কোরবানির গল্প


কোরবানির উৎপত্তি হিসেবে অনেকেই হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.)-এর ঘটনা জানেন। মূলত কোরবানির ইতিহাস আরও প্রাচীন। পবিত্র কোরআন থেকে জানা যায়, আদিপিতা হজরত আদম (আ.)-এর আমলে তাঁর দুই ছেলে হাবিল ও কাবিল সর্বপ্রথম কোরবানি করেন।


আল্লাহ তাআলা বলেন, আদমের দুই পুত্রের (হাবিল ও কাবিলের) বৃত্তান্ত তুমি তাদেরকে যথাযথভাবে শুনিয়ে দাও, যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিল, তখন একজনের কোরবানি কবুল হলো এবং অন্যজনের কোরবানি কবুল হলো না। তাদের একজন বলল, আমি তোমাকে অবশ্যই হত্যা করব। অপরজন বলল, আল্লাহ তো সংযমীদের কোরবানিই কবুল করে থাকেন। (সুরা মায়িদা: ২৭)


বিস্তারিত ঘটনা

আদম ও হাওয়া (আ.) পৃথিবীতে আসার পর থেকে তাঁদের বংশবিস্তার শুরু হয়। তখন হাওয়া (আ.)-এর গর্ভ থেকে জোড়াসন্তান অর্থাৎ প্রতিবার একটি ছিলে ও একটি মেয়ে জন্মগ্রহণ করত (কেবল শীস আ. একা জন্মেছিলেন)। আল্লাহ তাআলা প্রয়োজনের খাতিরে আদম (আ.) এর শরীয়তে এ নির্দেশ জারি করেন যে—


একই গর্ভ থেকে যে যমজ পুত্র ও কন্যা জন্মগ্রহণ করবে, তারা পরস্পর সহোদর ভাই-বোন হিসেবে গণ্য হবে। তাদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক হারাম। কিন্তু পরবর্তী গর্ভ থেকে জন্মগ্রহনকারী পুত্রের জন্য প্রথম গর্ভ থেকে জন্মগ্রহণকারীনি কন্যা সহোদরা বোন হিসেবে গণ্য হবে না। তাদের মধ্যে পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া বৈধ।


আরও পড়ুন: জান্নাতি ফল মাথায় নিয়ে হুর আগমনের ঘটনা


সুতরাং সেসময় আদম (আ.) একটি মেয়ের সাথে অন্য জোড়ার ছেলের বিয়ে দিতেন। ঘটনাক্রমে কাবিলের সাথে যে সহোদরা জন্ম নিয়েছিল সে ছিল পরমা সুন্দরী। তার নাম আকলিমা। কিন্তু হাবিলের সাথে যে সহোদরা জন্ম নিয়েছিল সে দেখতে অতটা সুন্দরী ছিল না। তার নাম ছিল লিওযা। বিয়ের সময় হলে শরয়ী নিয়মানুযায়ী হাবিলের সহোদরা বোন কাবিলের জন্য নির্ধারিত হল আর হাবিলের জন্য নির্ধারিত হলো কাবিলের বোন আকলিমা। কিন্তু তাতে কাবিল রাজি হলো না। ফলে আদম (আ.) শরীয়তের পরিপ্রেক্ষিতে কাবিলের আবদার প্রত্যাখ্যান করলেন এবং তাকে তাঁর নির্দেশ মানতে বললেন। কিন্তু সে মানল না। এবার তিনি তাকে শাসন করলেন। তবুও সে এই শাসনে কান দিলো না।


অবশেষে আদম (আ.) হাবিল ও কাবিলের মতভেদ দূর করার উদ্দেশ্যে বললেন, ‘তোমরা উভয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোরবানি পেশ করো, যার কোরবানি গৃহীত হবে, তার সাথেই আকলিমার বিয়ে দেওয়া হবে।’ সেসময় কোরবানি গৃহীত হওয়ার একটি সুস্পষ্ট নিদর্শন ছিল যে আকাশ থেকে একটি অগ্নিশিখা এসে সে কোরবানিকে ভস্মীভূত করে ফেলত। আর যার কোরবানি কবুল হত না, তারটা পড়ে থকত।


তাদের কোরবানির পদ্ধতি

কাবিল ছিল চাষি। তাই তিনি গমের শীষ থেকে ভাল ভালগুলো বের করে নিয়ে খারাপগুলোর একটি আটি কোরবানির জন্য পেশ করল। আর হাবিল ছিল পশুপালনকারী। তাই সে তার জন্তুর মধ্যে থেকে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট একটি দুম্বা কোরবানির জন্য পেশ করল। এরপর নিয়মানুযায়ী আকাশ থেকে অগ্নিশিখা এসে হাবিলের কোরবানিটি ভস্মীভূত করে দিলো। (ফতহুল কাদিরের বর্ণনায় পাওয়া যায় যে, হাবিলের পেশকৃত দুম্বাটি জান্নাতে উঠিয়ে নেওয়া হয় এবং তা জান্নাতে বিচরণ করতে থাকে। অবশেষে ইসমাইল জাবিহুল্লাহ (আ.)-কে ওই দুম্বাটি পাঠিয়ে বাঁচিয়ে দেওয়া হয়।) আর কাবিলের কোরবানি যথাস্থানেই পড়ে থাকল।


অর্থাৎ হাবিলেরটি গৃহীত হলো আর কাবিলেরটি হলো না। কিন্তু কাবিল এ আসমানি সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারল না। এ অকৃতকার্যতায় কাবিলের দুঃখ ও ক্ষোভ আরো বেড়ে গেল। সে আত্মসংবরণ করতে পারল না এবং প্রকাশ্যে তার ভাইকে বলল, ‘আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব। হাবিল তখন ক্রোধের জবাবে ক্রোধ প্রদর্শন না করে একটি মার্জিত ও নীতিগত বাক্য উচ্চারণ করল, এতে কাবিলের প্রতি তার সহানুভূতি ও শুভেচ্ছা ফুটে উঠেছিল। হাবিল বলেছিল—


‘তিনি মুত্তাকি কর্মই গ্রহণ করেন। সুতরাং তুমি তাকওয়ার কর্মই গ্রহণ করো। তুমি তাকওয়া অবলম্বন করলে তোমার কোরবানিও গৃহীত হতো। তুমি তা করোনি, তাই তোমার কোরবানি প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এতে আমার দোষ কোথায়?…..তবুও এক পর্যায়ে কাবিল হাবিলকে হত্যা করে ফেলল। (তাফসির ইবনু কাসির, দুররে মনসুর, ফতহুল বায়ান: ৩/৪৫ ও ফতহুল কাদির: ২/২৮-২৯)


আরও পড়ুন: ইবলিস কোন শয়তানের ধোঁকায় পড়ে আদমকে সেজদা করেনি?


পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হাবিল ও কাবিল কর্তৃক সম্পাদিত কোরবানির এ ঘটনা থেকেই মূলত কোরবানির ইতিহাসের গোড়াপত্তন হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা দেখতে পেলাম যে, কোরবানিদাতা ‘হাবিল’, যিনি মনের ঐকান্তিক আগ্রহ সহকারে আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের জন্যে একটি সুন্দর দুম্বা কোরবানি হিসেবে পেশ করেন। ফলে তার কোরবানি কবুল হয়। পক্ষান্তরে কাবিল, সে অমনোযোগী অবস্থায় কিছু খাদ্যশস্য কোরবানি হিসেবে পেশ করে। ফলে তার কোরবানি কবুল হয়নি। সুতরাং প্রমাণিত হলো- কোরবানি মনের ঐকান্তিক আগ্রহ ছাড়া কবুল হয় না। তারপর থেকে বিগত সকল উম্মতের ওপরে এটা জারি ছিল।


আল্লাহ তাআলা বলেন, “আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে কোরবানি নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা আল্লাহর দেওয়া চতুষ্পদ জন্তু জবেহ কারার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। অতএব তোমাদের আল্লাহ তো একমাত্র আল্লাহ সুতরাং তাঁরই আজ্ঞাধীন থাকো এবং বিনয়ীগণকে সুসংবাদ দাও।” (সুরা হজ:৩৪)


এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা নাসাফি ও জামাখশারি বলেন, ‘আদম (আ.) থেকে মুহাম্মদ (স.) পর্যন্ত প্রত্যেক জাতিকে আল্লাহ তাআলা তার নৈকট্য লাভের জন্য কোরবানির বিধান দিয়েছেন। (তাফসিরে নাসাফি: ৩/৭৯; কাশশাফ: ২/৩৩)


আদমকন্যা আকলিমার বিয়ে ও পৃথিবীর প্রথম কোরবানির গল্প


কোরবানির উৎপত্তি হিসেবে অনেকেই হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.)-এর ঘটনা জানেন। মূলত কোরবানির ইতিহাস আরও প্রাচীন। পবিত্র কোরআন থেকে জানা যায়, আদিপিতা হজরত আদম (আ.)-এর আমলে তাঁর দুই ছেলে হাবিল ও কাবিল সর্বপ্রথম কোরবানি করেন।


আল্লাহ তাআলা বলেন, আদমের দুই পুত্রের (হাবিল ও কাবিলের) বৃত্তান্ত তুমি তাদেরকে যথাযথভাবে শুনিয়ে দাও, যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিল, তখন একজনের কোরবানি কবুল হলো এবং অন্যজনের কোরবানি কবুল হলো না। তাদের একজন বলল, আমি তোমাকে অবশ্যই হত্যা করব। অপরজন বলল, আল্লাহ তো সংযমীদের কোরবানিই কবুল করে থাকেন। (সুরা মায়িদা: ২৭)


বিস্তারিত ঘটনা

আদম ও হাওয়া (আ.) পৃথিবীতে আসার পর থেকে তাঁদের বংশবিস্তার শুরু হয়। তখন হাওয়া (আ.)-এর গর্ভ থেকে জোড়াসন্তান অর্থাৎ প্রতিবার একটি ছিলে ও একটি মেয়ে জন্মগ্রহণ করত (কেবল শীস আ. একা জন্মেছিলেন)। আল্লাহ তাআলা প্রয়োজনের খাতিরে আদম (আ.) এর শরীয়তে এ নির্দেশ জারি করেন যে—


একই গর্ভ থেকে যে যমজ পুত্র ও কন্যা জন্মগ্রহণ করবে, তারা পরস্পর সহোদর ভাই-বোন হিসেবে গণ্য হবে। তাদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক হারাম। কিন্তু পরবর্তী গর্ভ থেকে জন্মগ্রহনকারী পুত্রের জন্য প্রথম গর্ভ থেকে জন্মগ্রহণকারীনি কন্যা সহোদরা বোন হিসেবে গণ্য হবে না। তাদের মধ্যে পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া বৈধ।


আরও পড়ুন: জান্নাতি ফল মাথায় নিয়ে হুর আগমনের ঘটনা


সুতরাং সেসময় আদম (আ.) একটি মেয়ের সাথে অন্য জোড়ার ছেলের বিয়ে দিতেন। ঘটনাক্রমে কাবিলের সাথে যে সহোদরা জন্ম নিয়েছিল সে ছিল পরমা সুন্দরী। তার নাম আকলিমা। কিন্তু হাবিলের সাথে যে সহোদরা জন্ম নিয়েছিল সে দেখতে অতটা সুন্দরী ছিল না। তার নাম ছিল লিওযা। বিয়ের সময় হলে শরয়ী নিয়মানুযায়ী হাবিলের সহোদরা বোন কাবিলের জন্য নির্ধারিত হল আর হাবিলের জন্য নির্ধারিত হলো কাবিলের বোন আকলিমা। কিন্তু তাতে কাবিল রাজি হলো না। ফলে আদম (আ.) শরীয়তের পরিপ্রেক্ষিতে কাবিলের আবদার প্রত্যাখ্যান করলেন এবং তাকে তাঁর নির্দেশ মানতে বললেন। কিন্তু সে মানল না। এবার তিনি তাকে শাসন করলেন। তবুও সে এই শাসনে কান দিলো না।


অবশেষে আদম (আ.) হাবিল ও কাবিলের মতভেদ দূর করার উদ্দেশ্যে বললেন, ‘তোমরা উভয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোরবানি পেশ করো, যার কোরবানি গৃহীত হবে, তার সাথেই আকলিমার বিয়ে দেওয়া হবে।’ সেসময় কোরবানি গৃহীত হওয়ার একটি সুস্পষ্ট নিদর্শন ছিল যে আকাশ থেকে একটি অগ্নিশিখা এসে সে কোরবানিকে ভস্মীভূত করে ফেলত। আর যার কোরবানি কবুল হত না, তারটা পড়ে থকত।


তাদের কোরবানির পদ্ধতি

কাবিল ছিল চাষি। তাই তিনি গমের শীষ থেকে ভাল ভালগুলো বের করে নিয়ে খারাপগুলোর একটি আটি কোরবানির জন্য পেশ করল। আর হাবিল ছিল পশুপালনকারী। তাই সে তার জন্তুর মধ্যে থেকে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট একটি দুম্বা কোরবানির জন্য পেশ করল। এরপর নিয়মানুযায়ী আকাশ থেকে অগ্নিশিখা এসে হাবিলের কোরবানিটি ভস্মীভূত করে দিলো। (ফতহুল কাদিরের বর্ণনায় পাওয়া যায় যে, হাবিলের পেশকৃত দুম্বাটি জান্নাতে উঠিয়ে নেওয়া হয় এবং তা জান্নাতে বিচরণ করতে থাকে। অবশেষে ইসমাইল জাবিহুল্লাহ (আ.)-কে ওই দুম্বাটি পাঠিয়ে বাঁচিয়ে দেওয়া হয়।) আর কাবিলের কোরবানি যথাস্থানেই পড়ে থাকল।


অর্থাৎ হাবিলেরটি গৃহীত হলো আর কাবিলেরটি হলো না। কিন্তু কাবিল এ আসমানি সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারল না। এ অকৃতকার্যতায় কাবিলের দুঃখ ও ক্ষোভ আরো বেড়ে গেল। সে আত্মসংবরণ করতে পারল না এবং প্রকাশ্যে তার ভাইকে বলল, ‘আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব। হাবিল তখন ক্রোধের জবাবে ক্রোধ প্রদর্শন না করে একটি মার্জিত ও নীতিগত বাক্য উচ্চারণ করল, এতে কাবিলের প্রতি তার সহানুভূতি ও শুভেচ্ছা ফুটে উঠেছিল। হাবিল বলেছিল—


‘তিনি মুত্তাকি কর্মই গ্রহণ করেন। সুতরাং তুমি তাকওয়ার কর্মই গ্রহণ করো। তুমি তাকওয়া অবলম্বন করলে তোমার কোরবানিও গৃহীত হতো। তুমি তা করোনি, তাই তোমার কোরবানি প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এতে আমার দোষ কোথায়?…..তবুও এক পর্যায়ে কাবিল হাবিলকে হত্যা করে ফেলল। (তাফসির ইবনু কাসির, দুররে মনসুর, ফতহুল বায়ান: ৩/৪৫ ও ফতহুল কাদির: ২/২৮-২৯)


আরও পড়ুন: ইবলিস কোন শয়তানের ধোঁকায় পড়ে আদমকে সেজদা করেনি?


পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হাবিল ও কাবিল কর্তৃক সম্পাদিত কোরবানির এ ঘটনা থেকেই মূলত কোরবানির ইতিহাসের গোড়াপত্তন হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা দেখতে পেলাম যে, কোরবানিদাতা ‘হাবিল’, যিনি মনের ঐকান্তিক আগ্রহ সহকারে আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের জন্যে একটি সুন্দর দুম্বা কোরবানি হিসেবে পেশ করেন। ফলে তার কোরবানি কবুল হয়। পক্ষান্তরে কাবিল, সে অমনোযোগী অবস্থায় কিছু খাদ্যশস্য কোরবানি হিসেবে পেশ করে। ফলে তার কোরবানি কবুল হয়নি। সুতরাং প্রমাণিত হলো- কোরবানি মনের ঐকান্তিক আগ্রহ ছাড়া কবুল হয় না। তারপর থেকে বিগত সকল উম্মতের ওপরে এটা জারি ছিল।


আল্লাহ তাআলা বলেন, “আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে কোরবানি নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা আল্লাহর দেওয়া চতুষ্পদ জন্তু জবেহ কারার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। অতএব তোমাদের আল্লাহ তো একমাত্র আল্লাহ সুতরাং তাঁরই আজ্ঞাধীন থাকো এবং বিনয়ীগণকে সুসংবাদ দাও।” (সুরা হজ:৩৪)


এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা নাসাফি ও জামাখশারি বলেন, ‘আদম (আ.) থেকে মুহাম্মদ (স.) পর্যন্ত প্রত্যেক জাতিকে আল্লাহ তাআলা তার নৈকট্য লাভের জন্য কোরবানির বিধান দিয়েছেন। (তাফসিরে নাসাফি: ৩/৭৯; কাশশাফ: ২/৩৩)


আদম (আ.)-এর যুগে তাঁরই পুত্র কাবিল ও হাবিলের কোরবানির পর থেকে ইব্রাহিম (আ.) পর্যন্ত কোরবানি চলতে থাকে। মানবজাতির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে যত শরিয়ত নাজিল হয়েছে, প্রত্যেক শরিয়তের মধ্যে কোরবানির বিধান জারি ছিল। প্রত্যেক উম্মতের ইবাদতের এ ছিল একটি অপরিহার্য অংশ।


জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১৩ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোরবানি করার সময় নির্ধারিত। মুসলমানগণ একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোরবানি করে থাকেন। কোরবানি করতে হবে সাধ্যের মধ্যে উৎকৃষ্ট পশু দিয়ে এবং তা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বিশুদ্ধ নিয়তে সঠিক পদ্ধতিতে সুন্দর পশু কোরবানি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

No comments

Powered by Blogger.