Header Ads

Header ADS

 29 নম্রতার গুন অর্জন করা 

* রহমানের বান্দা কারা। নবীজি নরম দিলের মানুষ ছিলেন। অহংকারী নয়

* বেহেশতে যাবে রহমানের প্রিয় বান্দা যারা হবে। অহংকারী ও কর্কশতা নয় নম্রতা আল্লাহর কাছে প্রিয়। 

وَ عِبَادُ الرَّحْمٰنِ الَّذِیْنَ یَمْشُوْنَ عَلَى الْاَرْضِ هَوْنًا وَّ اِذَا خَاطَبَهُمُ الْجٰهِلُوْنَ قَالُوْا سَلٰمًا

সুতরাং আমরা জানলাম আল্লাহর বান্দা হতে হলে নম্রতার গুন অর্জন করতে হবে 

فَبِمَا رَحْمَةٍ مِّنَ اللّٰهِ لِنْتَ لَهُمْ١ۚ وَ لَوْ كُنْتَ فَظًّا غَلِیْظَ الْقَلْبِ لَا نْفَضُّوْا مِنْ حَوْلِكَ١۪ فَاعْفُ عَنْهُمْ وَ اسْتَغْفِرْ لَهُمْ وَ شَاوِرْهُمْ فِی الْاَمْرِ١ۚ فَاِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللّٰهِ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الْمُتَوَكِّلِیْنَ

* নম্রতা সম্পন্ন লোকদের সবাই ভালোবাসে। নবীজি তাঁর সুন্দর ব্যবহার দিয়ে দুনিয়ার মানুষের মনোপ্রান কেরে নিয়েছেন। 

* হযরত যায়েদ ছিলেন নবীজির দশ বছরের খাদেম। নবীজি খাদেমের সাথে ও নম্র ব্যবহার করেছেন

* এক ইহুদী নবীজিকে ঋন দিয়ে নির্ধারিত সময়ের আগেই ঋন চেয়ে নবীর মেজাজ পরিক্ষা করেন

* এইভাবে নবী তার সুন্দর ব্যবহার দিয়ে দুনিয়ার সমস্ত মানুষের মনো প্রাণ কেড়ে নিয়েছেন। তাই দেখা গেল বিদায় হজ্বের ভাষণ এক লক্ষ চব্বিশ হাজার সাহাবী এসে দাঁড়ালো

وَ لَا تَسْتَوِی الْحَسَنَةُ وَ لَا السَّیِّئَةُ١ؕ اِدْفَعْ بِالَّتِیْ هِیَ اَحْسَنُ فَاِذَا الَّذِیْ بَیْنَكَ وَ بَیْنَهٗ عَدَاوَةٌ كَاَنَّهٗ وَلِیٌّ حَمِیْمٌ

* নবীজির সোহবতে সাহাবীগন ও সুন্দর আখলাকের মানুষ হিসেবে গড়ে উঠে। যে সাহিবীদের প্রশংসা আল্লাহ নিজে করেছেন । তাঁরা নিজেদের চেয়ে অন্যকে প্রাধান্য দিয়েছেন 

* নবীজির সাহাবীদের গুন বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহ বলেন٫তারা যত অভাবগ্রস্তই হোক না কেন নিজেদের চেয়ে অন্যদের অগ্রাধিকার দান করে ৫৯:হাশর-৯

وَ یُؤْثِرُوْنَ عَلٰۤى اَنْفُسِهِمْ وَ لَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ ﳴ وَ مَنْ یُّوْقَ شُحَّ نَفْسِهٖ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَۚ

* এক ব্যক্তি নবী (সা:)-এর নিকট এসে বলল٫আমি ক্ষুধায় কাতর হয়ে আছি (বুখারী ৩৭৯৮, মুসলিম ৫৪৮০,রিয়াদুস সালেহীন ২য় খন্ড হাদীস নং-৫৬৫


____________________________________


29 নবীজি নরম দিলের মানুষ ছিলেন। অহংকারী নয়


 ২৫: আল-ফুরকান,:আয়াত: ৬৩,


وَ عِبَادُ الرَّحْمٰنِ الَّذِیْنَ یَمْشُوْنَ عَلَى الْاَرْضِ هَوْنًا وَّ اِذَا خَاطَبَهُمُ الْجٰهِلُوْنَ قَالُوْا سَلٰمًا


রহমানের (আসল) বান্দা তারাই যারা পৃথিবীর বুকে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং মূর্খরা তাদের সাথে কথা বলতে থাকলে বলে দেয়, তোমাদের সালাম।


৩: আলে-ইমরান,:আয়াত: ১৫৯,


فَبِمَا رَحْمَةٍ مِّنَ اللّٰهِ لِنْتَ لَهُمْ١ۚ وَ لَوْ كُنْتَ فَظًّا غَلِیْظَ الْقَلْبِ لَا نْفَضُّوْا مِنْ حَوْلِكَ١۪ فَاعْفُ عَنْهُمْ وَ اسْتَغْفِرْ لَهُمْ وَ شَاوِرْهُمْ فِی الْاَمْرِ١ۚ فَاِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللّٰهِ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الْمُتَوَكِّلِیْنَ


(হে নবী!) এটা আল্লাহর বড়ই অনুগ্রহ যে, তোমার ব্যবহার তাদের প্রতি বড়ই কোমল। নয়তো যদি তুমি রুক্ষ স্বভাবের বা কঠোর চিত্ত হতে, তাহলে তারা সবাই তোমার চার পাশ থেকে সরে যেতো। তাদের ত্রুটি ক্ষমা করে দাও। তাদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করো এবং দ্বীনের ব্যাপারে বিভিন্ন পরামর্শে তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করো। তারপর যখন কোন মতের ভিত্তিতে তোমার স্থির সংকল্প হবে তখন আল্লাহর ওপর ভরসা করো। আল্লাহ‌ তাদেরকে পছন্দ করেন যারা তাঁর ওপর ভরসা করে কাজ করে।


* আনাস ইবনে মালেক (রা.) বর্ণনা করেন, জায়েদ (রা.) সিরিয়ায় বন্দি হন। হাকিম ইবনে হেজাম ইবনে খুয়াইলিদ তাঁকে ক্রয় করে স্বীয় ফুফু খাদিজা (রা.)-কে দান করেন। খাদিজা (রা.) মহানবী (সা.)-এর খেদমতের জন্য তাঁকে দান করেন। মহানবী (সা.) জায়েদ (রা.)-কে আজাদ করে দিয়ে পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেন। জায়েদ (রা.) মহানবী (সা.)-এর কাছে দীর্ঘদিন ধরে পুত্রের মতো বসবাস করতে থাকেন। তাঁর পিতা দীর্ঘদিন পর্যন্ত তাঁর অনুসন্ধান করার পর অবশেষে তাঁর সন্ধান পান। অতঃপর তাঁর পিতা ও চাচা অর্থের বিনিময়ে মহানবী (সা.)-এর কাছ থেকে তাঁদের সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আবেদন করেন। মহানবী (সা.) বলেন, তোমরা ইচ্ছা করলে বিনিময় ছাড়া তাকে নিয়ে নিতে পারো অথবা ইচ্ছা করলে আমার কাছেও রেখে যেতে পারো।

যায়েদ ইবনুল হারেসা মা খাদিজার ক্রীতদাস হিসেবে নবীজির সংসারে এলে নবীজি তাকে আজাদ করে পালকপুত্র হিসেবে ঘোষণা দেন। তার পিতা তাকে নিতে এলে।


নবী (সা.) বলেন, তাকে আমি স্বাধীন করে দিয়েছি, সে স্বেচ্ছায় আপনাদের সঙ্গে যেতে চাইলে আমি বাধা দেব না। এই বলে নবী (সা.) যায়েদকে ডেকে বলেন, তোমার পিতা তোমাকে নিতে আসছে তোমার ইচ্ছা হলে চলে যেতে পার।


এ কথা শোনার পর যায়েদ একবার পিতার দিকে তাকায় আরেকবার পালক পিতা নবী মোহাম্মদ (সা.)-এর দিকে তাকায়, শেষে বলে বাবা তুমি চলে যাও এই মহান ব্যক্তিত্বের যে পরশ পেয়েছি তাঁকে ছেড়ে তোমার সঙ্গে যাব না।

* এক ইহুদী নবীজিকে ঋন দিয়ে নির্ধারিত সময়ের আগেই ঋন চেয়ে নবীর মেজাজ পরিক্ষা করেন 

যে ইহুদি নবীজীকে ঋণ দেন

একজন সাহাবীর প্রয়োজন মেটানোর জন্য নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ইহুদির কাছ থেকে ঋণ নেন। ঋণ গ্রহণের সময় বিধান হলো ঋণ ফেরতের তারিখ নির্ধারণ করা। নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইহুদিকে একটি তারিখ বলেন, যে তারিখে তিনি ঋণ ফেরত দিবেন


একদিন নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীদেরকে নিয়ে একটি জানাজা থেকে ফিরছেন। তার সাথে ছিলেন আবু বকর, উমরের (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা) মতো মহান সাহাবী।


ঠিক সেই সময় ওই ইহুদি লোকটি নবীজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গলার চাদরে ধরে রাগতস্বরে, অভদ্র ভাষায় বললো- ‘ও মুহাম্মদ! আমার কাছ থেকে যে ঋণ নিয়েছিলে, সেই অর্থ কোথায়? আমি তো তোমার পরিবারকে চিনি। ঋণ নিলে তোমাদের আর কোনো খবর থাকে না!’


নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদিনা রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান। তার কথায় সাহাবীরা নিজেদের জীবন দিয়ে দিতে পারেন। তিনি যদি সাহাবীদেরকে একটু ইশারা দেন, তাহলে সাহাবীরা তার (ইহুদি) গর্দান উড়িয়ে ফেলবেন। তাকে সবার সামনে এত বড়ো অপমান করা হলো? অথচ ঋণ পরিশোধের যে তারিখ ধার্য করা হয়েছিল, সেটা এখনো বাকি আছে। সময়ের আগেই সুন্দরভাবে না চেয়ে এভাবে অভদ্র ভাষায় দাবি করতে হবে?


উমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) সহ্য করতে পারলেন না। তিনি তার স্বভাবজাত সেই বিখ্যাত উক্তিটি বললেন- ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি অনুমতি দিন, তার গলা থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলি?’


নবীজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক্ষেত্রে যেমন ক্ষমতা ছিল, তেমনি তিনি ন্যায় ছিলেন (কারণ, ঋণ পরিশোধের সময়ের পূর্বেই ইহুদি লোকটি তার চাদর ধরে অপমান করেছে)। ইহুদির অমার্জিত আচরণকে তিনি শাস্তি দিতে পারেন। ইহুদিরা তাকে নবী বলে স্বীকৃতি না দিক, তারা তাকে রাষ্ট্রপ্রধান, চিফ জাস্টিস হিসেবে তো স্বীকৃতি দেয় (মদিনা সনদের আলোকে)। নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইহুদিকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেবার অধিকার রাখেন।


কিন্তু তিনি উল্টো উমর ইবনুল খাত্তাবকে (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বললেন: ‘উমর, তোমার কাছ থেকে তো উত্তম ব্যবহার আশা করা যায়। তুমি এভাবে না বলে বরং আমাকে বলতে পারতে- ‘আপনি তার ঋণ পরিশোধ করুন’। কিংবা তাকে বলতে পারতে- আপনি সুন্দরভাবে ঋণের কথা বলতে পারতেন।’


অসুন্দরের জবাব সুন্দর দ্বারা, অনুত্তমের জবাব কিভাবে উত্তম দ্বারা দিতে হয় সেটা নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু)সহ উপস্থিত সাহাবীদেরকে শেখালেন।


অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উমরকে (রাদিয়াল্লাহু আনহু) নির্দেশ দিলেন- ‘উমর, যাও তার সাথে এবং তাকে তার ঋণ পরিশোধের পর আরো বিশ সা’ (৩২ কেজি) খেজুর দিও। কারণ, তুমি তাকে ভয় দেখিয়েছো।’


উমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) ইহুদিকে সাথে নিয়ে গেলেন। তাকে তার প্রাপ্য ঋণ প্রদান করলেন এবং সাথে আরো ৩২ কেজির মতো খেজুর দিলেন। ইহুদি তো অবাক! সে একে তো সময়ের আগেই পাওনা দাবি করেছে, তার উপর সবার সামনে নবীজিকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অপমান করেছে; তবুও নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে পাওনা দিয়ে দিলেন, সাথে দিচ্ছেন আরো ৩২ কেজি খেজুর!?


সে জিজ্ঞেস করলো, ‘অতিরিক্ত এগুলো কেন?’


উমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, ‘কারণ আমি তোমাকে হুমকি দিয়েছি। সেটার কাফফারা হিশেবে নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এগুলো দিতে বললেন।’


এটা শুনে ইহুদি বললো, ‘উমর, তুমি কি জানো আমি কে?’


উমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, ‘না, আমি জানি না। তুমি কে?’


ইহুদি বললো, ‘আমি যায়িদ ইবনে সু’নাহ।’


তার নাম শুনে উমরের (রাদিয়াল্লাহু আনহু) চক্ষু চড়কগাছ! যায়িদ ইবনে সু’নাহ? মদিনার সেই বিখ্যাত ইহুদি রাবাই (ইহুদিদের আলেম)? উমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) তার নাম জানতেন, কিন্তু তিনিই যে ওই ব্যক্তি, সেটা তিনি জানতেন না।


যায়িদ ইবনে সু’নাহ বললেন, ‘হ্যাঁ’ আমিই সেই ইহুদি রাবাই। আমাদের ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী মুহাম্মদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নবী হবার প্রমাণের যত ভবিষ্যৎবাণী পাওয়া যায়, সবগুলোই আমি তার মধ্যে পেয়েছি। শুধু দুটো বিষয় পরীক্ষা করা বাকি ছিলো।’


সেই দুটো ছিলো:


তাকে কেউ রাগালে তিনি সহনশীলতা দেখাবেন।


কোনো মূর্খ তার কাছে এসে মূর্খের মতো আচরণ করলে তিনি বরং সেই মূর্খের সাথে ভালো আচরণ করবেন। অর্থাৎ তিনি মন্দের জবাব ভালোর মাধ্যমে দিবেন, অনুত্তমের জবাব উত্তমের মাধ্যমে।


যায়িদ ইবনে সু’নাহ নবীজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মধ্যে সেই দুটো গুণও এবার দেখতে পান। তিনি নবীজিকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাগানো সত্ত্বেও নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সাথে রাগ করেননি; উল্টো তার পাওনা অর্থের বেশি তাকে দিয়েছেন।


এবার যায়িদ ইবনে সু’নাহ বললেন: ‘ও উমর, তুমি সাক্ষী থাকো- আমি আল্লাহকে আমার রব হিসেবে, ইসলামকে আমার ধর্ম হিসেবে এবং মুহাম্মদকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নবী হিসেবে মেনে নিলাম। আমার অনেক সম্পদ আছে। আমি আমার অর্ধেক সম্পদ ইসলামের তরে দান করে দিলাম।’


তথ্যসূত্র : সহীহ ইবনে হিব্বান : ২৮৮, আল-বায়হাকী : ১১০৬৬, মুস্তাদারক হাকিম : ৬৫৪৭। ইমাম হাকিম (রাহিমাহুল্লাহ) হাদিসটিকে ‘সহীহ’ বলেছেন।


* নবীজির সোহবতে সাহাবীগন ও সুন্দর আখলাকের মানুষ হিসেবে গড়ে উঠে। যে সাহিবীদের প্রশংসা আল্লাহ নিজে করেছেন । তাঁরা নিজেদের চেয়ে অন্যকে প্রাধান্য দিয়েছেন 

* নবীজির সাহাবীদের গুন বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহ বলেন٫তারা যত অভাবগ্রস্তই হোক না কেন নিজেদের চেয়ে অন্যদের অগ্রাধিকার দান করে ৫৯:হাশর-৯

وَ یُؤْثِرُوْنَ عَلٰۤى اَنْفُسِهِمْ وَ لَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ ﳴ وَ مَنْ یُّوْقَ شُحَّ نَفْسِهٖ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَۚ

* এক ব্যক্তি নবী (সা:)-এর নিকট এসে বলল٫আমি ক্ষুধায় কাতর হয়ে আছি (বুখারী ৩৭৯৮, মুসলিম ৫৪৮০,রিয়াদুস সালেহীন ২য় খন্ড হাদীস নং-৫৬৫

وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم فَقَالَ : إنِّي مَجْهُودٌ فَأرسَلَ إِلَى بَعْضِ نِسَائِهِ فَقَالَت : وَالَّذي بَعَثَكَ بِالحَقِّ مَا عَندِي إِلاَّ مَاءٌ ثُمَّ أَرْسَلَ إِلَى أُخْرَى فَقَالَتْ مِثلَ ذَلِكَ حَتَّى قُلْنَ كُلُّهُنَّ مِثلَ ذَلِكَ : لاَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالحَقِّ مَا عَندِي إِلاَّ مَاءٌ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم مَنْ يُضِيفُ هَذَا اللَّيْلَةَ ؟ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الأنْصَارِ : أنَا يَا رَسُولَ اللهِ فَانْطَلَقَ بِهِ إِلَى رَحْلِهِ فَقَالَ لامْرَأَتِهِ : أكرِمِي ضَيْفَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم - وفي روايةٍ قَالَ لامْرَأَتِهِ : هَلْ عَندَكِ شَيْءٌ ؟ فَقَالَتْ : لاَ إِلاَّ قُوتَ صِبيَانِي قَالَ: فَعَلِّليهم بِشَيْءٍ وَإذَا أرَادُوا العَشَاءَ فَنَوِّمِيهمْ وَإِذَا دَخَلَ ضَيْفُنَا فَأطْفِئي السِّرَاجَ وَأَرِيهِ أنَّا نَأكُلُ فَقَعَدُوا وَأكَلَ الضَّيْفُ وَبَاتَا طَاوِيَيْنِ فَلَمَّا أصْبَحَ غَدَا عَلَى النَّبيِّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم فَقَالَ لَقَدْ عَجِبَ الله مِنْ صَنِيعِكُمَا بِضَيْفِكُمَا اللَّيْلَةَ 


আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, এক লোক রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বলল, আমি চরম অনাহারে ভুগছি। তিনি তাঁর কোন এক সহধর্মিণীর নিকট লোক প্রেরণ করলে তিনি বললেন, যে স্রষ্টা আপনাকে সঠিক দীনসহ পাঠিয়েছেন তাঁর কসম! আমার নিকট পানি ব্যতীত আর কিছু নেই। তিনি অপর এক স্ত্রীর নিকট লোক প্রেরণ করলে তিনিও অনুরূপ কথা বললেন। এভাবে তাঁরা সবাই একই কথা বললেন যে, সে সত্তার কসম! যিনি আপনাকে সত্য দীনসহ প্রেরণ করেছেন, আমার কাছে পানি ব্যতীত আর কিছু নেই। তখন তিনি বললেন, আজ রাত্রে লোকটির কে অতিথিপরায়ণ হবে? আল্লাহ তার উপর দয়া করুন! তখন এক আন্সারী লোক উঠে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি। অতঃপর লোকটিকে নিয়ে আন্সারী নিজ বাড়িতে গেলেন এবং তাঁর সহধর্মিণীকে বললেন, তোমার নিকট কিছু আছে কি? সে বলল না। তবে সন্তানদের জন্য অল্প কিছু খাবার আছে। তিনি বললেন, তুমি তাদের কিছু একটা দিয়ে ব্যস্ত রাখো। আর যখন অতিথি ঘরে ঢুকবে, তখন তুমি আলোটা নিভিয়ে দেবে। আর তাকে বুঝাবে যে, আমরাও খাবার খাচ্ছি। সে (মেহমান) যখন খাওয়া আরম্ভ করবে তখন তুমি আলোর পাশে যেয়ে সেটা নিভিয়ে দেবে। রাবী বলেন, অতঃপর তারা বসে থাকলেন এবং অতিথি খেতে শুরু করলো। সকালে তিনি (আনসারী) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে আসলে, তিনি বললেনঃআজ রাত্রে অতিথির সঙ্গে তোমাদের উভয়ের ব্যবহারে আল্লাহ খুশী হয়েছেন। (ই.ফা. ৫১৮৬, ই.সে. ৫১৯৮)

  


সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৫২৫৪

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


* হযরত ইব্রাহিম (আ:) মেহমান নিয়ে খানা খাইতেন:


হযরত ইব্রাহীম (আ) এর জীবন

কাহীনি থেকে

একটা গল্প বলি। ইব্রাহীম (আ)

কখনো একা

খাবার খেতেন না। ভাগ্যে যখনই

যা কিছু

খাবার জুটতো, তা নিয়ে বসে

থাকতেন

কোনো মেহমানের আশায়।

মেহমান যদি না

আসত তা হলে রাস্তা থেকে

কাউকে ধরে

নিয়ে এসে এক সাথে বসে

খাবার খেতেন।

এমনি করে একদিন দুপুর বেলায়,

খাবারের সময়

হয়ে গেছে। কিন্তু বাসায়

কোনো মেহমান

আসেনি। তাই তিনি খাবার

সাজিয়ে

রেখে রাস্তার পাশে বসে

আছেন। যদি

কোনো মুসাফির পাওয়া যায়, এই

আশায়।

অনেকক্ষন পর তিনি দেখলেন,

অনেক দূরে

একটি লোক দেখা যাচ্ছে এবং

লোকটি

এইদিকেই আসছে। তিনি

অপেক্ষা করতে

লাগলেন। লোকটি কাছে

আসতেই ইব্রাহীম

(আ) জিজ্ঞাস করলেন, হে

মুসাফির তুমি কি

দুপুরের খাবার খেয়েছ? লোকটি

জবাব

দিলো, নাহ সে খায়নি এবং

তার সাথে

জানিয়ে দিলো সে খুবই

ক্ষুধার্ত। ইব্রাহীম

(আ) খুশী হয়ে হাত ধরে

লোকটিকে ঘরে

নিয়ে গেলেন এবং বললেন, যাও

ঐখানে

পানি আছে হাত-মুখ ধুয়ে আসো

তারপর

আমরা এক সাথে খাবার খাবো।

লোকটি

হাত মুখ ধুয়ে এসে খাবার'এর

সামনে বসলো।

এইবার ইব্রাহীম (আ) বললেন, নাও

আল্লাহর

নামে খাওয়া শুরু করো। এই কথা

শুনে

লোকটি হতভম্ব হয়ে বললেন,

আল্লাহ কে?

আমিতো তাঁকে চিনি না।

তাছাড়া তারঁ

নামে আমি খাবার শুরু করবো

কেনো?

এই কথা শুনে ইব্রাহীম (আ) প্রচন্ড

রেগে

গিয়ে বললেন, বলিস কিরে

বেটা? তুই

আল্লাহ কে চিনিস না? কাফির

কোথকার,

যা ভাগ এখান থেকে, তোর মত

কাফিরকে

আমি খাবার দিবনা। মুসাফির

লোকটি আর

কোনো কথা না বলে মনে দুঃখ

নিয়ে চলে

গেল। ইব্রাহীম (আ) আবার

রাস্তার সামনে

বসে অন্য কারো জন্যে অপেক্ষা

করতে

লাগলেন আর মনে মনে ভাবলেন '

ইস আল্লাহ

কি বাচাঁনোটাই না

বাঁচিয়েছেন। একটা

কাফিরের সাথে বসে এক

প্লেটে খাবার

খাওয়া! এইটা কি ভাবা যায়? কত

বড়

গুনাহটাই না হয়ে যেত, অল্পের

জন্য রক্ষা"।

এমন সময় ইব্রাহীম (আ) শুনতে

পেলেন আল্লাহ

(সো) তাঁকে বলছেন, " হে

ইব্রাহীম, আমাকে বিশ্বাস করে না সেটা তার আর আমার মধ্যকার ব্যাপার, কেন তুমি রুটি ফিরিয়ে নিলে, যাও তাকে ডেকে এনে আবার খেতে দাও। আমি

যদি দুনিয়ার সমস্ত

কাফিরদেরকে বেঁচে

থাকার সুযোগ দিতে পারি,

তাদের ক্ষুধায়

আহার যোগাতে পারি, তাহলে

তুমি

তাদের খাবার না দেওয়ার

কে?" এই কথা

শুনে ইব্রাহীম (আ) পাগলের মত

তাড়িয়ে

দেওয়া মুসাফিরের পিছনে

ছুটতে লাগলেন।

অবশেষে তিনি মুসাফিরকে

খুজে পেয়ে

ক্ষমা চেয়ে সব কিছু খুলে বললেন।

মুসাফির

তারঁ সমস্ত কথা শুনে বললেন,

তোমার আল্লাহ

যদি এই কথা বলে থাকেন তাহলে

সত্যিই

তিনি সকল কিছুর সৃস্টিকর্তা এবং

আমি তার

আনুগত্য মেনে ।

নিলাম

সুবাহানাল্লাহ! আল্লাহ কত দয়াশীল!

No comments

Powered by Blogger.