Header Ads

Header ADS

23 কুরবানীর প্রস্তুতি

২২: আল-হাজ্জ: ৩৭

لَنْ یَّنَالَ اللّٰهَ لُحُوْمُهَا وَ لَا دِمَآؤُهَا وَ لٰكِنْ یَّنَالُهُ التَّقْوٰى مِنْكُمْ

* আমলের ফলাফল নির্ভর করে,সহিহ বুখারী, ১

إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ

*  আদম আঃ দ্বিতীয় দল হরিনের পিঠে হাত বুলিয়ে দিলে নিয়্যাতের কারণে কস্তূরী থেকে বঞ্চিত হয়

* একদল শহীদ 

*  জনৈক আলেম বলেন , রিয়াকারের উপমা :সেই   পাথরকনা দ্বারা পরিপূর্ন ব্যাগ নিয়ে যাওয়া ব্যক্তির ন্যায়।

পুরস্কারের দিন বলা হবে তাদের দেখানোর জন্য আমল করেছো তাদের কাছে যাও

* যাদের আমলের মধ্যে রিয়া থাকবে, কেয়ামতের দিন এইগুলোর মূল্যয়ন হবেনা বরং এগুলো উড়িয়ে দেওয়া হবে,৩৯:যুমার:৪৭

وَ بَدَا لَهُمْ مِّنَ اللّٰهِ مَا لَمْ یَكُوْنُوْا یَحْتَسِبُوْنَ

২৫: আল-ফুরকান:২৩

وَ قَدِمْنَاۤ اِلٰى مَا عَمِلُوْا مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنٰهُ هَبَآءً مَّنْثُوْرًا

*  প্রশ্ন : জিলহজ মাসের প্রথম নয়দিন রোজা রাখা এবং সেই সঙ্গে দাড়ি, গোঁফ, চুল বা নখ কাটা


______________________________________


* নিয়তের নাম বরকত,যে কাজই করবেন সেটার নিয়ত ঠিক রাখবেন তবেই ফল পাবেন, নিয়তে বেজাল হলে হরিনের মত মাহরুম হতে হবে ৷ আদম (আ) যখন বেহেস্ত থেকে দুনিয়াতে আসলেন, তখন বনের কিছু হরিণ আদম নবীকে দেখার জন্য খুব ব্যাকুল হয়ে পড়ল। তাই তারা উনাকে দেখতে গেল। আদম নবীকে তারা মন ভরে দেখল এবং কথাবার্তা হল। হরিণগুলো বনে ফিরে যাওয়ার সময় আদম (আ) এদের পিঠে হাত বুলিয়ে দিলেন। উনার এই হাতের স্পর্শে এদের শরীর থেকে এতো সুগন্ধ আসতে লাগল যা অন্যান্য হরিণরা আশ্চর্য হয়ে গেল এবং তারাও এই সুগন্ধ নেয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে গেল। তাই তারাও ছুটল আদম নবীর নিকট। পূর্বের ন্যায় আদম (আ) তাদের পিঠেও হাত বুলিয়ে দিলেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এদের শরীর থেকে ঐ সুগন্ধ আর আসছে না। আদম নবীর নিকট (হাত) থেকে কি সুগন্ধ শেষ হয়ে গিয়েছিল? না কখনোই না। দুই দল হরিণের দুই উদ্দেশ্য ছিল। প্রথম দলের উদ্দেশ্য ছিল আদম (আ) কে দেখা। এদের অন্তরে প্রেম, মহব্বত ও ভক্তি ছিল। তাই তাদের উদ্দেশ্য তো পূরণ হলোই বরং তার চেয়েও বেশি কিছু পেল তারা। আর দ্বিতীয় দলের উদ্দেশ্য ছিল সুগন্ধ নেয়া, যা লোভ বা হিংসা জনিত ব্যপার। তাই তারা সেটা পেল না। বুখারী শরীফের প্রথম হাদীস "ইন্না মাল আমালু বিন নিয়্যাত"


  অর্থঃ প্রত্যেকটি কর্মের ফলাফ নিয়্যতের উপর নির্ভরশীল।

*  জনৈক আলেম বলেন , রিয়াকারের উপমা :সেই   পাথরকনা দ্বারা পরিপূর্ন ব্যাগ নিয়ে যাওয়া ব্যক্তির ন্যায়।


জনৈক আলেম বলেন , যে মানুষকে দেখানোর জন্য ইবাদত করবে তার উপমা হোলো সেই ব্যক্তির ন্যায় যে পাথরকনা দ্বারা পরিপূর্ন ব্যাগ নিয়ে বাজারে গেলো । তখন লোকেরা তার থলি দেখে বললো দেখো তার থলিটিতে কত টাকা !! এতে সে খুশী হোলো । অথচ এই পাথর-ভর্তি থলি দিয়ে সে কিছুই করতে পারবে না শুধুমাত্রে মানুষের প্রশংসা অর্জন ব্যতীত । রিয়াকারের উপমা হোলো ঠিক এই ব্যক্তির ন্যায় , যে পরকালে আল্লাহতালার নিকট কিছুই পাবে না । যেমন এই হাদিসে উল্লেখ আছে:


হযরত মুহম্মদ ইবনে লবীদ (রা:) থেকে বর্নিত । রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম ) বলেন “আমি তোমাদের ব্যাপারে ছোট শিরক থেকে খুব ভয় করছি । সাহাবীরা বললেন – ইয়া রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম ) ছোট শিরক কি ? রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম ) বললেন , তা হোলো “রিয়া” বা “লোক দেখানো ইবাদত” । যেদিন আল্লাহ তাআলা বান্দাদের আমলের পুরস্কার প্রদান করবেন , সেদিন রিয়াকারদের বলবেন, যাও, দুনিয়াতে যাদেরকে দেখানোর জন্য আমল করতে, তাদের নিটক যাও । দেখো তাদের নিকট কোনো পুরস্কার পাও কিনা ।


[মুসনাদে আহমদ]


Skip to main content

Home

 

ইসলাম

সনাতন

বৌদ্ধ

খ্রিস্টান

অন্যান্য

 ধর্ম ও জীবন

আপনার জিজ্ঞাসা

জিলহজ মাসে চুল, দাড়ি বা নখ কাটার বিধান কী?

অনলাইন ডেস্ক

১১:৪৯, ০২ আগস্ট ২০১৯


ampnotification

 Subscribe to Notifications

 


নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দ‍র্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ।


আপনার জিজ্ঞাসার ৫৯৭তম পর্বে জিলহজ মাসে চুল, দাড়ি বা নখ কাটার বিধান আছে কি না, সে বিষয়ে পল্লবী থেকে টেলিফোনে জানতে চেয়েছেন ডা. ওয়াজেদ। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া।


*  প্রশ্ন : জিলহজ মাসের প্রথম নয়দিন রোজা রাখা এবং সেই সঙ্গে দাড়ি, গোঁফ, চুল বা নখ কাটা— এগুলোর শরীয়ত সম্মত বিধান আছে কি?


উত্তর : রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জিলহজ মাসে কোরবানি করবে, তাহলে সে যেন তার শরীরের পশম এবং নখ না কাটে, কোরবানি করা পর্যন্ত।’ যদি কোনো ব্যক্তি কোরবানি করার নিয়ত করে থাকেন, তাহলে তিনি জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠা থেকে শুরু করে কোরবানি করা পর্যন্ত হাতের নখ, মাথার চুল বা শরীরের যে পশমগুলো রয়েছে, সেগুলো কাটবেন না। এটি কোরবানির সঙ্গে যুক্ত মাসয়ালা, রোজার সঙ্গে এটি যুক্ত নয়। এ বিধান শুধু ওই ব্যক্তির ওপর যিনি কোরবানি করবেন, পরিবারের সবার জন্য এ বিধান নয়। আবার এটাকে সবার জন্য সুন্নাহ মনে করার বিষয়ও এটি নয়।


একদল ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, ‍‍‌‌‍‍‌‌‌‌‘এই কাজটি মুস্তাহাব।’ আরেক দল ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, ‘এ কাজটি ওয়াজিব।’ তবে রাসুল (সা.)-এর নির্দেশনা থেকে বোঝা যায় যে, এ কাজটি গুরুত্বপূর্ণ, এতে কোনো সন্দেহ নেই। সুতরাং, যাঁরা কোরবানি করবেন তাঁদের জন্য উত্তম হলো তাঁরা চুল, দাড়ি, গোঁফ এবং নখ কোরবানি হওয়ার আগ পর্যন্ত কাটবেন না। কোরবানি হওয়ার পর এগুলো কাটা জায়েজ রয়েছে।


___________________


* এই কুরবানী হযরত আদম আঃ এর সময়ে থেকে শুরু হয়েছে’,। হযরত ইব্রাহীম আঃ এর সময় তার চুরান্ত রূপ নেয়। হযরত ইব্রাহীম আঃ ছিলেন আল্লাহর খলিল। ফেরেস্তাগন ইব্রাহীম আঃ কে পরিক্ষা করতে আসে। ফেরেস্তার মুখে আল্লাহর নাম শুনে সব সম্পদ দিয়ে দেন।


প্রতিটি কাজের ফলাফল নিয়্যতের উপর নির্ভরশীল


* প্রতিটি কাজের পূর্ণ সোওয়াব পাওয়া যাবে তখন যখন কাজটি আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রত্যাশা নিয়ে করা হবে এবং কাজের প্রতি মহব্বত থাকবে


* নিয়তের নাম বরকত,যে কাজই করবেন সেটার নিয়ত ঠিক রাখবেন তবেই ফল পাবেন, নিয়তে বেজাল হলে হরিনের মত মাহরুম হতে হবে ৷


* একদল শহীদ আলেম দানবীর জাহান্নামে যাবে সহিহ মুসলিম, ৪৮১৭ সহিহ


* পতিতা নারী কুকুরকে পানি পান করে ক্ষমা পেল ও পানি পানের মধ্যে আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রত্যাশা ছিল আলেম দানবীর হাজী হজ্জ করার মধ্যে লৌকিকতা ছিল 


__________________________________________


23 কুরবানীর প্রস্তুতি 2


২২: আল-হাজ্জ,:আয়াত: ৩৭,


لَنْ یَّنَالَ اللّٰهَ لُحُوْمُهَا وَ لَا دِمَآؤُهَا وَ لٰكِنْ یَّنَالُهُ التَّقْوٰى مِنْكُمْ١ؕ كَذٰلِكَ سَخَّرَهَا لَكُمْ لِتُكَبِّرُوا اللّٰهَ عَلٰى مَا هَدٰىكُمْ١ؕ وَ بَشِّرِ الْمُحْسِنِیْنَ


তাদের গোশতও আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, তাদের রক্তও না। কিন্তু তাঁর কাছে পৌঁছে যায় তোমাদের তাকওয়া। তিনি তাদেরকে তোমাদের জন্য এমনভাবে অনুগত করে দিয়েছেন যাতে তাঁর দেয়া পথনির্দেশনার ভিত্তিতে তোমরা তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করো। আর হে নবী! সৎকর্মশীলদেরকে সুসংবাদ দিয়ে দাও।


প্রতিটি কাজের ফলাফল নিয়্যতের উপর নির্ভরশীল


* আমলের ফলাফল নির্ভর করে,সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১


إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ


* প্রতিটি কাজের পূর্ণ সোওয়াব পাওয়া যাবে তখন যখন যখন কাজটি আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রত্যাশা নিয়ে করা হবে এবং কাজের প্রতি মহব্বত থাকবে


* ইখলাস কি? কি কারণে অনেক শহীদ, আলেম ও দানশীল ব্যক্তি জাহান্নামে যাবে?!


حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ الْحَارِثِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، حَدَّثَنِي يُونُسُ بْنُ يُوسُفَ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ، قَالَ تَفَرَّقَ النَّاسُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، فَقَالَ لَهُ نَاتِلُ أَهْلِ الشَّامِ أَيُّهَا الشَّيْخُ حَدِّثْنَا حَدِيثًا سَمِعْتَهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ نَعَمْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ إِنَّ أَوَّلَ النَّاسِ يُقْضَى يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَيْهِ رَجُلٌ اسْتُشْهِدَ فَأُتِيَ بِهِ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا قَالَ فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا قَالَ قَاتَلْتُ فِيكَ حَتَّى اسْتُشْهِدْتُ ‏.‏ قَالَ كَذَبْتَ وَلَكِنَّكَ قَاتَلْتَ لأَنْ يُقَالَ جَرِيءٌ ‏.‏ فَقَدْ قِيلَ ‏.‏ ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ حَتَّى أُلْقِيَ فِي النَّارِ وَرَجُلٌ تَعَلَّمَ الْعِلْمَ وَعَلَّمَهُ وَقَرَأَ الْقُرْآنَ فَأُتِيَ بِهِ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا قَالَ فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا قَالَ تَعَلَّمْتُ الْعِلْمَ وَعَلَّمْتُهُ وَقَرَأْتُ فِيكَ الْقُرْآنَ ‏.‏ قَالَ كَذَبْتَ وَلَكِنَّكَ تَعَلَّمْتَ الْعِلْمَ لِيُقَالَ عَالِمٌ ‏.‏ وَقَرَأْتَ الْقُرْآنَ لِيُقَالَ هُوَ قَارِئٌ ‏.‏ فَقَدْ قِيلَ ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ حَتَّى أُلْقِيَ فِي النَّارِ ‏.‏ وَرَجُلٌ وَسَّعَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَأَعْطَاهُ مِنْ أَصْنَافِ الْمَالِ كُلِّهِ فَأُتِيَ بِهِ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا قَالَ فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا قَالَ مَا تَرَكْتُ مِنْ سَبِيلٍ تُحِبُّ أَنْ يُنْفَقَ فِيهَا إِلاَّ أَنْفَقْتُ فِيهَا لَكَ قَالَ كَذَبْتَ وَلَكِنَّكَ فَعَلْتَ لِيُقَالَ هُوَ جَوَادٌ ‏.‏ فَقَدْ قِيلَ ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ ثُمَّ أُلْقِيَ فِي النَّارِ ‏"‏ ‏.‏


সুলাইমান ইবনু ইয়াসার (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, একদা লোকজন যখন আবূ হুরায়রা্‌ (রাঃ)-এর নিকট থেকে বিদায় নিচ্ছিল, তখন সিরিয়াবাসী নাতিল (রহঃ) বললেন, হে শায়খ! আপনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট থেকে শুনেছেন এমন একখানা হাদীস আমাদেরকে শুনান। তিনি বলেন, হ্যাঁ! (শুনাবো)। আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যার বিচার করা হবে, সে হচ্ছে এমন একজন যে শহীদ হয়েছিল। তাঁকে উপস্থিত করা হবে এবং আল্লাহ তাঁর নিয়ামাতরাশির কথা তাকে বলবেন এবং সে তার সবটাই চিনতে পারবে (এবং যথারীতি তার স্বীকারোক্তিও করবে।) তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, এর বিনিময়ে‌ ‘কী আমাল করেছিলে?’ সে বলবে, আমি তোমারই পথে যুদ্ধ করেছি এমনকি শেষ পর্যন্ত শহীদ হয়েছি। তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, তুমি মিথ্যা বলেছো। তুমি বরং এ জন্যেই যুদ্ধ করেছিলে যাতে লোকে তোমাকে বলে, তুমি বীর। তা বলা হয়েছে, এরপর নির্দেশ দেয়া হবে। সে মতে তাকে উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তারপর এমন এক ব্যক্তির বিচার করা হবে যে জ্ঞান অর্জন ও বিতরণ করেছে এবং কুরআন মাজীদ অধ্যয়ন করেছে। তখন তাকে হাযির করা হবে। আল্লাহ তা’আলা তাঁর প্রদত্ত নি’আমাতের কথা তাকে বলবেন এবং সে তা চিনতে পারবে (এবং যথারীতি তার স্বীকারোক্তিও করবে।) তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, এত বড় নি’আমাত পেয়ে বিনিময়ে তুমি কী করলে? জবাবে সে বলবে, আমি জ্ঞান অর্জন করেছি এবং তা শিক্ষা দিয়েছি এবং তোমারই সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কুরআন অধ্যয়ন করেছি। জবাবে আল্লাহ তা’আলা বলবেন, তুমি মিথ্যা বলেছো। তুমি তো জ্ঞান অর্জন করেছিলে এজন্যে যাতে লোকে তোমাকে জ্ঞানী বলে। কুরআন তিলাওয়াত করেছিলে এ জন্যে যাতে লোকে বলে, তুমি একজন ক্বারী। তা বলা হয়েছে। তারপর নির্দেশ দেয়া হবে, সে মতে তাকেও উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তারপর এমন এক ব্যক্তির বিচার হবে যাকে আল্লাহ তা’আলা সচ্ছলতা এবং সর্ববিধ বিত্ত-বৈভব দান করেছেন। তাকে উপস্থিত করা হবে এবং তাকে প্রদত্ত নি’আমাতসমূহের কথা তাঁকে বলবেন। সে তা চিনতে পারবে (স্বীকারোক্তিও করবে।) তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, ‘এসব নি’আমাতের বিনিময়ে তুমি কী ‘আমল করেছো?’ জবাবে সে বলবে, সম্পদ ব্যয়ের এমন কোন খাত নেই যাতে সম্পদ ব্যয় করা তুমি পছন্দ কর, আমি সে খাতে তোমার সন্তুষ্টির জন্যে ব্যয় করেছি। তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছো। তুমি বরং এ জন্যে তা করেছিলে যাতে লোকে তোমাকে ‘দানবীর’ বলে অভিহিত করে। তা বলা হয়েছে। তারপর নির্দেশ দেয়া হবে। সে মতে তাকেও উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। (ই.ফা. ৪৭৭০, ই.সে. ৪৭৭১)


  


সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৪৮১৭


হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD


 ইখলাস হলো আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের চাবিকাঠি। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন তিনি রাসুল (সা.) কে বলতে শুনেছেন- কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম এমন এক ব্যক্তির ব্যাপারে ফয়সালা হবে যে শহীদ হয়েছিল। তাকে আনা হবে এবং তাকে যেসব সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছিল তা পেশ করা হবে। সে তা চিনতে পারবে। আল্লাহ তা’য়ালা তাকে জিজ্ঞেস করবেন, ‘আমি যে সমস্ত নিয়ামত তোমাকে দিয়েছিলাম, তার বিনিময়ে তুমি কি কাজ করেছ?’ সে বলবে, আমি আপনার পথে লড়াই করে শহীদ হয়েছি। তিনি বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। বরং তুমি এজন্য লড়াই করেছ যে, লোকেরা তোমাকে বীর বাহাদুর বলবে! আর তা বলাও হয়েছে। অতঃপর তার সম্বন্ধে নির্দেশ দেওয়া হবে এবং তাকে উপুড় করে টেনে নিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। অতঃপর আরেক ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হবে, সে ইলম অর্জন করেছে, তা লোকদের শিক্ষা দিয়েছে আর কুরআন পাঠ করেছে। তাকে উপস্থিত করা হবে এবং তাকে দেওয়া সুযোগ সুবিধাগুলোও তার সামনে তুলে ধরা হবে। সে তা দেখে চিনতে পারবে। তুমি তোমার নিয়ামতের কি সদ্ব্যবহার করেছ? সে বলবে আমি ইলম অর্জন করেছি, লোকদের তা শিক্ষা দিয়েছি এবং আপনার সন্তুষ্টির জন্য কুরআন পাঠ করেছি। আল্লাহ বলবেন, তুমি মিথ্যা কথা বলছ। বরং তুমি এই উদ্দেশ্যে বিদ্যা অর্জন করেছিলে যে, লোকেরা তোমাকে আলেম না বিদ্বান বলবে, এবং কুরআন এই জন্য পাঠ করেছিলে যে, তোমাকে ‘ক্বারী’ বলা হবে। আর তা বলাও হয়েছে। অতঃপর তার সম্বন্ধে নির্দেশ দেওয়া হবে এবং তাকে উপুড় করে টেনে নিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। অতঃপর আরেক ব্যক্তিকে আনা হবে, তাকে আল্লাহ অজস্র ধন দৌলত দান করেছেন এবং নানা প্রকারের ধন সম্পদ দিয়েছেন। তাকে দেওয়া সুযোগ সুবিধাগুলোও তার সামনে তুলে ধরা হবে। সে তা দেখে চিনতে পারবে। আল্লাহ জিজ্ঞেস করবেন, তোমার এ সম্পদ দ্বারা তুমি কি কাজ করেছ? সে বলবে, যেখানে ব্যয় করলে আপনি সন্তুষ্ট হবেন এমন কোন খাত আমি বাদ দেইনি বরং সেখানেই খরচ করেছি আপনার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে। মহান আল্লাহ বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। বরং তুমি এই জন্য দান করেছ যে, লোকেরা তোমাকে দাতা বলবে। আর তা বলাও হয়েছে। অতঃপর তার সম্বন্ধে নির্দেশ দেওয়া হবে এবং তাকে উপুড় করে টেনে নিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। (সহীহ মুসলিম : ৪৭৭১ ইফা) ইখলাস কি?


 কেবলমাত্র আল্লাহ সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে যাবতীয় কাজ সম্পাদন করার নামই হলো ইখলাস।


* আমরা অনেকেই হয়ত জান্নাতবাসী পতিতার গল্পটা শুনেছি যে কিনা শুধুমাত্র পিপাসায় করতে থাকা একটা কুকুরকে পানি পান করানোর বিনিময়ে জান্নাতে যাবে। এখন আমার প্রশ্ন, এই সামান্য কাজের বিনিময়েই জান্নাত পেয়ে গেল সে??! ব্যাপারটা কি এতই সহজ যে শুধু ওইটুকু কাজের জন্যই জান্নাত পেয়ে গেল সে? হতেই পারেনা এটা। কেননা একটু আগেই তো জানলাম আমরা, এত সৎকাজ করার পরও এক জ্ঞানী ব্যক্তি, এক শহীদ এবং একজন দানশীল ব্যক্তির জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবার গল্প। আসলে মূল পার্থক্যটা হলো ইখলাস। এই সামান্য কাজটা করেই ওই মহিলা জান্নাতে যাবে কেননা সেই কাজটা ছিল কেবলমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্ট করবার জন্য। আর এতসব সৎকাজের পরও উপরোক্ত তিন ব্যক্তি জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে কেননা সেসব কাজ ছিল লোকের প্রশংসা অর্জনের জন্য। দেখুন নিয়তের এই সামান্য তারতম্যের পরিণতি কি! এজন্যই বিজ্ঞ আলেমগণ সবসময় বলে থাকেন আমাদের প্রত্যেকটা কাজের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন।


23 কুরবানীর প্রস্তুতি 2


২২: আল-হাজ্জ,:আয়াত: ৩৭,


لَنْ یَّنَالَ اللّٰهَ لُحُوْمُهَا وَ لَا دِمَآؤُهَا وَ لٰكِنْ یَّنَالُهُ التَّقْوٰى مِنْكُمْ١ؕ كَذٰلِكَ سَخَّرَهَا لَكُمْ لِتُكَبِّرُوا اللّٰهَ عَلٰى مَا هَدٰىكُمْ١ؕ وَ بَشِّرِ الْمُحْسِنِیْنَ


তাদের গোশতও আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, তাদের রক্তও না। কিন্তু তাঁর কাছে পৌঁছে যায় তোমাদের তাকওয়া। তিনি তাদেরকে তোমাদের জন্য এমনভাবে অনুগত করে দিয়েছেন যাতে তাঁর দেয়া পথনির্দেশনার ভিত্তিতে তোমরা তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করো। আর হে নবী! সৎকর্মশীলদেরকে সুসংবাদ দিয়ে দাও।


প্রতিটি কাজের ফলাফল নিয়্যতের উপর নির্ভরশীল


* আমলের ফলাফল নির্ভর করে,সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১


إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ


* প্রতিটি কাজের পূর্ণ সোওয়াব পাওয়া যাবে তখন যখন যখন কাজটি আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রত্যাশা নিয়ে করা হবে এবং কাজের প্রতি মহব্বত থাকবে


* নিয়তের নাম বরকত,যে কাজই করবেন সেটার নিয়ত ঠিক রাখবেন তবেই ফল পাবেন, নিয়তে বেজাল হলে হরিনের মত মাহরুম হতে হবে ৷ আদম (আ) যখন বেহেস্ত থেকে দুনিয়াতে আসলেন, তখন বনের কিছু হরিণ আদম নবীকে দেখার জন্য খুব ব্যাকুল হয়ে পড়ল। তাই তারা উনাকে দেখতে গেল। আদম নবীকে তারা মন ভরে দেখল এবং কথাবার্তা হল। হরিণগুলো বনে ফিরে যাওয়ার সময় আদম (আ) এদের পিঠে হাত বুলিয়ে দিলেন। উনার এই হাতের স্পর্শে এদের শরীর থেকে এতো সুগন্ধ আসতে লাগল যা অন্যান্য হরিণরা আশ্চর্য হয়ে গেল এবং তারাও এই সুগন্ধ নেয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে গেল। তাই তারাও ছুটল আদম নবীর নিকট। পূর্বের ন্যায় আদম (আ) তাদের পিঠেও হাত বুলিয়ে দিলেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এদের শরীর থেকে ঐ সুগন্ধ আর আসছে না। আদম নবীর নিকট (হাত) থেকে কি সুগন্ধ শেষ হয়ে গিয়েছিল? না কখনোই না। দুই দল হরিণের দুই উদ্দেশ্য ছিল। প্রথম দলের উদ্দেশ্য ছিল আদম (আ) কে দেখা। এদের অন্তরে প্রেম, মহব্বত ও ভক্তি ছিল। তাই তাদের উদ্দেশ্য তো পূরণ হলোই বরং তার চেয়েও বেশি কিছু পেল তারা। আর দ্বিতীয় দলের উদ্দেশ্য ছিল সুগন্ধ নেয়া, যা লোভ বা হিংসা জনিত ব্যপার। তাই তারা সেটা পেল না। বুখারী শরীফের প্রথম হাদীস "ইন্না মাল আমালু বিন নিয়্যাত"


  অর্থঃ প্রত্যেকটি কর্মের ফলাফ নিয়্যতের উপর নির্ভরশীল।


* ইখলাস কি? কি কারণে অনেক শহীদ, আলেম ও দানশীল ব্যক্তি জাহান্নামে যাবে?!


حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ الْحَارِثِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، حَدَّثَنِي يُونُسُ بْنُ يُوسُفَ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ، قَالَ تَفَرَّقَ النَّاسُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، فَقَالَ لَهُ نَاتِلُ أَهْلِ الشَّامِ أَيُّهَا الشَّيْخُ حَدِّثْنَا حَدِيثًا سَمِعْتَهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ نَعَمْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ إِنَّ أَوَّلَ النَّاسِ يُقْضَى يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَيْهِ رَجُلٌ اسْتُشْهِدَ فَأُتِيَ بِهِ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا قَالَ فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا قَالَ قَاتَلْتُ فِيكَ حَتَّى اسْتُشْهِدْتُ ‏.‏ قَالَ كَذَبْتَ وَلَكِنَّكَ قَاتَلْتَ لأَنْ يُقَالَ جَرِيءٌ ‏.‏ فَقَدْ قِيلَ ‏.‏ ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ حَتَّى أُلْقِيَ فِي النَّارِ وَرَجُلٌ تَعَلَّمَ الْعِلْمَ وَعَلَّمَهُ وَقَرَأَ الْقُرْآنَ فَأُتِيَ بِهِ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا قَالَ فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا قَالَ تَعَلَّمْتُ الْعِلْمَ وَعَلَّمْتُهُ وَقَرَأْتُ فِيكَ الْقُرْآنَ ‏.‏ قَالَ كَذَبْتَ وَلَكِنَّكَ تَعَلَّمْتَ الْعِلْمَ لِيُقَالَ عَالِمٌ ‏.‏ وَقَرَأْتَ الْقُرْآنَ لِيُقَالَ هُوَ قَارِئٌ ‏.‏ فَقَدْ قِيلَ ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ حَتَّى أُلْقِيَ فِي النَّارِ ‏.‏ وَرَجُلٌ وَسَّعَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَأَعْطَاهُ مِنْ أَصْنَافِ الْمَالِ كُلِّهِ فَأُتِيَ بِهِ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا قَالَ فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا قَالَ مَا تَرَكْتُ مِنْ سَبِيلٍ تُحِبُّ أَنْ يُنْفَقَ فِيهَا إِلاَّ أَنْفَقْتُ فِيهَا لَكَ قَالَ كَذَبْتَ وَلَكِنَّكَ فَعَلْتَ لِيُقَالَ هُوَ جَوَادٌ ‏.‏ فَقَدْ قِيلَ ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ ثُمَّ أُلْقِيَ فِي النَّارِ ‏"‏ ‏.‏


সুলাইমান ইবনু ইয়াসার (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, একদা লোকজন যখন আবূ হুরায়রা্‌ (রাঃ)-এর নিকট থেকে বিদায় নিচ্ছিল, তখন সিরিয়াবাসী নাতিল (রহঃ) বললেন, হে শায়খ! আপনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট থেকে শুনেছেন এমন একখানা হাদীস আমাদেরকে শুনান। তিনি বলেন, হ্যাঁ! (শুনাবো)। আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যার বিচার করা হবে, সে হচ্ছে এমন একজন যে শহীদ হয়েছিল। তাঁকে উপস্থিত করা হবে এবং আল্লাহ তাঁর নিয়ামাতরাশির কথা তাকে বলবেন এবং সে তার সবটাই চিনতে পারবে (এবং যথারীতি তার স্বীকারোক্তিও করবে।) তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, এর বিনিময়ে‌ ‘কী আমাল করেছিলে?’ সে বলবে, আমি তোমারই পথে যুদ্ধ করেছি এমনকি শেষ পর্যন্ত শহীদ হয়েছি। তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, তুমি মিথ্যা বলেছো। তুমি বরং এ জন্যেই যুদ্ধ করেছিলে যাতে লোকে তোমাকে বলে, তুমি বীর। তা বলা হয়েছে, এরপর নির্দেশ দেয়া হবে। সে মতে তাকে উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তারপর এমন এক ব্যক্তির বিচার করা হবে যে জ্ঞান অর্জন ও বিতরণ করেছে এবং কুরআন মাজীদ অধ্যয়ন করেছে। তখন তাকে হাযির করা হবে। আল্লাহ তা’আলা তাঁর প্রদত্ত নি’আমাতের কথা তাকে বলবেন এবং সে তা চিনতে পারবে (এবং যথারীতি তার স্বীকারোক্তিও করবে।) তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, এত বড় নি’আমাত পেয়ে বিনিময়ে তুমি কী করলে? জবাবে সে বলবে, আমি জ্ঞান অর্জন করেছি এবং তা শিক্ষা দিয়েছি এবং তোমারই সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কুরআন অধ্যয়ন করেছি। জবাবে আল্লাহ তা’আলা বলবেন, তুমি মিথ্যা বলেছো। তুমি তো জ্ঞান অর্জন করেছিলে এজন্যে যাতে লোকে তোমাকে জ্ঞানী বলে। কুরআন তিলাওয়াত করেছিলে এ জন্যে যাতে লোকে বলে, তুমি একজন ক্বারী। তা বলা হয়েছে। তারপর নির্দেশ দেয়া হবে, সে মতে তাকেও উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তারপর এমন এক ব্যক্তির বিচার হবে যাকে আল্লাহ তা’আলা সচ্ছলতা এবং সর্ববিধ বিত্ত-বৈভব দান করেছেন। তাকে উপস্থিত করা হবে এবং তাকে প্রদত্ত নি’আমাতসমূহের কথা তাঁকে বলবেন। সে তা চিনতে পারবে (স্বীকারোক্তিও করবে।) তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, ‘এসব নি’আমাতের বিনিময়ে তুমি কী ‘আমল করেছো?’ জবাবে সে বলবে, সম্পদ ব্যয়ের এমন কোন খাত নেই যাতে সম্পদ ব্যয় করা তুমি পছন্দ কর, আমি সে খাতে তোমার সন্তুষ্টির জন্যে ব্যয় করেছি। তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছো। তুমি বরং এ জন্যে তা করেছিলে যাতে লোকে তোমাকে ‘দানবীর’ বলে অভিহিত করে। তা বলা হয়েছে। তারপর নির্দেশ দেয়া হবে। সে মতে তাকেও উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। (ই.ফা. ৪৭৭০, ই.সে. ৪৭৭১)


  


সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৪৮১৭


হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD


 ইখলাস হলো আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের চাবিকাঠি। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন তিনি রাসুল (সা.) কে বলতে শুনেছেন- কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম এমন এক ব্যক্তির ব্যাপারে ফয়সালা হবে যে শহীদ হয়েছিল। তাকে আনা হবে এবং তাকে যেসব সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছিল তা পেশ করা হবে। সে তা চিনতে পারবে। আল্লাহ তা’য়ালা তাকে জিজ্ঞেস করবেন, ‘আমি যে সমস্ত নিয়ামত তোমাকে দিয়েছিলাম, তার বিনিময়ে তুমি কি কাজ করেছ?’ সে বলবে, আমি আপনার পথে লড়াই করে শহীদ হয়েছি। তিনি বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। বরং তুমি এজন্য লড়াই করেছ যে, লোকেরা তোমাকে বীর বাহাদুর বলবে! আর তা বলাও হয়েছে। অতঃপর তার সম্বন্ধে নির্দেশ দেওয়া হবে এবং তাকে উপুড় করে টেনে নিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। অতঃপর আরেক ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হবে, সে ইলম অর্জন করেছে, তা লোকদের শিক্ষা দিয়েছে আর কুরআন পাঠ করেছে। তাকে উপস্থিত করা হবে এবং তাকে দেওয়া সুযোগ সুবিধাগুলোও তার সামনে তুলে ধরা হবে। সে তা দেখে চিনতে পারবে। তুমি তোমার নিয়ামতের কি সদ্ব্যবহার করেছ? সে বলবে আমি ইলম অর্জন করেছি, লোকদের তা শিক্ষা দিয়েছি এবং আপনার সন্তুষ্টির জন্য কুরআন পাঠ করেছি। আল্লাহ বলবেন, তুমি মিথ্যা কথা বলছ। বরং তুমি এই উদ্দেশ্যে বিদ্যা অর্জন করেছিলে যে, লোকেরা তোমাকে আলেম না বিদ্বান বলবে, এবং কুরআন এই জন্য পাঠ করেছিলে যে, তোমাকে ‘ক্বারী’ বলা হবে। আর তা বলাও হয়েছে। অতঃপর তার সম্বন্ধে নির্দেশ দেওয়া হবে এবং তাকে উপুড় করে টেনে নিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। অতঃপর আরেক ব্যক্তিকে আনা হবে, তাকে আল্লাহ অজস্র ধন দৌলত দান করেছেন এবং নানা প্রকারের ধন সম্পদ দিয়েছেন। তাকে দেওয়া সুযোগ সুবিধাগুলোও তার সামনে তুলে ধরা হবে। সে তা দেখে চিনতে পারবে। আল্লাহ জিজ্ঞেস করবেন, তোমার এ সম্পদ দ্বারা তুমি কি কাজ করেছ? সে বলবে, যেখানে ব্যয় করলে আপনি সন্তুষ্ট হবেন এমন কোন খাত আমি বাদ দেইনি বরং সেখানেই খরচ করেছি আপনার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে। মহান আল্লাহ বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। বরং তুমি এই জন্য দান করেছ যে, লোকেরা তোমাকে দাতা বলবে। আর তা বলাও হয়েছে। অতঃপর তার সম্বন্ধে নির্দেশ দেওয়া হবে এবং তাকে উপুড় করে টেনে নিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। (সহীহ মুসলিম : ৪৭৭১ ইফা) ইখলাস কি?


 কেবলমাত্র আল্লাহ সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে যাবতীয় কাজ সম্পাদন করার নামই হলো ইখলাস।


* আমরা অনেকেই হয়ত জান্নাতবাসী পতিতার গল্পটা শুনেছি যে কিনা শুধুমাত্র পিপাসায় করতে থাকা একটা কুকুরকে পানি পান করানোর বিনিময়ে জান্নাতে যাবে। এখন আমার প্রশ্ন, এই সামান্য কাজের বিনিময়েই জান্নাত পেয়ে গেল সে??! ব্যাপারটা কি এতই সহজ যে শুধু ওইটুকু কাজের জন্যই জান্নাত পেয়ে গেল সে? হতেই পারেনা এটা। কেননা একটু আগেই তো জানলাম আমরা, এত সৎকাজ করার পরও এক জ্ঞানী ব্যক্তি, এক শহীদ এবং একজন দানশীল ব্যক্তির জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবার গল্প। আসলে মূল পার্থক্যটা হলো ইখলাস। এই সামান্য কাজটা করেই ওই মহিলা জান্নাতে যাবে কেননা সেই কাজটা ছিল কেবলমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্ট করবার জন্য। আর এতসব সৎকাজের পরও উপরোক্ত তিন ব্যক্তি জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে কেননা সেসব কাজ ছিল লোকের প্রশংসা অর্জনের জন্য। দেখুন নিয়তের এই সামান্য তারতম্যের পরিণতি কি! এজন্যই বিজ্ঞ আলেমগণ সবসময় বলে থাকেন আমাদের প্রত্যেকটা কাজের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন।




চুল, নখ, মোচ ইত্যাদি না কাটা


যিলহজ্বের চাঁদ দেখার পর থেকে কুরবানীর আগ পর্যন্ত নিজের নখ, চুল, মোচ, নাভীর নিচের পশম ইত্যাদি না কাটা। এটা মুস্তাহাব আমল।


হযরত উম্মে সালামা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-


إذا رأيتم هلال ذي الحجة وأراد أحدكم أن يضحي فليمسك عن شعره وأظفاره.


তোমরা যদি যিলহজ্ব মাসের চাঁদ দেখতে পাও আর তোমাদের কেউ কুরবানী করার ইচ্ছা করে তবে সে যেন স্বীয় চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকে।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৯৭৭; জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৫২৩; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৭৯১; সুনানে নাসায়ী, হাদীস : ৪৩৬২; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৫৮৯৭


যে ব্যক্তি কুরবানী করতে সক্ষম নয় সেও এ আমল পালন করবে। অর্থাৎ নিজের চুল, নখ, গোঁফ ইত্যাদি কাটবে না; বরং তা কুরবানীর দিন কাটবে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-


أمرت بيوم الأضحى جعله الله عيدا لهذه الأمة. قال له رجل :يا رسول الله! أرأيت إن لم أجد إلا منيحة أنثى أفأضحي بها؟ قال : لا، ولكن خذ من شعرك وأظفارك وتقص شاربك وتحلق عانتك، فذلك تمام أضحيتك.


আমি কুরবানীর দিন সম্পর্কে আদিষ্ট হয়েছি (অর্থাৎ এ দিবসে কুরবানী করার আদেশ করা হয়েছে।) আল্লাহ তাআলা তা এ উম্মতের জন্য ঈদ হিসাবে নির্ধারণ করেছেন। এক ব্যক্তি আরজ করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি আমার কাছে শুধু একটি মানীহা থাকে অর্থাৎ যা শুধু দুধপানের জন্য দেওয়া হয়েছে? আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না; বরং সেদিন তুমি তোমার চুল কাটবে (মুন্ডাবে বা ছোট করবে), নখ কাটবে, মোচ এবং নাভীর নিচের পশম পরিষ্কার করবে। এটাই আল্লাহর কাছে তোমার পূর্ণ কুরবানী বলে গণ্য হবে।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৬৫৭৫; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৭৭৩; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৭৮৯; সুনানে নাসায়ী, হাদীস : ৪৩৬৫


অর্থাৎ যারা কুরবানী করতে সক্ষম নয় তারাও যেন মুসলমানদের সাথে ঈদের আনন্দ ও খুশি উদযাপনে অংশীদার হয়। তারা এগুলো কর্তন করেও পরিপূর্ণ সওয়াবের অধিকারী হবে। অনুরূপভাবে হাজীদের সাদৃশ্য অবলম্বনকারী হবে।

No comments

Powered by Blogger.