21 গুনাহের অনুপাতে বিপদ ঈমানের অনুপাতে পরীক্ষা
21/ গুনাহ হচ্ছে বিপদের মূল কারণ গুনাহ ছার বালা মসিবত থেকে বাঁচো
* গুনাহের অনুপাতে বিপদ গুনা যত বড় বিপদ ততো বড়, ঈমানের অনুপাতে পরীক্ষা ইমাম যতো মজবুত পরীক্ষা কত কঠিন। নবীদের ঈমান ছিল মজবুত তাদের পরীক্ষা ছিল কঠিন। হযরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর যেমন ছিল তেমন কঠিন ছিল কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়েছে হযরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু কে
* গুনাহের কারনে মহিলার আকৃতি পরিবর্তন হইয়া যায়:
একেক গুনাহর কারণে একেক রকম পেরেশানী আসে । এমন গুনাহুও আছে যার দরূণ মানুষের আকৃতি পশুর আকৃতিতে রূপান্তরিত হয়ে যায় । এরূপ একটি ঘটনা ঘটেছে ভারতের জব্বল পুর জেলায় ।
* আমরা আমাদের গুনাহ দুর করতে পারলেই সব মসিবত দুর হয়ে যাবে
কুয়ার মধ্যে মরা বিড়াল
অন্যায় কাজে বাধা না দেওয়ার ফলে বিপদ আসে
* দাউদ আঃ এর সময়ে নবীর নির্দেশ পালন না করায় আল্লাহ তাদের বানর বানিয়ে দেন।
* বিপদ আসে দুই কারণে এক আযাব হিসেবে বাঁচ ৩০: আর-রূম:৪১
ظَهَرَ الْفَسَادُ فِی الْبَرِّ وَ الْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ اَیْدِی النَّاسِ لِیُذِیْقَهُمْ بَعْضَ الَّذِیْ عَمِلُوْا لَعَلَّهُمْ یَرْجِعُوْنَ
দুই পরিক্ষা মুলক ভাবে
وَ لَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَیْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَ الْجُوْعِ وَ نَقْصٍ مِّنَ الْاَمْوَالِ وَ الْاَنْفُسِ وَ الثَّمَرٰتِ١ؕ وَ بَشِّرِ الصّٰبِرِیْنَۙ
* যে জমিনে নবীকে নিয়ে কটুক্তি করা হয়। যে জমিন আল্লাহর নাফরমানি কাজ চলে সেই জমিনে আল্লাহর গজব অবশ্যম্ভাবী বাস্তবতা তাই । নবীর অনুসরণ না করলে মানুষের কী ভয়ঙ্কর পরিণতি হয় । তাই এই কির্তী মানুষের শিক্ষার জন্যে কেয়ামত পর্যন্ত অটুট থাকবে ।
____________________________________
21/16 গুনাহ ছার বালা মসিবত থেকে বাঁচ ৩০: আর-রূম:৪১,
ظَهَرَ الْفَسَادُ فِی الْبَرِّ وَ الْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ اَیْدِی النَّاسِ لِیُذِیْقَهُمْ بَعْضَ الَّذِیْ عَمِلُوْا لَعَلَّهُمْ یَرْجِعُوْنَ
২: আল-বাক্বারাহ,:আয়াত: ১৫৫,
وَ لَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَیْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَ الْجُوْعِ وَ نَقْصٍ مِّنَ الْاَمْوَالِ وَ الْاَنْفُسِ وَ الثَّمَرٰتِ١ؕ وَ بَشِّرِ الصّٰبِرِیْنَۙ
আর নিশ্চয়ই আমরা ভীতি, অনাহার, প্রাণ ও সম্পদের ক্ষতির মাধ্যমে এবং উপার্জন ও আমদানী হ্রাস করে তোমাদের পরীক্ষা করবো। এ অবস্থায় যারা সবর করে — তাদেরকে সুসংবাদ দিয়ে দাও।
সিলেটের অবস্থা করুন সব তলিয়ে গেছে এই জাতির এত দুর্ভোগ কেন পাপ করতে করতে যখন চরম পর্যায়ে মানুষ পৌঁছে যায় তখন আল্লাহ পাক এর পক্ষ থেকে মানুষ দুর্ভোগের শিকার হয়। এমন রোগ নাযিল হয় যে রোগের চিকিৎসা নেই।
* ফলে নৌকা কয়েকবার ধােয়া হয়ে গেল এবং নৌকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে পড়লাে । এটা ছিল একটা উপহাস এবং বন্যায় ডুবিয়ে মারা ছিল আরেকটা মহা - উপহাস
* যে জমিনে নবীকে নিয়ে কটুক্তি করা হয় ওখানে গজল আসবে নাকি রহমত আসবে। নবীর অনুসরণ না করলে মানুষের কী ভয়ঙ্কর পরিণতি হয় । তাই এই কির্তী মানুষের শিক্ষার জন্যে কেয়ামত পর্যন্ত অটুট থাকবে ।
* গজব কখন নাযিল হয়? পাপের সীমা ছাড়িয়ে গেলে
মানুষ পাপ করতে করতে যখন পাপের সীমা ছাড়িয়ে যায়, তখনই আল্লাহর শাস্তি নাজিল হয়। পাপিষ্ঠ ফেরাউনকে আল্লাহ তাআলা তখনই ধরেছেন, যখন সে নিজেকে আল্লাহ বলে দাবি করেছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন : ‘হে মুসা! তুমি ফেরাউনের কাছে যাও, সে অত্যন্ত উদ্ধত হয়ে গেছে।’ (সুরা ত্বাহা : ২৪)
* পাপের সীমা ছাড়িয়ে গেলে
মানুষ পাপ করতে করতে যখন পাপের সীমা ছাড়িয়ে যায়, তখনই আল্লাহর শাস্তি নাজিল হয়। পাপিষ্ঠ ফেরাউনকে আল্লাহ তাআলা তখনই ধরেছেন, যখন সে নিজেকে আল্লাহ বলে দাবি করেছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন : ‘হে মুসা! তুমি ফেরাউনের কাছে যাও, সে অত্যন্ত উদ্ধত হয়ে গেছে।’ (সুরা ত্বাহা : ২৪)
* বিধর্মী কার্যকলাপের ফলে
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন সরকারি মালকে নিজের মাল মনে করা হয়, আমানতের মালকে নিজের মালের মতো ব্যবহার করা হয়, জাকাতকে জরিমানা মনে করা হয়, ইসলামী আকিদাবর্জিত বিদ্যা শিক্ষা করা হয়, পুরুষ স্ত্রীর অনুগত হয়, মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়, বন্ধুদের আপন মনে করা হয়, বাবাকে পর ভাবা হয়, মসজিদে শোরগোল করা হয়, পাপী লোক গোত্রের নেতা হয়, অসৎ ও নিকৃষ্ট লোক জাতির চালক হয়, ক্ষতির ভয়ে কোনো লোককে সম্মান করা হয়, গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্রের প্রচলন অধিক হয়, মদ্য পানের আধিক্য ঘটে, পরবর্তী সময় লোকেরা পূর্ববর্তী লোকদের বদনাম করে—তখন যেন তারা অপেক্ষা করে লু হাওয়া (গরম বাতাস), ভূমিকম্প, ভূমিধস, মানব আকৃতি বিকৃতি, শিলাবৃষ্টি, রক্তবৃষ্টি ইত্যাদি কঠিন আজাবের, যা একটার পর আরেকটা আসতে থাকবে, যেমন হারের সুতা ছিঁড়ে গেলে মুক্তার দানাগুলো একটার পর একটা পড়তে থাকে। (তিরমিজি)
* অন্যায় কাজে বাধা না দেওয়ার ফলে
* দাউদ আঃ এর সময়ে নবীর নির্দেশ পালন না করায় আল্লাহ তাদের বানর বানিয়ে দেন।
সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজে বাধা দেওয়া ফরজ। মুমিন এ কাজ থেকে বিরত থাকতে পারে না। হজরত হুজায়ফা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যার হাতে আমার প্রাণ নিবদ্ধ তাঁর শপথ! তোমরা অবশ্যই ন্যায় কাজের আদেশ করবে এবং অন্যায় কাজ থেকে (মানুষকে) বিরত রাখবে। অন্যথায় আল্লাহ তাঁর পক্ষ থেকে তোমাদের ওপর আজাব পাঠাবেন। অতঃপর তোমাদের পরিত্যাগ করা হবে এবং তোমাদের দোয়াও কবুল করা হবে না।’ (তিরমিজি)
অন্যায়ভাবে হত্যা করা হলে
অন্যায়ভাবে হত্যা করা হারাম। কথিত আছে, হজরত আদম (আ.)-এর পুত্র কাবিল যেদিন হাবিলকে হত্যা করে, সেদিনই পৃথিবীতে প্রথম ভূমিকম্প হয়। কেননা অন্যায়ভাবে হত্যাকাণ্ড আল্লাহ তাআলা পছন্দ করেন না। তিনি ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোনো মুমিনকে হত্যা করে, তার শাস্তি হলো জাহান্নাম, সে সদা সেখানে অবস্থান করবে।’ (সুরা নিসা : ৯৩)।
* আমরা আমাদের গুনাহ দুর করতে পারলেই সব মসিবত দুর হয়ে যাবে
কুয়ার মধ্যে মরা বিড়াল=মনে করুন কুয়ার মধ্যে একটি বিড়াল মারা গিয়ে পচে পানি গন্ধ হয়ে গেছে । এখন আপনি পানির গন্ধ দূর করার জন্যে বালতির পর বালতি পানি তুলে ফেলছেন । কিন্তু তবু পনির গন্ধ দূর হচ্ছে না । কারণ আপনি পানি গন্ধ হওয়ার কারণ নির্ণয় করতে পারেননি । কারণ হলাে কুয়ার ভিতরে মরা বিড়াল থাকা । এই কারণ ' অর্থাৎ মরা বিড়ালটি তুলে ফেলুন , পানির গন্ধ দূর হয়ে যাবে । পঁচা বিড়াল কুয়াতে রেখে যতই পানি তুলে ফেলেন পানির গন্ধ দূর হবে না । তেমনি আপনার কষ্টের কারণ হলাে আপনার গুনাহ। এই গুনাহ্ দূর করে ফেলুন , কষ্ট দূর হয়ে যাবে ।,(ওয়াজ ও খুতবা-191 )
* গুনাহের কারনে মহিলার আকৃতি পরিবর্তন হইয়া যায়:
একেক গুনাহর কারণে একেক রকম পেরেশানী আসে । এমন গুনাহুও আছে যার দরূণ মানুষের আকৃতি পশুর আকৃতিতে রূপান্তরিত হয়ে যায় । এরূপ একটি ঘটনা ঘটেছে ভারতের জব্বল পুর জেলায় । মহিলার আকৃতি পরিবর্তিত হওয়ার ঘটনা ঃ এক মহিলার বিয়ে হয়েছিল অনেক দিন হলাে । কিন্তু তার কোন সন্তানাদি হতাে না । অনেক চিকিৎসা করা হলাে , কিন্তু কোন ফল হলাে না । শেষে দোয়া - তাবিজ সহ অনেক তদবীর করা হলাে । কিন্তু কিছুতেই কিছু হলাে না । একদিন এই মহিলা গ্রামের এক মেলায় গেল । মেলায় এক হিন্দু সন্যাসীকে দেখতে পেলাে । সে এক গাছ তলায় বসে মানুষের হাত দেখে ভবিষ্যৎ গণনা করছে এবং মানুষের নানারূপ সমস্যার সমাধান । দিচ্ছে । মহিলাটি তার কাছে গিয়ে তার সন্তান না হওয়ার সমস্যা জানালাে । সাধু এমন এক ব্যবস্থা দিল যা শুনলে মুসলমানের মনে প্রচণ্ড আঘাত লাগবে এবং গা শিহরিয়ে । উঠবে । সাধু জিজ্ঞাসা করলাে , “ তােমাদের বাড়ীতে কোরআন আছে ? মহিলা বললাে , “ হাঁ , আছে । ' সাধু বললাে , সেই কোরআনের উপরে বসে যদি গােসল করতে পার তবে তােমার সন্তান হবে ' ( নাউযুবিল্লাহি মিন যালেক ) । কিন্তু এই ব্যবস্থা শােনার পরও মহিলার । মনে একটুও আঘাত লাগলাে না । সে খুশী মনে বাড়ী এসে তার শাশুড়ীকে একথা বলার সঙ্গে সঙ্গে শাশুড়ী ভয়ে চমকিয়ে উঠলাে । সে তার পুত্র - বধূকে বললাে , “ খবরদার একাজ করিও না । কোরআন শরীফ আল্লাহর কালাম , এর সঙ্গে বেয়াদবী করলে ধ্বংস হয়ে যাব
একদিন শাশুড়ী রান্না - ঘরে বসে প্রতিদিনের মত কাজ করছে । কিন্তু পুত্রবধূ সেন । তার কাজে সাহায্য করতে আসছে না দেখে সে মনে মনে চিন্তা করতে লাগলাে যে আজ কী হলাে , বেলা একটা বেজে গেল তবু বউ - মা কাজে আসছে না নে ? হঠাৎ তার । পড়ে গেল সেই সাধুর দেওয়া ব্যবস্থার কথা । এই কথা মনে হতেই সে দৌড়িয়ে রান্নার থেকে বাহির হয়ে পড়লাে । শােওয়ার ঘরে গিয়ে দেখে আলমারীর উপরে কোরআন স্ট্রীয় নাই । সে তৎক্ষণাৎ ছুটে গেল গােসলখানার দিকে । গিয়ে দেখে গােসলখানার ভিতর থেকে ছিটকিনি লাগানাে । বউ - মা , বউ - মা বলে অনেক ডাকাডাকি করলাে । কি ভিতর থেকে কোন জওয়াব পাওয়া গেল না । অগত্যা দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে দেখে কোন শরীফ মাটিতে পড়ে আছে , আর পাশেই একটি শুয়াের বসে আছে । শাড়ী তাড়াতাড়ি কোরআন শরীফটি তুলে নিয়ে চুমা দিল এবং বুকে করে ঘরে নিয়ে আসলো । পিছে পিছে শুয়ােরটি এসে বারান্দায় বসে থাকলে । শাড়ী কোরআন শরীফটি যথাস্থানে রেখে দিয়ে শুয়ােরটিকে লক্ষ্য করে বললাে , “ এ তুই কী করলি বউমা ? তুই এই কাজ নে করতে গেলি ? এখন তােকে কে উদ্ধার কবে ? কি বউমা আর বউমা নাই । সে এখন শুকর পরিণত হয়েছে । সে শাড়ীর কথা শুনেও তার কোন জওয়াব দিতে পারছে না । শুধু তাই দুই চোখ দিয়ে কর ঝর করে পানি করছে । এমন সময় অফিসের কাজ শেষে তার স্বামী বাড়ী ফিরলাে । বাড়ীতে ঢুকে দেখে একটি শুয়াের তার ঘরের বারান্দায় বসে আছে । সে তার মাকে ডেকে বললাে , মা ! তুমি দেখতে পাওনি ? একটা শুয়াের বারান্দায় বসে । আছে ? ' মা বললাে , “ এটা শুয়াের নয় , বাবা ! এর পিছনের ঘটনা বড় দুখজনক । মায়ের মুখে দুঃখের সব কথা শুনে স্বামীর মনে এত আঘাত লাগলাে যে সে তৎক্ষণাৎ মনুহ শুয়ােরটিকে মেরে ফেলার জন্যে আলমারী খুলে বন্দুক বাহির করলাে । শুয়ােরের দিকে বন্দুক তাক করেছে গুলি করবে , এমন সময় মা এসে বন্দুক কেড়ে নিয়ে বললাে , “ বাবা ! একে আর মেরে কী হবে । আগ্রহই তাে এর শাস্তি দিয়েছেন । আমরা আর কতটুকু শাড়ি শুয়ােরটিকে জঙ্গলের দিকে তাড়িয়ে দিল । তিন দিন পর্যন্ত জঙ্গলের এদিক - ওদিক যােয় ফেরা করে শুয়ােরটি না খেয়ে মারা গেল । এইবার পরকালের আরও কঠিন আযাব ও যাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেছে । মুসলমানের ঘরে জন্ম নিয়েও একদিন তাদের সেই কঠিন অন্তর কাফেরে পরিণত হবে (সাপ্তাহিক আখবারে জাহান করাচী) (ওয়াজ ও খুতবা-1/192)
,(ওয়াজ ও খুতবা-191 )
194 উপহাস
ঈমান না আনার কারণে কাফেরদেরকে মহা এক প্রাবনে ডুবিয়ে মারা হবে ' নবীর এই ভবিষ্যৎ বাণী তারা অবিশ্বাস করেছিল । শুষ্ক সেই মরুভূমিতে কিভাবে নৌকা চালানাে যায় । এই কথা বুঝতে না পেরে তারা নবীকে পাগল বলে আখ্যায়িত করলাে । নূহ ( আঃ ) আল্লাহর নির্দেশে নৌকা নির্মাণ সমাপ্ত করে বন্যার অপেক্ষায় থাকলেন । নৌকার প্রতি কাফেরদের ঘৃণা ও কৌতুক দিন দিন বাড়তে লাগলাে । অসভ্য এই কাফেররা এমন এক পর্যায়ে পৌছে গেল যে নৌকা নিয়ে তামাশা শুরু করে দিল । তামাশাচছলে নৌকায় গিয়ে তারা পায়খানা করে আসতাে । এই তামাশা তাদের একটি উৎসবে পরিণত হলাে । দলে দলে লােক এসে এই অশ্লীল আনন্দ করে চলে যেতাে । মুসলমানগণ সংখ্যায় ছিল মাত্র চল্লিশ জোড়া এবং কাফের ছিল অসংখ্য । তাই কাফেরদের এই বেয়াদবী প্রতিরােধ করার ক্ষমতা তাদের ছিল না । মুসলমানগণ শুধু দোয়া করতে পারতাে
কয়েকদিন যেতে না যেতেই কাফেরদের মধ্যে কুষ্ঠ রোগ দেখা দিল । দেহের ঘা আর সারে না । যতই চিকিৎসা করা হয় ততই ঘা বেড়ে যায় । কোন ওষুধেই কাজ হয় না । কষ্ট ৩ যাতনায় দেশ হাহাকার করে উঠলো । একদিন একটি লােক নৌকায় গেল পাঞখানা করতে । নৌকার পায়খানা তখন ছিল কানায় কানায় ভরা । পা ফসকিয়ে সে নৌকার ভিতর পড়ে গেল । পায়খানার ভিতর হাবুডুবু খেয়ে কোন রকমে সে নৌকার উপরে উঠে আসলাে । তারপর বাড়ী গিয়ে গা ধুয়ে দেখে তার কুষ্ঠ রােগ ভাল হয়ে গেছে । যে - রােগের কোন চিকিৎসা নাই , যে রােগ সারা শরীরকে খেয়ে ফেলতাে সে - রােগ এখন দূর হয়ে গেছে । শরীর এখন সম্পূর্ণ 1 সকাল বেলায় প্রতিবেশীরা তাকে সুস্থ দেখে জিজ্ঞাসা করলাে কোন ওষুধ ব্যবহার করে সে সুস্থ হয়েছে । সে বলে দিল ঐ নৌকার মলের বরকতে ’ সে এখন সুস্থ । আর যায় । কোথায় , কাফেরের দল সব বালতি নিয়ে ছুটলাে । বালতি বােঝাই করে করে নিজেদের মল নিজেরাই বাড়ী নিয়ে যেতে লাগলাে । আর বরকত মনে করে গা ধুতে লাগলাে । আর সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ হয়ে যেতে লাগলাে । কাফের মহলে মল সংগ্রহ করার জন্যে কাড়াকাড়ি লেগে গেল । শেষে যখন নৌকা মল - শূণ্য হয়ে পড়লাে তখনও অনেক রুগী বাকী থাকলাে । অগত্যা তারা নৌকা ধুয়ে ধুয়ে পানি নিতে লাগলাে । সেই পানিতেও রােগ দূর হতে থাকলাে । ফলে নৌকা কয়েকবার ধােয়া হয়ে গেল এবং নৌকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে পড়লাে । এটা ছিল একটা উপহাস এবং বন্যায় ডুবিয়ে মারা ছিল আরেকটা মহা - উপহাস । সুতরাং এই ঘটনা উপরােক্ত আয়াতের সত্যতা দৃঢ় ভাবে প্রমাণ করেছে যে , আমরাও তোমাদেরকে সেইরূপ উপহাস করবাে যেরূপ তােমরা উপহাস করছে ' । আল্লাহর নবীগণকে যারা উপহাস ও বিদ্রুপ করে আল্লাহও তাদেরকে এরূপ লাঞ্ছনার আযাব দিয়ে উপহাস করেন । আর পরকালে রয়েছে আরও কঠিন আযাব । যাহােক , কিশতী যখন আরােহী বহন করার উপযুক্ত হলাে তখন আল্লাহ হুকুম করলেনঃ ৩৭৭ ; ; ai ass 6-৬২১jj ak1,93196555-৫১ ১২ ৫ে ob das alles “ এতে উঠিয়ে নাও প্রত্যেক শ্রেণীর যুগলের দুইটি , আর যাদের বিরুদ্ধে ( আযাবের ) ব সিদ্ধান্ত হয়েছে তারা ব্যতীত উঠিয়ে নাও তােমার পরিবার - পরিজনকে এবং যারা ইমান এনেছে তাদেরকে । "
সুতরাং নির্দেশ অনুযায়ী নূহ ( আঃ ) কিশতীতে আরােহন করাতে লাগলেন । ইতিহাস থেকে জানা যায় যে কিশতীতে তিনটি তলা ছিল । মহিলাগণ তৃতীয় তলায় আরােহন করলাে । দ্বিতীয় তলায় আরােহন করলাে পুরুষগণ । নীচ তলা বরাদ্দ হলাে জীব - জন্তুদের জন্যে । আল্লাহ পাকের কুদরতে হিংস্র প্রাণীরাও তখন তাদের হিংস্রতা ভুলে গিয়েছিল । সমস্ত প্রাণীর একটি নর ও একটি মাদী জন্তু মাথা নিচু করে ভয়ে জড় - সড় হয়ে নৌকায় গিয়ে উঠে বসলাে । মানুষ ছিল চল্লিশ জোড়া । তুফান শুরু হয়ে গেল । মাটির তলা চিরে পানি উথলিয়ে উঠতে লাগলাে । আর আকাশ থেকে স্রোতের মত পানি ঢেলে পড়তে
লাগলাে মুহুর্তে পৃথিবী পানিতে ভরে গেল । পৃথিবীর সর্বোচ্চ পাহাড়ের চূড়াটিও ভুবতে বাকী ছিল না । চারিদিকে শুধু পানি আর পানি । পানিতে ডুবে গুনাহগার কাফের সহ সমস্ত প্রাণী মারা গেল । শুধু বেঁচে থাকলে কিশর্তীতে আরােহনকারী চল্লিশ জোড়া মানুষ আর কিছু জীব জন্তু । অথৈ পানিতে কিশতী ভাসতে লাগলাে । ভাসতে ভাসতে চল্লিশ দিন অতিক্রান্ত হলাে । অতঃপর পানি শুকাতে লাগলো । পাহাড় সমূহ জেগে উঠলো । একটি পাহাড়ের নাম ছিল ' জুদী ’ । সেই পাহাড়ে নুহ ( আঃ ) এর কিন্তী এসে ভিড়লাে । আল্লাহ Gaj - 64 ; --S : / ২৬,51 : 39.65- টু- s , ০৩- ~ & SE0 \ ২-৪ ; “ এরপর বলা হলাে , হে পৃথিবী ! তুমি তােমার পানি গ্রাস করে নাও এবং হে আকাশ ! ক্ষান্ত হও । ' এরপর বন্যা প্রশমিত হলাে এবং কাজ সমাধা হলাে , নৌকা জুদী পর্বতের উপর স্থির হলো , এবং বলা হলাে যালেম কওম ধংস হউক * -পূর্ব ১১ হন , ৪৪ আয়াত কিশতীর সাথে আশুরার সম্পর্ক এই ধ্বংস লীলার মধ্যে থেকে আল্লাহ পাক নূহ ( আঃ ) এর কির্তীকে নিরাপদে সূদী পর্বতে নিয়ে ভিড়ালেন । দুনিয়ার সমস্ত কাফের ও সকল প্রাণী নিশ্চিহ্ন হলাে । শুধু বেঁচে থাকলাে কিশতীতে আরােহনকারী চল্লিশ জোড়া মানুষ আর কিছু জীব - জন্তু । এই নিয়ে শুরু হলাে দুনিয়ার মানুষের পুনঃর্যত্র । তাই নুহ ( আঃ ) কে দ্বিতীয় আদম বলা হয় । কারণ এক লক্ষ চল্লিশ হাজার পয়গম্বরের মধ্যে প্রথম মানুষ আদম ( আঃ ) থেকে নূহ ( আঃ ) পর্যন্ত মাত্র কয়েক জন পয়গম্বর এসেছিলেন বাকী সমস্ত পয়গম্বর এই কিশতীতে বেঁচে থাকা চল্লিশ ( মতান্তরে পঞ্চাশ ) জোড়া মানুষ থেকে জন্ম নিয়েছেন । শুধু পয়গম্বরগণই নন ; বরং এ পর্যন্ত যত মানুষ জন্ম নিয়েছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ জন্ম নিবে সবই এই কিশত্যর মানুষের রক্ত ধারার স্রোত । তাই এই কিশতীর নিরাপদে জুদী পর্বতে হির হওয়ার তারিখটি একটি স্মরণীয় তারিখ । আর সেটা হলাে এই আশুরার দিন । এই কিশতী মানুষের জন্যে এক বৈপ্লবিক শিক্ষা বহন করছে । সেটা হলাে মহররমের শিক্ষা । আল্লাহ পাক এরশাদ করেন ? ০৩ : ১jjag [ Clasj245Jyasi38546 “ অতঃপর আমি তাকে ( নূহকে ) এবং কিশতীতে যারা আরােহন করেছিল তাদেরকে রক্ষা করলাম এবং বিশ্বজগতের জন্যে এ ( কিশতী ) -কে করলাম একটি নমূনা । ” -সূরা ২৯ , আনকাবুত , ১৫ আয়াত এই কিশতী দেখে বিশ্বের মানুষ শিক্ষা লাভ করবে যে , নবীর অনুসরণ না করলে মানুষের কী ভয়ঙ্কর পরিণতি হয় । তাই এই কির্তী মানুষের শিক্ষার জন্যে কেয়ামত পর্যন্ত অটুট থাকবে । আল্লাহ পাক ঘোষণা দিয়েছেন , বিশ্বজগতের ( মানুষের জন্যে এ ( কিশতী ) -কে করলাম একটি নমুনা ’ । বিশ্বজগত যতদিন টিকে থাকবে ততদিন তিনিই এই কিশতী রক্ষা করবেন । বিশ্বের আবহাওয়া তার নিয়ন্ত্রণে , মাটির পঁচনশীলতার শক্তি তার নিয়ন্ত্রণে , কীট - পতঙ্গের উপদ্রব , এমনকি মানুষের শক্তিও তার নিয়ন্ত্রণে । সুতরাং এই কিশষ্ঠী বিনষ্ট করবে কে ? হয়েছেও তাই । সেই কিশতী আজও পৃথিবীতে অটুট অবস্থায়
________________
No comments