12 রমজানের চতুর্থ জুমার খুতবা
* কেউ জানে না আগামীকাল আমি কোথায় থাকবো। কতো মানুষ ঘুমের ঘরে মৃত্যুর অমৃত সুধা পান করে। মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে। সুরা হাশরে আগামী দিনের প্রেরণ সম্পর্কে চিন্তা করতে বলা হয়েছে। আয়াত 18
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰهَ وَ لْتَنْظُرْ نَفْسٌ مَّا قَدَّمَتْ لِغَدٍ١ۚ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ خَبِیْرٌۢ بِمَا تَعْمَلُوْنَ
* এই মহা সফর আমাদের পাড়ি দিতে হবে একথা জানার পরে ও আমাদের এবাদত তথা নামায পড়তে কষ্ট হয়
* যেমন নামায অত্যন্ত কষ্টকর কাজ কিন্তু তাদের জন্য নয়।বাক্বারাহ,৪৫
وَ اسْتَعِیْنُوْا بِالصَّبْرِ وَ الصَّلٰوةِ١ؕ وَ اِنَّهَا لَكَبِیْرَةٌ اِلَّا عَلَى الْخٰشِعِیْنَۙ
الَّذِیْنَ یَظُنُّوْنَ اَنَّهُمْ مُّلٰقُوْا رَبِّهِمْ وَ اَنَّهُمْ اِلَیْهِ رٰجِعُوْنَ۠
* রোজা রাখার কষ্টের বিষয়টি ডাক্তারের সূই ফুটানোর মতো। অপারেশনের মতো, ঈমানদারগণ রোজা রাখার কষ্ট সেই রূপ মনে করে
* দেহের চিকিৎসা হয় হাসপাতালে নিয়ম মাফিক চলতে হয়, রমজানের রোজার মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের রুহের চিকিৎসা করতে চান,রুহ তখন শক্তিশালী হয়, তখন দেহের উপর তার প্রভাব পরে,বুজর্গ 40 দিন গর্তে ইবাদত করে, উপরে বড় পাথর ভক্তরা রেখে দেয়(ওয়াজ ও খুতবা-1/341
* আল্লাহর আবেদগন নিরব ইবাদতের মধ্য শান্তি খুঁজে পান। আল্লাহ আল্লাহ ইউচু শেরে নিশ্তে নাম
* নেক আমলে রুহ যেমন শক্তিশালী হয় অপরদিকে বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এই মাস নেক আমলের সিজন। এই মাসে এক টাকা দান করলে সাতশো গুণ বৃদ্ধি পায়। দান করলে বিপদ থেকে বাঁচা যায়
* হযরত সোলায়মান (আ.)-এর যুগের একটি ঘটনা।জনৈক এক ব্যক্তির বাড়ির পাশে ছিল একটি গাছ। সেই গাছে ছিল একটি পাখির বাসা।
____________________________________
২ আল-বাক্বারাহ, আয়াত: ৪৫
وَ اسْتَعِیْنُوْا بِالصَّبْرِ وَ الصَّلٰوةِ١ؕ وَ اِنَّهَا لَكَبِیْرَةٌ اِلَّا عَلَى الْخٰشِعِیْنَۙ
সবর ও নামায সহকারে সাহায্য নাও। নিঃসন্দেহে নামায বড়ই কঠিন কাজ, কিন্তু সেসব অনুগত বান্দাদের জন্য কঠিন নয়।
২ আল-বাক্বারাহ, আয়াত: ৪৬
الَّذِیْنَ یَظُنُّوْنَ اَنَّهُمْ مُّلٰقُوْا رَبِّهِمْ وَ اَنَّهُمْ اِلَیْهِ رٰجِعُوْنَ۠
যারা মনে করে, সবশেষে তাদের মিলতে হবে তাদের রবের সাথে এবং তাঁরই দিকে ফিরে যেতে হবে।
* দেহের চিকিৎসা হয় হাসপাতালে নিয়ম মাফিক চলতে হয়, রমজানের রোজার মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের রুহের চিকিৎসা করতে চান,রুহ তখন শক্তিশালী হয়, তখন দেহের উপর তার প্রভাব পরে,বুজর্গ 40 দিন গর্তে ইবাদত করে, উপরে বড় পাথর ভক্তরা রেখে দেয়(ওয়াজ ও খুতবা-1/341
* রূহের প্রভাব দেহের মধ্যে পড়ার ঘটনা,এক বুযুর্গ তার খানকায় লোকজনের ভিড়ের কারনে নিজের মন মতো ইবাদত বন্দেগী ও জিকির আজকার করতে পারতেন না। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিলেন যে তিনি পাহাড়ের গুহায় গিয়ে একা একা থাকবেন এবং মনের মতো যিকির আযকার করবেন। তিনি এক পাহাড়ের গুহার সন্ধান করলেন। গুহায় প্রবেশ করার আগে মুরীদগনকে বললেন। আমি এই গুহায় প্রবেশ করার পর ঐ পাথরের খন্ডটি তোমরা গড়িয়ে এনে গুহার মুখ বন্ধ করে দিও।যেন কোন লোক আমার কাছে না আসতে পারে।মুরীদগন দেখলো পাথরের খন্ডটি এক মানুষ সমান লম্বা এবং ঐ পরিমানই চওরা। পাথরটি সরাতে কয়েকটি হাতির শক্তির দরকার। কিন্তু সে রকম পোষা হাতী কোথায় পাবে? তাই খানকার সমস্ত মুরীদ মিলে পাথরটিকে ঠেলে গড়িয়ে কোন রকমে এনে গুহার মুখ বন্ধ করে দিল।বুযুর্গ এই বার মনের মতো করে ভিতরে থেকে এবাদত বন্দেগী ও যিকির আযকার করতে লাগলেন। চল্লিশ দিন পর্যন্ত কোন কিছু আহার করলেন না। অবিরাম জিকির আজকার ও মোরাকাবা মুশাহাদা করার পর যখন মন ভরে গেল তখন গুহা থেকে বাহির হতে ইচ্ছে করলেন। কিন্তু গুহার মুখে এমন এক পাথর চাপা দেওয়া ছিল যে ভিতর থেকে ডাকলে বাহিরে শব্দ আসতো না। তিনি কোন কিছুর অপেক্ষা না করে দুই হাতে পাথরকে এমন জোড়ে ধাক্কা দিলেন যে পাথর ছিটকিয়ে একদিকে গিয়ে পড়লো।আর তিনি বাহির হয়ে আসলেন।এই হলো দেহের উপর রুহানি শক্তির প্রভাব (বয়ান ও খুতবা ১/৩৪১)
* হযরত সোলায়মান (আ.)-এর যুগের একটি ঘটনা।জনৈক এক ব্যক্তির বাড়ির পাশে ছিল একটি গাছ। সেই গাছে ছিল একটি পাখির বাসা।সেই বাসায় পাখিটি যখনই ডিম দিত তখনই লোকটি তা নিয়ে খেয়ে ফেলত। লোকটির অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে একদিন পাখিটি হযরত সোলায়মান (আ.)-এর কাছে অভিযোগ করল। সোলায়মান (আ.) লোকটিকে ডেকে নিষেধ করে বললেন, আর কোনো দিন যেন ঐই পাখির ডিম সে না খায়। হযরত সোলায়মান( আ.)এর নিষেধ অমান্য করে লোকটি আবারো পাখির ডিম খেয়ে ফেলল।নিরুপায় হয়ে পাখিটি পুনরায় হযরত সোলায়মান (আ.)-এর কাছে অভিযোগ করল। সোলায়মান (আ.) এক জিনকে নির্দেশ দিলেন- লোকটি এবার যখন গাছে চড়বে, তখন খুব জোরে তাকে ধাক্কা দিয়ে যেন নিচে ফেলে দেয়, যাতে লোকটি আর কোনো দিন গাছে চড়তে না পারে। এর পর একদিন লোকটি পাখির ডিমের জন্য গাছে উঠতে যাবে, এমন সময় এক ভিক্ষুক এসে হাঁক দিল বাবা! কিছু ভিক্ষা দিন। তখন লোকটি প্রথমে ভিক্ষুককে এক মুষ্টি খাবার দান করল। তারপর শান্ত মনে গাছে থেকে ডিম নামিয়ে খেয়ে ফেলল। পাখিটি আবার সোলায়মান (আ.)-এর কাছে অভিযোগ করল। সোলায়মান (আ.) সেই জিনকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি নির্দেশ পালন করলে না কেন? তখন জিন জবাব দিল, আমি আপনার নির্দেশ পালন করার জন্য প্রস্তুত ছিলাম।
এমন সময় পূর্ব ও পশ্চিম থেকে দুজন ফেরেস্তা এসে আমাকে অনেক দূরে ফেলে দিল। সোলায়মান (আ.) বিস্মিত হয়ে এর কারণ জিজ্ঞেস করলেন, জিনটি বলল, আমি দেখলাম, লোকটি গাছে ওঠার আগে জনৈক ভিক্ষুককে এক মুষ্টি খাবার দান করল। সম্ভবত এর বরকতে আল্লাহপাক তাকে আসন্ন বিপদ থেকে উদ্ধার করেছেন। সোলায়মান (আ.) বললেন, হ্যাঁ সদকা বালা-মুসিবত দূর করে। এ কারণেই সে তখন মহাবিপদ থেকে বেঁচে গেছে।( তাযকেরাতুল আম্বিয়া)
No comments