Header Ads

Header ADS

7/247  রমজানের দ্বিতীয় জুমা- রোজার গুরুত্ব ৭/২৪৭

* এটা কোরআন নাযিলের মাস।বাকারাহ-১৮৫

شَهْرُ‌ رَ‌مَضَانَ الَّذِي أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْ‌آنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَىٰ وَالْفُرْ‌قَانِ  فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ‌ فَلْيَصُمْهُ

*  তারাবীহ নামাযের গুরুত্ব কতটুকু আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ: নবীজি চতুর্থ দিন মসজিদে আসেনি এই হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয়। সহিহ বুখারী, ৯২৪

*  রোজার সাথে নামাজ থাকবে নামাজের প্রথম হিসাব হবে রোজার নয়।

রোজার অনেক ফজিলত 

*  রোজা রাখলে তারাবীহ পড়লে গুনাহ মাফ হয়। সহিহ বুখারী,১৯০১

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ

* এটা গুনাহ মাফের মাস। নবী (সাঃ) মিম্বারে উঠলেন। তিনি প্রথম সিঁড়িতে উঠে বলেনঃ আমীন আদাবুল মুফরাদ ৬৪৮ সহিহ

*  রোজাদারের জন্য রয়েছে দুটি পুরস্কার

*  আদব দিয়ে আল্লাহকে খুশি করে জান্নাত অর্জন করা যায়। আর বেয়াদব আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত থাকে

*  রোজার সাথে যাদের মুহাব্বত নেই তারা দিনে খায়,যারা রোজার সাথে বেয়াদবি করে দিনে খায়, সেদিন রমজানে আহারকারীকে লোহার মুগুর দিয়ে আঘাত করবে, নবীজির সুপারিশে বাধা,সুহকান, মজমুয়ায়ে ওয়ায়েজ 217

*  যারা রোজার সম্মান করবে কিয়ামতের দিন রোজা তাদের জন্য সুপারিশ করবে মুসনাদে আহমদ-৬৬২৬)


____________________________________


شَهْرُ‌ رَ‌مَضَانَ الَّذِي أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْ‌آنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَىٰ وَالْفُرْ‌قَانِ  فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ‌ فَلْيَصُمْهُ


“রমযান মাস,যাতে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে,যা মানবজাতির জন্য দিশারী এবং এতে পথনির্দেশ ও সত্য ও মিথ্যার পার্থক্যকারী সুস্পষ্ট নিদর্শন রয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে কেউ এ মাসে (স্বস্থানে) উপস্থিত থাকবে সে যেন রোযা রাখে”। (সূরা বাকারাহ-১৮৫)


*  তারাবীহ নামাযের গুরুত্ব কতটুকু আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ: নবীজি চতুর্থ দিন মসজিদে আসেনি এই হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয়। সহিহ বুখারী, ৯২৪

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ، أَنَّ عَائِشَةَ، أَخْبَرَتْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ ذَاتَ لَيْلَةٍ مِنْ جَوْفِ اللَّيْلِ، فَصَلَّى فِي الْمَسْجِدِ، فَصَلَّى رِجَالٌ بِصَلاَتِهِ فَأَصْبَحَ النَّاسُ فَتَحَدَّثُوا، فَاجْتَمَعَ أَكْثَرُ مِنْهُمْ فَصَلَّوْا مَعَهُ، فَأَصْبَحَ النَّاسُ فَتَحَدَّثُوا فَكَثُرَ أَهْلُ الْمَسْجِدِ مِنَ اللَّيْلَةِ الثَّالِثَةِ، فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَصَلَّوْا بِصَلاَتِهِ، فَلَمَّا كَانَتِ اللَّيْلَةُ الرَّابِعَةُ عَجَزَ الْمَسْجِدُ عَنْ أَهْلِهِ حَتَّى خَرَجَ لِصَلاَةِ الصُّبْحِ، فَلَمَّا قَضَى الْفَجْرَ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ، فَتَشَهَّدَ ثُمَّ قَالَ ‏ "‏ أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّهُ لَمْ يَخْفَ عَلَىَّ مَكَانُكُمْ، لَكِنِّي خَشِيتُ أَنْ تُفْرَضَ عَلَيْكُمْ فَتَعْجِزُوا عَنْهَا ‏"‏‏.‏ تَابَعَهُ يُونُسُ‏.‏


‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:


আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন এক রাতের মধ্যভাগে বের হলেন এবং মসজিদে গিয়ে সালাত আদায় করলেন। তাঁর সঙ্গে সাহাবীগণও সালাত আদায় করলেন, সকালে তাঁরা এ নিয়ে আলোচনা করলেন। ফলে (দ্বিতীয় রাতে) এর চেয়ে অধিক সংখ্যক সাহাবা একত্রিত হলেন এবং তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করলেন। পরের দিন সকালেও তাঁরা এ সম্পর্কে আলোচনা করলেন। ফলে তৃতীয় রাতে মসজিদে লোকসংখ্যা অত্যাধিক বৃদ্ধি পেল। আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হলেন এবং সাহাবীগণ তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করলেন। চতুর্থ রাতে মসজিদে মুসল্লীগণের স্থান সংকুলান হচ্ছিল না। অবশেষে তিনি ফজরের সালাতের জন্য বের হলেন এবং ফজরের সালাত শেষ করে লোকদের দিকে ফিরলেন। অতঃপর আল্লাহ্‌র হামদ ও সানা বর্ণনা করলেন। অতঃপর বললেনঃ আম্‌মা বা’দ (তারপর বক্তব্য এই যে) এখানে তোমাদের উপস্থিতি আমার নিকট গোপন ছিল না, কিন্তু আমার আশংকা ছিল, তা তোমাদের জন্য ফরয করে দেয়া হয় আর তোমরা তা আদায় করতে অপারগ হয়ে পড়।

  


সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৯২৪

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


*  রোজা রাখলে গুনাহ মাফ হয়ে 

حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ


আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:


নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)  বলেছেনঃ যে ব্যক্তি লাইলাতুল ক্বদ্‌রে ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রাত জেগে ‘ইবাদাত করে, তার পিছনের সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করা হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমযানে সিয়াম পালন করবে, তারও অতীতের সমস্ত গোনাহ মাফ করা হবে।

  


সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১৯০১

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


* রোজার পূর্ণ আদব বজায় না রাখলে ধ্বংস অনিবার্য। নবী (সাঃ) মিম্বারে উঠলেন। তিনি প্রথম সিঁড়িতে উঠে বলেনঃ আমীন আদাবুল মুফরাদ ৬৪৮ সহিহ


حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ شَيْبَةَ قَالَ: أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نَافِعٍ الصَّائِغُ، عَنْ عِصَامِ بْنِ زَيْدٍ، وَأَثْنَى عَلَيْهِ ابْنُ شَيْبَةَ خَيْرًا، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَقَى الْمِنْبَرَ، فَلَمَّا رَقَى الدَّرَجَةَ الْأُولَى قَالَ: «آمِينَ» ، ثُمَّ رَقَى الثَّانِيَةَ فَقَالَ: «آمِينَ» ، ثُمَّ رَقَى الثَّالِثَةَ فَقَالَ: «آمِينَ» ، فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، سَمِعْنَاكَ تَقُولُ: «آمِينَ» ثَلَاثَ مَرَّاتٍ؟ قَالَ: " لَمَّا رَقِيتُ الدَّرَجَةَ الْأُولَى جَاءَنِي جِبْرِيلُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: شَقِيَ عَبْدٌ أَدْرَكَ رَمَضَانَ، فَانْسَلَخَ مِنْهُ وَلَمْ يُغْفَرْ لَهُ، فَقُلْتُ: آمِينَ. ثُمَّ قَالَ: شَقِيَ عَبْدٌ أَدْرَكَ وَالِدَيْهِ أَوْ أَحَدَهُمَا فَلَمْ يُدْخِلَاهُ الْجَنَّةَ، فَقُلْتُ: آمِينَ. ثُمَّ قَالَ: شَقِيَ عَبْدٌ ذُكِرْتَ عِنْدَهُ وَلَمْ يُصَلِّ عَلَيْكَ، فَقُلْتُ: آمِينَ "


জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:


নবী (সাঃ) মিম্বারে উঠলেন। তিনি প্রথম সিঁড়িতে উঠে বলেনঃ আমীন। তিনি দ্বিতীয় সিঁড়িতে উঠেও বলেনঃ আমীন। তিনি তৃতীয় সিঁড়িতে উঠেও বলেনঃ আমীন। সাহাবীগণ বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ আমরা আপনাকে তিনবার আমীন বলতে শুনলাম। তিনি বলেনঃ আমি প্রথম সিঁড়িতে উঠতেই জিবরাঈল (আবু দাউদ) এসে বলেন, দুর্ভাগ্য সেই ব্যক্তির যে রমযান মাস পেলো এবং তা শেষ হয়ে যাওয়া সত্বেও তার গুনাহর ক্ষমা হলো না। আমি বললামঃ আমীন। অতঃপর দ্বিতীয় ধাপে উঠতেই তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য সেই ব্যক্তির যে নিজ পিতা-মাতা উভয়কে অথবা তাদের একজনকে বৃদ্ধাবস্থায় পেলো, অথচ তারা তাকে বেহেশতে প্রবেশ করালো না। আমি বললামঃ আমীন। অতঃপর তৃতীয় ধাপে উঠতেই তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য সেই ব্যক্তির যার নিকট আপনার উল্লেখ হলো, অথচ সে আপনার প্রতি দুরূদ পড়েনি। আমি বললামঃ আমীন। (ইবনুস সুন্নী)


  


আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং ৬৪৮


হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


*  তারাবীহ নামায পড়লে ও অতীতের গুনাহ মাফ হয়ে যায়। সহিহ মুসলিম,১৬৬৪


 عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ‏"‏ ‏.


আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:


যে ব্যক্তি রমাযান মাসে ঈমানের সাথে ও একান্ত আল্লাহর সন্তষ্টির নিমিত্তে তারাবীহ পড়ে তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। (ই.ফা. ১৬৪৯, ই.সে. ১৬৫৬)

  


সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১৬৬৪

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


*  জনৈক মজুছীর রোজার আদব রাখিয়া ঈমান প্রাপ্ত হওয়ার বিবরণ।মজুসী (আগুন পূজারি) মজুসী বলা হয় অগ্নীপুজককে


দোররাতুন নাছেহীন নামক কিতাবে বর্নিত আছে,একদা এক অগ্নিপুজক মজুছী তাহার আট দশ বছরের একটি পুত্রকে সংগে লইয়া রমজান মাস বাগদাদের বাজারে বাজার করিতে যায়। পিতার অসাক্ষাতে ছেলেটি কিছু খাবার কিনে খাইতে থাকে।পিতা তাহাকে বাজারের মুসলমানদের সম্মুখে খাইতে দেখিয়া তাহার গন্ডে চপেটাঘাত করিয়া বলিল,রে বেয়াদব তুই জানিস না যে এটা রমজান মাস। মুসলমানরা তাহাদের আল্লাহর আদেশে রোজা রাখিয়েছেন।আর তুই এমন বেয়াদব সন্তান যে, তাহাদের সম্মুখে খাইতছিস?। ফলকথা সেই মজুসী তাহার পুত্রকে তিরস্কার করিতে করিতে গৃহে লইয়া যায়।এই ঘটনার কয়েক দিন পরেই সেই মজুসী পরলোক গমন করে। ঐ রমজান মাসে একজন আলেম স্বপ্নে মজুসীকে বেহেশতে স্বর্ণ সিংহাসনে সম্মানের সহিত বসিয়া আছে দেখিয়া আশ্চার্য্যাম্বিত হইয়া জিগ্গাসা করিলেন। আপনি না অমুক মজুসী?। আপনি কি এমন নেক আমল করিয়াছিলেন যে,তজ্জন্য বেহেশতে স্হান পাইলেন। উত্তরে মজুসী বলিলেন, আমি রমজান শরীফের আদব করিয়া সন্তানকে প্রহার করিয়াছিলাম বলিয়া মৃত্যুর সময়ে দয়াময় আল্লাহ তায়ালা আমার দেলে ঈমানের এমন জোশ দিলেন যে,আমি কালেমা পড়িয়া মুসলমান হইলাম। এবং ঐ সময় দৈব শব্দ শুনিতে পাইলাম,হে ফেরেস্তা এই ব্যক্তি রমজান মাসের যেমন আদব করিয়াছে, ঈমান অবস্থায় তাহার জান কবজ কর এবং তাহাকে তাজিমের সহিত বেহেশতে লইয়া যাও। আমি এই বানী শ্রবন মাত্রেই লাইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ বলার সংগে সংগে আমার জান কবজ হয়।(মজমুয়ে ওয়াজ শরীফ-216)


*  রোজার সাথে যাদের মুহাব্বত নেই তারা দিনে খায়,যারা রোজার সাথে বেয়াদবি করে দিনে খায়, সেদিন রমজানে আহারকারীকে লোহার মুগুর দিয়ে আঘাত করবে, নবীজির সুপারিশে বাধা,সুহকান, মজমুয়ায়ে ওয়ায়েজ 217


*  বেরোজাদারের শাস্তি:-খাইরুল মাজারের গ্রন্থে বর্ণিত আছে-কিয়ামতের ময়দানে একদল লোককে বন্দী অবস্থায় আনিয়া ফেরেস্তাগন এমন লৌহ মুগুর দ্বারা প্রহার করিতে থাকিবে যে, তাহারা যন্ত্রনায় অস্থির হয়ে গাধার মত চিৎকার করতে থাকবে।দয়ার সাগর নূর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সে চিৎকার শুনে ব্যথিত অন্তরে ছুটিয়ে গিয়ে ফেরেস্তাদিগকে জিজ্ঞাসা করিবেন,হে আজাবের ফেরেস্তাগন, আমার উম্মাহকে এমন নির্দয়ভাবে কেন প্রহার করিতেছ? ইহারা কি এমন অপরাধ করিয়াছে যে তজ্জন্য এরূপ কঠোর শাস্তি হইতেছে। ফেরেস্তাগন বলিবেন ইহারা জাহেল বদকার ছিল, আল্লাহর আদেশ অমান্য করিতো, এবং রমজান মাসে রোজা না রাখিয়া উদরপূর্ন করিয়া ভোজন করিত। হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উহা শুনিয়া তাদের শাফায়াত করিতে ইচ্ছা করিলে, সর্বশক্তিমান আল্লাহ তায়ালা তখন বলিলেন,হে আমার হাবীব,ইহারা আপনার শফায়তের যোগ্য নয়, রমজানের রোজা যে আমার খাছ ইবাদত,আর আমি উহার পালনকারী দিগকে যে খাছ বদলা দিব ইহা উহারা অস্বীকার করেছিল।অতএব ইহারা আপনার শফায়তের যোগ্য পাত্র নয়, আপনি উহাদের জন্য শাফায়াত করিবেন না,তখন নবীজী বললেন সুহকান দুর হও।(মজমুয়ে ওয়াজ শরীফ-২১৭)


*  যারা রোজার সম্মান করবে কিয়ামতের দিন রোজা তাদের জন্য সুপারিশ করবে মুসনাদে আহমদ-৬৬২৬)


আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, রোজা ও কোরআন কিয়ামতের দিন মানুষের জন্য এভাবে সুপারিশ করবে যে রোজা বলবে, হে প্রতিপালক! আমি দিনের বেলা তাকে পানাহার ও সহবাস থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল করো। কোরআন বলবে, হে প্রতিপালক! আমি তাকে রাতে নিদ্রা থেকে বিরত রেখেছি, তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল করো। তিনি বলেন, ‘এরপর উভয়ের সুপারিশই কবুল করা হবে।(মুসনাদে আহমদ-৬৬২৬)।


*  হযরত সোলায়মান (আ.)-এর যুগের একটি ঘটনা। জনৈক এক ব্যক্তির বাড়ির পাশে ছিল একটি গাছ। সেই গাছে ছিল একটি পাখির বাসা।সেই বাসায় পাখিটি যখনই ডিম দিত তখনই লোকটি তা নিয়ে খেয়ে ফেলত। লোকটির অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে একদিন পাখিটি হযরত সোলায়মান (আ.)-এর কাছে অভিযোগ করল। সোলায়মান (আ.) লোকটিকে ডেকে নিষেধ করে বললেন, আর কোনো দিন যেন ঐই পাখির ডিম সে না খায়। হযরত সোলায়মান( আ.)এর নিষেধ অমান্য করে লোকটি আবারো পাখির ডিম খেয়ে ফেলল।নিরুপায় হয়ে পাখিটি পুনরায় হযরত সোলায়মান (আ.)-এর কাছে অভিযোগ করল। সোলায়মান (আ.) এক জিনকে নির্দেশ দিলেন- লোকটি এবার যখন গাছে চড়বে, তখন খুব জোরে তাকে ধাক্কা দিয়ে যেন নিচে ফেলে দেয়, যাতে লোকটি আর কোনো দিন গাছে চড়তে না পারে। এর পর একদিন লোকটি পাখির ডিমের জন্য গাছে উঠতে যাবে, এমন সময় এক ভিক্ষুক এসে হাঁক দিল বাবা! কিছু ভিক্ষা দিন। তখন লোকটি প্রথমে ভিক্ষুককে এক মুষ্টি খাবার দান করল। তারপর শান্ত মনে গাছে থেকে ডিম নামিয়ে খেয়ে ফেলল। পাখিটি আবার সোলায়মান (আ.)-এর কাছে অভিযোগ করল। সোলায়মান (আ.) সেই জিনকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি নির্দেশ পালন করলে না কেন? তখন জিন জবাব দিল, আমি আপনার নির্দেশ পালন করার জন্য প্রস্তুত ছিলাম।


এমন সময় পূর্ব ও পশ্চিম থেকে দুজন ফেরেস্তা এসে আমাকে অনেক দূরে ফেলে দিল। সোলায়মান (আ.) বিস্মিত হয়ে এর কারণ জিজ্ঞেস করলেন, জিনটি বলল, আমি দেখলাম, লোকটি গাছে ওঠার আগে জনৈক ভিক্ষুককে এক মুষ্টি খাবার দান করল। সম্ভবত এর বরকতে আল্লাহপাক তাকে আসন্ন বিপদ থেকে উদ্ধার করেছেন। সোলায়মান (আ.) বললেন, হ্যাঁ সদকা বালা-মুসিবত দূর করে। এ কারণেই সে তখন মহাবিপদ থেকে বেঁচে গেছে।( তাযকেরাতুল আম্বিয়া)


__________________


*  মানব সন্তানের প্রতিটি নেক কাজের সাওয়াব দশ গুন থেকে সাতশ’ গুন পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়া হয়। সহিহ মুসলিম,২৫৯৭ সহিহ


كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ يُضَاعَفُ الْحَسَنَةُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعِمِائَةِ ضِعْفٍ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ إِلاَّ الصَّوْمَ فَإِنَّهُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ يَدَعُ شَهْوَتَهُ وَطَعَامَهُ مِنْ أَجْلِي لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ فَرْحَةٌ عِنْدَ فِطْرِهِ وَفَرْحَةٌ عِنْدَ لِقَاءِ رَبِّهِ ‏.‏ وَلَخُلُوفُ فِيهِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللَّهِ مِنْ رِيحِ الْمِسْكِ


*  নবী (সাঃ) মিম্বারে উঠলেন। তিনি প্রথম সিঁড়িতে উঠে বলেনঃ আমীন আদাবুল মুফরাদ ৬৪৮ সহিহ


*  রোজা না রাখার ভয়ংকর শাস্তি: ইফতারের সময় হওয়ার আগেই রোযা ভেঙ্গে ফেলতো। সহীহ্ ইবনে খুযাইমা হাদীস ১৯৮৬, সহীহ্ ইবনে হিব্বান হাদীস ৭৪৪৮]


*  রোজার সাথে যাদের মুহাব্বত নেই তারা দিনে খায়,যারা রোজার সাথে বেয়াদবি করে দিনে খায়, সেদিন রমজানে আহারকারীকে লোহার মুগুর দিয়ে আঘাত করবে,(মজমুয়ে ওয়াজ শরীফ-২১৭)


*  যারা রোজার সম্মান করবে কিয়ামতের দিন রোজা তাদের জন্য সুপারিশ করবে মুসনাদে আহমদ-৬৬২৬


عَن عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ  صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم  إِنَّ الصَّدَقَةَ لَتُطْفِيءُ عَن أَهْلِهَا حَرَّ الْقُبُورِ وَإِنَّمَا يَسْتَظِلُّ الْمُؤْمِنُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِي ظِلِّ صَدَقَتِهِ


*  তোমরা তোমাদের রোগীদের চিকিৎসা সদকাহ দ্বারা কর।”


عَنْ أَبيْ أُمَامَةَ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ الله  صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم  دَاوُوا مَرْضاكُمْ بالصَّدَقَةِ


____________________________________


রোজা দ্বারা কষ্ট দেওয়া উদ্দেশ্যে নয়


حديث أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: نَهى رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الْوِصَالِ فِي الصَّوْمِ، فَقَالَ لَهُ رَجلٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ: إِنَّكَ تُوَاصِلُ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ: وَأَيُّكُمْ مِثْلِي إِنِّي أَبِيتُ يُطْعِمُنِي رَبِّي وَيَسْقَينِ فَلَمَّا أَبَوْا أَنْ يَنْتَهُوا عَنِ الْوِصَالِ؛ وَاصَلَ بِهِمْ يَوْمًا، ثُمَّ يَوْمًا، ثُمَّ رَأَوُا الْهِلاَلَ فَقَالَ: لَوْ تَأَخَّرَ لَزِدْتُكُمْ كَالتَّنْكِيلِ لَهُمْ حِينَ أَبَوْا أَنْ يَنْتَهُوا


আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিরতিহীন সওম (সওমে বিসাল) পালন করতে নিষেধ করলে মুসলিমদের এক ব্যক্তি তাঁকে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি যে বিরতিহীন (সওমে বিসাল) সওম পালন করেন? তিনি বললেনঃ তোমাদের মধ্যে আমার অনুরূপ কে আছে? আমি এমনভাবে রাত যাপন করি যে, আমার প্রতিপালক আমাকে পানাহার করান। এরপর যখন লোকেরা সওমে বিসাল করা হতে বিরত থাকল না তখন তিনি তাদেরকে নিয়ে দিনের পর দিন (লাগাতার) সওমে বিসাল করতে থাকলেন। এরপর লোকেরা যখন চাঁদ দেখতে পেল তখন তিনি বললেনঃ যদি চাঁদ উঠতে আরো দেরী হত তবে আমি তোমাদেরকে নিয়ে আরো বেশী দিন সওমি বিসাল করতাম। এ কথা তিনি তাদেরকে শাস্তি প্রদান স্বরূপ বলেছিলেন, যখন তারা বিরত থাকতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। (বুখারী পর্ব ৩০ : /৪৯ হাঃ ১৯৬৫,  মুসলিম ১৩/১১, হাঃ ১১০৩)


  


আল লু'লু ওয়াল মারজান, হাদিস নং ৬৭১


হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD


وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَوَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، ح وَحَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ، - وَاللَّفْظُ لَهُ - حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، - رضى الله عنه - قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ يُضَاعَفُ الْحَسَنَةُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعِمِائَةِ ضِعْفٍ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ إِلاَّ الصَّوْمَ فَإِنَّهُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ يَدَعُ شَهْوَتَهُ وَطَعَامَهُ مِنْ أَجْلِي لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ فَرْحَةٌ عِنْدَ فِطْرِهِ وَفَرْحَةٌ عِنْدَ لِقَاءِ رَبِّهِ ‏.‏ وَلَخُلُوفُ فِيهِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللَّهِ مِنْ رِيحِ الْمِسْكِ ‏"‏ ‏.


আবূ হুরায়রাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “মানব সন্তানের প্রতিটি নেক কাজের সাওয়াব দশ গুন থেকে সাতশ’ গুন পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়া হয়। মহান আল্লাহ্‌ বলেন, “কিন্তু সিয়াম আমারই জন্য এবং আমি নিজেই এর প্রতিফল দান করব। বান্দা আমারই জন্য নিজের প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং পানাহার পরিত্যাগ করেছে।” সিয়াম পালনকারীর জন্য দু’টি আনন্দ আছে। একটি তার ইফত্বারের সময় এবং অপরটি তার প্রতিপালক আল্লাহ্‌র সাথে সাক্ষাতের সময়। সিয়াম পালনকারীর মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহ্‌ তা’আলার কাছে মিশকের সুগন্ধির চেয়েও অধিক সুগন্ধময়। (ই.ফা. ২৫৭৪, ই.সে. ২৫৭৩)


  


সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২৫৯৭


হাদিসের মান: সহিহ হাদিস


Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD


হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আদম সন্তানের প্রত্যেকটি আমল বাড়ানো হয়। আর তাদের প্রতিটি নেকি দশ থেকে সাতশ’ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হবে। তবে রোজা ছাড়া। কেননা রোজা শুধু আমারই জন্য রাখা হয় আর আমিই এর প্রতিদান দেব। বান্দা আমার জন্যই তার কামনা-বাসনা ও খাওয়া-পান করা ত্যাগ করে। রোজাদারের দুইটি আনন্দ। একটি- ইফতার করার সময় আর অপরটি- কেয়ামাতে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়। যার হাতে মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জীবন, তাঁর কসম! রোজাদারের মুখের গন্ধ কেয়ামাতের দিন আল্লাহর কাছে মেশক আম্বরের চেয়েও বেশি খোশবুদার হবে। (বুখারি ও মুসলিম


*  রোজা না রাখার ভয়ংকর শাস্তি: ইফতারের সময় হওয়ার আগেই রোযা ভেঙ্গে ফেলতো। সহীহ্ ইবনে খুযাইমা হাদীস ১৯৮৬, সহীহ্ ইবনে হিব্বান হাদীস ৭৪৪৮]


আবু উমামা ( রাঃ ) বলেন, আমি রাসূল ( সাঃ ) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন,আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। স্বপ্নে দেখলাম আমার নিকট দুই ব্যক্তি আগমন করলো। তারা আমার বাহূদ্বয় ধরে আমাকে এক দুর্গম ‌পাহাড়ে নিয়ে এলো। তারপর আমাকে বললো, আপনি পাহাড়ের উপর উঠুন.. আমি বললাম, আমি তো উঠতে পারবো না। তারা‌ বললো, আমরা দুইজনে আপনাকে সহজ করে দিব.. তারপর আমি উপরে উঠলাম.. যখন পাহাড়ের সমতলে পৌঁছলাম.. হঠাৎ ভয়ঙ্কর আওয়াজ শুনতে পেলাম.. আমি বললাম, এ‌ সব কিসের আওয়াজ ? তারা বললো, এটা জাহান্নামীদের আর্তনাদ..তারপর তারা দুজন আমাকে নিয়ে এগিয়ে চললো.. হঠাৎ কিছু লোক দেখতে পেলাম, যাদেরকে তাদের পায়ের মাংসপেশী দ্বারা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে.. এবং তাদের মুখের দুই প্রান্ত ছিড়ে ফেলা হয়েছে এবং তা থেকে রক্ত‌ ঝরছে.. আমি বললাম, এরা কারা ? তারা বললো, যারা ইফতারের সময় হওয়ার আগেই রোযা ভেঙ্গে ফেলতো। সহীহ্ ইবনে খুযাইমা হাদীস ১৯৮৬, সহীহ্ ইবনে হিব্বান হাদীস ৭৪৪৮]

No comments

Powered by Blogger.