4 105 রমজানের প্রস্তুতি
* মাস গননা করার দিন শেষ এখন দিন গোনার পালা রমজান আর ৬ দিন বাকি। রমজানের পূর্বে নবীজি দোয়া করতেন আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবাবু শাবান ওয়া বাল্লিগনা রামাদান। সেই রমজান আমাদের নাকের ডোগায় এসে গেছে
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کُتِبَ عَلَیۡکُمُ الصِّیَامُ کَمَا کُتِبَ عَلَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ
* মুত্তাক্বী বান্দারা জান্নাতে যাবে। রমজানের মাধ্যমে আল্লাহ তার বান্দাদেরকে মুক্তাক্বী বানাতে চান।হিজর,৪৫
اِنَّ الْمُتَّقِیْنَ فِیْ جَنّٰتٍ وَّ عُیُوْنٍؕ
اُدْخُلُوْهَا بِسَلٰمٍ اٰمِنِیْنَ
* তিনি ঈমানদারগণের আপন বন্ধু তিনি আমাদের রব তিনিই সব। মৃত্যুর পর তিনি ছাড়া আর কে আছে? একদিন সাদা কাপড় পরাইয়া মুর্দার খাঁটি শুয়াইয়া। ৩৯ আয-যুমার,৫৪
وَ اَنِیْبُوْۤا اِلٰى رَبِّكُمْ وَ اَسْلِمُوْا لَهٗ مِنْ قَبْلِ اَنْ
* আল্লাহর প্রস্তুতি। এই মাসের সম্মান আল্লাহ দিয়েছেন। এই মাসের বরকতে জাহান্নামের দরজা বন্ধ।
* এই মাস ব্যবসায়ীদের মতো সওয়াব অর্জনের সিজন
* সালমান আল ফারিসী থেকে বর্ণিতঃ: তিনি বলেন, শা‘বান মাসের শেষ দিনে রাসূল সা: আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে ভাষণ দিলেন। তিনি বললেন।মিশকাতুল মাসাবিহ, ১৯৬৫
* একটা ফরয সত্তরটি ফরযের সমান। এখানে সত্তর আধিক্য বুঝানো হয়েছে। যা আল কুরআনের আয়াত দ্বারা প্রমাণিত। মুনাফিক আবদুল্লাহ ইবনে উবাই ক্ষেত্রে সত্তর বার তৌবাহ দোয়া করলে ও কবুল হবেনা৷ সত্তর সংখ্যাটি আধিক্য বুঝানো হয়েছে
* মানুষের মনের পাক্কা ইরাদা বা হিম্মত হলো এসমে আযমের মতো, মনের এরাদা রোযা রাখা ইসমে আজমের মত সম্ভব সম্ভব। সাগরেদ কয় হুজুর ইসমে আজম শিখিয়ে দেন। বয়ান ও খুতবা পৃ:-1/288
হুজুর আমাকে এসমে আজম শিখিয়ে দিন। আমি সহ্য করতে পারবো। হুজুর বলিলেন,একশর্তে শিখিয়ে দিতে পারি,,বললেন কি শর্ত,,? হুজুর বললেন,শর্ত হল,আগামি কাল চৌরাস্তার মোড়ে দাড়িয়ে থাকবে,এবং কোন ঘঠনা দেখলে আমাকে জানাবে,তারপর শিখিয়ে দিব,তাই হল,,লোকটি পরদিন চৌ,রাস্তার মোড়ে দাড়িয়ে দেখল,,
দৃশ্যটা এমন,,একজন খুবই বৃদ্ধ,অসুস্থ ব্যক্তি মাথায় করে এক বোঝা মালপত্র দোকান থেকে উঠাইয়া একটা ঘোড়ার পিঠের উপর তুলিয়ে দিল,ঘোড়ার উপর বসে থাকা একজন যুবক,, বৃদ্ধটিকে কোন পারশ্রমিক না দিয়ে পা দিয়ে লাথি মেরে ঘোড়াটিকে চাবুক শাষিয়ে চলে গেল,
____________________________________
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کُتِبَ عَلَیۡکُمُ الصِّیَامُ کَمَا کُتِبَ عَلَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ ﴿۱۸۳﴾ۙ
অর্থঃ হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পার।
সূরা আল বাকারা (البقرة), আয়াত: ১৮৩
* রমজানের রোজার মাধ্যমে রোজাদার বান্দাদেরকে আল্লাহতালা মুত্তাকীক পর্যায়ে পৌঁছায় দিবেন। আর ব্যস্ত যেতে হলে বান্দাকে মুক্তকী হওয়া লাগবে
১৫ আল-হিজর, আয়াত: ৪৫
اِنَّ الْمُتَّقِیْنَ فِیْ جَنّٰتٍ وَّ عُیُوْنٍؕ
অন্যদিকে মুত্তাকীরা থাকবে বাগানে ও নির্ঝরিণীসমূহে
১৫ আল-হিজর, আয়াত: ৪৬
اُدْخُلُوْهَا بِسَلٰمٍ اٰمِنِیْنَ
এবং তাদেরকে বলা হবে, তোমরা এগুলোতে প্রবেশ করো শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে।
৩৯ আয-যুমার, আয়াত: ৫৪
وَ اَنِیْبُوْۤا اِلٰى رَبِّكُمْ وَ اَسْلِمُوْا لَهٗ مِنْ قَبْلِ اَنْ یَّاْتِیَكُمُ الْعَذَابُ ثُمَّ لَا تُنْصَرُوْنَ
ফিরে এসো তোমাদের রবের দিকে এবং তাঁর অনুগত হয়ে যাও তোমাদের ওপর আযাব আসার পূর্বেই। তখন কোন দিক থেকেই আর সাহায্য পাওয়া যাবে না।
* সওয়াব অর্জনের সিজন ব্যবসায়ীদেরও
রমজান মাস ছায়া প্রদান করে আছে
وَعَنْ سَلْمَانَ الْفَارِسِىِّ ، قَالَ : خَطَبَنَا رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ فِى اٰخِرِ يَوْمٍ مِنْ شَعْبَانَ فَقَالَ : يَا أَيُّهَا النَّاسُ! قَدْ أَظَلَّكُمْ شَهْرٌ عَظِيمٌ، شَهْرٌ مُبَارَكٌ، شَهْرٌ فِيهِ لَيْلَةٌ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ، جَعَلَ اللهُ تَعَالٰى صِيَامَه فَرِيضَةً، وَقِيَامَ لَيْلِه تَطَوُّعًا، مَنْ تَقَرَّبَ فِيهِ بِخَصْلَةٍ مِنَ الْخَيْرِ كَانَ كَمَنْ أَدّٰى فَرِيضَةً فِيمَا سِوَاهُ، وَمَنْ أَدّٰى فَرِيضَةً فِيهِ كَانَ كَمَنْ أَدّٰى سَبْعِينَ فَرِيضَةً فِيمَا سِوَاهُ. وَهُوَ شَهْرُ الصَّبْرِ، وَالصَّبْر ثَوَابُهُ الْجَنَّةُ، وَشَهْرُ الْمُوَاسَاةِ، وَشَهْرٌ يُزْدَادُ فِيهِ رِزْقُ الْمُؤْمِنِ، مَنْ فَطَّرَ فِيهِ صَائِمًا كَانَ لَه مَغْفِرَةً لِذُنُوْبِه، وَعِتْقَ رَقَبَتِه مِنَ النَّارِ، وَكَانَ لَه مِثْلُ أَجْرِه مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْقُصَ مِنْ أَجْرِه شَىْءٌ» قُلْنَا : يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ! لَيْسَ كُلُّنَا نَ جِدُ مَا نُفَطِّرُ بِهِ الصَّائِمَ. فَقَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «يُعْطِى اللّٰهُ هٰذَا الثَّوَابَ مَنْ فَطَّرَ صَائِمًا عَلٰى مَذْقَةِ لَبَنٍ، أَوْ تَمْرَةٍ أَوْ شَرْبَةٍ مِنْ مَاءٍ، وَمَنْ أَشْبَعَ صَائِمًا؛ سَقَاهُ اللّٰهُ مِنْ حَوْضِىْ شَرْبَةً لَا يَظْمَأُ حَتّٰى يَدْخُلَ الْجَنَّةَ. وَهُوَ شَهْرٌ أَوَّلُه رَحْمَةٌ، وَأَوْسَطُه مَغْفِرَةٌ، وَاٰخِرُه عِتْقٌ مِنَ النَّارِ. وَمَنْ خَفَّفَ عَنْ مَمْلُوكِه فِيهِ؛ غَفَرَ الله لَه وَأعْتَقَه مِنَ النَّارِ
সালমান আল ফারিসী থেকে বর্ণিতঃ: তিনি বলেন, শা‘বান মাসের শেষ দিনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে ভাষণ দিলেন। তিনি বললেন, হে লোক সকল! একটি মহিমান্বিত মাস তোমাদেরকে ছায়া হয়ে ঘিরে ধরেছে। এ মাস একটি বারাকাতময় মাস। এটি এমন এক মাস, যার মধ্যে একটি রাত রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। আল্লাহ এ মাসের সিয়াম ফরয করেছেন আর নফল করে দিয়েছেন এ মাসে রাতের কিয়ামকে। যে ব্যক্তি এ মাসে একটি নফল কাজ করবে, সে যেন অন্য মাসের একটি ফরয আদায় করল। আর যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরয আদায় করেন, সে যেন অন্য মাসের সত্তরটি ফরয সম্পাদন করল। এ মাস সবরের (ধৈর্যের) মাস; সবরের সাওয়াব জান্নাত। এ মাস সহমর্মিতার। এ এমন এক মাস যাতে মু’মিনের রিযক বৃদ্ধি করা হয়। যে ব্যক্তি এ মাসে কোন সায়িমকে ইফতার করাবে, এ ইফতার তার গুনাহ মাফের কারণ হবে, হবে জাহান্নামের অগ্নিমুক্তির উপায়। তার সাওয়াব হবে সায়িমের অনুরূপ। অথচ সায়িমের সাওয়াব একটুও কমানো হবে না।
আমরা বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের সকলে তো সায়িমের ইফতারীর আয়োজন করতে সমর্থ নয়। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সাওয়াব আল্লাহ তা‘আলা ঐ ইফতার পরিবেশনকারীকেও প্রদান করেন, যে একজন সায়িমকে এক চুমুক দুধ, একটি খেজুর অথবা এক চুমুক পানি দিয়ে ইফতার করায়। আর যে ব্যক্তি একজন সায়িমকে পেট ভরে খাইয়ে পরিতৃপ্ত করল, আল্লাহ তা‘আলা তাকে আমার হাওযে কাওসার থেকে এভাবে পানি খাইয়ে পরিতৃপ্ত করবেন, যার পর সে জান্নাতে (প্রবেশ করার পূর্বে) আর পিপাসার্ত হবে না। এমনকি সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। এটা এমন এক মাস যার প্রথম অংশে রহমত। মধ্য অংশে মাগফিরাত, শেষাংশে জাহান্নামের আগুন থেকে নাজাত। যে ব্যক্তি এ মাসে তার অধিনস্তদের ভার-বোঝা সহজ করে দেবে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন। তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দেবেন।
মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস নং ১৯৬৫
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ ؓ، قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : إِذَا دَخَلَ شَهْرُ رَمَضَانُ فُتِحَتْ أَبْوَابُ السَّمَاءِ». وَفِىْ رِوَايَةٍ : فُتِّحَتْ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ جَهَنَّمَ وَسُلْسِلَتِ الشَّيَاطِيْنُ. وَفِىْ رِوَايَةٍ : فُتِحَتْ أَبْوَابُ الرَّحْمَةِ. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মাহে রমাযান (রমজান) শুরু হলে আকাশের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। অন্য এক বর্ণনায় আছে, জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। শয়তানকে শিকলবন্দী করা হয়। অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘রহমতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়’। (বুখারী, মুসলিম)
মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস নং ১৯৫৬
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
* হুযুর ( দঃ ) এর যমানায় আবদুল্লাহ ইবনে উবাই নামক জনৈক ব্যক্তি ছিল । সে ছিল মুনাফিকদের সর্দার কিন্তু তাহার ছেলে ঘাঁটি ঈমানদার ছিল । মুনাফিক সর্দারের এন্তেকাল হইলে তাহার পুত্র হুযুর ( দঃ ) -এর খেদমতে উপস্থিত হইয়া আর করিল । “ ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমার পিতা এন্তেকাল করিয়াছেন । তাঁহার কাফনের জন্য আপনি স্বীয় কোর্তা প্রদান করুন । " ( ইহার বরকতে হয় তো খোদা তাহাকে ক্ষমা করিতে পারেন । ) হুযুর ( দঃ ) আপন কোর্তা দিয়া দিলেন এবং তাহার জানাযায় শামিল হইলেন ; এমন কি . জানাযার নামাযও তিনিই পড়াইবেন মনস্থ করিলেন । ইহা দেখিয়া হযরত ওমর ( রাঃ ) উত্তেজিত হইয়া পড়িলেন । তিনি হুযুর ( দঃ ) এর চাদর ধরিয়া বলিলেন , আপনি কাহার নামায পড়াইতে চাহিতেছেন ? যে মুনাফিক সম্বন্ধে আল্লাহ বলেন :
৯: আত-তওবা,:আয়াত: ৮০,
اِسْتَغْفِرْ لَهُمْ اَوْ لَا تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ١ؕ اِنْ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ سَبْعِیْنَ مَرَّةً فَلَنْ یَّغْفِرَ اللّٰهُ لَهُمْ١ؕ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ كَفَرُوْا بِاللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ١ؕ وَ اللّٰهُ لَا یَهْدِی الْقَوْمَ الْفٰسِقِیْنَ۠
হে নবী! তুমি এ ধরনের লোকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করো বা না করো, তুমি যদি এদের জন্য সত্তর বারও ক্ষমা প্রার্থনা কর তাহলেও আল্লাহ তাদেরকে কখনই ক্ষমা করবেন না। কারণ তারা আল্লাহ ও তার রসূলের সাথে কুফরী করেছে। আর আল্লাহ ফাসেকদেরকে মুক্তির পথ দেখান না।
৯: আত-তওবা,:আয়াত: ৮৪,
وَ لَا تُصَلِّ عَلٰۤى اَحَدٍ مِّنْهُمْ مَّاتَ اَبَدًا وَّ لَا تَقُمْ عَلٰى قَبْرِهٖ١ؕ اِنَّهُمْ كَفَرُوْا بِاللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ وَ مَاتُوْا وَ هُمْ فٰسِقُوْنَ
আর আগামীতে তাদের মধ্য থেকে কেউ মারা গেলে তার জানাযার নামাযও তুমি কখনো পড়বে না এবং কখনো তার কবরের পাশে দাঁড়াবে না। কারণ তারা আল্লাহ ও তার রসূলকে অস্বীকার করেছে এবং তাদের মৃত্যু হয়েছে ফাসেক অবস্থায়।
আপনি তাহাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন বা না করুন ( উভয়ই সমান ) । আপনি তাহাদের জন্য সত্তর বার ক্ষমা প্রার্থনা করিলেও আল্লাহ তাহাদিগকে ক্ষমা করিবেন না । আপনি কি সেই মুনাফিকের নামায পড়িতে অগ্রসর হইতেছেন । " হুযুর ( দঃ ) বলিলেনঃ " আল্লাহ আমাকে ক্ষমা প্রার্থনা করিতে নিষেধ করেন নাই । যদি আমি জানিতে পারি সত্তর বারের বেশী ক্ষমা প্রার্থনা করিলে তিনি ক্ষমা করিয়া দিবেন , তবে আমি নিশ্চয়ই সত্তর বারেরও বেশী ক্ষমা প্রার্থনা করিব । ” এই দৃঢ়তা ব্যঞ্জক উত্তর শুনিয়া হযরত ওমর ( রাঃ ) চুপ হইয়া গেলেন এবং হুযুর ( দঃ ) মুনাফিক সর্দারের জানাযার নামায পড়াইয়া দিলেন । বাস্তবিক হযরত ( দঃ ) -এর দয়ারও পারাপার নাই । শত্রুর প্রতি দয়া প্রদর্শন করিতেও তিনি কুণ্ঠিত ছিলেন না । বন্ধুগণ , এমন দয়াল নবীর উম্মত হইতে পারায় আমরা বাস্তবিকই ভাগ্যবান । আমরা তাহার নিকট হইতে বহু কিছু আশা করিতে পারি । sales - asses was il ( নামানাদ বএছইয়া কাসে দর গেরু কেহ দারদ চুনি সাইয়্যেদ পেশরু ) । ট্যাহাদের এমন এক সর্দার আছেন , তাহাদের মধ্যে কেহ গোনাহর কারণে বন্দী হইয়া থাকিবে না । " শত্রুর প্রতি যিনি এত মেহেরবান , তিনি আপন গোলানদের প্রতি কতটুকু মেহেরবান হইতে পারেন , তাহা সহজেই অনুমেয় । মোটকথা , হুযুর ( দঃ ) জানাযার নামায পড়াইলেন , দাফনেও শরীক হইলেন । লাশ কবরে রাখা হইলে তিনি আপন পবিত্র থুথু তাহার মুখে দিলেন । এই ঘটনার পর নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল হইল : 55111 039-18 হে মোহাম্মদ ! মুনাফিকদের কেহ মারা গেলে কখনও তাহার জানাযার নামায পড়িবেন না । এবং তাহার কবরের পার্শ্বে দণ্ডায়মান হইবেন না । তাহারা আল্লাহ ও তদীয় রাসুলকে অবিশ্বাস করে এবং ফাসেক পাপী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে । এই আয়াতে মুনাফিকদের জানাযার নামায় পড়িতে এবং দাফন ইত্যাদিতে শরীক হইতে পরিষ্কার নিষেধ করা হইয়াছে । হযরত ওমর ( রাঃ ) বলেনঃ " আমি হযরত ( দঃ ) - কে তাহার কাজে বাধাদান করিয়া যে দুঃসাহসিক ব্যবহার করিয়াছিলাম , তাহা ভাবিয়া পরবর্তীকালে খুবই অনুতপ্ত হইয়াছিলাম । " ( আমার কি - ই বা মর্যাদা ছিল । তিনি তো প্রত্যেক বিষয়ে সর্বাধিক জ্ঞানী ছিলেন । ) যাক , এই হইল ঘটনা । ইহাতে প্রশ্ন হয় যে , আল্লাহ কস্মিনকালেও তাহাদিগকে ক্ষমা করিবেন না " নাযিল হওয়া সত্ত্বেও হযরত ( দঃ ) এই মুনাফিকের নামায কেন পড়াইলেন ? ইহা ছাত্রসুলভ প্রশ্ন । ছাত্রগণ নিজেরাই ইহার সমাধান বাহির করিতে পারিবে । এই ঘটনার মধ্যে আমি যাহা বলিতে চাই , তাহা এই যে , হুযুর ( দঃ ) এই মুনাফিককে আপন কোর্তা কেন পরাইলেন এবং থুথু মোবারক তাহার মুখে কেন দিলেন ? হাদীসের টীকাকারগণ লিখিয়াছেন যে , হযরত ( দঃ ) মুনাফিক সর্দারের খাঁটি ঈমানদার পুত্রের মন রক্ষার্থে এসব করিয়াছেন । [ যাহাতে সে মনে করিতে পারে যে , হযরত ( দঃ ) তাহার মুক্তির জন্য চেষ্টার ত্রুটি করেন নাই । তিনি দোআ করিয়াছেন , নামায পড়াইয়াছেন , তাবাররুকও ( কোর্তা ও ঘুঘু ) দান করিয়াছেন । এর পরও মুক্তি না পাইলে উহা তাহার নিজস্ব কৃতকর্মের জন্যই । কেহ বলিয়াছেন , এই মুনাফিক সর্দার বদর যুদ্ধের সময় হযরতের পিতৃব্য হযরত আব্বু একটি কোর্তা পরাইয়াছিল । উহার প্রতিদানে হযরত ( দঃ ) তাহাকে মৃত্যুর পর আপন কোর্তা টীকাকারদের এই সমস্ত ব্যাখ্যা আমার নিকট তত মনঃপুত নহে । এক্ষেত্রে উস্তাদ ( রঃ ) -এর উক্তিই আমার কাছে পছন্দনীয় মনে হয় । তিনি বলেন , মৃত মুনাফিকের সহিত হযরত ( দঃ ) -এর উপরোক্তরূপ ব্যবহারের কারণ এই যে , তিনি উম্মতকে একটি জরুরী বিষয় জানাইয়া দিতে চাহিয়াছিলেন । তাহা হইল — কাহারও ঈমান না থাকিলে যদিও তাহার সহিত লক্ষ লক্ষ তাবারুক থাকে , রাসূলের ন্যায় মর্যাদাবান ব্যক্তি তাহার জানাযার নামায পড়ায় , রাসুলের কোর্তা তাহার কাফন হইয়া যায় এবং রাসূলের পবিত্র থুথু তাহার মুখে দেওয়া হয় , তথাপি তাহার মুক্তি হইতে পারে না । অতএব , শুধু তাবারুকের ভরসায় থাকা উচিত নহে । আবদুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের কাছে তাবাররুক থাকিলেও আসল সম্পদ ঈমান ছিল না । কাজেই তাহার সম্বন্ধে বলা হইয়াছে , নিশ্চয়ই মুনাফিকরা দোজখের সর্বনিম্নস্তরে অবস্থান করিবে । " সেখানকার আযাব সবচেয়ে বেশী কঠিন
( দীন ও দুনিয়া- ৪৫-৪৭)
* মানুষের মনের পাক্কা ইরাদা বা হিম্মত হলো এসমে আযমের মতো, মনের এরাদা রোযা রাখা ইসমে আজমের মত সম্ভব সম্ভব। সাগরেদ কয় হুজুর ইসমে আজম শিখিয়ে দেন। বয়ান ও খুতবা পৃ:-1/288
* এক বুযুর্গ এসমে আজম জানতেন। তার সাগরেদ আবেদন করলো হুজুর আমাকে এসমে আজম শিখিয়ে দিন।
(এসমে আজম এমন একটা দোয়া,যেটা পড়ে আল্লাহর নিকট কোন ফরিয়াদ করেলে,আল্লাহ পাক সাথে সাথে ফরিয়াদ কবুল করবেন,)বুযুর্গ বললেন তুমি এটা সহ্য করতে পারবে না। সে খুব পীড়পীড়ি করতে লাগলো যে, হুজুর আমাকে এসমে আজম শিখিয়ে দিন। আমি সহ্য করতে পারবো। হুজুর বলিলেন,একশর্তে শিখিয়ে দিতে পারি,,বললেন কি শর্ত,,? হুজুর বললেন,শর্ত হল,আগামি কাল চৌরাস্তার মোড়ে দাড়িয়ে থাকবে,এবং কোন ঘঠনা দেখলে আমাকে জানাবে,তারপর শিখিয়ে দিব,তাই হল,,লোকটি পরদিন চৌ,রাস্তার মোড়ে দাড়িয়ে দেখল,,
দৃশ্যটা এমন,,একজন খুবই বৃদ্ধ,অসুস্থ ব্যক্তি মাথায় করে এক বোঝা মালপত্র দোকান থেকে উঠাইয়া একটা ঘোড়ার পিঠের উপর তুলিয়ে দিল,ঘোড়ার উপর বসে থাকা একজন যুবক,, বৃদ্ধটিকে কোন পারশ্রমিক না দিয়ে পা দিয়ে লাথি মেরে ঘোড়াটিকে চাবুক শাষিয়ে চলে গেল,,বৃদ্ধটা মাটিতে পরে ফেল ফেল করে তাকিয়েই রইলেন,,
হুজুর গল্পটা শুনে প্রশ্ন করলেন,,
তোমার যদি এসমে আজম জানা থাকত তাহলে কি করতে?
উত্তর দিলেন মুরিদ,,আমার এসমে আজম জানা থাকলে আমি সাথে সাথে এসমে আজম পড়ে আল্লার নিকট ফরিয়াদ করতাম, ইয়া আল্লাহ,,এইরকম জুলুম বাজ অত্যাচারিকে তুমি এখনি ঘোড়া থেকে ফেলে দিয়ে বৃদ্ধার সামনে তার হাত পা ভেংগে দাও,,
মুচকি হেঁসে হুজুর বললেন,,তুমি কি জান? ঐ বৃদ্ধটা কে?
না, আমি জানিনা,,
হুজুর বললেন,ঐ বৃদ্ধটা আমার ও ওস্তাদ,,উনার কাছেই আমি এসমে আজম শিখেছি,,তাই বলা হচ্ছে এসমে আজম যদি আমাদের সবাইকে শিখানো হতো, তাহলে আমরা বদ দোয়া করে অনেককে শেষ করে দিতাম। এসমে আজম জানলে আমরা নিজেদের কন্ট্রোল করতে পারতাম না। যাহোক যা বলা হচ্ছিল মানুষের মনের পাক্কা ইরাদা বা হিম্মত হলো এসমে আযমের মতো,হিম্মত করলেই রোযা রাখা সম্ভব। মুরিদ আর কিছু বলেন নাই,,অন্তত এতটুকু শিক্ষা পেলেন,,
আল্লাহ ওয়ালা যিনি নিজেকে দাবি করবেন,,অন্তত এই গুনটা থাকতে হবে,কেউ হাজার কস্ট দিলেও তাকে অভিশাফ দিবেনা,প্রতিশোধ নিবেনা,,প্রতিশোধ নেয়,,যাদের ঈমান দুর্বল,,আল্লাহ ওয়ালা ব্যক্তি সবসময় আল্লাহর ফয়সালার উপর ছেড়ে দেন,আর আল্লাহ নিশ্চই ভাল প্রতিদান দিবেন,,
বয়ান ও খুতবা পৃ:-1/288
* হাসপাতালে রোগী অন্য রোগী দেখে নিজের কস্টের কথা ভুলে যায়,
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کُتِبَ عَلَیۡکُمُ الصِّیَامُ کَمَا کُتِبَ عَلَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ ﴿۱۸۳﴾ۙ
রুহের চিকিৎসা হয়,হাসপাতালে নিয়ম মাফিক চলতে হয়,রুহ শক্তিশালী হয়,দেহের উপর পরে,
বুজর্গ 40 দিন গর্তে ইবাদত করে
( ওয়াজ ও খুতবা-1/341 )
No comments